১. গোলামের রাজত্বঃ
আমি হতভাগা প্রজন্মের প্রতিনিধি। আমার জন্ম ১৯৮০-র দশকের শুরুতে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে আমার জন্মের ১১ বছর আগেই। এমন তাৎপর্যবহ যুদ্ধ শত বছরেও একবার আসে না। সেই যুদ্ধ দেখতে না পাওয়ার চেয়েও দুর্ভাগ্য আমাদের প্রজন্মের। আমি ও আমার প্রজন্ম হতভাগা, কারণ আমাদের যুগে এসে যুদ্ধের শিক্ষা হারিয়ে গেছে বাংলাদেশ থেকে।
কুলদা রায়
এমএমআর জালাল
নদী, আপন বেগে—বদলের সুর
(উৎসর্গ: জয়শ্রী সেন জয়া, আমার বৌদি।)
পথের দু’ধার ঘেষে শিমুল গাছের সারি। হালকা বাতাসে শিমুল তুলো উড়ে বেড়াচ্ছে এপাশ থেকে ওপাশ। যেন দোল খাচ্ছে। মেঠোপথে পড়ে থাকা তুলোগুলো পায়ের স্পর্শে সরে যাচ্ছে এধার ওধার। যেন পথ করে দিচ্ছে। পায়ে চলার পথ। শিমুল গাছের ছায়ায় অযত্নে বেড়ে ওঠা রক্ত জবার গাছগুলোতে প্রজাপতির মেলা। মনটা কেমন যেন হালকা হয়ে যায় অলোকের।
#
ভারী পা জোড়া বয়ে নিয়ে থেমে দাঁড়াই তিনতলা বাড়িটির সামনে। রাত জানান দিচ্ছে তার উপস্থিতি নির্জনতা নিয়ে। শহুরে ভবঘুরে কুকুরটি প্রতিদিনের মতো শুয়ে আছে গেট আগলে রেখে। একঘেয়ে চাকরি, একঘেয়ে দিনশেষে বাড়ি ফিরতে ফিরতে ভাবি আজ হয়ত ব্যতিক্রম কিছু দেখব। হয়ত কুকুরটা থাকবে না, হয়ত ফাঁকা রাস্তা পেয়ে সাঁই করে চলে আসব নিমিষে, হয়ত শৈশবের গৃহত্যাগী জোছনায় ছাদে বসে আয়েশ করে সিগারেট খাব, কেউ চা বানিয়ে এনে দিবে। ঘামে সিক্ত হয়ে সিটি বাসের ভিড়ে চিড়ে চ্যাপ্টা হতে হতে একবার ভ্রম ভাঙ্গে, কুকুরটিকে দেখে দ্বিতীয়বার আর শরীরটা যখন বিছানায় ছেড়ে দেয় তখন ব্যতিক্রম কিছু ঘটার সম্ভাবনা ঘুমের ভেতরে চুপচাপ মরে যায়। আজ কুকুরটিকে এক-ই ভাবে শুয়ে থাকতে দেখে কিছুটা ক্ষোভের উদগীরণ হলেও পাশ কাটিয়ে ঢুকে যাই ভেতরে। ক্ষোভ কখনো আমাকে কাবু করতে পারে না বরং আমি চিরকাল ক্ষোভের শিকার হই, অব্যর্থ শিকার; এফোঁড়-ওফোঁড় করে যায়, রক্ত বের হয় না।
বিশালদেহী মিজান স্যার ক্লাসে ঢুকতেই গ্রুপ-৪ এর সব ছাত্র একসাথে বলে উঠেছিলো "কাইফা হালুকা", স্যারও প্রতিউত্তর করেছিলেন সরস ভাবেই, প্রায় ৬ ফুটের উপরে লম্বা, বিশাল আলখাল্লা টাইপের পাঞ্জাবী, আর মুখভর্তি লম্বা দাড়ির মিজান স্যারকে কাইফা হালুকা বলে অভ্যর্থনা না জানানোটাই আসলে হয়তো রীতিবিরুদ্ধ হতো, স্যার পরিচিত ছিলেন তার বিখ্যাত "ছিলা-বাঁশ" এর জন্য, প্রথম দিনই বলেছিলেন, "আমরা তো আবার ছিলা-বাঁশ (সিলেবাস
সালেক খোকন
‘ট্রেনিং শেষ। এবার রণাঙ্গনে যাওয়ার পালা। ইন্দ্রনগর ট্রেনিং ক্যাম্প হতে আমাকে পাঠানো হয় ৪ নং সেক্টারে। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন বীর উত্তম সিআর দত্ত। সেখানে ৩০ জনের দল করে আমরা অপারেশন করি। আমার দলের লিডার ছিলেন মাহাবুব নুর সাদী। এখনও মনে পড়ে কানাইঘাট থানা অপারেশনের কথা। চোখের সামনে দেখেছি সহযোদ্ধাদের মৃত্যু যন্ত্রণা। জীবন বাজি রেখে করছিলাম যুদ্ধ। আমাদের ঠিকানা শুধুই স্বাধীনতা।
[justify]
কঠিন প্রশ্নঃ
পৃথিবীর বাকি আর সব কাজের মতই শিশুপালন দিনে দিনে কঠিন হতে থাকে। প্রথমে এতে থাকে কায়িক শ্রম আর নির্ঘুম রাত। যতই দিন গড়ায় ততই মনে হয় যে “শারীরিক শ্রম মানসিক শ্রম অপেক্ষা অনেক উত্তম”। ওদের প্রশ্নগুলো প্রথম প্রথম সহজ থাকলে দিনে দিনে ওগুলো প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবের ভাইভার মত কঠিন হতে থাকে। যারা নিয়ত শিশুপালন করেন তারা জানেন যে এই চাকরির প্রশ্নগুলো কঠিন আর উত্তরগুলো আরো অনেক কঠিন।
অনেকগুলো চোখ বারবার পিছু ডেকেছে,
অনেকগুলো শব্দের আহ্বান নির্ঘুম চাদরে ছেয়েছে রাত।
চেসাপীক বে’র ঘুর্ণিজলে ডুবিয়ে দিয়েছি স্মৃতির বরাভয়,
বারবার হয়েছি নিরুদ্দেশ- প্রিয়মুখ
কিম্বা বেপথু অস্তিত্বের মায়াডাক পিছু ফেলে।
কৈশোরের মধ্যযামে ব্রহ্মপুত্রের লাইলাক স্রোতে
দীর্ঘশ্বাস মিশিয়ে দিতে দিতে প্রিয়বন্ধু বলেছিল-
“তুই চলে গেলে জীবনটা এলোমেলো হয়ে যাবে;
কেউ আর ফেরাতে পারবেনা। তখন দোষ দিসনা।”
[justify]
বাড়ির সবার ছোট বলে একমাত্র ভগিনি দ্যুতির আদরটা বাড়াবাড়ি রকমের। ফুলের মধ্যে কাঁটার মতো বড় দুই ভাইবোনের শাসনটাও তাকে হজম করতে হয় বৈকি। আমি নিজে অবশ্য এ ঝক্কি থেকে এক্কেবারে মুক্ত ছিলাম।