ছোটগল্প: পাশবিক

তীরন্দাজ এর ছবি
লিখেছেন তীরন্দাজ (তারিখ: সোম, ১৩/০৪/২০০৯ - ১:০০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রাত বেড়ে ওঠার সাথে সাথেই কান্না শুরু হয় জরিনার। বালিশে মুখ গুজে শুধু কাঁদে আর কাঁদে। কান্নার দমকে বার বার কেঁপে উঠে তার বাড়ন্ত শরীর। এমন সময়ে পাশে শুয়ে ঘুম হয় নাকি কারো! কদর আলিও ঘুমোতে পারে না। প্রায় প্রতিবারই রেগে যায় খুব। সাপের মতো হিসহিসিয়ে অকথ্য গালিগালাজ করে বউকে। কয়েক ঘা লাগিয়েও দেয় মাঝে মাঝে। কিন্তু তাতে কান্না না কমে বরং বেড়েই যায়। খুন না করে শুধু গায়ে হাত তুলে কাউকে থামানো যায় নাকি! তাই মাঝে মাঝে কদর আলি ভাবে খুনই করবে বউকে।

অথচ খুব সাধ করেই জরিনাকে বিয়ে করেছিল কদর আলি। পাশের গাঁয়ের ডাকসাইটে সুন্দরী, চারদিকেই নামডাক। যেমনি শরীরের গড়ন, তেমনি লোভনীয় সে শরীরের রমনীয় বাঁকগুলো। গায়ের রঙ দেখলেই নাকি চোখে ধাঁধা ধরে যায়। এমন একটি নারী তার না হয়ে অন্য কারো অঙ্কশায়িনী হবে, তা কেমন করে হয়! এই আশেপাশের দশগ্রামের মাঝে কদর আলীর প্রভাব প্রতিপত্তির কাছে দাঁড়াতে পারে, এতোবড় বুকের পাটা আছে নাকি কারো!

তাই একদিন প্রায় বিনা বাঁধাতেই জরিনাকে বিয়ে করে নিয়ে এলো কদর আলি। সে গ্রামের এক ছোকড়া বাগড়া দিতে এসেছিল। তাকে এক ফুঁয়ে উড়িয়ে দিতে খুব একটা বেগ পেতে হলোনা তার। খুব ধুমধাম করে বিয়ে হলো। আত্মীয়স্বজন নিয়ে ভুড়িভোজনের পাশাপাশি পাশের মসজিদে মিলাদও পড়ানো হলো। তিন গাঁয়ের লোক এসে খেয়ে গেলো সে মিলাদের সিন্নি।

বিয়ের ঝামেলা মেটানোর পর রাতের বেলা অবশেষে জরিনাকে কাছে পেলো কদর আলি। নতুন বৌকে সরিয়ে বিছানায় পাতা ফুলের পাপড়ী একটানে চাদরশুদ্ধ ফেলে দিল নীচে। আবার চাদরটি বিছিয়ে ওকে প্রায় ঠেলেই ফেললো বিছানায়। হাতের পেষনে তার শরীরের প্রতিটি মেয়েলী বাঁকের রহস্য উন্মোচণের জন্যে যেনো উন্মাদ হয়ে গেলো কদর আলি। জরিনার আপত্তি বা বাসর ঘরে উঁকি দেয়া মেয়েদের খিলখিল হাসি, কোনদিকেই নজর করলো না সে। জরিনার বিয়ের শাড়ী, অন্তর্বাস মূহর্তের মাঝে ঘরের এদিক ওদিক ছিটিয়ে পড়লো। বাসর রাতে কি ঘটে, সে নিয়ে তার সইরা জরিনাকে কম বলেনি। তারপরও সদ্য বিয়ে করা স্বামীর এই উন্মাদ আচরণে খুব ঘাবড়ে গেলো সে। শরীরের কোমল জায়গাগুলোতে আঘাত পেয়ে চোখে জল বেরিয়ে এলো তার। কিন্তু সেদিকে কোন নজর দিলনা কদর আলি। নিজের কাপড়চোপড় খুলে আসুরিক শক্তিতে জাপ্টে ধরলো জরিনাকে। কিন্তু পরক্ষণেই কি একটা টের পেয়ে স্থির হয়ে গেলো সে। জরিনার শরীর নিয়ে এতো উন্মাদ খেলা খেলেও তার পৌরুষ বিকশিত হলোনা। চৈত্র মাসের শুকনো ডোবায় আধমরা জোকের মতো এলিয়ে পড়ে রইল একপাশে। টের পেয়েই জরিনার শরীরের উপর থেকে সরে কড়িকাঠের দিকে তাকিয়ে রইল কদর আলি। জরিনার এসব নজরে এলো না। স্বামীর অত্যাচার থেকে ছাড়া পেয়ে স্বস্তিই হলো তার। মেঝের উপর থেকে শাড়িটি টেনে গায়ে জড়িয়ে বাতি নিবিয়ে শুয়ে পড়লো পাশে। একটি চাদর স্বামীর গায়ে টেনে নিজেও নিজেও ভেতরে ঢুকলো গুটিশুটি হয়ে।

কিন্তু জীবন তো শুধু বাসর ঘর নয়। তাই এভাবে চললো না বেশীদিন। প্রতিদিনই জরিনার শরীর নিয়ে খেলা খেলে কদর আলি। প্রায় প্রতিবারই নিজের ব্যার্থতার গ্লানিতে স্ত্রীকেই গালাগাল করে কতোক্ষণ। শান্ত হলে পেছন ফিরে ঘুমিয়ে নাক ডাকাতে থাকে। স্বামীর আদরের ধরণ বেশ পাশবিক হলেও জরিনার শরীর উত্তেজিত হয়। তার নারীত্ব থেকে শুরু করে শরীরের প্রতিটি লোমকুপ অবধি এক তীব্র পাবার প্রত্যাশা বন্যার বানের মতো ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সে প্রত্যাশা পূরণে অসমর্থ স্বামী সরে যাবার পরই সে বন্যার জল শুকিয়ে ক্লেদাক্ত কাদার মতো আকড়ে ধরে শরীর। সে কাদায় ছড়ানো ছিটানো কাঁকড়ার দল তার প্রতিটি অঙ্গকে আঁচড়ে কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করে। তখনই কাঁদে জরিনা। স্বামীর পাশে শুয়ে শুয়ে গুমরে গুমরে কাঁদে।

কিন্তু জরিনার কান্নার দিকে নজর দেবার সময় কোথায় কদর আলির! তার বাইরের কাজও রয়েছে। মেম্বারের পদে জিতে পাশের কয়েকটি গ্রাম নিয়ে বিশাল রাজত্ব। নিজের ব্যাবসার পাশাপাশি সেদিকেও নজর রাখতে হয়। প্রতিদন্ধীর সংখ্যা কি কম? শকুনের শ্যান দৃষ্টি নিয়ে সবাই তাকিয়ে। সামান্য সুযোগ পেলেই ঝাপিয়ে পড়ার অপেক্ষায় মাত্র। এইতো কদিন আগেই এক ছোকড়া দলবল পাকাতে শুরু করলো। আরো কিছু ছেলে ছোকড়ার সাথে দল পাকিয়ে নিয়ে কি এক ক্লাব করেছে পাড়ায়। বাজারের পাশে জহির মোক্তারের পোড়ো ভিটায় স্কুল বসাবে। অথচ ভিটেটি দখল করে ওখানে একটি কাপড়ের মিল বসানোর ইচ্ছে অনেকদিন ধরেই কদর আলীর। „কদর আলী টেক্সটাইল মিল“ নামটি পর্যন্ত ঠিক করে রেখেছে সে। সামান্য কয়েকটি দিনের অপেক্ষা মাত্র! দূর গামের শরীকরা দাবী জানানোর সময়টি পেরিয়ে গেলেই দখল নিয়ে নিত। এ গ্রামে আসার সাহসও তাদের হতো না। ভয় দেখিয়ে আগেই টাইট দিয়ে রেখেছিল সবাইকে। অথচ বাগড়া বাঁধাচ্ছে এই ছোকড়া! শহর থেকে কিছু বিদ্যে শিখে মাথায় চড়ে বসেছে যেনো! শরীকদের কাছ থেকে কিসব কাগজপত্রও নাকি জোগাড় করে এনেছে। শালাকে ভালো করে টাইট দিতে হবে! দরকার পড়লে খুনই করে ফেলবে। খুন তো কম করেনি জীবনে! টাকা আছে, লোকবল আছে। সেগুলো বাড়ানোর জন্যে বা নিজের প্রতিপত্তির প্রসারের জন্যেই হোক, একটি নয়, বহু খুন করানোর মতো লোক তা হাতে রয়েছে। এই ছোকবার উপর ভয়ানক রাগ তার! এত সাহস তার! একই গ্রামে থেকে তার সাথে বিরোধ পাকাতে চায়। একে নিজের হাতেই খুন করবে কদর আলি।

জরিনার সাথে এমন হচ্ছে, কে জানে কার দোষ! হয়তো এই মাগীরই দোষ। নইলে তার মতো কটি তাগড়া জোয়ান আছে এই এলাকায়। বিশাল লম্বা, পেশীতে পেশীতে শক্তির ধার! এই মাগি যদি এমন পুরুষকে গরম না করতে পারে, পারবে কাকে? সেটা প্রমান করার জন্যেই একবার গন্জে এক বেশ্যাপাড়ায় গিয়েছিল সে। সবচেয়ে সুন্দরী আর যৌবনবতী একজনকে নিয়ে ঘরে ঢুকেছিল। কিন্তু যা হবার তাই হলো। তার অবস্থা দেখে মাগীটি একসময় হাসতে হাসতে বলে,

অ মিনসা! তুমি দেহি হ্যারিকেনের ফিত্তা ঝুলাইয়া হাটো!

শুনে ভীষন রেগে গিয়েছিল কদর আলি। কষে এক থাপ্পর লাগাতে গিয়েছিল। কিন্তু গন্জে এসব নিয়ে ঝামেলা বাঁধানোর সাহস পায়নি। কুৎসিত একটি গালি দিলেও বেরিয়ে এসেছিল মাথা নীচু করে। এদিকে নাতিপুতি না দেখে বাবা-মাও আরেকটি বিয়ের জন্যে পীড়াপিড়ি শুরু করেছে। ওদেরকে নাহয় ধমক দিয়ে থামিয়ে দেয়া যায়, কিন্তু কতদিন? মনে মনে ভাবে, জরিনাকে তালাক দিয়ে আরেকটা বিয়েই করবে সে।

এসব ভাবতে ভাবতে নিজের উপরই রেগে গেলো কদর আলি। কিন্তু সে রাগ নানা ভাবে ঘুরপাক খেতে খেতে আরো বিশাল হয়ে সেই ছোকবার উপর জমা হলো। এমনকি নিজের অক্ষমতার জন্যেও দায়ী করলো সেই ছোকরাকেই। বিকেলে আরেকটি খবর পেয়ে তার ক্ষিপ্ততা তুঙ্গে উঠলো। দবির এসে খরর দিল, স্কুলের কাজ নাকি শুরু হয়ে গেছে। বড় এক সাইনবোর্ড বসানো হয়েছে। দবিরকে বললো,

ধইরা আন হারামজাদারে! অহনই!
অহনই?
হ, অহনই! করিম্যারে, রশিদ্যারে লইয়া যাবি!
আইচ্চা!

বলেই রওয়ানা হলো দবির। হঠাৎ কিছু মনে হওয়াতে দবিরকে থামালো কদর আলি। একপাশে টেনে নিয়ে বললো।

অহন যাওনের দরকার নাই।
তাইলে? চিন্তিত স্বরে জানতে চাইল দবির।
রাইতে চুপি চুপি যাবি, কেউ যে না দ্যাহে! গহররেও লইয়া যাইস।
কেউ দেখব না কদর ভাই, হালায় একলাই হেই বাইত গুমায়।
ধইরা সিদা পোড়াভিটাত লইয়া যাবি!
আইচ্চা কদর ভাই!
কাম অইলে লগে লগে খবর দিবি আমারে। মনে থাহে যেন! কাক পক্ষীও যেন টের না পায়!

মাথা ঝাকিয়ে বিদায় নিল দবির। বিড়বিড়িয়ে আবার সেই ছোকরাকে গালাগাল দিল কদর আলী। কদর আলীর সমস্ত অপকর্মের জায়গা এই পোড়াভিটা। তার দাদার আমল থেকেই। দাদা ছিল একদিকে দুর্দান্ত লাঠিয়াল, অন্যদিকে তখনকার জমিদারের সমস্ত খুনখারাপীর ডানহাত। শত্রুদের শায়েস্তা করার জন্যে এখানেই ধরে আনা হতো। প্রয়োজনে খুন করে ভাসিয়ে দেয়া হতো নদীতে। পরে তার বাপও কম যায়নি। গ্রামের কতো বৌ-ঝি যে ইজ্জত খুইয়েছে এই পোড়ো বাড়ীর অন্ধকার ঘরে, তার ইয়ত্তা নেই। তবে এই সমস্যা কদর আলীর নেই। নিজের বৌকেই যে সন্তুষ্ট করতে অক্ষম, তার আবার অন্য মেয়েদের দিকে নজর দেবার জো কোথায়! দাদার সময়েই একসময় জমিদারী বিলুপ্ত হলো, পোড়োভিটাটি রয়ে গেলো ওদেরই দখলে। ওখানে বাড়ীঘর করা তো দূরের কথা, গ্রামের কেউ ওদিকে পথই মাড়াতে চায়না।

এশার নামাজের শেষ রুকুতে যাবার আগের মুহুর্তে দবির এসে ঢুকলো বৈঠকখানায়। রুকু শেষ করে সালাম ফিরেই দবিরকে বাইরে দাঁড়ানোর ইশারা করলো কদর আলি। তারপর বেশ লম্বা একটি মোনাজাত শেষ করে বেরিয়ে এলো বাইরে।

ধইরা আনছস্?
হ, কদর ভাই।
তাইলে চল।

দুজনে মিলে চললো পোড়োভিটার দিকে। বাইরে তখন ঘোর অন্ধকার। অমাবশ্যা না হলেও সময়টা তার কাছাকাছিই হবে। একটি প্যাঁচা ডেকে উঠলো কাছেই। তাঁতীদের তাঁত বোনার শব্দে সে ডাক মিলিয়ে গেলো সহসা।

পোড়োভিটায় ভাঙ্গাচোড়া একটি ঘর। উপরে ছাদ ভেঙ্গে গেছে অনেক আগেই। সাধারনত সাপখোকেরই বাস সেখানে। ছেলেটাকে বেঁধে রাখা হয়েছে ঘরের এক কোনে। মুখে কাপড় বাঁধা। পাহারায় রয়েছে রশিদ। মাঝে মাঝে টর্চ জালিয়ে সাপ তাড়াচ্ছে। কদর আলীকে এগিয়ে আসতে দেখে পা পিষে নিবিয়ে ফেললো বিড়িটি। সেদিকে নজর না করে দবিরের সাথে এগিয়ে গেলো কদর আলি ছেলেটির দিকে। ইশারা করতেই মুখের কাপড়টি খুলে দিল দবির। মুখ বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ে সার্টে লাল হয়ে আছে। মাথায় কাটা ঘা। টর্চের আলো পড়তেই আরো বেশী কুঁচকে উঠলো চেহারা।

এই হারামজাদা! আমার লগে বজ্জাতি করস! ইশকুল করস্ গেরামে!

কোন উত্তর দিল না ছেলেটি। কতো বয়েস হবে? কুড়ি, বাইশ, বড়জোড় পঁচিশ। এই বয়েসে এতো সাহস!

কিরে, কতা কস না কেন শুয়রের বাচ্চা?

বলেই কাছে এগিয়ে গেল কদর আলি। পায়ের জুতো দিয়ে একটা খোঁচা দিল ছেলেটির শরীরে। এবার ছেলেটি তার দিকে মুখ তুলে তাকালো। সে চোখের দৃষ্টির সামনে পড়ে চমকে উঠলো কদর আলি। এ দৃষ্টি তার হাতে প্রতিদিন অত্যাচারিত মানুষের দৃষ্টি নয়। এ দৃষ্টি সে দৃষ্টি নয়, যে দৃষ্টি অনুকম্পা আর করুণার প্রত্যাশায় ভুমিশয্যায় সর্বক্ষন। এ দৃষ্টি একেবারেই অন্য দৃষ্টি। এর সামনে পড়ে কদর আলির মতো মানুষদের বিড়ালের মতো পালিয়ে যাবার পথ খুঁজতে হয়। এ দৃষ্টি থেকে মুক্তির একটিই পথ। সে পথটিই বেছে নিল কদর আলী। তার বাপ দাদারাও নিয়েছিল সে পথ বহুবার।

তাই নিজ হাতেই ছুরি চালালো সে। একবার নয়, পর পর তিনবার।মরার আগে যন্ত্রণাক্ত চেহারায় একবার তার দিকে তাকালো ছেলেটি। কিন্তু কদর আলির সেদিকে তাকানোর সাহস রইলো আর। পেছন ফিরে নিজের সাঙ্গপাঙ্গদের লাশটি নদীতে ভাসিয়ে দেবার আদেশ দিয়ে বাড়ীর দিকে পথ ধরলো সে।

হাতে, শরীরে, লুঙ্গিতে ছিটকে অনেকটা রক্ত লেগেছিল। কেমন এক উত্তাপ লেগেছিল সেখানে।বাড়ীর কাছে পুকুরের জলে ভালো করে ধুয়ে ফেললো হাত। কিন্তু তাতেও দুর হলোনা সে উত্তাপ। বরং সেখান থেকে যেনো আরো বেশী ছড়িয়ে পড়লো শরীরের কোষে কোষে। সে উত্তাপের সাথে অজানা এক শিরশিরে অনুভুতি আর পাশবিক উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়লো শরীরে। হঠাৎ একটি বিষয় লক্ষ করে অবাক হলো কদর আলী। তার শরীরের এই অজানা উত্তাপ আর শিরশিরে অনুভুতি তার পৌরুষকেও যেনো বিকশিত করছে। তার দুই উরুসন্ধির ফাঁকে এক অজানা অনুভুতি তার এতোদিনের শিথিল অঙ্গকে ধীরে ধীরে যেনো ঘুম থেকে জাগিয়ে তুললো।

দ্রুত পা ফেলে বাড়ীর দিকে এগিয়ে গেল কদর আলী। শোবার ঘরে টোকা দিতেই ঘুম জড়ালো চোখে এসে দরজা খুলে দিল জরিনা। প্রশ্নবিদ্ধ চোখে স্বামীর মুখের দিকে তাকালো। সেদিকে কোন নজর দিলনা কদর আলী। দরজাটি বন্ধ করতেই নিজের কাপড় চোপড় ছেড়ে জরিনাকে এক ধাক্কায় ফেলে দিল বিছানায়। তার শরীর নিয়ে প্রতিবারের মতো খেলা করার সময়ও পেলো না। তার এই আচরণে অবাক হলেও সে নিয়ে ভাবার সময় পেলো না জরিনা। সাথে সাথেই এক পাশবিক যণ্ত্রণার কামড়ে বিদ্ধ হলো শরীর। আরো কিছুক্ষণ পর সে যন্ত্রণা মিলিয়ে যেতেই এক অদ্ভুত সুখাবেশে স্বামীকে জড়িয়ে ধরে পরে থাকতে চাইলো পাশে। তাকে ধাক্কা দিয়ে একপাশে সরিয়ে অন্যপাশে ফিরে অঘোরে নাক ডাকাতে লাগলো কদর আলি। তারপরও সে রাতে আর কাঁদেনি জরিনা।


মন্তব্য

নিবিড় এর ছবি

আহারে আমার মন্তব্য দেখি গল্পের সাথে হারিয়ে গেল মন খারাপ
দারুন তীরুদা চলুক


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

তীরন্দাজ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ নিবিড়। আপনার পরিশুদ্ধিপ্রস্তাবের জন্যেও অনেক ধন্যবাদ!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

স্পর্শ এর ছবি

ইয়ে, মানে...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

তীরন্দাজ এর ছবি


**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অনিকেত এর ছবি

তীরুদা,
শুধু এই কথাটা বলেই চলে যাই----লেখার হাত অনেকেরই থাকে, কিন্তু অন্তর্ভেদী এমন দৃষ্টি সকলের হয় না।

মাভৈঃ

তীরন্দাজ এর ছবি

খুব ভালো লাগলো আপনার মন্তব্যে অনিকেত!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

ভাল লাগল তীরুদা।

তীরন্দাজ এর ছবি

ধন্যবাদ!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব ভাল লাগলো...

তাহসিন গালিব

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ!

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

খুবই ভালো লাগল ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

তীরন্দাজ এর ছবি

খুশী হলাম খুব! শুভকামনা আপনাকে!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

শেষে এসে যেমন ঘটবে, মনে করেছিলাম, তেমনটি ঘটেনি। তবে গল্পটি কিন্তু দারুণ হয়েছে।

তীরন্দাজ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। কি ঘটবে বলে মনে করেছিলেন রেজা? বললে ভালো হতো। হয়তো আমারও সেটা আরো বেশী ভালো লেগে যেতো।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

বাউলিয়ানা এর ছবি

গল্পটা এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেল্লাম।
তুমুল হয়েছে তীরুদা।
হাসি

তীরন্দাজ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ বাউলিয়ানা! খুব খুশী হলাম আপনার মন্তব্যে।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

বলতেই হয়, সমাপ্তিটা একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিলো।
খুবই ভালো লেগেছে...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

তীরন্দাজ এর ছবি

হ্যা, আসলেই অপ্রত্যাশিত! আমি নিজেও আগে থেকে ভাবিনি। আপনার জন্যে অনেক শুভকামনা!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

পুতুল এর ছবি

গল্প ভাল হয়েছে।
অবশ্য মানুষের ধর্মই আপনার গল্পের বিষয়।
যারা বউদের সখ মেটাতে ঘুষ নিয়ে গাইয়ের ডেহা ঘোড়া-য় লাগায় তারাওতো কদর আলী!
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

তীরন্দাজ এর ছবি

তাই! আমাদের সমাজে কদর আলিদের অভাব নেই একেবারেই!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

খুব চমৎকার গল্প, তীরুদা।

তীরন্দাজ এর ছবি

ধন্যবাদ অতন্দ্র প্রহরী!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

অনেকদিন পর আপনার একটা ভালো গল্প পড়লাম। লেখক তীরন্দাজকে টের পাচ্ছি। মাঝখানে ঠিক পাচ্ছিলাম না। দারুণ! আরো গল্পের অপেক্ষায় রইলাম!
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

রিফা [অতিথি] এর ছবি

হমমমমমমমমম্‌ ।
এ্যাডাল্ট গল্প ................................. খাইছে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।