আজ আমার সব আছে
শুধু ভালোবাসা ছাড়া।
আমি আমার ভালোবাসা ফেলে এসেছি
রৌদ্রজ্জ্বোল করতলে
জীবনের বিন্যস্ত সজ্জা ছেড়ে
পলাতক কাপুরুষের মতো
আমি পালিয়ে এসেছি
জীবনের আলোকিতো চৌকাঠ পেরিয়ে।
মান জলপ্রপাতে একদিন ( আইভরি কোস্ট টুকিটাকি -২)
(১)
- “হ্যালো, সাহানা, আরে আমি এখন বুয়েনস্ আয়ার্স এয়ার্পোর্টে স্ট্র্যান্ডেড। এল্ ক্যালাফাটে-গামী ফ্লাইটটা সাত ঘন্টা ডিলেইড!”
- “বেশ হয়েছে অর্ক, ঠিক হয়েছে, যেমন এই খৃস্টমাসের ছুটির সময়ে আমায় লস্ অ্যাঞ্জেলেসে একলা ফেলে ওই ধাপার মাঠের মত একটা জায়গায় ছুটলি!”
- “ধাপার মাঠ আবার কোত্থেকে এল?”
নিজেকে ফেমিনিস্ট হিসেবে পরিচয় দিতে আমি খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না কখনো। এর কারণ হয়ত ছোটবেলা থেকে আমার বেড়ে উঠার পরিবেশ। যৌথ পরিবারের চাচাতো, ফুফাতো ভাইদের সংখ্যাধিক্য আলাদা করে মেয়ে হয়ে বড় হতে শেখায়নি আমাকে। আমার জন্মের পনের বছর পর আমাদের বাড়ির দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ততদিনে ভাইদের সাথে মারামারি, আড্ডাবাজি, ঘুরাঘুরি এমন কি সাত আট বছর বয়স পর্যন্ত মসজিদে জুম্মা বা ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়
১. হুমায়ূন আহমেদ আমার প্রিয় লেখক ছিলেন না। কিন্তু তাঁর সঙ্গে কেটেছে আমার তারুণ্যের বেশ কিছু আনন্দময় সময়। বইয়ের পাতায়, টিভি নাটকে। আমার সেই আনন্দের আত্মিক মূল্য অনেক। তাই তাঁকে যারা সাহিত্যিকের মর্যাদা দিতে কুন্ঠিত তাদের সাথে আমি কঠোর দ্বিমত পোষণ করি। আমার ধারণা হুমায়ূন আহমেদ না লিখলে বাংলাদেশের বিরাট সংখ্যক পাঠক কাশেম-বিন-আবু-বক্কর জাতীয় লেখকের পাঠক হয়ে থাকতো। বাংলাদেশের বিশাল সংখ্যার এই পাঠক উত্তরণে হুমায়ূন আহমেদের অবদান কেউ খাটো করে দেখলে সেটা তার সংকীর্ণতার সমস্যা।
আমার বন্ধুভাগ্য নিয়ে আমি অত্যন্ত গর্বিত। যাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে দাবী করি, তারা যে শুধু খুব চমৎকার মানুষ তাই নয়, অসম্ভব নিঃস্বার্থ এবং উদারমনা, আমার সুখ দুঃখের সঙ্গী । আমার শত বিপদেও তারা বিন্দুমাত্র দূরে সরে যায় নি, প্রবল সুখেও তাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি নি।
দেশে একসময় সবেধন নীলমণি ছিল সাহেব বিবির বাক্স বিটিভি। সে সময় সেটি মূলত: সরকারের কথা বললেও টিভি নাটক, ইংরেজী সিরিয়াল, ডকুমেন্টারি, কার্টুন ইত্যাদি কিছু বিষয়ে ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এই উপমহাদেশে রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলের মনোপলি ঘুচায় স্যাটেলাইট টিভি। ৯০ এর দশকের প্রথম দিকে এমটিভিতে বাবা সায়গলের মিউজিক ভিডিও (ঠান্ডা ঠান্ডা পানি) এবং জি নিউজের অনুসন্ধিৎসু খবরের আয়োজন উপমহাদেশের দর্শকদের নতুন যুগের আস্বাদ দেয়। বাংলাদেশ যোগ দেয় একটু পরে। ১৯৯৭ সালে চ্যানেল আই ও এটিএন বাংলার পরীক্ষামূলক সম্প্রচার শুরু হয়। এর পরের ঘটনা তো ইতিহাস।
হুমায়ূন স্যার চলে গেছেন অন্যভুবনে গত পরশু। সমগ্র জাতি শোকাহত। আমাদের প্রাণপ্রিয় কথার জাদুকর আর তাঁর কথার জাদুতে কোটি কোটি ভক্তকে বিমোহিত করবেন না। হিমু পাগলামী করবে না, মিসির আলী রহস্য খুঁজবে না, আমরা তাঁর বই পড়ে বা ছবি দেখে চোখের জলে ভাসবো না। তাঁর কলম থেমে গেছে। কিন্তু আমাদের জীবন থামেনি। সামনে আমাদের এগিয়ে যেতেই হবে। তাঁর এই মৃত্যু শোকের সাগরে ভাসানোর সাথে সাথে আমাদেরকে একটু খানি সচেতন হবার