ছোটবেলা থেকেই আমার অনেক কিছু পারার বড় শখ। পড়াশুনা, খেলাধূলা, গানবাজনা, সাইকেল চালনা ইত্যাদি ইত্যাদি। নিজকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে জাহির করা মুখ্য উদ্দেশ্য। যেন সবাই অন্তত পিঠ চাপড়ায়। কিন্তু নিষ্ঠুর নিয়তির নির্মম পরিহাস! আমি পারতে শিখি শুধু একটা জিনিসই; তা হল কোনো কিছু না পারতে কিংবা পারা একটা সহজ কাজকে পাড়া দিয়ে দলা পাকিয়ে দিতে। ফলস্বরূপ প্রায়শই আমি পিঠ চাপড়ানোর পরিবর্তে হজম কর ...
আমার জগতে তখন সাদাকালোর কোন ঠাঁই ছিলনা, পুরোটাই ছিল ভীষণ রকম রংদার। স্কুলের ঘন্টা বাজত ঢংঢং, একছুটে চলে যেতাম লালচে ইটের স্কুলমাঠে, বিকেলের ফিকে আলোয় দেখতে পেতাম যেন রংধনুর সাত রঙ। বাড়ি ফেরার সময় চারপাশটা আগাপাশতলা চেখে ফেলত আমার নবিশ চোখ; টুংটুং করে বেল বাজানো রিকশাওয়ালা, স্টেশনারি দোকানের ক্লিশে সাইনবোর্ড, অদূরের প্যারেড ময়দান কাঁপিয়ে বেড়ানো ছোকরার দল, সবকিছুই দেদারসে আনন্ ...
আমার একটা আপেলগাছ ছিলো। তার ডানে-বামে আরো দুটো গাছ ছিলো। বাগানজুড়ে ছিলো আরো শখানেক। কিন্তু ঐ গাছটা শুধু আমারই ছিলো। আমাদের ছোট্ট উঠোনের পাড় ঘেঁষে একটু ঝুঁকে দাঁড়িয়ে থাকত। বরফচাপা শীতের শেষে তার ডালে দোলনা ঝুলিয়ে দিত আব্বু। মেহদি একবার গাছে উঠে চুপিসারে দড়ি কেটে দিয়েছিলো। আর আমি ধপাস করে মাটিতে।
মেহদিটা ভীষণ দুষ্ট ছিলো। একবার আপেল ছুঁড়ে মেরেছিলো আমার দিকে। সেটা সোজা এসে লেগে ...
আমাদের ইশকুলে যাবেন? আচ্ছা আচ্ছা বলে দিচ্ছি কিভাবে যেতে হবে। ফার্মগেট থেকে ঢাকা কলেজে যাওয়ার টেম্পো ধরবেন, এটাকে আমরা হেলিকপ্টার বলি। উঠলেই বুঝবেন নামকরণ কতখানি সার্থক। ভট ভট শব্দে কানের পোকা আর ঝাঁকানিতে বাতের ব্যথার অনেকখানি উপশম হতে পারে। যাওয়ার পথটা কিন্তু দারুন, একদম "সিনিক"। হেলিকপ্টার আপনাকে গ্রীন রোড ধরে সোজা কাঁঠাল বাগান পার করে উড়িয়ে নিয়ে যাবে গ্রীন কর্নারের সামনে ...
স্মৃতির শহর কিন্তু থাকার জন্য দারুন। ওখানে না-গরম, না-ঠান্ডা, লোকজনের ব্যবহার মধুর, রিকশা ভাড়াও বেশ কম। কলে পানি পাওয়া যায় ঠিকমতই, ধূলাবালির প্রকোপ তেমন নেই, মশার উপদ্রব সহনীয়, অসুখ বিসুখের বালাই নেই, কাজকর্ম করলেও চলে, না করলেও অসুবিধা নেই। লোডশেডিং শুধু পূর্ণিমা রাতেই হয়, সাথে একটু উতল হাওয়াও থাকে। বিনা টিকেট, বিনা পাসপোর্টে সেখানে ঢোকা যায়, যতদিন খুশি থাকুন সেখানে কেউ কিছু বলবে ...
শৈশবের লাশ কাঁধে নিয়ে বয়ে বেড়ানো মানুষ আমি।
ভূতের পায়ের মত আমার পা গুলো উলটো---আমার সামনে এগুনো মানেই পেছনে ফিরে চলা। এখন এমন এক সময় এসেছে জীবনে, যখন পেছনে ফেলে আসা সবকিছুর জন্যে আমার নির্লজ্জ কাঙালপনা।
এই যে গানটা নিয়ে এলাম আপনাদের কাছে,এ আমার কিছু শৈশবের কথা, স্থান-কালের অলংঘনীয় ব্যবধান আমাকে যার কাছে ফিরে যেতে দেয় না।
গানটার মুখড়া আমার ছোটবেলায় শোনা একটা বিজ্ঞাপনের কথা। খু...
স্মৃতির শহর -২: ইচ্ছে হয় কান পেতে থাকি
ঝকঝকে একটা দিন, জ্বালা ধরানো নয় বরং বেশ শান্ত ও সুশীল টাইপের রোদ উঠেছে। উত্তাপহীন রৌদ্রকরোজ্জ্বল এই দিনে আকাশটাও বেশ ঘন নীল, খুঁজলে কিছু সাদা মেঘও পাওয়া যাবে। এই রকম দিন আপনি বাস্তবে বেশি না পেলেও স্মৃতির দিনগুলো হরহামেশাই এই ধরনের হয়। আমি মাঝে মাঝে এখনো দেখতে পাই এই রকম একটা দিনে আমাদের বাসার ছাদে দাঁড়িয়ে আমি আর তিথী মুগ্ধ চোখে রেলগাড়ি দেখ...
প্রথমেই একটা বিষয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে নেই। কোন কিছুর বর্ণনা টাইপ কিছু লিখতে গেলে আমার দু' চারটা কি-বোর্ড ভাংতে হয়। গুছায় কিছু লিখার গুনটা ইন্টার পরীক্ষা দেয়ার পর পরই বোধ হয় ধুয়ে মুছে শেষ।তাই লিখার পিচ্চি সাইজ দেখে নিজ গুনে ক্ষমা করবেন।
বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ পিচ্চি পোলাপান। এদের মোদ্ধে আবার একটা বড় অংশ বড় হয় গ্রামাঞ্চলে। আমরা অনেকেই এদের অধিকার, শিক্ষা, স্বাস্...
মোরগফুল বলে একটা অদ্ভূত ফুলগাছ ছিলো ছেলেবেলায়
‘ঐ দেখা যায় তালগাছ’ পড়ার বয়সে ফুলগাছটা ছিলো
পড়ার টেবিল বরাবর জানালার কাছে
প্রতিদিন জানালার গরাদে আমি ওর উচ্চতা মেপে রাখতাম
শিক বেয়ে প্রতিদিন একটু একটু উপরে ওঠতো সে
তরতরিয়ে লকলকিয়ে আলোর সাথে পাল্লা দিতো
সারাটা সকাল বাংলা বই নিয়ে ঠায় বসে থাকি
বাতাস এলেই মোরগফুলের পাতাগুলো নড়ে
কবিতার আট লাইনও মুখস্থ হয় না সারাদিনে
স্কুলের বারা...
নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার মাসখানেকের মধ্যে লক্ষ্য করা গেল, সেখানে নতুন কারও সাথে পরিচয় হওয়ার পর নাম এবং আরও কয়েকটি খুটিনাটি প্রশ্ন করার পর য...