ভোরের আলোয় প্রথম যা নজরে পড়লো তা একটি রুপালি মল। এ নামটি বলাই হয়তো সংগত। মলটি আসলেই রুপার কিনা সে কথাও ভাবনায় এসেছে আনসার সাহেবের। গোড়ালি ছাড়িয়ে মলটি লুটিয়ে ছিল যে পায়ে তার আঙ্গুলগুলো সুন্দর। লাল নেইল পালিশ সরু ফর্সা আঙ্গুলগুলোকে আরো মোহনীয় করেছে। মাঝখানের দুটো আঙ্গুলে রুপালি আংটি। রমনা পার্কের লেক ঘেঁষা সিমেন্টের বেঞ্চে মেয়েটি ঘুমিয়ে ছিল। সাদা ফুঁটি মেশানো লাল কামিজ ও সাদা পাজামা মেয়েটির দেহ ঢেক
এক জ্ঞানী লোকের পশ্চাৎদেশে একবার ইয়া বড় এক ফোঁড়া হল। বেচারা কোথাও গিয়ে বসতে পারেনা। শিষ্যরা তাকে বসার জন্য কাঠের চেয়ার এনে দিলে সে বলে, এইভাবেই দেশের সমস্ত কাঠ কেটে ফেলা হচ্ছে। বন জঙ্গল উজাড় করে দেয়া হচ্ছে। মানিনা মানবো না। কাঁচুমাচু হয়ে শিষ্যরা ষ্টীলের চেয়ার এনে দিলে বলে, এইভাবে ষ্টীল মিল বানিয়ে দেশ ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। কলকারখানার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া চারিদিক দূষিত করে ফেলছে। মানি না
খ্রিস্টের জন্মের খোঁজ বাদার বাঘ রাখে না। খ্রিস্টের জন্মের আগেও সে গরানের শ্বাসমূলকে সচকিত করে নিঃসাড়ে নদীর জলে নেমে ওপারে কোনো হতভাগ্যের মাংসে দাঁত বসিয়েছে। বালথাজার, মেলকিওর আর গাসপার যখন বেতলেহেমের রাস্তা ভুলে হাঁ করে আকাশের তারা দেখছিলো, তখনও বাঘ শেষ রাতের অন্ধকারে নদীর ওপর ঝুঁকে পড়া গাছের ছায়া ঠেলে অনায়াসে চড়াও হয়েছে এক তরুণ চিত্রলের ওপর। ক্যালেণ্ডার বাঘের কাছে বাহুল্য। বংশ পরম্পরায় বাদার বুক
বিচারক কোমল গলায় বললেন, দেখেন ভাই, আমি রসিক মানুষ। আমি রসিকতা পছন্দ করি। শুধু পছন্দ করি বললে ভুল হবে, এটা আমার জীবন বলতে পারেন। মানুষের জীবন থেকে যদি হাস্যরস কেড়ে নেয়া হয় তবে কি আর বাকি থাকে বলেন। আমি শুনেছি, বাংলাদেশের রাজনীতির অঙ্গনে আপনার মতো রসিক মানুষ আর একটাও নাকি নেই। নিজ কানে আপনার রসিকতা শোনার সুযোগ হয়নি। তাই সেই সুযোগটা নিতে চাচ্ছি, সেইসাথে আপনাকেও একটা সুযোগ দিতে চাচ্ছি। সহজ ব্যাপার। আপ
গ্রামেই আমাদের অনেক আত্মীয়-স্বজন। আমার এক চাচার বাড়ি বড় একটা শিমুল গাছ ছিল। এখন সেটা আছে কিনা ঠিক জানি না। বসন্তকালে শিমুল গাছে ফুল ফোটে। লাল লাল বড় পুরু ফুল। ফুলের কুড়ি ঠিক কুড়ির মতো নয়। বসন্তে পাখিরা শিমুল গাছে ভিড় করে। কেউ শিমুলের ফুলের মধু চুষতে আসে। কেউবা আসে পোকার লোভে। মধুপায়ী পোকাদের আনাগোনা কম নয় শিমুল গাছে। কিছু পাখি আসে স্রেফ ভালোবাসার টানে। তবে ভালোবাসাটা তাদের শিমুলের প্রতি নয়। সঙ্গিনীর টানে আসে ওইসব পাখিরা। চোখগেল, বসন্তবৌরি, বেনেবউ পাখিগুলো কিছুটা লাজুক প্রকৃতির। বছরের অন্যসময় লোকালয়ের ধারেকাছে এদের খুঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু বসন্তকালে ওরা মরীয়া। তাছাড়া পুরুষপাখিগুলো সঙ্গিনীকে ডাকার সময় এলাকা ভাগ করে নেয়। পারতপক্ষে একজনের এলাকায় আরেকজন পা দেয়। যদিবা দেয় যুদ্ধের জন্য আটঘাট বেঁধেই দেয়। যেসব পাখি মাঠে সুবিধা করতে পারে না, তারা সঙ্গিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য বেছে নেয় লোকালয়। মানুষকে এড়িয়ে চলা পাখি। যে-সে গাছে বসলে মানুষের সান্নিধ্যে চলে আসার আশঙ্কা আছে। তাই বেছে নেয় শিমুলের মতো উঁচু গাছ। চোখগেল আর বসন্তবৌরি শিমুলের মগডালে বসে তারস্বরে চিৎকার করে। তবে ওদের কণ্ঠ মধুমাখা। আর বেনেবউ, যাকে আমরা হলদে পাখি বলি--ওদের গলায় অত জোর নেই। তাই সবসময় এক জায়গায় বসে ডাকে না। এ গাছে, সে গাছে ঘুরে ঘুরে ‘খোকা হও... খোকা হও’ স্বরে ডেকে বেড়ায়। আমার ওই চাচার বাড়ি প্রায়ই একটা বেনেবউ ডেকে বেড়াচ্ছে। শুধু সে বাড়িই নয়, আশপাশের সব বাড়িরই মেহমান সে।
এমনিতে ওদের ওই ডাকে কেউ পাত্তা দিত না। কিন্তু যে বাড়ি নতুন বউ আছে, সে বাড়িতে খুশির রোল পড়ে যেত। সবাই ধরেই নিত নতুন বউয়ের গর্ভে একটা পুত্র সন্তান আসছে। পরে নতুন বউয়ের মেয়ে সন্তান জন্মালে বেনেবউয়ের কথা কেউ মনে রাখত না। তবে ছেলে হলে বলত--‘ওই দেখো, এ বাড়িতে ‘খোকা হও’ পাখি ডেকেছিল, খোকা না হয়ে যাবে কোথায়। এ বিশ্বাস আদ্যকালের। যুগ যুগ ধরে বাংলার ঘরে ঘরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সংক্রিমত হয়ে হয়েছে বিশ্বাসের ভিত। এই ডিজিটাল যুগে এসেও সে বিশ্বাস কিছুটা হয়তো নড়চড় হয়েছে, তবে একেবারে ধুয়েমুছে যায়নি।
বছর দুই হল শফিক আমেরিকা প্রবাসী হল। প্রবাসী বড় বোনের বরাতে তার আসার সুযোগ হয়েছে। কাজ করে ম্যনহাটনের একটি রেষ্টুরেন্টে। যাতায়াত করে ট্রেনে(সাবওয়ে)। মাঝে মাঝে বাড়তি আয়ের জন্য ক্লোজিং পর্যন্ত শিফট করে। গতমাসের তেমনি এক ক্লোজিং দিনে কাজ সেরে প্রতিদিনের মত ঘরের উদ্দেশ্যে রওনা দিল । রেষ্টুরেন্ট থেকে কয়েক ব্লক দূরে সাবওয়ে। দেশে ফোন করে কথা বলতে বলতে হেটে সে সব ব্লক পার করে দেয় খুব সহজে। সেদিনও তার ব্যত
সেদিন আকাশ ছিল ঘন নীল, বাতাস ছিল উতলা | আনজামের মনে লেগেছিল বসন্তের রং, মহুয়ার মাতাল নেশা | আনজাম ডুবু ডুবু চোখে তার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বলেছিল "তোমাকে আজ পরীর মত লাগছে"|
আনজামটা যে কী!
চৈতির মনে আজ দারুন আনন্দ। জীবনে প্রথমবারের মত স্বাধীনতার স্বাধ পেতে যাচ্ছে। ছোট বেলা থেকে হয় বাবা নয় বড়ভাই এই দুইজনের শাসনে কিছুই করতে পারে নি। স্কুলে পিকনিক হচ্ছে সবাই যাচ্ছে, শুধু চৈতি যাচ্ছে না। কারন বাবা বলেছে যাওয়ার দরকার নেই, নিরাপত্তা ভালো না। বড় হও তখন যেও। তারপর চৈতি বড় হল, কলেজে ভর্তি হল কিন্ত কোন কিছু পরিবর্তন হল না। প্রতিদিন কলেজে যাওয়ার সময় বাবা নামিয়ে দিত আর বিকেলে কলেজ শেষে ভাইয়া বা