ফের এই বইটা পড়লাম, শেষ বার যখন পড়ছিলাম তখন ছিলাম আলাতাও পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত কাজাখস্তানের অপূর্ব পার্বত্য শহর ও পুরাতন রাজধানী আলমতিতে ( Almaty), ভ্রমণের সময় নানা কারণে অসম্ভব আনন্দময় সময়ের সাথে সাথে প্রচুর উৎকণ্ঠা, ঝুঁকি এইগুলোও থাকে, তাই অনেকটা stress drain করার জন্য ভ্রমণের মাঝে আমি সবসময়ই খুব সুখপাঠ্য প্রিয় বইগুলো ফের পড়তে থাকি, বিশেষ করে কৈশোরের প্রিয় বইগুলো। যাহোক শেষ বিকেলের আলো যখন আলা
[justify]
শহরের যে প্রাণ আছে এই আবিষ্কারটা কেউ করেনি। প্রাণ কিন্তু সত্যি সত্যি আছে। হঠাৎ করেই কোন একদিন মানুষ সেটা উপলব্ধি করে। কেউ কেউ হয়ত কোনদিনই করে না। কিন্তু তাই বলে শহরের প্রাণটা কিন্তু মিথ্যা নয়। শহরগুলো প্রায় মানুষেরই মতো – তাকে ভালোবাসা যায়, ঘৃণা করা যায়, ভুলে থাকা যায়, তার জন্য চোখের জলও ফেলা যায়, আবার চাইলে তাকে হত্যাও করা যায়। শহরের গল্পগুলো তাই মানুষের গল্পের মতোই – অফুরন্ত।
[justify]
"স্মৃতির শহর" ই-বুক আকারে প্রকাশিত হয়েছে। বইটা এখান থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন।
আমার স্মৃতির শহরটা বড়ই সুন্দর। সেখানের বিকেলগুলো লম্বা আর নরম, মোলায়েম রোদের আলোতে স্নান করে রাস্তার পাশের বড় বড় কৃষ্ণচূড়া গাছ, তাতে বসে থাকে হলুদ রঙের কুটুম পাখি। শব্দ আছে হরেক রকমের, গাড়ির হর্ণ থেকে ঝালমুড়িওয়ালার হাঁকডাক, আছে সুরের মত রিকশার টুংটাং আওয়াজ। দূর থেকে কান পাতলে মনে হবে যেন সঙ্গীত শুনছি। সেই শহরে হেমন্তের সকালগুলো ঘুম ঘুম কুয়াশা মাখা, বসন্ত হাজির হয় সংগোপনে; গ্রী ...
আম্মা আমাকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে নিজেই ঘুমিয়ে পড়েছেন। এই ঘটনা বেশি বিরল নয়, দুপুরে একটা বই হাতে নিয়ে শুয়ে পড়তেন, সাথে আমি। বইটা হতে পারে "কেরি সাহেবের মুন্সি" অথবা "অনুবর্তন", যা-ই হোক না কেন, দুপুর বেলা ছাপার অক্ষরে চোখ বুলানো চাই। সেই সময় আমার দুপুরে ঘুমাতে অসহ্য লাগতো, যদিও এখন ফাঁক পেলেই আমি নিদ্রাদেবীর বন্দনা করি।
আম্মা ঘুমিয়ে গেলেই আমি সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসি। আমাদের বা ...
দিনটা এখনো শুরু করিনি। আমার বাসার কাজের টেবিলে সকালের রোদ্দুর এসে পড়েছে, জানালা খুলতেই একঝাঁক ঠাণ্ডা বাতাস মুখে এসে পড়ে, বাইরের মাঠে স্বাস্থ্যপ্রেমীদের ছোটাছুটি, পাখিদের ডাকাডাকি, ফুলের সৌরভ -- সর্বত্রই দিনশুরুর প্রস্তুতি। ওরা সবাই মিলে ডেকে আনে আমার বালকবেলা, সেই উনত্রিশ নম্বর বাড়িতে আমি পৌঁছে যাই এক নিমেষে।
স্মৃতির দিনগুলো ঝকঝকে হয়, মলিনতা ঝেড়ে ওরা সর্বদাই তরতাজা। ওখা ...
“এই হনুমান স্টুপিড তোরা দুইটা বেঞ্চের উপর দাঁড়া”...আতাহার হোসেন স্যার আদেশ করলেন আমাকে আর পাপুকে। আমরা ক্লাসের ফোরের বালক, পেছনের বেঞ্চে বসে কথা বলছিলাম। ধরা পড়লে শাস্তি পেতে হয়, তাই বিরস মুখে আমরা বেঞ্চের উপরে দাঁড়িয়ে যাই। বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে যেন এক নতুন জগতের সন্ধান মিলল। একঝাঁক বিস্ময় নিয়ে দেখলাম দূরে ঢাকা কলেজের মাঠের পেছনে একটা রূপালি রঙের পুকুর।
“পাপু ...
ধুদ ১টা ৩/-
মুরঘি ১টা ১৫/-
আঠা ১ সের...
আম্মা চোখ কুঁচকে আলোর লেখা বাজারের হিসাব পড়তে থাকেন। উর্ধ্বগামী খরচের চেয়ে বানান ভুলের প্রাবল্যই হয়ত তাঁকে বিচলিত করে বেশি। যেকোন ভুল বানান সংশোধন করাটা তাঁর প্রায় স্বভাবের অন্তর্গত হয়ে গেছে। তিনি ছিলেন বিস্ময়কর প্রতিভা, ইংরেজী, বাংলা, অঙ্ক, ভূগোল, সাহিত্য সব বিষয়েই তাঁর পান্ডিত্য ছিল অগাধ, একাধিক বিদেশি ডিগ্রি কুক্ষিগত করেছেন অনায়াস দক্ ...
সব মানুষেরই মনে হয় একটা পরিসীমা থাকে। আমাদের সকল দৈনন্দিন আর পার্থিব জগতের দূরত্বগুলো মাপার জন্য আছে নানান পরিমাপ, আছে নানান দ্রুতগামী আর শ্লথ সব বাহন। জাগতিক সবই কিছুই আমরা করি এক পরিসীমার ভেতরে থেকে। শুধু স্মৃতির শহরেই এসব কিছুর বালাই নেই, সেখানে স্থান-কাল-পাত্র সবকিছুই অর্থহীন, পার্থিব সবই মূল্যহীন। একটা মিমি চকোলেটের জন্য আক্ষেপও শেয়ার মার্কেটে কোটি টাকার হারানোর বেদনা ...
বইপড়ার অভ্যেসটা আমার বেশ অল্প বয়েসেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশে টেলিভিশনের তখন একটাই চ্যানেল, তার সাথে যুদ্ধ করে বিনোদন মাধ্যম হিসেবে বইয়ের টিঁকে থাকা বেশ ভালোই সম্ভব ছিল। বন্ধুদের অনেকেই প্রচুর বই পড়ত, আমাদের বাসাতেও অনেক ধরণের বই ও পত্রিকা আসত। আমি আনন্দমেলা পড়তাম নিয়মিত, বাংলাদেশে ছোটদের পত্রিকা বলতে ছিল “কিশোর বাংলা” আর “ধানশালিকের দেশে”। মুহাম্মদ জাফর ইকবালের ...