ফটোগ্রাফি নিয়ে আমার পথচলা বহুদিনের। দিন-মাস-বছরের হিসাবটা আর নাইবা করলাম। কারণ এই পথচলাটা ‘ধারাবাহিক’ নয়। মাঝে মাঝে কিছু ‘বিশাল’ বা ‘ছোট্ট’ বিরতী রয়েছে।
বিদেশ-বিভুঁইয়ে পাকি দেখলে আমি সাধারণত একশ হাত দূরে থাকি। কিন্তু সবসময় সেটা সম্ভব হয় না। বিশেষ করে আমেরিকার মসজিদগুলো সিংহভাগ থাকে পাকিদের দখলে। তার ওপর কাজে-কর্মে যে কোন সময়ই পাকিদের সাথে সাক্ষাৎ হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে আমি যা করি তা হলো তাদের পাকি পরিচয় ভুলে যথাসম্ভব ভদ্রতা বজায় রাখা। কিন্তু আপনি যতই তাদের পাকি পরিচয় ভুলে যেতে চান, তারা ততই শশব্যস্ত হয়ে তাদের আচার-ব্যবহারে জানান দিবে যে তারা ‘পাকি
বর্তমান সময়ের হটকেক হচ্ছে রাজনীতি। ফেসবুকে-ব্লগে সবাই বেশ সরব এ নিয়ে। আমি হলাম বোকা হদ্দ মানুষ, ওসব আমার মাথায় ঢুকে না। সক্কাল সক্কাল অফিস যাই, সারাদিন কামলা খাটি, এর ফাঁকে সময় পেলে ফেসবুকে ঢুঁ মেরে সবার স্ট্যাটাস পড়ি, ব্লগেও হানা দেই আর রাত করে অবসন্ন হয়ে বাড়ি ফিরে খেয়ে ঘুম।
কিছু না, কিচ্ছু না, শুধু এলোমেলো বিচ্ছিন্ন কিছু চিন্তাগুলোকে শব্দের প্রতিচ্ছবি দেয়ার চেষ্টা।
আসলেই কিছু না ...
ঢাকার নবাব শায়েস্তা খাঁর সাথে যখন আরাকানের রাজার সঙ্গে যুদ্ধ চলছিল তখন আমি১ ঢাকা যাই। শায়েস্তা খাঁ ছিলেন অতি চতুর ব্যক্তি, আরাকান রাজার অফিসারদের কোথায় কাকে কত টাকা ঘুষ দিতে হবে তা ছিল তার নখদর্পনে। এছাড়া আরাকানরাজের অধীনে কাজ করা পর্তুগীজদেরও তিনি ভাগিয়ে আনেন।
১৪ জানুয়ারি আমি নবাবকে সেলাম জানাতে তার প্রাসাদে যাই। তার জন্য ভেট নিয়েছিলাম সোনালি জরির কাজ করা রেশমি কাপড় আর বহুমূল্য একটি পান্না। সন্ধ্যায় আমি ওলন্দাজদের কুঠিতে ফেরত যাই, তাদের সাথেই আমি থাকছিলাম ঢাকায়। সেখানে নবাব পাঠালেন বেদানা, দুইটি পারস্যের তরমুজ আর তিন রকম আপেল।
দুপুর দুটো বেজে এক মিনিট। বিজ্ঞাপন তরঙ্গে সময় হল বিবি লজেন্স সঙ্গীতমালার।
১৮১১ এর ২৭ মার্চ লন্ডনে টাইমস কাগজে বিজ্ঞাপন বেরোয় যে অবসরপ্রাপ্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর অফিসারদের আর ভয় নাই, এইবার তারা ঝাঁ চকচকে নূতন হিন্দুস্তানি কফি হাউসে “নিখুঁতভাবে তৈরী ভারতীয় খাবার” চেখে দেখতে পারবেন। চার্লস স্ট্রীট আর জর্জ স্ট্রীটের কোণায় এই কফি হাউস, পোর্টম্যান স্কয়ারের কাছের এই জায়গা ততদিনে অ্যাংলো ইন্ডিয়ানদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রেস্টুরেন্টের ভেতর ভারতীয় নানাবিধ দৃশ্যাবলীর ছবি টানানো দেয়ালের পাশে বাঁশ বেতের চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে তারা ফেলে আসা ভারত উপমহাদেশের কথা ফেলে দীর্ঘশ্বাস ফেলত আর অর্ডার করত কারি। আলাদা ধূমপান কক্ষে তারা টান দিত হুক্কায়। চার্লস স্টুয়ার্ট বলে এক লোক ছিল, দুষ্টলোকে কইত তার নাকি ষোলখানা ভারতীয় বউ আর সে নাকি রোজ ভোরবেলা গঙ্গায় ঢিপ ঢিপ ডুব দিয়ে গোসল করত, সেই স্টুয়ার্ট সায়েব এই জায়গার নাম দিয়েছিলেন “হুক্কা ক্লাব”।
রেস্তোরাঁর ভারতীয় মালিক শেখ দীন মুহম্মদ তার কাস্টমারদের নিশ্চিত করতেন যে ব্যবহৃত সকল মশলা, তেল, লতাপাতা...তা সে কারির জন্যই হোক বা হুক্কার, সকলই সরাসরি ভারত হতে আমদানিকৃত এক নম্বুরি খাঁটি মাল।
বাবুর লোদীর লড়াই। ইয়া ঢিশুমা!
সম্পূর্ণ রঙ্গীন সামাজিক অ্যাকশনধর্মী ভিডিও ব্লগ। ঢাকাসহ সারাদেশে শুভমুক্তি।
ভাস্কো দা গামা কালিকটে ভিড়ার প্রায় এক শতাব্দী পরে ওলন্দাজ ইয়ান হাউখেন ফন লিন্সখ্যোতেন ১৫৮৩ এর সেপ্টেম্বরে গোয়াতে আসেন। লাইন ধরে সকল পর্তুগীজ রমণী মহানন্দে ভারতীয় খাবার খাচ্ছে দেখে তিনি তো অবাক। মূল খাবার ছিল সিদ্ধ ভাতের উপর পানির মত পাতলা স্যুপ ঢেলে তার সাথে মাছ, টক আমের আচার আর মাছ বা মাংসের ঝোল। ষোড়শ শতাব্দীর ইয়োরোপীয় যার মূল খাবার ছিল রুটি আর ঝলসানো মাংস, তার এইসব অচিন খানা দেখে অবাক লাগারই কথা। ভারতের পর্তুগীজেরা আপাত অপরিচিত খাবার খেয়ে হজম করত শুধু তাই নয়, একবারে খাঁটি ভারতীয়ের মত হাত দিয়েই খেত। রমণীরা কারো হাতে চামচ দেখলে তাই নিয়ে ভারি হাসাহাসি করত।
সারাদিন ধরে ঝমঝম বৃষ্টি। সকালবেলা আটটা নয়টার সময়ও ঘর অন্ধকার, মনে হয় ভোর ছয়টা বাজে বুঝি। দশটার ক্লাস ধরতে দশটা ছাব্বিশে কলাভবন গেটে পৌঁছে ক্লাসে যাবার বদলে গেটের সিঁড়িতেই বসে যাই, মামা এসে লেবু চা দিয়ে যায় ঐতে চুমুক দেই বসে বসে। তারপর মুজিব হলে গিয়ে ঘুমন্ত বন্ধুকে চাঁটি মেরে ঘুম থেকে উঠিয়ে ডিম-বন দিয়ে দুপুর বারোটায় নাস্তা সেরে আরেক বন্ধুর বাসা মালিবাগ চলে গিয়েছিলাম। এখন সন্ধ্যা ছয়টা, রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সামনে উত্তরাগামী বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। বৃষ্টি কমে এসেছে, তবে আবার হুড়মুড় করে নামবে যেকোন সময়। পাশেই বুটবাদামওলা গভীর মনোযোগের সাথে ভাজা বাদাম থেকে বালু আলাদা করছে। কাছে টং দোকানে ক্যাসেট প্লেয়ারে বেজে চলেছে, হাতে রানে কানে। আঙ্গুলের চিপায় চাপায় ঘাও। আমাদের এই বিচ্ছু মলম, আপনারা ব্যবহার করেন। এর একটা বড় গুণ কি জানেন?