আমার দাদাবাড়ির উঠানে একটা ইন্দিরা বা কূঁয়া ছিল। সেই ইন্দিরার বাঁধানো পাড়ে পা পিছলে আছাড় খাওয়ার অভিজ্ঞতাও আছে। শীতের সকালে কূঁয়ার পানি থাকতো কুসুম গরম। এদিকে কেচ্ছা কাহিনী শুনতাম যে রাজার বাড়ির কূঁয়ার ভেতর দিয়ে সুড়ঙ্গ থাকতো, যা দিয়ে নদীপথে নৌকায় করে পলায়ন করা যেত আক্রমনের শিকার হলে শেষ উপায় হিসেবে। আমাদের দেশে নাকি মাটির নিচে পানির অভাব নাই, পানির উপর দেশ ভাসতেছে। হাকলবেরি ফিনের গল্পেও আমাজান নদীতে ভাসমান দ্বীপের কথা পড়েছিলাম। দুইয়ে দুইয়ে চাইর মিলাতে সময় লাগে নাই ... ... নির্ঘাৎ আমাদের কূঁয়ার পানিও নদীর সাথে সংযুক্ত, নাইলে এ্যাত পানি আসে কোত্থেকে।
বাবলুর মেজাজটা খারাপ। আব্বা এখানে এসে সেই কখন থেকে বসে আছে। নড়েও না চড়েও না। কথাও বলেনা। বাবলু একজায়গায় বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারেনা। তার হাত-পা কামড়ায়। সে অনেকক্ষণ গা মুড়ামুড়ি করেছে । তারপর বলেছে তাকে মশা কামড়াচ্ছে। সেকি একটু ঘুরে আসবে? কিন্তু আব্বার কোনো সাড়া নাই। তারপর ক্ষিদা লাগসে বলে সে শুরু করেছে ঘ্যানঘ্যান। তারও বেশ কিছুক্ষণ পরে আব্বা তার দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে বললো, বাবলু একটা কাজ করতে পারবি বাবা?
কি?
কাজটা আমরা দুইজন মিলা করবো, বুঝছিস?
কাজটা কি?
লোকজনের কাছে টাকা চাবো
কি বলবো?
বলবি, তোর মা হাসপাতালে, অপারেশনের জন্য টাকা দরকার। আমাদের সাহায্য করেন। পারবি না?
[justify]অবারিত নীলাকাশ ছাপিয়ে নিস্পৃহ চেয়ে থাকা দীর্ঘশ্বাসকে ক্রমশ দীর্ঘায়িত করতে থাকে। আকাশের সব আলোতেই আমরা সন্তুষ্ট, অন্তত আমি। অথচ সূর্যের অনবরত দগ্ধ চেহারার বেদনাক্লিষ্ট রূপ একাকী ভেসে যায় একই পথে প্রতিদিন, কেউ তাতে ভুলে দেখলেও, কখনও সমবেদনা জানায় না। শুধুমাত্র জোছনা ধরে রাখে সেই দগ্ধ ইতিহাস, কালান্তরে। আর সেথায় জন্ম নিতে থাকে সহস্র কবিতা, যা আজও টিকিয়ে রেখেছে তথাকথিত পবিত্র ভালবাসাকে, মানুষের পিঞ্জরে। আঁধারের সাথে মিলিয়ে যাওয়া স্বপ্নহীন ঘুমে আমি নিজের পিঞ্জর খুজে বেড়াই। উপস্থিত সব শূণ্যতা আমায় সঙ্গ দিয়ে নিয়ে চলে রাত্রের নদীতীরে। হালকা শিরশিরে বাতাসে আমি ধূসর ঘ্রাণ নিতে থাকি
[justify]মুখের ভেতরটা তেতো হয়েছিলো সকাল থেকেই। বর্তমান নিবাস থেকে পুরনো শহরে মায়ের কাছে যাবার সময় রাস্তায় লম্বা জ্যামে পড়তে হল। রাস্তা খুঁড়ে উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। বিরক্ত হয়ে বাসে বসে থাকা ছাড়া গতি নেই। মায়ের বাসা থেকে সন্ধ্যায় বেরোবার সময়ও দেখি ভাগ্য সহায় নয় - গলির মোড়ে একটাও রিক্শা নেই। রিক্শা সব গেল কোথায়?
[justify]পুষি
বিড়ালেরা মাও না বলে ম্যাও বলছে বলে চীনে গণহারে বিড়াল মারা শুরু হলে একটা বিড়াল চীন থেকে পালিয়ে আমার বাসায় চলে আসে। নাম দেই পুষি। দুবেলা চারবেলা খেতে দেই। পুষি দেখতে আদুরে। সাদা লোম আর একটু একটু বাদামি ছোপ। পুষি মাছের কাঁটা খায়, দুধ খায়, সোফায় বা বিছানায় উঠে পা উপরে তুলে শুয়ে থাকে। একদিন রাতের বেলা শুতে গেলে পুষির লেজে হাতের চাপ লাগে অনেক জোরে। পুষি ভয়ে ম্যাও না করে মাও করে ওঠে।
[=grey]আই কল মাই ডগ, ডগ
ছলাৎ ছলাৎ মনটা তোমার
চরের সাথে আটকে গেলো।
উড়ু উড়ু পাখির স্বভাব
জালের ফাঁদে ধরা খেলো।
কবে তোমার সবুজ বনে
হলুদ রঙের আবাস হলো।
দৃষ্টি কাড়া নীল নয়নে
মেঘের পালে বৃষ্টি এলো।
শীতকাল মানেই কুয়াশা মুড়ানো অলস সকাল ... অনেক কষ্টে দুপুর এর দিকে সূর্যের উঁকি মারা আর দিন ফুরাবার আগেই বেলা ফুরিয়ে যাওয়া। ছোটবেলায় শীতকাল সবচাইতে পছন্দের সময় ছিল। এখন মনে হয় আমাদের মতো গরিব দেশের জন্য শীতকাল কষ্ট ছাড়া কিছু আনেনা ... তীব্র শীতে ফুটপাত এ কম্বল জড়িয়ে (অনেকে ছালা/চট) শুয়ে থাকা মানুষগুলার ছবি তুলতে গেলে কেন জানি নিজেকে অপরাধী মনে হয়।
এই বছর শীতটা একটু যেন বেশিই । আমার ২ বছরের মেয়েটা যখন ঘরের ভেতর এত গরম কাপরের মধ্যেও কাবু হয়ে যায় তখন রাস্তার বাচ্চাগুলার কথা ভেবে কষ্ট হয়।
[justify]স্বদেশের গন্ধ বুকে নিয়ে বিদেশের মাটিতে জন্ম নিল ইন্টারনেট ভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ বাংলা টেলিভিশন বিদেশ টিভি। গত ১৬ই ডিসেম্বর শুরু হলো বিদেশ টিভির পরীক্ষামূলক কার্যক্রম। যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য টেক্সাসের অস্টিন শহরের ১১ জন প্রবাসী বাংলাদেশি সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগ ও অর্থায়নে চালু করেছেন এই স্ট্রিমিং ইন্টারনেট টিভি। তাঁদের লক্ষ্য আর বাদবাকি প্রবাসী বাংলাদেশিদের থেকে ভিন্ন নয়। তাঁরা চান প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য কর্মকান্ড ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বময়। আর সবার মত তাঁরাও চান আমাদের দ্বিতীয় প্রজন্ম যেন স্বদেশের সংস্কৃতি থেকে দূরে না থাকে। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়
ফেরারী কথারা ফিরছে যখন ঘরে
বন্ধু মেঘেরা নীল বৃষ্টিতে ঝরে-
মায়াকথাদের সবুজ সবুজ জামায়
ছায়াসুখলতা রঙভোলা হাত নামায় .....
ফেরারী কথারা সেদিন ঘরে ফিরছিলো। অনেকদিনের পরে। সেই যে ঝরাপাতা অরণ্যের ভিতর দিয়ে, পথহীন পথে তারা পালিয়ে গেছিলো, দৌড়ে দৌড়ে পালাচ্ছিলো কুয়াশাভরা অন্ধকারে, পিছনে গুলির শব্দ ছিলো, সঙ্গীরা আসতে পারলো না পড়ে রইলো দেখার সময় ছিলো না-সেই সময়টা এখন স্মৃতিমাত্র। অতীত, মৃত অতীত।
[justify]চাঁদখানি ভাসছে কুয়াশার চাদরে,
বুনোঘাস ঘামছে শিশিরের আদরে।
তারাগুলো লুকিয়ে আকাশের আড়ালে,
পাতাঝরা শিমুলটা দাঁড়িয়ে আকালে।
পাড়খানি কাঁপছে পুকুরে জড়ায়ে,
একপাশে কাশবন নীরবে ছড়ায়ে।
আসমান বিষাদে ধূসরিত উপরে,
মেঘতায় ঝুলছে শীতেফাটা গতরে।