[justify]ভাগ্যিস বাংলায় একটি খণ্ড-ত (ৎ = হসন্ত ত) আছে, তাই এই বর্ণযুক্ত শব্দের উচ্চারণে ভুল হয় খুবই কম। অর্থাৎ 'কুৎসিত'-কে আমরা 'কুৎ-সিত'-ই উচ্চারণ করি, 'কু-তসিত' নয়। তবে প্রায়ই উল্টো ফ্যাকড়া বাঁধে যখন 'ত'-য়ের বদলে 'ৎ' লিখে ফেলি। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলায় অন্ত্য অ-কারের উচ্চারণ না থাকাতেই এই অনাসৃষ্টি। যেমন, উচিত, কুৎসিত ইত্যাদি শব্দে ত-য়ের উচ্চারণ হসন্ত ত-য়ের মতো। ফলে হরহামেশাই এ-জাতীয় শব্দে [
[justify]"আমার মত অনভিজ্ঞ ও নতুন পোড়োদের পক্ষ থেকে পণ্ডিতদের কাছে আমি এই আবেদন করে থাকি যে, ব্যাকরণ বাঁচিয়ে যেখানেই বানান সরল করা সম্ভব হয় সেখানে সেটা করাই কর্তব্য তাতে জীবে দয়ার প্রমাণ হয়।" –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
দুর/দূর, কুজন/কূজন, কুল/কূল, পুত/পূত, পুর/পূর, সুতি/সূতি, অনুপ/অনূপ, অনুদিত/অনূদিত, কুট/কূট, ধুম/ধূম, আহুতি/আহূতি–ইত্যাদি অজস্র শব্দের উচ্চারণই অভিন্ন, তবু বানানের তারতম্যের কারণে অর্থ আলাদা হয়ে যেতে দেখা যায়। বাংলায় নাকি উ-কার ( ু) ব্যবহার হয় হাজারে ১৭টা আর ঊ-কার ( ূ) হাজারে মাত্রই ১টা। তাই 'উ' ব্যবহারকে ঊন বলা না-গেলেও 'ঊ' ব্যবহার কিন্তু সত্যিই
[justify]শব্দের সুতোয় গাথা এক একটি বাক্য, আমরা তাকে বলি ভাষা। একটা বাক্য মানে কি কেবলই কিছু শব্দের সমাহার?—না। কারণ, বাক্য তৈরি হয় শব্দ সাজিয়ে। শব্দগুলো এলোপাতাড়িভাবে বসে না; বসলে অর্থ বোঝা যায় না, আর অর্থ না-বুঝলে বাক্যও হয় না। অর্থাৎ একটি বাক্য হলো কিছু শব্দের সারি এবং সেই সারিতে কার পাশে কে বসবে তার নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে শব্দগুলোকে পরপর বসতে হবে। ১
বাংলা ভাষা মানুষ বা তরুর মত জন্ম নেয়নি, কোন কল্পিত স্বর্গ থেকেও আসেনি।—হুমায়ুন আজাদ
গবেষকদের মতে বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় সাত হাজার ভাষা প্রচলিত আছে। অবশ্য সব ভাষার লিপি নেই। আবার লিপি আছে, কিন্তু কিছু ভাষাকে মাতৃভাষা হিসেবে ব্যবহারের মানুষ নেই। যেমন, লাতিন ও সংস্কৃত ভাষা। আর পৃথিবীতে প্রচলিত প্রধান ভাষাগুলোর একটি সম্পর্ক লক্ষ করে ভাষাবিজ্ঞানীরা এদের পরিবারভুক্ত করেছেন। এই ধারায় আমাদের বাংলাসহ গ্রিক, ল্যাটিন, ইংরেজি, হিন্দি, ফারসি, ফরাসি, ডাচ, নেপালি ইত্যাদি ভাষা হচ্ছে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশের অন্তর্ভুক্ত। [১]
“উচ্চারণ যেন ঠিক নদীর বহমান জলের মতো, প্রতি মুহূর্তে তার দিকপরিবর্তন হচ্ছে, কিন্তু বানান থাকে পাথরে খোদাই, তাকে মোছা কঠিন। লিখন ও মুদ্রণ প্রক্রিয়াই বানানের অজরত্ব এনে দেয়। বানানের কোনো পরিবর্তন দেখলেই তাই আমরা গোঁড়া হয়ে পড়ি। আরে এই ফটো তো সেই লোকের (শব্দের) নয়, একে মানি না। কানের ভিতর দিয়া যা মরমে পশে, তার চেয়ে চোখের ভিতর দিয়ে যা মগজে পৌঁছায় তার ওজন বেশি, সে খাঁটিকে ধমক দেয়, তুমি যা- ...
... বানান ব্যক্তির সম্পত্তি নয়, তাই তা ব্যক্তির ইচ্ছাধীন ভৃত্যও নয়; বানান ভাষার সম্পত্তি, ব্যাকরণের নিয়ন্ত্রণাধীন। এই অধিকারের সীমানা সম্পর্কে ঔচিত্যজ্ঞান থাকলে বানানের ক্ষেত্রে নিয়মনিষ্ঠা প্রতিষ্ঠা করা যাবে, নইলে নয়। –হায়াৎ মামুদ
অর্থভেদে অভিন্ন বানানকে কার-এর সাহায্যে ভিন্ন বানান করার প্রবণতা প্রথম শুরু হয়েছিল রবীন্দ্রনাথের মাধ্যমে। তিনিই প্রথম কি শব্দের ভিন্ন ভিন্ন ...
আমরা যে ধ্বনি উচ্চারণ করতে পারি না তা শুনতেও পাই না। যদি বা শুনি, ভুল শুনি। বাংলাদেশের বেশ কিছু আঞ্চলিক ভাষাতে ড় ধ্বনি নেই কিংবা প্রায় নেই। অনেকেই তাই এই ধ্বনি দুটিকে ভিন্নভাবে উচ্চারণ করেন না। এঁদের উচ্চারণে পড়া/পরা, কড়া/করা একই রকম শোনায় (জোড়ার দ্বিতীয় শব্দটির মতো)। এদিকে আড়জেরাই বা কম কিসে? তাঁদের উচ্চারণেও পড়া/পরা, কড়া/করা একই রকম শোনায়। তফাৎ শুধু এই যে, এঁরা উচ্চারণ করেন ...
'পাঠ্যবইয়ের বানান’ শিরোনামে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) একটি বই রয়েছে। অথচ নিজের তৈরি ওই বানানরীতি এনসিটিবি নিজেই মানে না বলে শিক্ষকরা অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা আর কত দিন 'খিচুড়ি' ভাষা শিখে বড় হবে এই প্রশ্নটি যখন ক্রমেই উচ্চকিত হয়ে উঠছিল ঠিক তখনই মাধ্যমিকের সব পাঠ্যবইয়ে বাংলা একাডেমীর প্রমিত বাংলা ব্যবহারের সিদ্ধান্তটি এল। এ মা ...
অর্থবোধক ধ্বনির সমষ্টিই ভাষার প্রধান উপাদান। বর্ণ ধ্বনির প্রতিনিধিত্ব করে। তাই যদি সত্যি তাহলে মুখের উচ্চারণ আর ভাষার লিখিত রূপের পার্থক্য থাকার কথা নয়। কিন্তু বিশ্বের অধিকাংশ ভাষাতেই শব্দের বানান ও উচ্চারণে পার্থক্য রয়েছে। ইংরেজির কথাই ধরা যাক। ইংরেজিতে এক 0 দিয়ে বোঝানো হয় অ (hot), ও (note), আ (dove), উ (move) প্রভৃতি ধ্বনিকে। আবার বিপরীত ঘটনাও রয়েছে। অর্থাৎ উচ্চারণ একই, কিন্তু বানান ভিন্ন। ...
বাংলা বর্ণমালায় আর-একটা বিভীষিকা আছে, মূর্ধন্য এবং দন্ত্য ন’এ ভেদাভেদ -তত্ত্ব। বানানে ওদের ভেদ, ব্যবহারে ওরা অভিন্ন। মূর্ধন্য ণ’এর আসল উচ্চারণ বাঙালির জানা নেই। কেউ কেউ বলেন, ওটা মূলত দ্রাবিড়ি। ওড়িয়া ভাষায় এর প্রভাব দেখা যায়। ড়’এ চন্দ্রবিন্দুর মতো ওর উচ্চারণ। খাঁড়া চাঁড়াল ভাঁড়ার প্রভৃতি শব্দে ওর পরিচয় পাওয়া যায়। –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (বাংলাভাষা-পরিচয়)
রূপকথার ...