সিডর এবং তারপর আমাদের দেশ

নিঘাত তিথি এর ছবি
লিখেছেন নিঘাত তিথি (তারিখ: শনি, ১৭/১১/২০০৭ - ১০:০৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

autoদেশটা কেন যেন স্বস্তি পায় না কখনই। যুদ্ধ করে অনেক ত্যাগে স্বাধীন হলো, এখন সেই স্বাধীনতা রক্ষা নিয়ে করতে হচ্ছে নতুন যুদ্ধ। দুর্নীতি যখন দেশের দরিদ্র মানুষদের আরো দরিদ্র করে দিচ্ছে, তখন তাদের পুরোপুরি নিঃসহায় করে দিতে উপাদান যোগাচ্ছে প্রকৃতি- বারবার। কখনও ভূমিধ্বস, কখনও প্রবল বন্যা, এবার প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়- সিডর!

১৯৯১ সালের ১৯শে এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছাসের ভয়াবহ স্মৃতি আমরা কখনও ভুলব না। এবারের ঘূর্ণিঝড়কে তুলনা করা হচ্ছে তার সাথে। বরং কেবল উপকূলীয় নয় এবার আক্রান্ত হয়েছে দেশের আরো অনেক অঞ্চল। খুলনা বিভাগের বরিশাল, ঝালকাঠি, সাতক্ষীরা, বরগুনা, বাগেরহাট, মাদারীপুর, পিরোজপুর, দুবলার চর সব জায়গায় প্রায় সহস্রাধিক মানুষ মারা গেছে। পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে মাটির সাথে মিশে গেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। পাকা ধান ঝড়ের তান্ডবে মিশে গেছে ক্ষেতের সাথে। দেশের বিদ্যুৎ অবস্থা, টেলিযোগাযোগ পুরোপুরি বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে।

শত শত মৃত্যু... যারা বেঁচে আছে তারাই বা কি করে বাঁচবে সর্বস্ব হারিয়ে?

প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে করেই তবু বেঁচে থাকতে হয়েছে এদেশের মানুষকে বারবার। আবার যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে সহায় হতে হবে দেশের সমস্ত মানুষকে। জানি না কেমন করে কাটানো যেতে পারে এই ভয়াবহ বিপদ। যারা মারা গেছে তাদেরকে আমরা বাঁচাতে পারিনি, কিন্তু যারা এখনও কোন মতে বেঁচে আছে তাদের জন্য কি আমরা কিছু করতে পারি না? নিজেদের যার যা সামর্থ আছে সেইটুকু দিয়েই কি আমরা দেশের মানুষের এই বিপদের দিনে তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি না?

প্রবাসী এবং দেশী সকল ব্লগারকে আহ্বান জানাচ্ছি এগিয়ে আসার জন্য।

ইশতিয়াক রউফের দেয়া পেপাল লিংক-এ গিয়ে প্রবাসী ব্লগার এবং অন্যান্যরা টাকা পাঠাতে পারেন।
http://www.bang.org.vt.edu/makhan.html


মন্তব্য

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ভার্জিনিয়া টেকে আমরা টাকা তুলছি এই সাইটেঃ

http://www.bang.org.vt.edu/makhan.html

টাকা 'কেয়ার'-এর মাধ্যমে কিছু পাঠানো হবে, বাকিটা সাথে করে নিয়ে যাবে ছাত্ররা।

আমার কাছে তাৎক্ষনিক বিপর্যয়ের চেয়ে বড় চিন্তা সম্ভাব্য খাদ্য সংকট। পাকা ফসল তুলতে আর মাত্র কয়টা দিন বাকি ছিল। সব গেল।

নিঘাত তিথি এর ছবি

ইশতিয়াক, অনেক ধন্যবাদ লিংকের জন্য।

হুম, পাকা ফসল নষ্ট হয়ে গেলো...এমনিতেই এখন দেশে খাবারের যে দাম। এখন যে কি হবে, ভাবতে পারছি না।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

আব্বার সাথে কথা বল্লাম ফোনে একটু আগে। বল্লেন যে ১৯৭০ সালে ফজলুল হক হলে থাকার সময় যেমন ঝড় দেখেছিলেন, সাইত্রিশ বছর পর আবার তাই দেখলেন। একমাত্র ঢাকা শহরের ক্ষয়ক্ষতির কথা শুনেই তাই মনে হচ্ছে। গাছ উপড়ে গেছে নাকি শত শত, ১৯৯১ এর ঝড়ে মানুষ মারা গিয়েছিল অনেক, কিন্তু ঝড়ের তেজ বোধ হয় এতখানি ছিল না। আম্মা সারা রাত ঘুমাননি, দোয়া দরুদ পড়েছেন।

একেবারেই ব্যক্তিগত লেভেলে, আমার ফুফুর সাইডের আত্মীয়রা কয়েকজন বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এক ফুফাতো ভাই টঙ্গীতে থাকেন, তার বাড়ির টিনের চালা উড়ে গেছে। এক ফুফাতো বোন গ্রামে থাকেন, তার আস্ত বাড়িই হাওয়া হয়ে গেছে। আর বিক্রমপুরে থাকেন আরেক ফুফু, তার বাড়ির কিছুটা অংশ উড়ে গেছে। কেউ আহত হয়নি যদিও। অবাকের বিষয় হলো যে তারা সবাই কোস্ট থেকে অনেক অনেক দূরে থাকেন। ভাবতেই ভয় লাগে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

নিঘাত তিথি এর ছবি

আমার বাসা ঢাকায়, আমি এখনও কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারলাম না। কারো মনে হয় মোবাইলে চার্জ নেই, বিদ্যুৎই নেই যখন...
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

এহেছান লেনিন এর ছবি

একটা মশাল জ্বালো। আলোকিত করো পৃথিবী। এগিয়ে যাও বাহে...

রক্তে নেবো প্রতিশোধ...

রক্তে নেবো প্রতিশোধ...

হাসান মোরশেদ এর ছবি

নিজস্ব ও সামষ্টিক শোকে স্তব্দ হয়ে আছি ।
-----------------------------------------
'জলপ্রিয় হে যুবক, তোমার ভিতরে এত
ভাঙনের পতনের শব্দ শুনি কেন!'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

শেখ জলিল এর ছবি

বাড়ছে নিহতের সংখ্যা, বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতি।
সহমর্মিতা, সাহায্যের হাত প্রসারিত হোক আরও..

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

নামহীন এর ছবি

ইশতিয়াক রউফ লিখেছেন:
ভার্জিনিয়া টেকে আমরা টাকা তুলছি এই সাইটেঃ

http://www.bang.org.vt.edu/makhan.html

টাকা 'কেয়ার'-এর মাধ্যমে কিছু পাঠানো হবে, বাকিটা সাথে করে নিয়ে যাবে ছাত্ররা।

আমার কাছে তাৎক্ষনিক বিপর্যয়ের চেয়ে বড় চিন্তা সম্ভাব্য খাদ্য সংকট। পাকা ফসল তুলতে আর মাত্র কয়টা দিন বাকি ছিল। সব গেল।

অল্প কিছু অর্থ সাহায্য করেছি, র্দূদশাগ্রস্থ একজনও উপকৃত হলে ভাল লাগবে। উদোগ্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ।

নিঘাত তিথি এর ছবি

মূল পোস্টে পেপাল লিংকটি তুলে দিলাম।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।