১.
তুহিন অনেকক্ষণ ধরে চোখ কুঁচকে আকাশ দেখে, তারপর হাল ছেড়ে দিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মোটা লোকটাকে বলে, "বাবা, প্লেনটা তো আর দেখতে পাচ্ছি না। কোথায় গেলো?"
তুহিনের বাবা আড়চোখে ছেলেকে পরখ করে নিয়ে বলেন, "এই তো বাবা, প্লেনটা এখন অনেএএএএক ওপর দিয়ে উড়ছে। তাই তুমি দেখতে পাচ্ছো না।"
সে এক দিন গেছে। তারপর এখন দেখছি সবই বদলে গেছে এই বলে অমিতা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিষন্ন বদনে বসে রইল।
বিয়ের আগে ও পরের পরিস্থিতি এক করলে তো হবে না। কিন্তু এই তফাৎ টা এত বেশী নয় যে জীবন বিষয়ে হতাশ হয়ে পড়তে হবে। এটা সবার ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে। বিজ্ঞ ভাবে মন্তব্য করল সমর। তার পর খাট থেকে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় পায়চারি শুরু করল।
মৃত্যুটা ঠেকান গেল না। দুপূর দুটো নাগাদ খবর পাওয়া গেল যোগমায়া মারা গেছে। আগের সন্ধ্যায় নিজেই যখন কেরোসিন গায়ে ঢেলে ও আগুন ধরায় তখন খবর পেয়ে আমরা ওদের বাড়ী গিয়ে দেখি একটা সাঙ্ঘাতিক ব্যাপার ঘটে গেছে। ফর্সা এবং মোটাসোটা চেহারার যোগমায়ার শরীর দিয়ে মাংসপোড়া গন্ধ বের হচ্ছিল। ঐ অবস্থায় যত দ্রুত সম্ভব ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
(১)
চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় কলেজ চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের বহিরঙ্গে চমক এসেছে। কিন্তু অন্তরঙ্গে মৌলবাদ রয়ে গেছে। কলেজে ঢুকতে গিয়ে প্রধান ফটক পার হলেই চোখে পড়ে ছাত্র শিবিরের বিশাল বিশাল সব ব্যানার। আবাসিক হলগুলো জুড়ে আছে ব্যানার-পোস্টার-ফেস্টুন-দেয়ালিকা!
কার কপালে যে কি লেখা আছে তা কেউ বলতে পারে না, বুঝলে বাবা। দেখি হাতটা একটু টান টান করে ধরো তো। হুঁ! বিয়েটা সমস্যা করবে তোমার। তা তোমার তো বিয়ে হয়েছে। এই বলে ধব ধবে ফর্সা প্রভাস জ্যোতিষী চোখ ছোট করে, ভ্রূ-যুগল আকাশে তুলে চীনেম্যান সুলভ এক হাসিতে মুখ ভরিয়ে ফ্রিজ হয়ে গেলেন।
নবেন্দু মাথা নেড়ে সায় দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগল পরবর্তী ব্যাখ্যার জন্য। লোকটা ঠিক ধরেছে তো!
একটু আগে টেলিভিশন দেখছিলাম। চ্যানেল পাল্টাতে যেয়ে একটা আলোচনা অনুষ্ঠান চোখে পড়লো। শব্দ বাড়িয়ে ভালো করে শুনলাম ওটা ভাষার মাস নিয়েই হচ্ছে। ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব, তাৎপর্য, জাতীয় জীবনে এর ভুমিকা ইত্যাদি ইত্যাদি যা হয় আর কি । কিন্তু কষ্ট পেলাম চ্যানেলটার নাম দেখে। সম্পূর্ণ আমাদের দেশীয় একটা টেলিভিশন চ্যানেল এর নাম কেন ইংরেজিতে হতে হবে ?
নীচু হয়ে মাছের পেট টেপাটেপি করছেন জীবনবাবু। কানকো লাল না ফ্যাকাশে সব দেখে নিচ্ছেন। দেখে টেখে পছন্দ হলে এবার শুরু হবে দরকষাকষি। তারপর আবার ছোট দু একটা মাছ ফাউ নেবার বায়না। জীবনবাবুকে তাই মাছওয়ালারা কেউ ভালবেসে চায়না। তারা অবশ্য আমাকেও চায়না। দরদাম কম করে, পচা ধচা সব গছানো যায় এমন খরিদ্দারকেই তো বিক্রেতারা ভালবাসে। আর ক্রেতারা ভালবাসে সেই দোকানীকে যে কেনা দামে মাল বেচে তাড়াতাড়ি ফকির হবে সেই মহৎপ্রাণ
দরজাটা খুলে যাওয়ার পর ওপাশে আমার গোমড়ামুখো পড়শী ফদলুর রহমানকে দেখে আমার কেন যেন ভালো লাগে না।
পেয়েই বুঝেছি-
প্রাপ্তি আড়াল করে চরাচর রক্তে ভেসে যায়
ক্ষমার আড়ালে যেই লজ্জ্বার পরিণত ভয়
তার কোনো আচ্ছাদন নেই!
রাত্রির নৈঃশব্দে যে রকম
গর্ভিনী গাভীর নত চলন-
তাদের ঈষৎ চিনি
ঈষৎ জ্বলনে আমি ঘুমাতে পারিনা!
আমার তন্দ্রায় আমি শিমূল গাছের গুঢ কাঁটা
ছাড়াতে পারিনা।
গুল্মে র-লতার আর বাকলের রহস্য বুঝিনা!
পেয়েছি বলেই আমি বুঝে গেছি
সোনামোড়া কাঁথার কথিত রহস্য
জেনেছি আমার নয়
জেনে গেছি-