বড় শহরগুলোতে ভালো লাগে না আমার যদি না সে শহর ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও স্থাপত্য বহন করে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাথে মশলা হিসেবে সামান্য এ্যডভেঞ্চার আমাকে টানে বেশী। এবছরের জুনে এমনি এক পরিকল্পনার খসড়া করলাম। দু’সপ্তার ছুটি হাতে। প্রতিদিনের কাজের চাপে ঝিমিয়ে আছে শরীর। বিশ্রামও দরকার। পরিকল্পনার ছকও সবদিকে নজর রেখেই কাটা হলো। এক সপ্তাহ সমুদ্রের পারে কোন বাংলো ভাড়া করে নিবিড় বিশ্রাম। বাকী এক সপ্তাহ যাযাবরের মতো ঘুরে ঘুরে পথ আর প্রকৃতির সাথে সখ্যতা করা। সে ঘুরে বেড়ানোর সময়টুকুর জন্যে ছোট্ট একটি তাবু কেনা হলো। বেশ মজার তাবু। মোড়ক খুলে ছুড়ে দিলেই এক সেকেন্ডে নিজে নিজেই দাঁড়িয়ে যায়। তবে সেটিকে আবার প্যাকেট করার কারসাজি একটি ভিডিও দেখে শিখতে হলো। তাতেও তিন মিনিটের বেশী সময় লাগে না।
আমাদের পরিকল্পনা, মিউনিখ থেকে রওয়ানা হয়ে সুইজারল্যান্ডের লুসানের কাছাকাছি দুইরাত শ্যালকের বাড়ীতে কাটানো, সেখান থেকে ফ্রান্সের আরদেশ নামে এক স্রোতস্বিনী পাহাড়ী নদীতে কানু চালানো। এরপর একটি সপ্তাহ কাটবে মার্সাই থেকে দক্ষিনে ভুমধ্যসাহরের পারে এক বাংলোতে। সেখানে থেকে উপকুল বেয়ে পশ্চিমে যাবার পথ ধরে কান (Cannes), নিস (Nice) আর মোনাকো (Monaco) পেরিয়ে আবার উত্তরের পথে ইটালী ও আবার সুইজারল্যান্ড পেরিয়ে জার্মানীতে। এক সপ্তাহের এই চলাপথে যেখানে রাত, সেখানেই কোন এক ক্যাম্পিং প্লেসে কাত। সেজন্যেই কেনা হলো তাবুটি।
দুই সপ্তাহের ভ্রমনের যোগাড়যন্ত্র সহজ ব্যাপার নয়। আমার কাছে এই কাজটুকু বেড়ানোর মতোই আনন্দের। তাই সমস্যা হলো না। প্রয়োজনীয় কাপড় চোপড়, তাবু, তাবুর ভেতরে ঘুমোনোর জন্যে হালকা ম্যাট্রেস, স্লিপিং ব্যাগ, ক্যামেরা, বালিশ, পথের খাবার দাবার, কয়েকটি দেশী মশলা মিশিয়ে একটি শিশি- ইত্যাদি ইত্যাদি। সব যখন গাড়ীতে তোলার পর আমাদের দু’জনের সামনের বসার জায়গাটি ছাড়া পুরোটাই বোঝাই। শনিবার প্রচন্ড বৃষ্টির মাঝে বেরিয়ে একটু বিরক্ত হলেও দক্ষিণের সুবাতাসের প্রত্যাশায় সামলে নিতে পারলাম।
সাড়ে পাঁচশো কিলোমিটার পেরিয়ে জেনেভা লেকের কাছাকাছি একটি গ্রামে আমার শ্যলকের বাস। গ্রামের কোন চাষীর গোলাঘরের বাইয়ের আদল ঠিক রেখে আধুনিক বাসস্থান সাজানো হয়েছে। সেখান থেকে শ্যালক ও তার স্ত্রীর কর্মস্থল আধ ঘন্টার গাড়ীপথ। পাহাড়ী উপত্যকার উপর সাজানো একটি গ্রাম। শীতের সময় হাড় কাঁপানো শীত, আর গ্রীস্মের প্রায় প্রতিদিনই রৌদ্র মেঘের খেলা।
পরদিন ওখানকার একটি বিখ্যাত গুহা দেখতে গেলাম। গুহার ভেতরের দেয়াল ও বড় বড় সাদা পাথরের চাই হাজারো বছরের ফোঁটা ফোঁটা পানির ধারায় ক্ষয়ে ক্ষয়ে অদ্ভুত সৌন্দর্যমন্ডিত। মনে হয় কোন এক খেয়ালী শিল্পী অসীম ধৈর্যে আর পরম নিপূনতায় এই শিল্পকর্মকে সাজিয়েছেন আমাদের সামনে। সিঁড়ি বেয়ে অনেক দুর নেমে যেতে হয় ভেতরে। প্রতিটি কোনেই এক একটি নতুন বিস্ময় চোখ ধাঁধিয়ে দেয়।
শ্যালকের কাছে থেকে বিদায় নিয়ে বেশ লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে আরদেশ নদীতে পৌঁছুতে পরদিন বিকেল হয়ে গেলো। ফ্রান্সের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লিয়ন থেকে প্রায় দুশো কিলোমিটার দক্ষিনে বিশাল বিশাল পাহাড়ের, কখনো উপত্যকা বেয়ে, কখনো পাহাড় ভেঙ্গে আরদেশ নদী। Vallon Pont d’Arc থেকে বয়ে গেছে এঁকেবেকে দক্ষিনে। এর সৌন্দর্য বর্ননা করা আমার সাধ্যে কুলোবে না বলেই কয়েকটি ছবি দিলাম, হয়তো তাতে কিছুটা ধারনা করা যেতে পারে।
একটি ক্যম্পিং প্লেমে তাবু খাটানো হলো। রান্না বান্নার কোন ব্যাবস্থা সাথে রাখিনি। সেখানকার একটি রেষ্টুরেন্ট বেশ ভালো খাওয়াদাওয়া সারলাম। ইন্টানেটের ব্যাবস্থা থাকায় নোটবুকে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আয়ারল্যান্ডের কাছে টাইগারদের পরাজয়ের খবর পেয়ে অনেকটাই তেতে হয়ে গেল মন।
সে রাতেই আমাদের তাবুর প্রাথমিক পরীক্ষাটি বেশ ভালোভাবেই হয়ে গেল। আকাশ ফুড়ে মুষলধারে বৃষ্টির ঢল নামলো রাতে। সেই সাথে বজ্রপাত আর বিদ্যুতের চমক। মনে হলো তাবুর নীচে ভিজে একাকার হবোই এবার, এমনকি আমাদেরকে ভাসিয়েও নিয়ে ফেলতে পারে আরদেশের স্রোতের ধারায়। বছর দশেক আগে এমনি এক বৃষ্টির রাতে এই ফরাসী দেশেরই এক ক্যাম্পিং প্লেসে অনেক লোক মারা গিয়েছিল। তাবু, গাড়ী, ক্যাম্পিং বাস সহ সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে ফেলেছিল নদীতে। প্রায় চার ঘন্টা ধরে চললো বৃষ্টি আর বজ্রবিদ্যুতের চাবুক। আমরা তাবুর ভেতরে পুরোপরি শুকনো রয়ে গেলাম। পরদিন সকালে জেগে দেখলাম জায়গামতোই আছি।
পরদিন আরদেশে স্রোতের তীব্রতা দেখে প্রথমে কানু চালাতে সাহসই করলাম না। কিছুক্ষণ পর আরো কয়েকজনকে দেখে সাহস ফিরে এলো। স্রোত বেয়ে উজান থেকে ভাটিতে দেড় ঘন্টার পথ। নদীপথের বাঁ’দিকে থামার চিহ্নিত জায়গা রয়েছে। শেষে সেখানেই থামতে হবে। সেখান থেকে কানু ভাড়া সংস্থার গাড়ী কানু সুদ্ধ আমাদেরকে ফিরিয়ে আনবে আবার আগের জায়গায়। লাইফ জ্যকেট পরে চশমা সুতো দিয়ে বেঁধে নিলাম। বিশাল একটি প্লাষ্টিকের বাক্সে ক্যমেরা সহ দরকারী জিনিসপত্র পুরে বন্ধ করে শুক্ত করে কানুর সাথে বেঁধে দেয়া হলো। তারপর নাইয়ারে … বলে চড়ে বসলাম নৌকোয়। বৌ সামনে, আর আমি পেছনে হাল ধরে। অনেককেই স্রোতের মাঝে কানু সুদ্ধো উল্টে যেতে দেখলাম। আমার ডানদিক, বামদিক বৈঠা চালানোর নির্দেশ বৌ পুরোপুরিভাবে পালন করার কারণে ভিজে চুপসে হলেও না উল্টেই পৌঁছলাম জায়গামতো। স্রোতের জায়গাগুলোতো ক্যামেরা বাক্সবন্দী রাখতে হয়েছে। তাই সেখানে ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। একবার সুবিধামতো একটি জায়গায় থেমে কিছু ছবি তুলেছিলাম। সেগুলোই দিলাম এখানে।
চলবে…!
মন্তব্য
ঝুম বৃষ্টিতে তাবুর ভেতর রাত্রিযাপন ... অসাধারণ।
অধীর অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্বের জন্য।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
আরে! শেষ হয়ে গেল? তীরু ভাই, আপনি এবার বিরাট ফাঁকি মারলেন।
অনেককেই দেখলাম ছবিতেই সব বলে দেন। আমিও সে চেষ্টা করলাম। পরের পর্বে তাহলে একটু বিস্তারিত লিখবো।
ধন্যবাদ আপনাকে!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
চলতে থাকুক।
আপনি আর অ্যাডভেঞ্চার - সম্ভবত দু'জনে দুজনার । কেউ কাউকে ছাড়া থাকতেই পারেনা
লেখা-ছবি মিলিয়ে আবারো জমজমাট এক কাহিনী'র জন্য বসলাম
তবে জাহাজী জীবনের মতো জমজমাট নয়, সেটা ভাই আগেই বলে নিচ্ছি! ভালো থাকবেন!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
জব্বর! অপেক্ষায় থাকলাম!
-----------------------------------------------
আয়েশ করে আলসেমীতে ২৩ বছর পার, ভাল্লাগেনা আর!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
ভালো লাগছে। পরের পর্বের অপেক্ষায়.....
ধন্যবাদ!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
অল্পতেই শেষ হয়ে গেল!!!!! তীরুদা এইটা অন্যায়!
পর্বগুলো আরেকটু বড় করার দাবী জানাচ্ছি।
সেজন্যে তো বেশী করে ছবি দিলাম ভাই! পরের পর্ব তাহলে বড়ই করবো।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
আরেকটা জমাট সিরিজের গন্ধ পাচ্ছি তীরুদা
...........................
Every Picture Tells a Story
জানিনা ভাই, ততোট জমাট হবে কি না। এটাতো সামান্য এডভেঞ্চার মেশানো ভ্রমণ কাহিনী.... জাহাজী সময়ের জীবন কাহিনী তো নয়! তারপরও চেষ্টা করবো।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
তীরুদা, ভালো লাগছে। তাড়াতাড়ি পরের পর্ব আসুক।
...................................................................................................
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।
আসছে...! ধন্যবাদ!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
দারুন লাগল । প্রথম ছবিটায় গাড়িটা যদি পুরোপুরি থাকত তাহলে ক্যালেন্ডারে ছাপিয়ে দেয়া যেত ।
গুহার ভেতরের এই পাথরের স্তম্ভ গুলোকে মনে হয় স্ট্যালাগমাইট আর স্ট্যালাক্টাইট বলে, তাই না ?
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
ধুর, এই পুরোনো মডেলের গাড়ীতে ক্যালেন্ডার? আমার গাড়ীর চ্ইতে তাবুটিই ভালো লেগেছে বেশী...!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
সবসময় পড়ি। সবসময় পড়ব।
*********************************************
আমার আত্মা বোমায় দু'হাত উড়ে যাওয়া কোনো আফগান শিশুকন্যা।
*********************************************
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
চমৎকার। চটজলদি পরের পর্ব চাই।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
- ভয়ানক সুন্দর জায়গা তীরুদা। একেবারে মরে যাওয়ার মতো সুন্দর।
তাবুর ভেতরে পানি যায় নি বৃষ্টির সময়, মাটি চুয়ে চুয়ে? আপনার তাবুটা আমার পছন্দ হৈছে। হিমুরা আসার আঘে একটা কিনে রাখতে হবে। আমার ঘরে তো জায়গা কম। ভাবতেছি অরে বাইরে তাবু খাটিয়ে দেবো। আর নাইলে বেচারার বাথরুম বা কিচেনে ঘুমাতে হবে!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
মাটি চুয়ে চুয়েও পানি যায়নি। নীচের দিকটাও বন্ধ। পানি জমে থাকলে হয়তো একসময় ঢুকতো। আমার এক বন্ধু মাছের পুকুর করেছে দেশে। এবার ওর জন্যেও একটি কিনে নিয়ে যাবো।
অক্টোবর ফেস্ট কিন্তু সেপ্টেম্বরের পনেরো থেকে শুরু হচ্ছে ধুগো...!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
দারুণ লাগল, তীরুদা। বুঝতে পারলাম, মন না চাইলেও, আগামী বেশ কয়েকদিন আপনাকে আবার প্রাণভরে হিংসা করতে হবে
চলুক। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
খাইছে আমারে!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
ভয়ঙ্কর রকমের এমন গাজাখুরি গল্প পড়ে আর এই চোখে জ্বালা ধরানো ছবি দেখে কার না ইচ্ছা করে অমন জায়গায় না যেতে? এমনিতেই আমি এক যাযাবর তার পরে যদি এমন করে হাত ছানি দিয়ে ডাকে কেও তাহলে আমি কি করি, কাছাকাছি কেও বলে দেবার মত আছে????
পরের লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ! পরের পর্ব দ্রুত দেবার চেষ্টা করবো।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
তীরুদা! আবারও ভ্রমণের গল্প! দারূণ!!
আপনার লেখায় গুহার যে ছবিগুলো দেখলাম, ঠিক ওই রকম দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার কুবার পিডিতে মাটির নিচে গুহা আছে , যেখানে কোটি বছর আগে জল ছিলো কিন্তু এখন মরুভূমি, কিন্তু মাটির নিচের স্তরে এরকম খাঁজ কাটা কাটা, সেখানে নানা প্রাকৃতিক পরিবর্তনে ওপাল তৈরী হয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ওপালের খনি ওই অঞ্চলে। একটা ছবি দেই, আপনার লেখা দেখে মনে পড়লো -
জীবনটা যে একটা ভ্রান্ত ধারণা, সেটা এরম বাসা থেকে বের হলেই আসলে বোঝা যায়
নতুন মন্তব্য করুন