সিকিম - ঝর্ণা যেথায় বসত করে - ১

দময়ন্তী এর ছবি
লিখেছেন দময়ন্তী (তারিখ: শুক্র, ২২/০৪/২০১১ - ১২:৫৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সচলের ই-বইয়ে দেব বলে লিখতে বসে দেখি আমি এমন হ্যাজানো পাবলিক যে পুরো সিকিম নিয়ে লিখতে গেলে আস্ত একটা ই-বইই হয়ে যাবে৷ অগত্যা মাঝের এক টুকরো সেখানে দিয়ে বাকীটা ভাবলাম আস্তে আস্তে লিখে ফেলি৷ তা, এই রইল প্রথম টুকরো৷

যাই ... যাই .... কই যাই?
=================

একবছরেরও কিছু বেশী সময় নানারকম সমস্যায় পর্যুদস্ত হতে হতে যখন হাতপায়ের নখগুলো পর্যন্ত ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, তখন মনে হল নাঃ আর নয়। এবারে কোথাও একটা যেতেই হবে। পাহাড়ে, মানে হিমালয়ের কোথাও না কোথাও। এদিকে পুজোর সময়ে কলকাতা ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল বিভীষিকাস্বরূপ। কাজেই ঐসময়ই যেতে হবে।

প্রথম চেষ্টা হল অরুণাচল। বন্ধুরা বলল ওখানে একা যাওয়া একটু বিপজ্জনক হতে পারে৷ ট্র্যাভেল এজেন্ট খুঁজতে লাগলাম। কিন্তু ঠিক জমল না। কেউ বলে 'আমরা একটা ছো-ও-ট্ট গ্রুপ মানে মাত্র ২০ জন নিয়ে যাব'। কেউ বলে 'আমরা তো লক্ষ্মীপুজোর আগে রওনা হব না'। এদিকে দিন চলে যায় ..... দিনযাপনের ক্লান্তি আরও বাড়ে .... মরীয়া হয়ে ভূটান যাবার চেষ্টা দেখলাম। বাপরে! সে কি খরচ!! ও ভুটান পরে হবে ভেবে কাটিয়ে দিয়ে শেষমেষ সিকিম।

টিকিট নাই .... হোটেল নাই
=================

সিকিম যাব এটা স্থির করেই হুড়মুড়িয়ে হোটেল বুকিঙের চেষ্টা শুরু করলাম। ট্র্যাভেল এজেন্ট তো যথারীতি সব ই 'লাক্সারি' আর 'লাক্সারি ডিলাক্স' বলে বলে বেদম ভাড়া চায়। অগত্যা নিজেই নেট ঘাঁটতে শুরু করলাম। প্রথমেই ফেরার টিকিটের সন্ধান, কারণ যাই আর না যাই ২৪ তারিখের মধ্যে ফিরতে আমাকে হবেই। তো প্রচুর খোঁজাখুঁজি করে 'জয়দাদা'র শিলিগুড়ি ট্যু কলকাতা ভলভোতে ২৩ তারিখ রাতে জায়গা পাওয়া গেল।

যাক ফেরাটা নিশ্চিন্ত। এবারে থাকাটাকার বন্দোবস্ত দেখা যাক। তারপরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা যাবে৷ তো, আমার প্ল্যানটা দাঁড়াল::=
১৪ অক্টোবর গ্যাঙটক পৌঁছন।
১৫ অক্টোবর গ্যাঙটক সাইটসিয়িং
১৬ অক্টোবর ছাঙ্গু, বাবামন্দির, নাথুলা
১৭ অক্টোবর গ্যাঙটাক ট্যু লাচেন ভায়া সেভেন সিস্টার ফলস, নাগা ফলস, সিংহিক ভিউ পয়েন্ট
১৮ অক্টোবর গুরুদোংমার লেক, চোপতা ভ্যালী হয়ে ঘুরে এসে লাচুং
১৯ অক্টোবর কাটাও গ্রাম, ইয়ুমথাং ভ্যালী হয়ে গ্যাঙটকে হোটেলে ফেরত।
২০ অক্টোবর সকালে পেলিঙের দিকে চলে যাব।
২১ অক্টোবর পেলিঙ সাইটসিয়িং
২২ অক্টোবর রাভাংলা
২৩ অক্টোবর শিলিগুড়ি এসে রাতে বাস ধরব।
২৪ সক্কালবেলা আবার কলকাতা।

বন্ধু অরিজিতের সাথে নর্থ সিকিমের একটা প্যাকেজ বুক করলাম, 'ফরচুনা হোটেলস অ্যান্ড রেসর্টস'৷ পেলিঙের বুকিং টুকিং ভাবলাম গ্যাংটকে গিয়েই করব।

এইবারে গ্যাঙটকে পৌঁছোবার একটা ব্যবস্থা দেখতে হয়। ট্রেন তো টিকিট পাবার প্রশ্নই নেই, বাসেও টিকিট নেই। অগত্যা প্লেনে বাগডোগরা পৌঁছব ১৪ দুপুরে।

গ্যাংটক - ০
========

১৪ তারিখ সকালে যখন বেরোচ্ছি, হাউসিঙের পুজো কমিটির যিনি চাঁদা নিয়ে সবচেয়ে বেশী জোর করেছিলেন, তিনি দেখতে পেয়ে বললেন 'আরে আপনি এই পুজোর মধ্যে বেড়াতে যাচ্ছেন!?' তা, তাই তো বলেছিলাম বাপু, যে আমি পুজোয় থাকবই না। সে যাগ্গে, রাস্তা টাস্তা বিলকুল ফাঁকা, হু-হা করে এয়ারপোর্ট পৌঁছে গেলাম। বাগডোগরা নামলাম বেলা 1.15 নাগাদ। নেমে জানলাম বাগডোগরা থেকে গ্যাংটক যাওয়ার হেলিকপটার সার্ভিস আছে। ভাড়া ৩২০০/-। বয়স্ক লোক, যাঁদের পাহাড়ী রাস্তায় কষ্ট হয়, তাঁদের জন্য ভাল অপশান। তবে আমি বলব ঐ পাহাড়ী রাস্তায় ঘুরে ঘুরে সইয়ে সইয়ে ওঠাই ভাল। হঠাৎ করে ৫০০০ ফুট উচ্চতায় গিয়ে উপস্থিত হলে বয়স্ক অথবা দুর্বল হৃদয়ের লোকদের নিঃশ্বাসের কষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বাগডোগরা থেকে গ্যাংটক ১২৪ কিলোমিটার। সবচেয়ে সস্তা হয়, কিছু একটা ধরে শিলিগুড়ির তেনজিং নোরগে বাসস্ট্যান্ডে এসে সেখান থেকে গ্যাংটকের জন্য ভাড়া করা। তো, আমার মত একটু আলসে ধরণের লোকের পক্ষে সেটা অল্প চাপের, তাই প্রিপেড বুথে গিয়ে দাঁড়ালাম। তাঁরা জানালেন গ্যাংটকের ভাড়া ১৬৯০/-, ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে নামিয়ে দেবে, হোটেলে ড্রপ করবে না। অগত্যা প্রিপেডের স্লিপ নিয়ে বাইরে আসতেই একজন এসে ধরল, তারই ট্যাক্সির নাম্বার দেওয়া। সে জানাল গাড়ী হল মারুতি ভ্যান। আমাকে গাড়ীর সামনে দাঁড় করিয়ে সে বলল 'এটায় তো আপনার খুব কষ্ট হবে, হোটেল অবধি যাবেও না, দাঁড়ান আপনাকে একটা ওয়াগন আর ব্যবস্থা করে দিচ্ছি'। পাশে দেখলাম এক দম্পতি প্রচন্ড চেঁচামেচি করছেন যে তাঁরা আর এক পয়সাও এক্সট্রা দেবেন না .... ইত্যাদি। এদিকে ড্রাইভার কোথায় চলে গেছে কে জানে! দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছি তাহলে হোটেলে পৌঁছাতে নিশ্চয় কিছু অতিরিক্ত চাইবে, তা চাক, কিন্তু তাহলে প্রিপেড ব্যপারটা কি পুরো আইওয়াশ! এইসব ভাবতে ভাবতেই প্রচন্ড হইহট্টগোল। একজন মারাত্মক মোটা লোক এসে আমার জন্য নির্দিষ্ট ওমনিভ্যানের ডিকিটা দ্বাম করে খুলে ফাঁকা দেখে আরো জোরে দ্বাম করে বন্ধ করে দিল, সাথে নেপালী ভাষায় যা সব বলছে, সেগুলো নির্ঘাৎ খুব একটা শিষ্ট ভাষা নয়।

পেছনে পেছনে ড্রাইভার দৌড়ে এসে 'এই যে ম্যাডাম দাঁড়িয়ে আছেন, ওঁর সঙ্গেই মালপত্র', বলে আমার স্যুটকেসটা ধরতে যেতেই সেই বিশালবপু লোকটি দাঁত খিঁচিয়ে আবার কতগুলো কিসব বলে আমার স্যুটকেসটা ধরে টানার চেষ্টা করল। আমি ব্যপার দেখে কিঞ্চিৎ ঘাবড়ালেও স্যুটকসের হাত্ল একেবারে শক্ত করে চেপে ধরেছি, যাকে বলে বজ্রমুষ্টি।

হই হট্টগোলের মাঝে যা বুঝলাম গ্যাংটকের কোন যাত্রী এলে তাদের কোন স্থানীয় নেপালী ড্রাইভার নিয়ে যাবে, গ্যাংটকের আশেপাশে যার বাড়ী। দার্জিলিং, কালিম্পং ইত্যাদির ক্ষেত্রেও সেরকমই নিয়ম। সমতলের কোন যাত্রী এলে বাঙালী ড্রাইভার তাকে নিয়ে যাবে। আমার জন্য নির্দিষ্ট গাড়ীর ড্রাইভার ঐ মোটা এবং রাগী ভদ্রলোককে বারবার বোঝায় আমি যেহেতু ভেতর থেকে 'স্লিপ কাটিয়ে' এনেছি, তাই আমাকে ওর গাড়ীর কাছে না এনে ওর উপায় ছিল না, কিন্তু ঐ নিজে থেকে ওঁদের খুঁজতে গেছে। তিনি কিঞ্চিৎ সন্দেহ প্রকাশ করায় আমি তাড়াতাড়ি প্রিপেডের কাগজ বের করি। আর উনি লজ্জায় জিভ টিভ কেটে আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে আমাকে নয় ঐ ড্রাইভারকেই আসলে সন্দেহ।

যাই হোক সবাই মিলে আমাকে একটা চকোলেট রঙের ওয়াগন আরে তুলে দিল। লক্ষ্যণীয় ব্যপার হল এই গাড়ীর ড্রাইভার কিন্তু এতক্ষণ নির্বিকারভাবে কানে ইয়ারফোন গুঁজে চ্যুইংগাম চিবোচ্ছিল, একটাও কথা বলে নি। উঠে পড়তেই সেও কান থেকে প্লাগ খুলে গাড়ীতে উঠে চালিয়ে দিল। মিনিট দশেক চলার পরে আমার হোটেলের নাম জিজ্ঞাসা করল। এরপর শুরু হল NH-31A ধরে চলা। বেশ কিছুদূর অবধি তো বিশ্রি গুমোট গরম, মাঝে মাঝে রঙ্গিত নদী দেখা দিয়ে যায়। এদিকে দুপুরের ফ্লাইট হওয়ায় খাওয়াদাওয়াটা কেমন ঘেঁটে গেছিল। বেজায় খিদে পেয়েছে, কিন্তু ড্রাইভার ছেলেটি কিছু কানেই তোলে না .... বাঁইবাঁই করে চালিয়ে যাচ্ছে। শুরু হয়ে গেল পাহাড়ী রাস্তা, এঁকেবেঁকে ঘুরে ঘুরে ওঠা। তারমধ্যে হঠাৎ একজায়গায় নীচের দিকে হাত দেখিয়ে বলে 'হু-উ-উ-ই যে দেখা যায় ড্যানীর বিয়ারের কারখানা .. খুউব ভাল হুঁ হুঁ'৷ কিন্তু খাবার? খাবার কোথায় পাব? 'ইঁহা নেহি, উপর চলো, উঁহা মিলেগা'। খাদের দিকে রাস্তার ধারে পাথরের ওপরে অসংখ্য বাচ্চা, বুড়ো বাঁদর বসে আছে। কেউ উকুন বাছছে, কেউ গম্ভীরমুখে গাড়ী দেখছে, কেউ পেছন ফিরে উদাসমুখে বসে নদী দেখছে। কেউ বা কোন সুন্দরী বান্দরীর মনোযোগ টানতে নানারকম কসরত করছে। ইতিমধ্যে সঙ্গ নিয়েছে তিস্তা।

রাস্তা রীতিমত খারাপ। মুড়ির টিনে বন্দী ঝালমুড়ির মত ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে রংপো পৌঁছোলাম। সেখানে মস্ত বড় রেস্টুর‌্যান্টে পকোড়া ভাজার সুগন্ধ। কিন্তু হায় পার্কিঙে জায়গা নাই বলে গাড়ী দাঁড়াল না। তখন খিদের চোটে আমার ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছে। ড্রাইভার ভরসা দিল সিংতামে ঠিক খাওয়া পাওয়া যাবে। সিংতাম যখন পৌঁছোলাম তখন ঘুটঘুটে অন্ধকার। আর সেখানে তখন পাওয়ার কাট। ফলে গাড়ী গিয়ে যখন একটা মিষ্টির দোকানের সামনে দাঁড়াল, তখন টিমটিমে মোমবাতির আলোয় মনে হল ছোটখাট কোন জায়গায় এসেছি। কিন্তু পরে দিনের বেলা দেখেছি সিংতাম বেশ বড়সড় জায়গা। যাই হোক সেই মিষ্টির দোকানে রসগোল্লা আর চা খেয়ে আবার রওনা দিলাম। এদিকে ক্ষিদেয়, অনেকদিন পরে পাহাড়ী পথে ঘুরে ঘুরে ওঠা আর ঝাঁকুনিতে আমার অবস্থা কাহিল। ওদিকে পাহাড়ে নিকষ কালো অন্ধকার নেমে এসেছে।

সিংতামের পরে আর কোথাও দাঁড়ানো নেই, সোজা গ্যাংটক। শহরটাকে রাতের বেলায় দেখেও মোটামুটি বড়ই মনে হল। আমার হোটেল আড়িথাং এলাকায়, যেটা এমজি মার্গ থেকে দুই ধাপ নীচে। হোটেলে পৌঁছে জানা গেল ট্র্যাভেলগুরু আমার ১৪-১৫ র বুকিঙের খবর ওদের জানালেও ১৬ তারিখেরটা জানায় নি। কি অদ্ভুত! কেন? তার কোন উত্তর ওদের কাছেও নেই। এদিকে ১৬ তারিখ নবমী -- হোটেল পুরো বুকড| কোনো ঘর নাকি খালি নেই। আমি পেমেন্ট কনফার্মেশান, ট্র্যাভেলগুরু থেকে আসা বুকিং কনফার্মেশান দেখালাম। হোটেলের বাঙালী পার্টনার তখন বললেন 'ঠিক আছে ঠিক আছে কিছু একটা ম্যানেজ করে দেওয়া যাবে'

এই ক্রিস্ট্যাল প্যালেস' হোটেলটা মোটামুটি। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, গরম জলটলও আছে। অপেক্ষাকৃত ভাল কোথাও জায়গা না পেলে চলে যায় আর কি। তবে সেই ১৬ তারিখে ওরা যে ঘরটা দিয়েছিল সেটা অতি বাজে। মানে তখনও লাচেনের হোটেল দেখিনি তো, তাই বেশ রাগ করেছিলাম।

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি তাশি-ডেলেক হোটেলের ছাদ থেকে নাকি কাঞ্চনজঙ্ঘার চমৎকার ভিউ পাওয়া যায়। তবে সে হোটেলের চার্জ প্রচুর বেশী। গ্যাংটকের কিছুটা আগে একটা ভিউ পয়েন্ট থেকেও নাকি কাঞ্চনজঙ্ঘার ফুল-ভিউ পাওয়া যায়। কিন্তু রাতের বেলায় আসায় সেও আমার দেখা হয় নি।

যাই হোক, খেয়েদেয়ে ঘুম দেওয়া গেল। কাল সকালে উঠে সাইট সিয়িঙের ব্যবস্থা করা যাবে।

*এখন ছবি যোগ করতে ল্যাদ লাগছে, পরে দেবোখনে৷ হাসি


মন্তব্য

হাসান মোরশেদ এর ছবি

সিকিম যাওয়া হয়নাই, অরুনাচল গেছি- তাও গত শতাব্দীতে।
এখন যাইতে মঞ্চায় আবার- অরুনাচল, মিজোরাম, মনিপুর, সিকিম, হিমাচল- সারা দুনিয়াআআআআআআআআআআআআআআ

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

দময়ন্তী এর ছবি

আমিও ঘুরতে চাই সারা দুনিয়াআআআআআ

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

বর্ণনা পড়ে যাওয়ার লোভ সামলাতে পারছি না। ছবি পোষ্ট করুন। বিদেশীদের জন্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন তা'ও জানতে আগ্রহ রইলো। ধন্যবাদ।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

দময়ন্তী এর ছবি

এমনিতে সিকিম খুবই নিরাপদ৷ নিরাপত্তা নিয়ে সমস্যা না থাকলেও আজকাল বিদেশিদের জন্য অনুমতি পাওয়া খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ আশা করি কিছুদিন বাদে আবার সহজ হবে৷

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ছবি কৈ রেগে টং (


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

দময়ন্তী এর ছবি

এই তো পরের পর্বে আসছে৷ হাসি

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

'ভ্রমণীয়'-তেই নেশা ধরিয়েছিলেন, এবার সেটা আরো চারিয়ে দিলেন। আপনার কথামালা যেন পাহাড়ী রাস্তার উপর হুশ করে উঠে পড়া ঝর্ণাধারা। মনে হয়, 'অন ইওর ওয়ে ইউ উইল সী, লাইফ ইজ মোর দ্যান ফ্যান্টাসি' এই সুর ভাজতে ভাজতে এবার ব্যাকপ্যাক নিয়ে বেরিয়ে পড়তেই হচ্ছে সিকিমের পথে।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

দময়ন্তী এর ছবি

আরে না না অত ভাল কিছু লিখি নি৷ যেমন দেখেছি তেমনি লিখে রেখেছি৷

অবশ্যই যাবেন৷ যাওয়ার মতই জায়গা৷

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

কৌস্তুভ এর ছবি

বেশ বেশ। পরিপুষ্ট ভ্রমণগল্প দিতে থাকুন। আর সাথে ছবি। অনেকদিন সিকিম যাওয়া হয়নি। গতবছর গেলাম ডুয়ার্স। হাসি

দময়ন্তী এর ছবি

দেখি এই জুনে আবার যাব ভাবছি ঐদিকে কোথাও একটা৷

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

মুস্তাফিজ এর ছবি

সিকিম যাবার ইচ্ছাটা সেদিন থেকেই যেদিন প্রথম দেশ’এ (দেশই তো?) বাবা হরভজনের উপর পড়েছিলাম। এরপর খোঁজ খবর যতই নিয়েছি বাবার চাইতে সাঙ্গু আর কাঞ্চনজঙ্ঘার টান আরো বেশী জোর লাগিয়েছে। কিন্তু এই এত বছরেও যাওয়া হয়নি। সরকারী ভাবে একবারও অনুমতির দেখা মেলেনি। ওদিককার বন্ধুবান্ধব কতবার বলেছে চলে আসুন, আমরাই নিয়ে যাবো, কিন্তু সরকারী অনুমতি ছাড়া যেতে মন সায় দেয়নি। কালিম্পং ছাড়িয়ে লাভা-লালিগাঁও এর পর যাওয়া আর হয়নি। তবে আমি নিরাশাবাদী নই। একদিন ঠিকই যাবো।

...........................
Every Picture Tells a Story

দময়ন্তী এর ছবি

মন খারাপ
আজকাল এই চীনের সাথে যুদ্ধু যুদ্ধু খেলায় কড়াকড়ি বাড়িয়ে দিয়েছে৷ নিশ্চয় যাবেন একদিন৷ আপনি গেলে অসাধারণ কিছু ছবি দেখতে পাব৷

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

অমিত এর ছবি

সিকিম যাওয়া হয়েছিল ২০০৪-এ। খালি গ্যাংটক আর সাঙ্গু লেক। সাঙ্গু লেকে যদিন গেলাম, প্রচন্ড বৃষ্টি।

দময়ন্তী এর ছবি

চাঙ্গুতে আমি যেদিন গেলাম সেদিনও প্রচন্ড বৃষ্টি৷ আসলে লেকটা ডিসেম্বার জানুয়ারীতে দেখার মত হয়৷

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এসব পোস্ট পড়লে মনটা আর ঘরে রয়না গো দিদি মন খারাপ

পরের পর্বের অপেক্ষায়

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

দময়ন্তী এর ছবি

আহা আপনের যা ব্যস্ততা, আপনি আর বেড়াবেন ক্যামনে?

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

সবজান্তা এর ছবি

এই পোস্ট দিয়ে মনে হয় সবার হৃদয়ভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়াবেন দেঁতো হাসি

কারণ, আগে যাও মানুষ লুকিয়ে, পরিচয় গোপন করে ঢুকে যেতো, মুম্বাই হামলার পর থেকে সেটা যদ্দূর জানি একপ্রকার অসম্ভব। আমার পরিচিত কয়েকজন চেষ্টা করেও ঢুকতে পারেননি। আগে ট্রাভেল এজেন্টরাই বলতো যে, বাংলাদেশি হলেও সমস্যা নেই- আমাদের সঙ্গে চলুন, সিকিমে ঢুকিয়ে দিবো। কিন্তু এখন ওরাই বলে যে আই কার্ড না থাকলে সিকিমে কোনভাবেই ঢোকা যাবে না।

আমার সাত পুরুষের ভাগ্য- ঘুরে আসছিলাম। আজকাল মনে হয় কপালে থাকলে কোনদিন হয়তো চাঁদেও যাইতে পারি, কিন্তু সিকিমে মনে হয় আর যাওয়া হবে না।

আমারও অবশ্য একটা দুঃখ ছিলো- আমি শুধু গিয়েছিলাম নাথুলার দিকে, থুকলা পর্যন্ত। খুব শখ ছিলো ইয়ুমথাং হয়ে অন্তত গুরুদোংমার লেক পর্যন্ত ঘুরে আসা। স্পেশালি আমি এখনও মানুষ যেভাবে প্রাক্তন প্রেমিকার, যে কিনা বর্তমানে বিবাহিত, ছবি দেখে আর দীর্ঘশ্বাস ফেলে, আমিও সেভাবে আমার পরিচিত একজনের গুরুদোংমারের ছবি দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলি। এই জীবনে হইলো না আর কী মন খারাপ

জলদি পরের পর্ব নামান। সিকিমের লেখার ব্যাপারে আমি চরম উৎসাহী। জলদি লিখে ফেলেন।

দময়ন্তী এর ছবি

এই চীনের সাথে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা হয় মাঝে মাঝেই আর ফলে ভারতীয় নাগরিকরাও অনেক জায়গায় যাওয়ার অনুমতি পায় না৷ কি যে ভুলভাল ব্যপার৷ মন খারাপ আমাদেরই তো কাটাও যেতে দেয় নি৷ অথচ তার তিনমাস আগেই আমার দুই তিনজন বন্ধু ঘুরে এসেছে৷

আশা করি আবার এইসব কড়াকড়ি বন্ধ হবে৷

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আআহহ্‌! আমি ই-বইতে পড়েই ভাবছিলাম, বিস্তারিত আসবে কিনা! দারুণ, দারুণ! দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

আশালতা এর ছবি

আহ সিকিম ! একবার গিয়েছিলাম, কি যে সুন্দর, এখনও চোখে ভাসে । প্রানভরে ঝরনা দেখেছি । সবাই বলত ঝরনার পানি খেওনা, ডায়রিয়া হবে, কিসের কি, দেখলেই আঁজলা ভরে ঠাণ্ডা পানি খেয়ে ফেলতাম । মহানন্দা না কি একটা নদীর ত্রিস্তরের জলপ্রপাতটা তো দুনিয়া ছাড়া জিনিষ । আহা !

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।