বাসা পাল্টানো ব্যাপারটা আমার খুব পছন্দের। এই জীবনে পছন্দের কিছু করাটা বারংবার দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাই জীবনে কখনো বাসা পাল্টানো হয় নি। ছোটবেলায় অনেককেই শুনতাম বলতে –‘আমরা তো বাসা পাল্টে অমুক জায়গায় চলে যাচ্ছি’- শুনে খুব হিংসা হতো। আমি কখনো কাউকে এমন বলতে পারতাম না। আমাদের বাসাটা ছিল নীচ তলায়। সদর দরজা সারাক্ষণ বেহায়ার মতন হাট করে খোলা থাকতো। সারাক্ষণ কেউ না কেউ আসা-যাওয়া করতো। ঘর ছিল মোটে চারটে, দু’টো শোবার ঘর, একটা বসার ঘর, আর তার সাথে দরজাবিহীন লাগোয়া একটা ডাইনিং। রান্নাঘরটা ছিল পাশেই, একটু বড়। ডাইনিং রুমে একটা কাঠের টেবিল ছিল যেটা সমস্ত ঘরে নিজের আধিপত্য বজায় রেখে কোনকিছুকে আর জায়গা দিতে চাইতো না। তবুও ওই ফ্রিজটা কী টুলটা চেপেচুপে একটু জায়গা করে নিতো। আর জায়গা করে নিতেন আমার মা। কেন যেন আম্মু রান্না ঘরে কাটা-বাছা করতে পারতেন না, তাই ডাইনিং রুমে বটি আর বাটি নিয়ে রাজ্যের আলুটা-পেঁয়াজটা-মাছটা কাটতেন। যখনকার কথা বলছি সেটা হবে হয়তো আমার ক্লাস থ্রি এর বছর- ঠিক মনে নেই।
এইটুকুন বাড়িতে এতো মানুষের কেমন করে জায়গা হতো জানি না। আম্মু-আব্বুর রুম ছাড়া বাকি যেই রুম ছিল তাতে থাকতাম আমরা ৩ বোন আর আমাদের একটা ফুপাত বোন। ও কথা বলতে পারতো না, ছোটবেলায় ওর বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে আজ অবধি ও আমাদের সাথেই থাকে, আমাদের পরিবারেরই একজন সদস্যের মতন। আমার দাদা, নানা, নানু, অমুক ভাই ইত্যাদি আত্মীয়রা প্রায়ই আমাদের বাসায় এসে মাসের পর মাস থাকতেন। ড্রইং রুমে বিছানা আর মাটি উভয়ই দখলে থাকতো, কখনো বা সোফাসেট। কখনো কখনো আমাদের রুমেও মাটিতে বিছানা করতে হতো, কেউ বা আড়াআড়ি ঘুমাতো আমাদের বিছানায়। বাসায় মেহমান এলে আমি খুব খুশি হতাম। তখন আমার আর আপুদের ঘরে থাকার জায়গা হতো না, তাই আম্মু-আব্বুর মাঝে ঘুমানোর জায়গা পেয়ে যেতাম অনায়াসেই। সকালে ঘুম ভাঙ্গলেও মটকা মেরে শুয়ে থাকা ছিল আমার অন্যতম প্রিয় কাজের একটা। আম্মুদের ঘরে ঘুমালে এই প্রিয় কাজ অনেক বেলা অবধি করা যেত, অন্য ঘরে বেশি বেলা করে ঘুমানো যেত না, বিছানা করার তাড়া থাকতো। আম্মুর ঘরে কোন নিয়ম ছিল না যেন!
আমাদের বাসার সামনে ছিল বরই গাছ, পেঁপে গাছ, নারিকেল গাছ আর একটা আম গাছ। এক কোণে আবার আলুও হতো, মিষ্টি আলু। ঘরের যে সদর দরজাটা হাট করে খোলা থাকতো ওটা কাঠের তৈরি স্প্রিং এর দরজা ছিল, টেনে ধরে না রাখলে ঠাস করে শব্দ করে লক হয়ে যেত। তাই সকালে উঠে আম্মুর প্রথম কাজ ছিল ঐ দরজা খুলে একটা পাথর রেখে দেওয়া। এখনো মনে পড়ে সেই ছাই-কালো রঙের পাথরটা ঠেসে ধরে রাখতো দরজাকে রাত্রি অবধি। এই দরজার আরেকটু সামনে ছিল একটা লোহার গেইট, ছক কাটা, সাদা রঙ করা। রাতে এই দরজায় তালা লাগানো হতো। এই দুই দরজার মাঝের জায়গাটুকুকে আমি বারান্দা বলতাম। লাল রঙের ফ্লোর ছিল আমাদের বাসার কিংবা বারান্দার। এইখানে আমরা মার্বেল খেলতাম। আমার অবশ্য খেলতে অতো ভালো লাগতো না, সবুজ সবুজ মার্বেলগুলা পকেটে ঢুকাতেই বেশি স্বস্তিবোধ করতাম। এই ছক কাটা সাদা গেইটটা খুললেই ছিল গাছপালা, ঐ যে গাছগুলোর কথা বললাম না, সেগুলো। বরই গাছটার বরইগুলা মোটেও পদের ছিল না, চুকা আর ছোট, তাও ঐগুলা পেড়ে লবণ মরিচ দিয়ে মাখিয়ে খাওয়ার কী লোভ ছিল! পেঁপে গাছটা ভালো ছিল, কত কাঁচা পেঁপে খেয়েছি আচার দিয়ে বানিয়ে। আম গাছটা ছিল সবচাইতে অকাজের, কোনদিন একটা আম ধরে নি। সাদা গেইট থেকে বের হলে দু’পাশে এই গাছ-আলু-সব্জি আর মাঝে একটু রাস্তার মতন- অল্প একটু রাস্তা, তারপর আরেকটা গেইট। এখানেই বাড়ির সীমানা শেষ। এই গেইটটা থাকা না থাকা একই ছিল। ছোট ৩ হাত লম্বা কাল রঙের লোহার এই গেইট টপকে যে কেউ সানন্দে ঢুকে পড়তে পারতো। তখন মনে হয় ঢাকায় চোর ছেঁচড়া কম ছিল আর মানুষের ভয়-ডর ও কম ছিল, তাই অতো গা করতো না কেউ।
স্কুল থেকে এসে আমি জামা না পাল্টিয়েই হোমওয়ার্ক করতাম। আম্মু মুখে তুলে রুটি খাইয়ে দিতেন, খেতে খেতে হোমওয়ার্ক শেষ। না না, আমাকে অতো ভালো ছাত্রী ভাবার দরকার নেই। হোমওয়ার্কটা একটা যন্ত্রণা মনে হতো, শেষ হলেই বেঁচে যাবো, এই আশাতেই তাড়াতাড়ি শেষ করতাম। হোমওয়ার্ক শেষে দুপুরের নাওয়া খাওয়া সেরে বিকেলের জন্য অপেক্ষা। খেলতে যেতাম বাসার সামনেই ঐ খালি জায়গায়। কাদের সাথে খেলতাম আমার মনে নেই। খালি মনে আছে যেহেতু মাটি ছিল তাই আমরা কাঠি দিয়ে মাটিতে গোল গোল দাগ কেটে এক গোলক থেকে আরেক গোলকে লাফিয়ে বেড়াতাম। মনে আছে ফুল টোকা খেলতাম, কপালে জোরে টোকা দেওয়ায় খুব রাগ হতো, বার বার বারণ করে দিতাম আমার কপালে টোকা দিলে যেন আস্তে দেয়, পাজি খেলুড়েগুলি কারো কথা শুনতো না। মাগরিবের আজানের সাথে সাথে ঘরে ঢুকে হাত-পা ধোয়া। তারপর কী হতো আর মনে নেই, মস্তিষ্ক অপ্রয়োজনীয় কথা মুছে দেয়, সেখানে জায়গা নিয়েছে আরো কত নতুন স্মৃতি।
একসময় বাসার সামনের সব গাছ কেটে ফেলা হলো। শুধু আম গাছটা এক পাশে পড়ে যাওয়ায় আর আম্মুর জোরাজোরিতে কিছুতেই সেই গাছ কাটা গেল না। অনেক বছর পর এই গাছ এত মজার আম দেওয়া শুরু করলো যে বলার বাইরে! আম্মু মনে হয় কোনভাবে টের পেয়ে গিয়েছিলেন, তাই তো কাটতে দেন নি! এতোগুলো গাছ কেটে ফেলার কারণ জিজ্ঞেস করলাম, বলা হলো এইখানে নাকি বিল্ডিং বড় করা হবে। তাই মাটির নিচে পাকা করবে, টাঙ্কি করবে আরো কত কী! আমি কি আর অত কিছু বুঝি তখন? আমি খালি দেখি দিনের পর দিন স্কুল থেকে ঘরে ফিরলে বাড়ির সম্মুখে কী একটা পরিবর্তন, একেক দিন একেক পরিবর্তন। একদিন সারারাত কাজ হলো, আব্বু ঘুমায়নি। সকালে স্কুলে যেতে নিয়ে দেখি বের হওয়ার রাস্তা বন্ধ। লোহার গেইটের সামনে এত্তো বড় গর্ত। চারিদিকে থিকথিকে ভেজা মাটি, অদ্ভুত রঙ তার। কয়েকটা স্তর মাটির, একটা স্তর শেওলা রঙের তো আরেকটা বাদামী। এরই মধ্যে মিস্ত্রিরা কেমন কেমন করে যেন কাঠের তক্তা বসিয়ে ঘর থেকে বেরোনোর রাস্তা করে দিলো। এই রাস্তাটা কেন যেন ভালো লেগে গেল। স্কুল থেকে ফিরে আসলে কেমন যেন একটা আনন্দ হতো-মনে হতো একটা যুদ্ধক্ষেত্র পার হয়ে ঘরে ঢুকছি। আস্তে আস্তে সেই সব কাজ শেষ হয়ে আসতে লাগলো। থিকথিকে মাটি আর দেখা যায় না, এখন মাটি শক্ত, ধুলোবালি ভরে থাকতো সারা ঘরময়। আমার ডাস্ট অ্যালার্জিটা প্রকট আকার ধারণ করে বোধ করি ঐ সময়ই। ডাস্ট অ্যালার্জির কারণে মুখ হা করতে পারতাম না, সারা মুখে বিচ্ছিরি লাল হয়ে ফুলে থাকতো। ক্লাসে তো বটেই, ক্লাসে বাইরে অপরিচিত কেউ দেখলেও জিজ্ঞেস করে বসতো, ‘এই মেয়ে, তোমার মুখে কী হয়েছে?’ উত্তর দিতে দিতে এক সময় ক্লান্ত হয়ে যেতাম। আমার প্রিয় বান্ধবী মল্লিকা তখন নিজ উদ্যোগে আগ বাড়িয়ে বলতো-‘ওর মুখে অ্যালার্জি’, বলেই আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেত সামনে।
একদিন শুনলাম আমরা নাকি আর নিচ তলায় থাকবো না, উপরে তিনতলায় বড় করে আমাদের বাসা করা হয়েছে। অবশেষে আমাদের বাসা পাল্টানো হচ্ছে! আমি কী যে খুশি! উপরে নাকি নিচতলার ডাবল ঘর আছে। আপুদের জন্যও নাকি আলাদা ঘর আছে, আমার জন্য নেই অবশ্য, সেটা নিয়ে মাথা ব্যথাও ছিল না। আমাদের তিনতলার বাসায় ঘরে ঢোকার জন্য দুই দিকে দুইটা দরজা। আমি সারাক্ষণ ভাবতাম কোনটা দিয়ে ঢুকবো? একবার এক দরজা দিয়ে ঢুকি তো আরেক দরজা দিয়ে বের হই। সব ঘর ঘুরে ঘুরে দেখি, নতুন রঙ এর গন্ধ এতো সুন্দর! পুরো তিনতলায় তখন ঝকঝকে মোজাইক। তখনো টাইলস ব্যাপারটা অতো জনপ্রিয় হয় নি বিধায় সেটা কেবল বাথরুম তিনটায় সীমাবদ্ধ ছিল। তাও কেবল অর্ধেক দেয়ালে, ফ্লোর ছিল মোজাইকের। নতুন বাসায় আমি তিরিং বিরিং করি। কিন্তু আমি বাসা পাল্টানোর আমেজ পাই না। কারণ বাসা পাল্টালে দেখেছি বড় ট্রাক আসে, ঠেলাগাড়ি আসে, লোকজন এসে মাথায় করে মালামাল নিয়ে যায়...আরো কত কী। আমাদের তো তেমন কিছুই হচ্ছে না। দীর্ঘ একমাস ধরে কচ্ছপের গতিতে বাসা পালটানো হলো, নিচতলা থেকে আজ একটা আলমারি তো কাল একটা আলনা উঠানো হয়। ধীরে ধীরে সব ঘরের সব কিছু উঠিয়ে আনা হলো, কেবল আম্মু আসে না। আম্মু রান্না বান্না করে এখনো নিচতলায়। সব শেষে যখন আর কিছুই বাকি থাকলো না সেই দিন আম্মু সব গুটিয়ে উপরে উঠে এলো। তখন তো খেয়াল করি নি কিন্তু আজ মনে হয় নিশ্চয়ই খারাপ লেগেছিল তাঁর এতোদিনের সংসার ফেলে নতুন ঘরে উঠতে।
তো সে যাই হোক, ধীরে ধীরে সময় গড়িয়ে গেল। আমাদের এই নতুন বাসাটাও একদিন পুরানো হয়ে গেল। তিনতলার বাসার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রোজ কত মানুষের আসা যাওয়া দেখে গেছি সামনের রাস্তায়। একে একে আমার দুই বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেল, আর আমি হয়ে গেলাম বড়। আমি অবশ্য আরো আগেই বড় হয়েছিলাম। ক্লাস এইট থেকে একা একা যাওয়া আসা করতাম, স্কুল কী স্যারের বাসা কী দোকান! জীবনে একটার পর একটা পরিবর্তন আসতে লাগলো। চারতলার উপরে পাঁচতলা হলো। ছাদ হয়ে গেল অর্ধেক চারতলায় আর অর্ধেক পাঁচ তলায়। বিকেলে ছাদে যাওয়াটা একটা নিয়ম ছিল, সেটাও এক সময় পরিবর্তন হয়ে গেল। বারান্দায় দাঁড়িয়ে লোকজনের কাণ্ডকারখানা দেখি, ভালোই লাগে। ঘরের দেওয়াল পুরোনো হতে থাকে। নতুন কাজের মানুষ আসে, কারো কারো আবার কলমপ্রীতি থাকে যেটা বাসার দেয়ালে দেয়ালে শোভা পেত। অফ হোয়াইট রঙের পরিষ্কার দেওয়ালগুলো একসময় ধীরে ধীরে কালো হতে থাকে, নোংরা হতে থাকে। অমুক+তমুক এর নামে ভরে যায় সিঁড়ির দেওয়ালগুলো। কলিংবেলের সুইচবোর্ডের পাশে সবচাইতে বেশি কালো হয়ে যায়। কোথাও চুন খসে পড়ে, কোথাও বেখাপ্পা লাগে। আমাদের খোলামেলা ঘরে রাজ্যের জিনিসপত্র ঢুকতে থাকে, স্রোতের মতন। একটা সময় লক্ষ্য করি ঘরে আসলে কোন জায়গা নাই আর। আম্মুর সাথে রাগারাগি করি, কেন কিছু ফেলে দেয় না। ঐ চেয়ারটা তো ছিঁড়ে গেছে, এটা ফেলে দিলেই তো হয়। এই সোফাসেটগুলা পুরানো হয়ে গেলো, আর কত বছর? বিক্রি করে দাও, ঘরটা একটু খালি লাগুক। আম্মু ফেলতে চায় না, সামান্য একটা প্লাস্টিকের ব্যাগ যে যত্ন করে ধুয়ে জমিয়ে রাখে সে ফেলে দিবে একটা আস্ত চেয়ার? ছিঁড়ে গেলো তো কী হয়েছে? কাঠের দোকানের পিচ্চিটাকে ডেকে এনে কেমন করে যেন ঠিক করে ফেললো। বললাম এইটা রাখার কী দরকার? ঘরে যে পা ফেলার জায়গা নাই দেখো না? আমি রোজ চিৎকার করি! আম্মু একদিন বলে, ‘তোর আব্বুর কেনা শেষ চেয়ার ছিল এটা, তাই ফেলতে ইচ্ছা করে না।’ আমি আর কিছু বলি না। তাও মাঝে মাঝে আমি স্বপ্ন দেখি আমি পুরো বাড়িটা একদিন নতুন করে সাজিয়ে ফেলবো। এই দেওয়ালে রঙ হবে এমন, সব বের করে দিব ঘর থেকে দু’একটা প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া। মাঝে মাঝে পড়াশুনা করতে পারতাম না, মাতালের মতন চিন্তা করে যেতাম কেমন করে বাসা সাজাবো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করে দিতাম, ছবি আঁকতাম, এমন হবে এই ঘরটা। বাসার সামনে নেইম-প্লেট লাগাবো, নাম হবে ‘কাজলদিঘী’, আম্মুর ডাক নামের সাথে মিল রেখে। আরো কত হাবিজাবি স্বপ্ন, এখন ভাবলেও হাসি পায়। আম্মুকে বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলেছিলাম, কি হয় বাসাটা ঠিকঠাক করলে? কেমন পঁচা একটা বাসা হয়ে গেছে আমাদের। আম্মু বলে কত টাকা লাগবে জানিস তুই? আমি অবশ্য এই সব জানতে চাইতাম না, আমি ঘোরে ছিলাম কেমন করে আমি বাসা সাজাবো। আস্তে আস্তে সেই ঘোর ভেঙ্গে যায়, টাকা পয়সা আসলে অনেক দরকারী জিনিস, এই বোধোদয় হয়। টাকা ছাড়া কিচ্ছু হয় না, স্বপ্ন পূরণ হয় না। এক সময় আমি ভুলে যাই এই বাসা সাজানো নিয়ে আমি এতো ডেস্পারেট ছিলাম। একটা সময় লজ্জা লাগতো বাসায় মেহমান এলে, ইস! কী বিচ্ছিরি অবস্থা ঘরের। বই-খাটা, টিনের পট, জামা কাপড়, পানের বাটা, কাগজ-ফাইল-পত্র সব এক সাথে। খুব গুছিয়ে নিলেও দেখা যায় এই একটু উনিশ-বিশ হয়েছে আর কী! কিন্তু পরে আর লজ্জাও করতো না, মনে হতো, যা মন চায় ভাবুক মেহমান, আমার কী? মাঝে মাঝে আমার মনে হয় আম্মু কয়েকদিনের জন্য একটু বাইরে কোথাও গেলে আমি ঘরের সব কিছু বের করে ফেলে দিবো। ওটা ভাবা পর্যন্তই। স্বপ্ন দেখা আর স্বপ্ন ভাঙ্গার এই সন্ধিক্ষণে আমি দেশ ছেড়ে চলে এলাম বাইরে। বাইরে আশার সময় চোখে একটা স্বপ্ন ছিল, কিছুদিন সেই স্বপ্নে বুঁদ হয়ে ছিলাম। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে আমি হোম-সিক হয়ে যাচ্ছি। এইখানের এতো এতো আরাম-আয়েশ আমার ভালো লাগে না। এতো সুন্দর ঝকঝকা ঘর, বাথরুম ভালো লাগে না। কল ছাড়লেই গরম পানি, লোডশেডিংবিহীন অবিরত বিদ্যুতের আরাম- ভালো লাগে না। আমার ইচ্ছা করে আমার ঘরের ঐ অগোছালো জায়গায় ফিরে যেতে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে ধুলো খেতে আর বৃষ্টি হলে রাস্তায় মানুষের উল্লাস দেখতে। আমার ইচ্ছা করে আমার বাসায় বিছানায় শুয়ে জানালার গ্রীলে ঠ্যাং তুলে দিয়ে একটা গল্পের বই এ মগ্ন হয়ে থাকতে। আর একটু পর পর আম্মুর দিয়ে যাওয়া আমটা, জামটা খেতে। এত্তো সুন্দর একটা জীবন, যার প্রত্যেকটা ডিটেইল এতো নিখুঁত, সেটা ফেলে কেন যে আমি এই চুলায় এসে বসে আছি জানি না।
মন্তব্য
বড়ই উপাদেয় লেখা!
খেয়ে নিলেন?
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
এককালে আপনার সাথে ইয়াহু তে অনেক চ্যাট হত, নিক বললে চিনতে পারবেন কিনা জানিনা
তবে নিকটা বলেই দেখেন।।। নিক না জানলে তো বলতে পারছি না চিনতে পারবো কী পারবো না!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
খুব ভালো একটা লেখা লিখেছিস। তবে মন খারাপ করে দিলি। তোর যে কোন সেন্স অফ হিউমার নেই, এটা আরও একবার প্রমাণ করলি। আর বেশী কান্দিস না, দুইদিন পরই ঢাকার ধুলা, লোডশেডিং, হরতাল খাবি। সুখে থাকতে ভুতে কিলায় তো, তাই মিছে কান্না।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
সুখে নাই গো দাদা! দুঃখের কথা শুনলে আজকাল লোকে দেখি নাক শিটকোয়
আমার সেন্স অফ হিউমর নিয়ে না হয় আর কিছু বলিলাম না, লোকমুখে শুনিবেন আশা রইলো
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
অনেকদিন পর লিখলে।
দেশ ছাড়ার খুব ইচ্ছে হয় ইদানীং। আমি অসম্ভব গোছানো স্বভাবের, এলোমেলো কোনকিছুই হজম করতে পারি না। কখনো বাইরে যাওয়ার সুযোগ হলে বাবা- মায়ের চাইতেও বোধহয় নিজের নীল দেয়ালের বিশাল রুমটার জন্য বেশি পেট পুড়বে।
পোস্টে পাঁচ তারা।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
দেশ ছাড়ার আগে অবশ্যই কারো হাত ধরে নিয়ো গো বালিকে।।। মরবাই য্রক্রন ত্রক্রন কাউরে লয়াই ম্ররো!!!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
আমিও তো তাই কই।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আপ্নেই তাইলে দলছুট! আমি আগেই সন্দো করছিলাম!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ঐ নিকে ফিরে আসুন পিলিজ।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
দলছুট কিডা আবার?
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
এইখানে চিবি দেন
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
ইন্নালিল্লাহ! নাহ আমি এইডা না। আমি খাঁটি ত্রাণা
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
হা হা । অনেক ভালো লাগলো
_______
বুনোফুল
আমার দুঃখ আপনার ভালু লাগলো ?
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
লেখাটা ভালো লাগলো, পুরনো দিনের কথা মনে করিয়ে দিলো
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
আপনার স্মৃতিশক্তি ভয়ানক ভালো, লেখার মতোই।
ঐ একটা জিনিসই তো নেই, হাতড়ে বেড়াচ্ছি আর আপনি কী না বলছেন ।।।:(
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
চমৎকার লাগলো। আমি জীবনে প্রথম বাসা পাল্টেছি আমেরিকাতে এসে। এর আগে তিন বছর বয়েসে দেশে বাসা পাল্টানোর স্মৃতি মনে নেই। তোমাদের সেই বাসাটা কোথায় ছিল?
আমারও ভালো লাগে না। কিন্তু আমার সেই ঘরটা আর নেই যে। শুধু তাই নয় - ষোল বছর পরে আমার ফেলা আসা জিনিসের আর কোন কিছুই অবশিষ্ট নেই। যেই শহরে আমি ফিরতে চাই, সেই শহরটা আমার স্মৃতির বাইরে মোটামুটি অস্তিত্বহীন।
তাই হঠাৎ নিজেকে কেমন গৃহহীন মনে হয়
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
সেই বাসাটা কোথায় 'ছিল'---হবে না তো, এখনো আছে সেই বাসা, মোহাম্মদপুরে। আম্মু, নানু আরো অনেকে থাকেন।
আমার অবশ্য নিজের কোন ঘর ছিল না। এটা এক দিক দিয়ে ভালো ছিল- পুরো বাড়িটার সব ঘরই নিজের মনে হতো। প্রাইভেসি বলে যে একটা ব্যাপার মানুষের জীবনে থাকতে পারে-এটা এইখানে আসার আগে ফিল করি নি। বাসার সবাইকেই প্রাইভেট মনে হতো হয়তো বা। তাছাড়া ইচ্ছা করলেই বাসার চিপাচাপায় নিজের মতন থাকা যেত/ যায়, তাই হয়তো প্রাইভেসি নিয়ে অতো মাথাও ঘামাই নি।
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
ঢাকায় ফিরে যেতে চান? আমরা একটা ট্রাই করেছিলাম। দুই কান ধরে বলেছি আর নয়। অনেক অনেক টাকা যদি আপনার থাকে তবেই হয়ত টিকে যেতে পারেন, নতুবা যাত্রা নাস্তি
কেন গত ২৫ বছর যে আমার অনেক অনেক টাকা ছিল না, তাতে টিকে যাইনি? শারীরিক আরামের চাইতে মানসিক আরামটা বেশি প্রয়োজন আমার।
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
সেটাই তো বলতে চাইছি ম্যাডাম, ২৫ বছর আগের ঢাকা, এমনকি দশ বছর আগের ঢাকাও আর নেই। আছে ভেজাল খাবার, ফরমালিন ওয়ালা মাছ, অব্যাহত লোডশেডিং, অসহনীয় যানজট, বিষাক্ত ধুলো, আকাশছোঁয়া বাসা ভাড়া (আপনার লাগবে না) আর মরার ওপর খাঁড়ার ঘা, স্বাভাবিক মৃত্যুর অন্তর্হিত নিশ্চয়তা। সুস্থভাবে বাঁচার জন্য চাই অনেক বেশি সামর্থ্য, যেটা কিছুদিন আগেও এতটা বেশি প্রয়োজন ছিল না। বললাম না, সম্প্রতি একবার চেষ্টা করে গাড্ডু খেয়েছি। তবে কিনা বাইরে থাকার অপশনটা থাকাতে সিদ্ধান্ত একটু বেশি দ্রুত নিয়ে থাকতে পারি। অনেকের তো সেই উপায় নেই, তারা বাধ্য হয়েই থাকছেন।
আশা করছি বাধ্য হয়ে থাকতে হবে না। আপনার প্রবাসী জীবনের জন্য শুভকামনা ভাইয়া।
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
'হোম' নিয়া একটা ঝাকানাকা গান শোনেন। মন ভালো হয়ে যাবে। না হইলে আমারে কৈয়েন।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এ গানের প্রতিটা কথা যে আমার খুব প্রিয়, বিরিয়ানি ভাই
বেশি ভালো লাগে এই কথাগুলাঃ
Maybe surrounded by
A million people I
Still feel all alone
I just want to go home।।।
And I feel just like I'm living someone else's life
It's like I just stepped outside
When everything was going right
মন ভালু না হলে আপনেরে কৈয়া কুন লাভাসে? আপনি মিয়া নাম্বার ছাড়া! এর আগে বিরিয়ানির রেসিপি দ্যান্নাই
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
বিরানির রেসিপি নিয়া আমারে এ্যামনে অপবাদ দেওয়া কি ঠিক হৈতেছে? আকাশ, বাতাশ, চান, সুরুয সাক্ষী রাইখা যে আমি রেসিপি-ই না খালি, খাদ্যের ফটুকও সাপ্লাই দিলাম, সেই তথ্য গুম করলো কে বা কাহারা? যেই ফটুক দেখলে রেসিপি তো কোন ছাড়, [ঘ্রাণে নয়, বরং] দর্শনেই এমন সুস্বাদ মিলে যায় যা এই বিশ্বজগতে কেবল দুই জায়গায় পাওন সম্ভব। এক. কোবির নিবাস আর দুই. মরার পর বেহেশতে।
এইবার কন রেসিপি দিয়া কী করবেন, হাতের কাছে সুস্বাদ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে! হুদাই কষ্ট! খালি পিসি খুলবেন, ফটুক দেখবেন আর খাদ্যের স্বাদ গ্রহণ করবেন। সোজা ব্যাপার তো। বেহেশতের সিস্টেম অবশ্য অন্য, ঐটা পরে জানায়ে দিবো নে।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
(গুড়) এমন মন কেমন করা লেখার সাথে সাথে প্যারীর লেখাও ভাল লাগবে---
facebook
আপনার দেওয়া গুড় দিয়ে গুলায় প্যারিস খায়ালাইসি
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
অনেক সুন্দর লেখা। লাল রঙের মেঝে শুনে পুরনো বাড়ির কথা মনে পড়লো। কি মসৃন আর টকটকে লাল ছিল সিমেন্টের মেঝে (যদিও নতুন মেঝে হলে মসৃনতা থাকে না; সময়ের সাথে আসে)। এখনকার টাইলস এর উপর শুলে ওতো ঠান্ডা লাগে না। যেমনটা ওই মেঝেতে লাগতো।
আপনার প্রোফাইলের পিকচারটা দারুন সুন্দর। মনে হয় যেন রঙ গুলো এক একটা গল্প।
ভালো থাকুন।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
চমৎকার লিখেছেন।
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
তোমার মা আর আমার মা তো দেখি পুরাই একরকম!
এই দুইন্ন্যার বেবাগ মা ই এক রকম! তাই সক্কলের লগে
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
লেখাটা বেশ ভালো লাগল আপু। আমার বাসা পাল্টাতে খুব মজা লাগে।পাল্টানোও হয়।
হিংসা!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
লেখাতা আরেক্তু ভাল হত পারত।
তুমি কি আমার বড় বইন নাকি?
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
কিসের কি, পুরোনো ঘরবাড়ি নিয়ে এই সপ্তাহেই আরেকটা লেখা নামায়ে ফেলবো। আপনার লেখাটা গোগ্রাসে গিলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলাম। বড়ই নস্টালজিয়ার মায়া ঢুকিয়ে দিল মাথায়। এই সব বিষয় নিয়ে বারবার লিখতে আর পড়তে ইচ্ছে করে। আপনার স্মৃতিগুলোর সাথে আমাদের বাড়িরও বেশ মিল।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
খায়ালাইলেন?
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
পুরনো অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল।
হ !
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
আমার বাসা পাল্টাতে একটুও ভালো লাগত না, এখন লাগে না। প্রত্যেকবার বাসা পাল্টাতে আম্মার উপর দিয়ে ঝড় বয়ে যেত, এখনো যায় আমার আর আম্মুর উপর দিয়ে। একসময় স্বপ্ন দেখতাম, বড় হয়ে বড় চাকরী করব, আমার আম্মাকে একটা বাড়ি করে দিব, যেখানে আম্মাই হবে বাড়িওয়ালা। বাসা পাল্টাতেও হবে না, তুচ্ছ বা বিনা কারনে বাড়িওয়ালার কথা শুনতে হবে না। ইউনিভার্সিটি লাইফেও এই পরিকল্পনা বিদ্যমান ছিল (যে কারনে সেই জীবনের আনন্দ, হইচই, ঘোরাঘুরি কিছুই করিনি, শুধু ভালো রেজাল্টের জন্য চেষ্টা করেছিলাম, মাথার মধ্যে খালি ঘুরত বাড়ি বাড়ি বাড়ি।) এখন চাকরীতে যোগ দেয়ার একবছরের মাথায় বুঝে গেছি, আমার মাকে আমি সেই বাড়ি যা এতদিন মনে মনে তৈরী করেছি, করে দিতে পারব না। এই শহরে হোস্টেলে থাকি, মা থাকেন আর এক শহরে, আর এক ভাড়া বাড়িতে।
আপনার কথা পড়ে একবার মনে হলো দুঃখ পাই, পরে মনে হলো, না। আজকে যেটা স্বপ্ন কালকে সেটা দুঃস্বপ্ন হয়ে যাবে। নিজের বাড়িতে থাকার যে কী ঝামেলা, যদি না অন্য কোন ইনকামের পথ খোলা না থাকে। ভাড়াটিয়াদের পক পক শোনা, আজ এটা নষ্ট তো কাল ওটা নষ্ট, এই নানা ঝামেলায় আমার মা প্রায়ই বলে ভাড়া বাড়িতে উঠে যাবে, সব যন্ত্রণা তখন বাড়িওয়ালার হবে। বাড়ি থাকা একটা টেনশন। মাসে মাসে লোন দেওয়া।
আশা করছি শীঘ্রই মা-ছেলে-ছেলের বউ সহ একই শহরে একই বাসায় থাকবেন ( আপনি নিশ্চয়ই ছেলে?)। নিজের বাড়ি হোক আর পরের বাড়ি হোক, ঘর হচ্ছে ঘর, যেখানে দিন শেষে ফিরে এলে শান্তি লাগে। তাই নিজের বাড়ি না ভাড়া বাড়ি এটা না ভেবে শান্তির ঘর কোনটা ওটাই খুঁজুন না কেন?
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
এত সুন্দর করে লিখলেন !
খারাপ হয়ে গেল মনটা।
মঙ্খ্রাপকরাঠিকনা!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
আমারও একটা আপন আমগাছ ছিল।
সীমিত সংখ্য়ায় কিন্তু একদম আরকিটাইপ ল্য়াংড়া আম ধরতো সেটায়, একেবারে ধারাপাতের সেই আমটি আমি খাবো পেড়ে কিসিমের, নিখুত নিটোল, মাঝারি আকার, পেকে গিয়েও ঘণ সবুজ বরণ।
আফসুস! সে সুদর্শণ রসালদ্রুম এখন কেমন আছে আর তার ফল এখন কে খায়, কিছুই জানিনা।
আম্মু ঐদিন স্কাইপে আম দেখালো। ৫৬টা আম পেয়েছে এবার। আরো অনেক ধরে, কিন্তু পাশে টিনের চালা বাসা হওয়ায় চালে উঠে সবাই চুরি করে নিয়ে যায়। আম্মু আর নানুর কড়া পাহারার পরেও সব আম রাখা যায় না। আম্মুকে বললাম আমার জন্য রেখে দিতে!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
কাদের কে? তার সাথে কিসের এত খেলাধূলা?
কাদের তোর জামাই!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
বাসা তো পাল্টাতে হয়েছে বেশ কয়েকবার।
কিন্তু সেই বিষয়ক কিছুর কথা মনে পড়ে না ক্যান!
আপনার মেমোরি সত্যিই অনেক ভালো রে ভাই!
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ইয়াল্লা! মেমরী ভালু বলতেসে কেন সবাই? আমার তো কিছুই মনে থাকে না পড়াশুনা!!!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
এই লেখার শিরোনামটাই এত ভাল লেগেছে, লেখার কথা আর কি বলব।
চলে আসুন যেখানে আসতে মন চায়। একটাই তো জীবন, কি লাভ অহেতুক ছুটে বেড়িয়ে যদি ভালই না লাগে তো ?
হ!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
লেখা ভালো হৈসে। কিনতু পেয়ারা গাছ গুলার কথা ভুলে গেলি?আমমু র কত শখের গাছ!! কত তদারকি!! আর চোরের উতপাত!।। এখনো ঘর ভরতি লোকজন, কিনতু আমরা তিন জন নাই।।।:-(
ওহ!!!! তাইতো ওওওওও!!!! পেয়ারা গাছের কথা কেমন করে ভুলে গেলাম ? এত্তো বড় বড় কাজী পেয়ারার গাছ, কী মজার ছিল। পরে আম্মু কলম করায় নিসিলো, ছাদে আছে না এখনো এই গাছ?
হু, আমরা নাই! ভাল্লাগে না! বাসায় যাবো!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
আর সেই কালো পাথর টা এখোনো আছে পিছনের বারানদা তে। আমমু রেখে দিসে।
এইটা বান্ধায় রাখতে হৈবে
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
অনেক ভালো লাগলো লেখাটা।
বাসা পালটানো যে কী ভয়াবহ ঝামেলার কাজ! চিন্তা করতেই তো কেমন লাগে। ঢাকায় এখন পর্যন্ত একবার বাসা পালটাতে হয়েছে। আমাকে অবশ্য ঝামেলার মধ্যে যেতে হয় নি। চাই না আবারও এই অভিজ্ঞতা হোক। আগের বাসাটা একদম পছন্দ ছিল না। কিন্তু যেদিন চলে আসা হবে, ওইদিন শূন্য ঘর থেকে বেরোনোর আগে কেন যেন হুট করেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। একটা বাসা শুধু একটা বাসাই না, অনেক অনেক স্মৃতি আর অনুভূতির জায়গা।
আমাকে অবশ্য ঝামেলার মধ্যে যেতে হয় নি।
আপনি কুন কামের না!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
লেখাটা খুব ভালো লাগল । কিছু কিছু জায়্গা পড় নষ্টালজিক হয়ে গেলাম।
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
এত সুন্দর করে ছোট্ট ছোট্ট অনুভূতিগুলা তুলে এনেছেন আপনার লেখায়, আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। ফেলে আসা বাড়ীর জন্য আপনার যে ব্যাকুলতা, যে শূণ্যতা তার মাঝে নিজেকে ও যেন খুঁজে পেলাম।
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
নতুন মন্তব্য করুন