১.
খাবার টেবিলের ওপর দু'দল পিঁপড়ে মুখোমুখি। মাঝখানে ছোট্ট এক টুকরো পরিত্যক্ত সন্দেশ। মিষ্টি দানার দখল নিয়ে দিনের পর দিন হাতাহাতি মারামারি। সংখ্যাগরিষ্ঠ পিপড়েরা জানে না একদল ঘুণপোকা নিঃশব্দে খেয়ে যাচ্ছে কাষ্ঠশাঁস। নিজেদের স্বার্থের কামড়ানিতেই ভীষণ ব্যস্ত ওরা। তারপর ছয় পায়ে দাঁড়িয়ে একদিন দেখলো আচমকা এক ছিদ্রপথ গলে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে সন্দেশ দানাটি। কুপমণ্ডুক পিপড়ের দল অসহায় চোখে তাকিয়ে দেখলো কোত্থেকে এক টিকটিকি এসে সন্দেশ দানাটি মুখে নিয়ে পগার পার।
.
প্রেম এসে ফিরে ফিরে যাচ্ছে, বিষাদও
শোনাতে চাইছে তার সকরুন সুর
আর আমি বসে দুর-বহুদুর
যা কিছু সব টের পাচ্ছি
তবু রোজকার মতো খাচ্ছি-দাচ্ছি-ঘুমাচ্ছি।
প্রেম জানে,
আমার আছে নিজস্ব একটা ঘর
তবু সে সামলাইতে কয় পর
আমারে আকৃষ্ট করতে চায় ভোগে
সে জানে, আমি বি-বাহিত রোগে
আক্রান্ত হয়ে আছি,
বিষাদের কাছাকাছি।
প্রেমরে বলি, আমি কিন্তু ভোগবাদি নই
(যদিও সে সুযোগ এখন আর কই?)
…
বলি রে মানুষ মানুষ এই জগতে/ কী বস্তু কেমন আকার পাই নে দেখিতে।।
যে চারে হয় ঘর গঠন/ আগমেতে আছে রচন/ ঘরের মাঝে বসে কোনজন/ হয় তাই জানতে।।
এই মানুষে না যায় চিনা/ কী বস্তু কেমন জনা/ নিরাকারে নিরঞ্জনা/ যায় না তারে চিনতে।।
[লালন সাঁই]
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
১.
মানুষের জীবনে ধারাবাহিকতা থাকাটা কি আবশ্যক? অথবা ধারাবাহিকতা কি স্বাভাবিক বিষয়? সিনেমায় দেখা নায়কের চরিত্রগুলো সম্পর্কে আমরা জানি ছেলেবেলা থেকেই যে ছেলেটা সুবোধ মানবিক দর্শনীয়, বড় হয়ে সেই ছেলেটিই সিনেমার মধ্যমনি। আর যে দুষ্ট ছেলেটি ছেলেবেলায় স্কুলের বন্ধুদের মেরে রক্তাক্ত করতো, বড় হয়ে সে ভিলেনই হয়। উপন্যাসেও একই জিনিস দেখি। নায়কের মধ্যে শুধুই সাধুতা, ভিলেনের মধ্যে কেবলই মন্দতা।
ইতিহাসপাতাল মানে হচ্ছে - ইয়ে মানে যাকে বলে- হাসপাতালের ইতিহাস। ইতিহাসের হাসপাতাল ও হতে পারে। । আবার হয়তো এইটা পাতালেরর ইতিহাস। মানে ইতিহাসপাতাল ওইরকমই কিছু একটা আরকি। আসলে হাড় ভাঙ্গার হাসপাতালে নিজের হাড় ভেঙ্গে অন্যের হাড় জোড়া দেয়ার কাজ করার মাঝে মাঝে অনেক মজার মজার ব্যপারস্যপার ঘটে। ইতিহাসপাতাল সেইগুলোরই টুকরো গল্প।
পায়ের তলায় খাদ
[i]এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ..
এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
দুপুরে কেন্টিনের পচা তেলাপিয়ার মাছের ফ্রাই চুবানো ঝোল দিয়ে ভাতের গেরাসটা নিয়ে যখন মোচড়ামুচড়ি করছিল ঠিক সেই সময়ে সরফরাজের বাম পকেটের মোবাইলটা ক্যাঁক ক্যাঁক করে আর্তনাদ করতে শুরু করলো।
আমার এই অতিক্ষুদ্র জীবনের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডির ঘটনাটা ঘটে উনিশশো সাতানব্বই সালে। আমরা তখন পাঁচ বছর বরিশাল থেকে ঢাকায় শিফট করছি, হাজার খানিক কার্টন ট্রাঙ্ক স্যুটকেস এর মধ্যে আমার বইভর্তি চারটা কার্টন ছিলো। সেইটার একটাতে আক্ষরিক অর্থেই টিফিন না খেয়ে জমানো টাকায় বরিশাল এর তরুণ লাইব্রেরি থেকে কেনা ততদিন পর্যন্ত বের হওয়া সব তিন গোয়েন্দা, পঞ্চাশটার মতন সেবা অনুবাদ, তখন পর্যন্ত বের হওয়া কিশোর পত্রিকা আ
সুবর্ণ এক্সপ্রেস প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগির ঝাপসা জানালা দিয়ে উদ্দেশ্যহীন দৃষ্টিটা বাড়িয়ে দিলাম বাইরে। ঢাকা এখন আমার কাছে অচেনা একটা শহর। আমার স্মৃতির ঢাকা শহরের সাথে এই গিজগিজ উঁচু দালানের ধোঁয়াটে শহরের কোন মিলই নেই। কিন্তু এই প্ল্যাটফর্ম আমার খুব চেনা। আমাকে দেখেই যেন ওরা ডাক দিল। ডাকলে ডাকুক, আজ আমি কোন ডাক শুনতে আসিনি। টুকরো টুকরো মোজাইকের নকশা মাড়িয়ে আমি এগিয়ে গেলাম টিকেট চেকারের দিকে।