প্রথম ঘটনাটা বেশ কয়েক বছর আগের। ২০০৮/৯ এর দিকে হবে। বাসে করে ক্লাসে যাচ্ছিলাম সকাল সকাল। পুরো বাস অফিসগামী মানুষ আর ক্লাসগামী ছাত্র দিয়ে বোঝাই। কোনমতে সামনের দিকে একটু জায়গা করে দাঁড়িয়ে খেয়াল করলাম মহিলা সিটে দুইজন ছেলে বসা। বাসে কোন মহিলা দাঁড়িয়ে নেই দেখে ভাবলাম থাকুক বসে। কেউ উঠলে নিশ্চয়ই সিট ছেড়ে দিবে।
ভুল ছিলাম আসলে।
বৈশাখী মেলায় আড্ডাবাজির ফাঁকে ফাঁকে তন্ময় যে রঙ্গিন সাজে পরীর মত দেখতে হওয়া মেয়েগুলির দিকে তন্ময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেনি, তা নয়! এরপর রাতে টিভির নিউজটা স্বভাবতই বুকের মাঝে ভীষন ক্ষত সৃষ্টি করল, চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগল, দিনের বেলা দেখা সেই স্বপ্নের পরীদের বিবস্ত্র করছে কতগুলো জানোয়ার! পরীদের আর্তচিৎকার ছড়িয়ে পড়ছে আকাশের বিশাল শুণ্যতায়!
নারী দিবসের লেখাগুলো পড়তে পড়তে রাগে ফুঁসছিলাম। আমাদের দেশে মেয়ে হওয়া কতটা যন্ত্রণা সেটা বাংলাদেশের মেয়ে হলে না জন্মালে মনে হয় বোঝা সম্ভব না।
কিন্তু পড়তে গিয়ে মনে হলো স্রোতের বিপরীতেও চলার গল্প কিছু থাকুক, আশার কথা কিছু থাকুক।
সত্যি বলতে কি, সেটার জন্য খুব বেশি কিছু প্রয়োজন নেই, মানসিকতার সামান্য একটু বদল হলেই চলে।
ঘটনা ১-
ছোটবেলায় আব্বুর সাথে বাজারে যেতে বেশ ভালোবাসতাম। বাজারে গিয়ে বিবেচকের মতো সবজি পরখ করে দেখতাম। একবার টিপে টমেটো গেলে ফেলাতে ঐ মাতুব্বরিতে ভাঁটা পরে।
যা দেখলাম, বিস্ময়ে একেবারে ‘থ’! দুটো পায়ের ছাপ। মানুষের। খুব বড় নয়। মহিলার। কিন্তু আশ্চর্য এবং আতঙ্কের বিষয় হলো পায়ের পাতা পেছন দিকে ঘোরানো! নানুষের পায়ের ছাপ যখন ভেজা মাটিতে পড়ে তখন ডান পায়ের বুড়ো আঙুল বাঁদিকেই থাকে। সবার শেষে কড়ে আঙুল। আর বাম পায়ের একেবারে বাঁয়ে কড়ে আঙুল এবং সবার শেষে বুড়ো আঙুল। দুই পা পাশাপাশি রাখলে বুড়ো আঙুল দুটো পাশাপাশি থাকবে। ছাপের বাইরে দিকে থাকবে দুই কড়ে আঙুল। কিন্তু এখানে ঠিক তার উল্টো। দুটো ছাপ পাশাপাশি রাখলে হিসাবটা দাঁড়াবে কড়ে আঙুল দুটো পাশাপাশি আর বুড়ো আঙুল দুটো বাইরের দিকে।
শরীরে একটা শীতল স্রোত বয়ে গেল। সত্যিই তা হলে চুরাইল আছে! মাছ ধরা লোকটা কি দেখেছে তাকে। আবার জিজ্ঞেস করার জন্য পেছন দিকে ফিরলাম। কিন্তু নেই লোকটা! চারদিকটা ভালো করে দেখলাম। কোথায় গেল? এই পাহাড়ি পথে এক মিনিটে একটা লোক উধাও হয়ে যাবে! অসম্ভব? কী ঘটছে এসব!
এসেছি নিজের কথা বলতে। আমরা মেয়েরা আজীবন বাবার কথা, ভাই বোন, স্বামী সন্তান, সংসারের কথা বলি। নিজের যে দুটা কথা আছে তা আর বলা হয় না... কাওকেই না।
ছোটবেলা থেকেই শুরু করি।
সচলে আমার প্রথম লেখা। হাত কাঁপছে। সাত বছর ধরে সচল পড়ছি। লেখার সাহস করিনি কখনো। কত বড় বড় লেখক এখানে! কিন্তু 'নারী সপ্তাহের' আহবানে আজ আর পাঠক হয়ে বসে থাকতে পারলাম না। বানানে খুব কাঁচা আমি, বিশেষ করে 'র' আর 'ড়'। সময় অভাবে অভিধান দেখে ঠিক করে নিতে পারলাম না বলে দু:খিত। তাই সম্ভব হলে বানান ভুলগুলো ধরিয়ে দিতে তুলিরেখাকে অনুরোধ করব।
আমার ছোটবেলায় মাসুদ রানা পড়াটা খুব একটা ভালো চোখে দেখা হত না - ইঁচড়ে পাকা বলে মনে করা হত ৷ তবুও লুকিয়ে চুরিয়ে প্রাইমারি স্কুলের গন্ডি পার হওয়ার আগেই পড়া শুরু করলাম ৷ অ্যাকশন, এডভেঞ্চার আর লাস্যময়ী নায়িকা ভরপুর কাজী আনোয়ার হোসেনের এই অসাধারণ সিরিজ নিশ্চয়ই অনেকের মনে দাগ কেটেছে ৷ আরেকটু বড় হয়ে যখন ইংরেজিতে নানা থ্রিলার পড়া শুরু করলাম, তখন আবিস্কার করলাম এ গল্প তো আমার পড়া ! কাজীদা মাসুদ রানার বোতলে ভরে আগেই খাইয়ে দিয়েছেন ৷