নিজের একটা কুকুর থাকবে
কোলে বসে চাটবে টাটবে
লেজ নাড়বে-
লাথি দিলেও ছুটে আসবে
হাসবে টাসবে, কৃতজ্ঞতায় সারাটাদিন
চোখে রাখবে-
যা বলবো তাই শুনবে
সহস্রবার বল ছুড়লে লুফে আনবে
মাংস ছাড়া হাড্ডি দিলেও
প্রভূ মানবে-
গন্ধ চিনবে, অনেক দূরে গেলেও
কাছে খুঁজে আনবে, মান ভাঙবে;
মোদ্দা কথা আমি ছাড়া আর সব সে
বৃথা জানবে-
মিনু, টিনু কিংবা তুমি
একটা নামে আয় বললেই ঝাঁপিয়ে ডাকবে,
বিউটি তুমি ধানক্ষেতে শুয়ে থাকা লাশ থেকে ধোঁয়া হয়ে বেড়ে ওঠো
নতুন পিশাচী হয়ে।
পদ্মা সেতুর এক একটি স্প্যানে তুমি পা দুলিয়ে বসে থেকো দিনমান,
ঢাকা থেকে কালকিনি রাজৈর বা আলফাডাঙার
বাসে যারা ঘুমঘুম বসে থাকে, তাদের বুকপকেটে
তোমার মেছো গা থেকে এক একটি শল্ক খুলে দিও স্মরণিকা
উন্নয়নের এই সৌধে সারাটি দিন কোরো পায়চারি।
যে যুবক মোটর সাইকেলে এই স্বপ্নের সেতু দেবে পাড়ি,
ঠিক কোন ক্লাসে মনে নেই, কিন্তু স্কুলে থাকতে বাংলা বইয়ে পড়েছিলাম -" আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ, চুনি উঠল রাঙা হয়ে"। রবীন্দ্রনাথের লেখা, সে বয়সে এসব মারফতি কথা বার্তা তেমন বুঝতাম না। এখনো যে খুব বুঝি,তা নয় কিন্তু হালকা পাতলা বুঝতে শিখেছি। বয়স পঁয়ত্রিশ পেরিয়ে গেছে, জুলফিতে পাকা চুল উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে (কবির ভাষায় জুলফি উঠল সাদা হয়ে)- কিছুটা মারফতি এখন ধাতে সয়, মাঝেসাঝে করতেও ইচ্ছে করে।
কি অসাধারণ নীল আকাশ! এর মধ্যেই একগুচ্ছ শুভ্র মেঘ ভেসে আছে। দেখতে অবিকল তিন্নির মতন। মুখের কোণে হাসি ফুটে উঠল সাজ্জাদের। মেঘতো আসলে বহুরুপী। যে যা ভেবে নেবে ঠিক তাই দেখতে হবে মেঘ। তিন্নি যেমন।
আকাশটা আরো এগিয়ে এল। তার ভেতর দিয়ে এক ঝাঁক পাখি উড়ে গেল। একটানা বর্ষায় নতুন পানি এসেছে। স্বচ্ছ। টলটলে। সবকিছু পরিষ্কার দেখা যায়। আয়নার মতো।
তিন্নি বলেছিল সে নাকি সাজ্জাদকে আয়নার মতো পড়তে পারে। আসলেই পারে। সাজ্জাদকে মুখ ফুটে কিছু বলতে হত না। তিন্নি বুঝে নিত।
আকাশটা আরেকটু এগিয়ে এল। এত পরিষ্কার ঝকঝকে আকাশ কি কোন কালে দেখেছে সে? সাজ্জাদ মনে করতে পারে না। তিন্নিকে ভালবেসে ফেলার পর আর আকাশ দেখার সুযোগ হয়নি তার। দিনরাত সর্বক্ষণ শুধু একজনকে নিয়ে ভেবে কাটিয়ে দিলে আকাশ দেখার ফুরসত থাকে না।
মম গৃহে পালিত সে
রহস্যময় কুয়ান্টাম কাজের
ছেলে।
সারাদিন সে কি করে, কি খায়, বেড়ায় না ঘুমায়, আমি কুন খবর রাখি না।
শুধু জানি রাত্তির ঘনালে
টিভি-ফেসবুক সব বন্দো করে আমি ও আমার পত্নী প্রাণপ্রিয়া হোসনে আরা
যখন মশারি
চারখানি অসমান রশির নির্মম জট ফরমুলা ছাড়িয়ে টাঙ্গিয়ে পড়ি শুয়ে
কুয়ান্টাম কাজের ছেলে সব দ্বিধা দুর করে আচম্বিত ফুঁয়ে
দুদ্দাড় দউড়িয়ে সে অন করে মম লেপ্টপ
সম্প্রতি বাংলাট্রিবিউন এর অনলাইন সংস্করনে চট্টগ্রাম ওয়াসাকে নিয়ে একটা খবর চোখে পড়ল ( http://www.banglatribune.com/country/news/306261/৯৫টি-শহরকে-পেছনে-ফেলে-সেরা-হিসেবে-আন্তর্জাতিক )১ সোস্যাল মিডিয়ার কল্যানে হয়তো আপনাদের চোখেও খবরটি এসেছে। খবরের শিরোনাম অনেকটা এরকম -
একবার বাজে রকমের এক কাশির কবলে আমি পড়েছিলাম। এদেশে আমার মতো মাইগ্রেটেড বাঙালির কপালে কোল্ড এলার্জি বা শীতকালীন হাঁচি-কাশি বিড়ম্বনা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তবে সেবার বিষয়টা সামান্য হাঁচি-কাশি ছাড়িয়ে গড়িয়েছিল বহুদূর। যদিও শীত ছিল জাঁকিয়ে তবুও সময়টা ঠিক শীতকাল ছিল না, এবং রোগটাও কোনোভাবেই কোল্ড এলার্জি না। সেবার পুরো শীতটা ঠিকঠাক কাটিয়ে, বিপত্তি বাঁধলো শীত শেষে বসন্তের আগমনে। এবং যা ছিলো কিনা অস্ট্রেলিয়
আমি চাই আমার ভালো লাগুক
এই ভেঙে পড়া শহর, নুয়ে পড়া
মানুষ, এবড়ো থেবড়ো রাস্তায়
ম্লান নষ্ট আলোর মতো তরুণী;
স্যানিটারি ওপচানো ডাস্টবিন, নোংরায়
গেড়ে যাওয়া শিশুটিকে পিষে খাবার
খুঁজে নেয়া কুকুর, তার পাশে ভুস করে
চলে যাওয়া গাড়ি, পোস্টারে আন্দোলনের
ডাক ঢেকে দেয়া চিত্রনায়িকার স্তন্যময়
হাসি- আমি চাই অন্যদের মতো
আমারো ভালো লাগুক;
পচা পটল আর পোকা বেগুনের ধারে
পায়ে পায়ে থেঁতলানো মরা ছোট মাছ,
গতকাল সন্ধ্যা ঘন হলে
রাত্তির আনুমানিক আটটা নয়টা বাজে
অথবা দশটায়
মনে নাই ঠিক
আমায় ফোন করে বাল্যবন্ধু মুকুল (ছদ্মনাম,
বাস্তবে উহার নাম বকুল, কিন্তু কথা সেটা নয়)
উত্তেজিত কণ্ঠে বলে, দোস্ত কারেন গেছেগা।
শুনে আমি থমকাই দু'টি ক্ষণ, তারপরে শুধাই
বলি ও মুকুল (ও বকুল বলেছিনু, যেহেতু ওটাই
তার বাস্তবিক নাম, তবে কথা সেটা নয়)
কারেন গেছেগা তাতে কি হয়েছে, আইপিএস ছাড়।
জুলমত আলির মন ভালো নেই। মনের আর কী দোষ! আয়না বানুর পাল্লায় একবার যে পড়েছে তার কি কোন উপায় আছে!
পেয়ারা গাছের শক্তপোক্ত একটি ডালে পা ঝুলিয়ে বসে হাতের দড়িটার দিকে তাকালো জুলমত আলি। কী সুন্দর দেখতে! ভারি নরম, যেন কাঠবিড়ালির ফোলা ফোলা লেজ। চারিদিকে আজকাল নাইলনের ছড়াছড়ি, সে দড়িতে গিঁট দিতে গেলে হয় পিছলে যায়, নয়তো খুলে আসে হালকা টানেই। আর নাইলন জিনিসটা খুব বাড়াবাড়ি রকমের রুক্ষও, টান লাগলে চামড়ায় দাগ রেখে যায়।
একই সমস্যা নারকেলের ছোবড়া দিয়ে বানানো দড়িতে। অনেক খুঁজে পেতে শেষটায় রায়েরবাজারের গুড়পট্টির পেছনে যে ঘুপচি ঘুপচি দোকান গুলো রয়েছে তারই একটা থেকে মেলা টাকা খরচ করে কিনে এনেছে এই দড়িটা। পাটের দড়ি, পনেরো ষোল হাত হলেই চলতো, কিন্তু দোকানদার গোছা থেকে কেটে দিতে রাজি হয়নি। কত কষ্টের টাকা, আহারে!