আমার দেখা বাংলা সিনেমা (মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক)

নিঘাত তিথি এর ছবি
লিখেছেন নিঘাত তিথি (তারিখ: সোম, ২৫/০২/২০০৮ - ৯:২১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হলে গিয়ে সিনেমা দেখা বন্ধ হবার পরে টিভিই রইলো একমাত্র সম্বল। একটু বুদ্ধি হবার পর থেকেই যে সিনেমাটি টিভিতে সবচেয়ে বেশি দেখেছি তা "জীবন থেকে নেয়া"। autoযেকোন দেশাত্ববোধক উপলক্ষে এই একটি সিনেমাই দেখানো হতো। সম্ভবত রাজনৈতিক জটিলতায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক অন্যান্য যেকোন সিনেমা দেখানোটা ওই সময়ের সরকারের পক্ষে সম্ভব ছিলো না (হায়!)। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে এই সিনেমাটি যতবারই দেখেছি, নতুন করে ভালো লেগেছে। ছোটবেলায় এই সিনেমার রূপক অর্থটি বুঝিনি, তবুও ভীষন উপভোগ্য মনে হতো। খান আতার সেই চিরদিনের অসম্পূর্ণ গান, " এ খাঁচা ভাঙব আমি কেমন করে?" কখনোই ভোলার নয়। এবং সেই বিখ্যাত ডায়ালগ, "ঘরে ঘরে দূর্গ গড়তে হবে"...অসাধারণ। একটু বড় হয়ে, একটু বুঝার পর থেকেই কেবল ভাবি, কি পরিমাণ মেধা থাকলে একজন পরিচালক এরকম একটি সিনেমা তৈরি করতে পারেন। অসাধারণ প্লট,পারফেক্ট রূপক- একটি পরিবারের মধ্য দিয়ে পুরো একটি দেশের সম্পূর্ণ পরিস্থিতিটি তুলে ধরা, সর্বোপরি প্রতিটি পাত্র-পাত্রীর চমৎকার অভিনয়। দেখতে দেখতে মুখস্ত হয়ে যাওয়া এই সিনেমাটি তাই তুমুল উৎসাহ নিয়ে এখনও আবার দেখতে বসি। এই রকম পারফেক্ট সিনেমা বাংলাদেশের চ্চলচিত্র জগতে বিরল। প্রিয় সিনেমা কোনটা কখনো ভাবতে গেলে চোখ বন্ধ করে তাই আগে বলে নেই, "জীবন থেকে নেয়া"। হারিয়ে যাওয়া প্রিয় জহির রায়হানের উদ্দেশ্যে আরেকবার হ্যাটস অফ।

মিতার পরিচালনায় "আলোর মিছিল" সিনেমাটিও ছোটবেলার অনেকবার দেখা। অভিনেতা অভিনেত্রী মূলত ছিলেন ববিতা-রাজ্জাক, মামা-ভাগ্নি চরিত্রে। আরও ছিলেন ফারুক, আনোয়ার হোসেন, রোজী আফসারী, সুজাতা। মূলত মুক্তিযুদ্ধের পরের পটভূমি নিয়ে তৈরি এই ছবিটি। একটা জনপ্রিয় গান ছিলো "দুঃখ করো না বন্ধু তোমরা যদি না পারি/ আগেকার সেই সুরে সুরে গাইতে আমার গান/ প্রশ্ন করো না হৃদয়জুড়ে এ কোন অভিমান?" আরেকটি অসাধারণ গান ছিলো সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া, "এই পৃথিবীর পরে, কত ফুল ফোটে আর ঝরে/ সে কথা কি কোন দিন, কখনও কারো মনে পড়ে"। এই গানে ফুটফুটে ববিতার চমৎকার হাসির কথা মনে এখনও চোখে ভাসে।

মুক্তিযুদ্ধের আর কোন সিনেমা বিটিভিতে সেই সময় দেখেছিলাম বলে মনে পড়ে না। এরপর টানা অনেকগুলো বছর পরে বিটিভিতে মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা দেখার সৌভাগ্য হয়েছিলো '৯৬তে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার পরে। তখনই দেখেছিলাম সুভাষ দত্তর "অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী (ববিতা)", খান আতার "আবার তোরা মানুষ হ", আলমগীর কবীরের "ধীরে বহে মেঘনা", চাষী নজরুল ইসলামের "ওরা এগারো জন" এই সিনেমাগুলো। '৯৬ আমি ক্লাস নাইনে পড়ি, একটা একটা মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা দেখতাম, আর শিউড়ে উঠতাম- কখনও কষ্টে, কখনও আনন্দে। অসাধারণ সব দেশাত্ববোধ সব গান ছিলো এই সব ছবিতে, " এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা", "এক নদী রক্ত পেরিয়ে,বাংলার আকাশে রক্তিম সূর্য আনলে যারা/ তোমাদের এই ঋণ কোনদিন শোধ হবে না", "মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি", "কত যে ধীরে বহে মেঘনা"। মুক্তিযুদ্ধের পরপরই বাংলাদেশের প্রথম সিনেমাটি যতদূর জানি ওপার বাংলার সহায়তায় মির্মিত একটি ছবি, "রক্তাক্ত বাংলা"। ওপারের বিশ্বজিৎ ছিলেন অভিনয়ে। লতা মুঙ্গেরশকরের কণ্ঠে চমৎকার একটি গান ছিলো সেই ছবিতে, " ও দাদাভাই, দাদাভাই মূর্তি বানাও/ নাক-মুখ-চোখ সবই বানাও/ হাত বানাও, পা-ও বানাও/ বুদ্ধ-যীশু সবই বানাও/ মন বানাতে পারো কি? একটা ছোট?/ বোন বানাতে পারো কি?/ দাদাভাই বোন বানাতে পারো কি?"

এরপর অনেক বছর পরে সম্ভবত ১৯৯৫তে হুমায়ূন আহমেদ আবার বানালেন মুক্তিযুদ্ধের ছবি, "আগুনের পরশমণি"। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ঢাকা শহর, ঢাকায় থাকা একটি পরিবারের বন্দি-জীবন, সেই পরিবারে হঠাৎ একজন মুক্তিযোদ্ধার আবির্ভাব- এই নিয়ে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের কাহিনী। আমার কাছে ভীষন হৃদয়ছোঁয়া মনে হয়েছিলো। বিপাশা হায়াত, আসাদুজ্জামান নূর, ডলি জহুর, আবুল হায়াত, শিলা আহমেদ- নাটকের এই মানুষগুলো তাদের অভিনয়ক্ষমতায় আরো মহিমান্বিত করেছিলেন এই সিনেমাটিকে। এই সিনেমাটিও আমি টিভিতেই দেখেছিলাম, হলে নয়। এরপর আবার দীর্ঘবিরতির পরে ২০০৭ সালে দেখলাম তৌকির আহমদের "জয়যাত্রা", আন্তর্জাতিক চ্চলচিত্র উৎসবে, জাতীয় জাদুঘরে। এবং একই সময়ে দেখলাম টিভিতে মুক্তি পাওয়া হুমায়ূন আহমেদের "শ্যামল ছায়া"। এই দু'টো সিনেমার পটভূমি আশ্চর্যজনকভাবে প্রায় একই। তবু ভালো লাগলো দু'টোই। এ আর আশ্চর্য কি, একই কাহিনীর কত বৈচিত্রেই না আমাদের স্বাধীনতা।

মূলধারার সিনেমার বাইরে একটি সিনেমার কথা বলতে হবে, তারেক মাসুদের পরিচালনা, ক্যাথরিন মাসুদের প্রযোজনায় "মুক্তির গান"। টিভিতেই দেখেছিলাম। এবং মুক্তিযুদ্ধের সমরকার এরকম একটি প্রামাণ্যদলিল দেখে গাঁয়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিলো। (যতদূর মনে পড়ে) পরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীর অত্যাচারে বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়া একটি গ্রামে "মুক্তির গান"-এর প্রদর্শনী এবং আরো কিছু দৃশ্য সংযোজন করে বানানো হয় "মুক্তির কথা"। একটি দৃশ্যের কথা মনে আছে, এখনও লিখতে গিয়ে চোখে পানি আসছে-- ভারতে যাবার আগে তারেক মাসুদ বাংলাদেশ সীমান্তের এক মুঠো নরম কাদা হাতে তুলে নেন। ওই মুহুর্তে হৃদয়ের গভীর থেকে উপলদ্ধি করি "আমার দেশের মাটি/ খাঁটি সোনার চাইতে খাঁটি"। এই সিনেমাতেই প্রথম শুনি মৌসুমি ভৌমিকের কণ্ঠে মর্মস্পর্শী "যশোর রোড" গানটি। তারেক মাসুদের আরেকটি সিনেমা "মাটির ময়না"। এটিও মুক্তিযুদ্ধের সময়কার গল্প নিয়েই, যদিও এতে প্রাধাণ্য পেয়েছিলো মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রের ভুবন। এই চমৎকার সিনেমাটি দেখেছিলাম বলাকা সিনেমা হলে গিয়ে।

এখন অপেক্ষা করে আছি, মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে আরো অনেক ভালো ছবি দেখব বলে।
(চলবে)

***"জীবন থেকে নেয়া" সিনেমার স্থিরচিত্রটি উইকিপিডিয়া থেকে নেয়া।


মন্তব্য

রায়হান আবীর এর ছবি

একটাই আফসোস, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক ভাল ভাল সিনেমা তৈরি হলেও পুরো সময়টাই ধরে রেখেছে এমন কোন সিনেমা এখন হয়নি।

নিঘাত তিথি এর ছবি

হুম, বাকি রয়ে গেছে অনেক কিছুই। খুব বেশি সিনেমাও কিন্তু নেই আসলে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে।
সরাসরি যুদ্ধদৃশ্য সম্বলিত কোন সিনেমাও বোধহয় হয় নি এখনও। মুক্তিযুদ্ধ মানেই সম্মুখ যুদ্ধ নয়, কিন্তু কোন একটা সিনেমাতেও বিষয়টা আসতে পারতো হয়তো।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

স্বপ্নাহত এর ছবি

"জীবন থেকে নেয়া" আমারো বহু বার দেখা।
মুখস্ত হয়ে যাবার কথা ছিল,কিন্তু হয়নি।বোধহয় ইচ্ছে করেই ভুলে যাই।নতুন করে যেন পুরোনো ছবিটা আবার দেখতে পাই।

আগুনের পরশমণি দেখেছিলাম সেই কবে।এখনো মনে পড়ে দেখার পর কেমন কেঁদেছিলাম।

লক্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দেখা আপনার ছবিগুলোর সাথে আমার দেখা ছবিগুলোর লিস্টিও প্রায় একই।এর পেছনে যত না আমাদের দুজনের রুচির মিল তারচেয়ে বোধহয় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাল ছবির স্বল্পতাই প্রধাণ কারণ।

=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=
বুকের মধ্যে আস্ত একটা নদী নিয়ে ঘুরি

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

নিঘাত তিথি এর ছবি

ঠিক। এই অল্প ক'টা সিনেমা দেখতে গিয়ে রুচির দ্বারস্থ হবার কোন উপায়ই নেই।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

পরিবর্তনশীল এর ছবি

লক্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দেখা আপনার ছবিগুলোর সাথে আমার দেখা ছবিগুলোর লিস্টিও প্রায় একই।এর পেছনে যত না আমাদের দুজনের রুচির মিল তারচেয়ে বোধহয় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাল ছবির স্বল্পতাই প্রধাণ কারণ।

---------------------------------
চোখের পাতায় হাত রেখে ওরা আমাকে স্বপ্ন দেখার যন্ত্রণা দেয়।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- মুক্তির গান, সিনেমা না হলেও অসাধারণ এক ডকুমেন্টারী।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

নিঘাত তিথি এর ছবি

মেইনস্ট্রিম সিনেমা নিয়ে ভাবতে গিয়ে "মুক্তির গান"-এর কথা ভুলে গিয়েছিলাম, কেমন করে যে! অসংখ্য ধন্যবাদ মনে করিয়ে দেবার জন্য। এই সিনেমার উল্লেখ ছাড়া এই পর্ব সম্পূর্ণতা পাবে না।
পোস্টে উল্লেখ করে দিচ্ছি।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

জীবন থেকে নেয়া-র ব্যাপারে আমার ফিলিংসটাও একই। যতবার দেখেছি, নতুন করে ভাল লেগেছে। আগুনের পরশমনি-ও মন ছুঁয়ে যাওয়া।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- জীবন থেকে নেয়া'র ব্যাপারে আমার ফিলিংসটা হলো কৈ মাছের লাফালাফি! রওশন জামিলের ছুঁড়ে ফেলা একটা কৈ মাছ লাফাচ্ছিল মেঝেতে হাসি
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

"জীবন থেকে নেয়া" দেখেছিলাম তখন কলেজে ভর্তি হয়েছি। ছবিতে "আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি" শুনে গায়ে কাঁটা দিয়েছিলো। তখনো জানি না, এই গান অচিরেই একটি স্বাধীন দেশের জাতীয় সঙ্গীত হবে।

জহির রায়হান ও খান আতা জুটির স্বাধীন বাংলাদেশে কাজ করার সুযোগ হয়নি যা আমাদের চলচ্চিত্রের খুব বড়ো ক্ষতি ছিলো।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

হাসিব এর ছবি

তখনো জানি না, এই গান অচিরেই একটি স্বাধীন দেশের জাতীয় সঙ্গীত হবে।

ঐ সময়টা নিয়ে তেমন কোন লেখা দেখা যায় না । জাতীয় সংগীত ঠিক করা হলো, জাতীয় পাখি, ফল, ফুল নির্ধারণ করা হলো । আপনারা যারা এসব দেখেছেন তাদের এই বিষয়ে মতামত কি ছিলো । সেই সময়ের সেইসব কথা নিয়ে একটা পোস্ট আশা করছি ।

হিমু এর ছবি

সহমত। খান আতা-র মতো সুরকার কমই এসেছিলেন চলচ্চিত্রে, বর্তমানের কথা বরং না বলি!

আমার খুব প্রিয় একটা গান "শ্যামল বরণ মেয়েটি, ডাগর কালো আঁখিটি, না না তার নাম বলবো না, নাম বলবো না" ...। তিথির এই পোস্টে উল্লেখ করা গানগুলো প্রায় সবক'টিই আমার খুব প্রিয়, যেটার অভাব বোধ করছিলাম সেটা উল্লেখ করে দিলাম :)।


হাঁটুপানির জলদস্যু

নিঘাত তিথি এর ছবি

হাসি এটা আমারও খুব প্রিয় গান হিমু ভাই। তবে এই পোস্টে উল্লেখ না থাকার কারণ হচ্ছে, এই গানটি সম্ভবত এই পোস্টে উল্লেখিত কোন সিনেমার নয়। সম্ভবত খান আতার "কাঁচের দেয়াল" সিনেমার গান, না? নায়িকা ছিলেন সুমিতা দেবী।
নেটে হিমু ভাইয়ের গলার মনে হয় শুনেছিলাম গানটা? হাসি
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

নিঘাত তিথি এর ছবি

এই হলো "দেখা প্রজন্ম" আর "শোনা প্রজন্ম"-এর পার্থক্য। "আমার সোনার বাংলা" যে কখনও আমাদের দেশের জাতীয় সংগীত ছিলো না এটা তো ভাবতেই পারি না! জন্মের পরে স্বাধীন দেশ দেখেছি, সবকিছু সাজানো পেয়েছি, আমাদের পক্ষে কি সেই অনূভুতি উপলদ্ধি করা সম্ভব!
"জীবন থেকে নেয়া"তে গানটি আসলেই খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করে হয়েছে। বিশেষ করে সাবিনা ইয়াসমিন যখন খুব উঁচু স্কেলে চিকন সুরে গেয়ে উঠেন, " আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি"।

ধন্যবাদ জুবায়ের ভাই।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

অতিথি লেখক এর ছবি

***********উলুম্বুশ***********
****kamrultopu@yahoo.com****
মুক্তির গান দেখেছিলাম ক্যাডেট কলেজে থাকতে। ক্লাস এইটে। অসম্ভব কেঁদেছিলাম। আজো মনে আছে। কোন সিনিয়র ও shunting দিয়ে অতটা চোখের পানি আনতে পারেনি। এই লিখার মোটামোটি সব সিনেমাই দেখা। আলোর মিছিল দেখে ববিতা আর রাজ্জাক এর মামা-ভাগনীর অভিনয় দেখে খুবই ভালো লেগেছিল আর শেষে মিষ্টি মেয়ে ববিতা মারা যাওয়াতে মনে হচ্ছিল ঐ বড় মামাটাকে পিটাই।

হাসিব এর ছবি

মুক্তির গান ইউটিউবে আছে । লাগলে আওয়াজ দিয়েন ।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

দিলাম মুক্তির গানের জন্য আওয়াজ।

জীবন থেকে নেওয়া'য় অসাধারণ লেগেছে 'এ খাঁচা ভাঙবো আমি কেমন করে' শেষ করতে না পারার রূপকটি। খুব মনে হয়, এই গানটা যদি শেষ করে যেতেন কেউ পরবর্তীতে!

নিঘাত তিথি এর ছবি

হাসিব ভাই এবং ইশতিয়াক রউফ,
পোস্টে "মুক্তির গান"-এর ইউটিউব লিংক দিয়ে দিয়েছি।
ধন্যবাদ।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ঠিক বলেছেন ,,, একসময় খালি জীবন থেকে নেয়াই দেখাত টিভিতে ,,, তখন ছায়াছন্দে ওরা এগারজনের একটি গান দেখাত ,,,গানটি দেখলেই সিনেমাটি দেখরা ইচ্ছে হতো ,,,৯৬ এর এপ;রিলে দেশ ছেড়ে এসেছি ,,,দেখা হলোনা এখনও মুভিটা

জীবন থেকে নেয়ার 'এ খাঁচা ভাঙব আমি,,,' গানেরই কলি মনে হয়
"আমি তখন চোরের মত, হুজুর হুজুর (হুজু হুজু শোনাত) করায় রত"

চোখ টিপি

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

নিঘাত তিথি এর ছবি

হা হা হা...হ্যা, ওই গানেরই অংশ এটা। খান আতা আর রওশন জামিলের অভিব্যক্তিগুলো মনে পড়ে এখনও হাসি পাচ্ছে।
ইউটিউব, বৈশাখ ডট নেট...এরকম বেশ কিছু সাইটে মনে হয় খুঁজলে পেতে পারেন ওই সিনেমাগুলোর লিংক।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

ধ্রুব হাসান এর ছবি

জুবায়ের ভাইয়ের কথার সুত্র ধরেই বলতে হয়,জহির রায়হান ও খান আতা জুটি বাংলা চলচ্চিত্রের এখন পর্যন্ত বেষ্ট জুটি। আমি একজন চলচ্চিত্র প্রেমিক হিসেবে সবসময় জহির রায়হানকে মিস করেছি এবং করে যাব!
এদের পর বাংলা চলচ্চিত্রে যে দীর্ঘ বিরতি তা যেন আর কেউ পুষিয়ে দিতে পারলো না! হুমায়ুন আহমেদ বা তৌকিরের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলি এরা যা বানিয়েছেন তা একেকটা দীর্ঘ সময়ের নাটক বৈ আর কিছু কি? তবে এক্ষেত্রে ক'টি উল্লেখযোগ্য ছবির কথা না উল্লেখ করাটা অনুচিত হবে, ১. Stop Genocide, ২. A State Is Born (এই দু'টোর পরিচালক ছিলেন জহির রায়হান), ৩.Innocent Millions (পরিচালক - বাবুলাল চৌধুরী, ৪.Liberation Fighters (আলমগীর কবীর), এবং ৫.মুক্তির গান । এই মুক্তির গান নিয়ে অসাধারন একটা ব্যক্তিগত ইতিহাস আছে আমার। ৯৬ বা ৯৭-এর ডিসেম্বর মাস, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চলচ্চিত্র সংসদের ব্যানারে আমরা আয়োজন করলাম ৩দিন ব্যাপী মুক্ত চলচ্চিত্র উতসবের। শেষ দিনের প্রদান আকর্ষন ছিলো মুক্তির গান ও মুক্তির কথা! কলা ভবনের প্রক্টর অফিসের সামনে ব্রিজের উপর বিশাল বড় ফিল্ম স্ক্রিন (তারেক ভাই জার্মানী থেকে ওটা আনিয়েছিলেন, সত্যিই স্ক্রীনটার সাইজটা বড় চমতকার ছিলো !), সন্ধ্যে ঘনিয়ে এলে শুরু হলো প্রজেকশন। আমার সারা শরীর কাপঁছিলো উত্তেজনায়; ছাত্র-ছাত্রীদের ঢল কলা ভবন ছাড়িঁয়ে লাইব্রেরী, শহীদ মিনার পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। কোথাও তিল ধারনের জায়গা নেই (ঐ দিন মনে হয় ৫টা ২০-এর ট্রেনে কেউ শহরে ফিরেনি!)! পুরো সিনেমা চলাকালীন সময় কোথাও কোন শব্দ নেই, মাঝে মাঝে উত্তেজনায় 'জয়বাংলা' আর 'জামাত শিবির নিপাত যাক' শ্লোগান ছাড়া (তখনো শিবিরের দখলে হলগুলো)। আমার প্রিয় বন্ধু বড় ভাই তারেক একপাশে, আর অন্যপাশে পরিচালক তারেক ভাই আর ক্যাথরিন; দু'জনেই উত্তেজনায় আমার হাত আর কাধঁ ছেপে রেখেছেন! আর আমাদের সবার চোখে অশ্রু! ক্যাথরিন কান্না জরিত কন্ঠে বললেন, 'দিস্‌ ইজ দ্য বেষ্ট ওপেন ইয়ার শো ইন মাই লাইফ, আই কান্ট ভিলিভ ইট...!' কিন্তু চমকের শেষ তখনো অনেক বাকী। সিনেমা শেষ না হতেই প্রতিজন ছাত্র-ছাত্রী যেন হয়ে উঠলো এক এক জন যোদ্ধা, চারদিকে মুহুর্মূহ শ্লোগান। হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী শ্লোগানে শ্লোগানে এগুতে থাকলো শিবিরের দখলে থাকা হলগুলোর দিকে! সে এক অবিশ্বাস্য দৃশ্য, আমি কোন দিন তা ভুলতে পারবো না!
বেচারা প্রক্টর স্যার (কিছু দিন আগে শুনলাম মারা গেছেন, তিনিও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন) হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসলেন, 'বাবা তোমাদের আমি নিজের সন্তানের মতো ভেবে অনুমতি দিয়েছি এখন যদি এইটা কন্ট্রোল করা না যায় তো আমি শেষ। তোমরা কিছু একটা কর।" আমার মন সায় দিচ্ছিলোনা এই স্বতস্ফূর্ত গণজোয়ারটাকে থামাতে, কিন্তু থামাতে হলো। কিন্তু পরদিন অবশ্য আমরা অস্ত্রহীন হাতে লড়ে দু'টি হল দখলে নিয়েছিলাম। থাক সেসব, যা বলছিলাম, এই মুক্তির গান বা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ যে কতখানি শক্তিশালী তা ঐ দিন ফিল করেছিলাম!
পরিশেষে বিশেষভাবে স্বরণ করি 'স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র' ও 'Leer Levin-কে',যার জন্য আমরা এই অসামান্য ফুটেজগুলো পাই; যা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রামান্য দলিল!

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

[quote=নিঘাত তিথি
মুক্তিযুদ্ধের পরপরই বাংলাদেশের প্রথম সিনেমাটি যতদূর জানি ওপার বাংলার সহায়তায় মির্মিত একটি ছবি, কেন যে নাম মনে করতে পারছি না! ওপারের বিশ্বজিৎ ছিলেন অভিনয়ে। লতা মুঙ্গেরশকরের কণ্ঠে চমৎকার একটি গান ছিলো সেই ছবিতে, " ও দাদাভাই, দাদাভাই মূর্তি বানাও/ নাক-মুখ-চোখ সবই বানাও/ হাত বানাও, পা-ও বানাও/ বুদ্ধ-যীশু সবই বানাও/ মন বানাতে পারো কি? একটা ছোট?/ বোন বানাতে পারো কি?/ দাদাভাই বোন বানাতে পারো কি?"

চলচ্চিত্র টি'র নাম "রক্তাক্ত বাংলা " (যদি আমার ভুল না হয় )

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নিঘাত তিথি এর ছবি

নুরুজ্জামান মানিক, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সিনেমাটির নাম মনে করিয়ে দেবার জন্য। "রক্তাক্ত বাংলা"ই, ঠিকই আছে।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

অনিন্দিতা এর ছবি

তিথিকে ধন্যবাদ ।ভালো লাগল।
@ ধ্রুব হাসান, আপনার ব্যক্তিগত ইতিহাস পড়ে আমার চোখে পানি চলে এসেছে। আমি মুক্তির গান দেখেছি ভিন্ন পরিবেশে।
কিন্তু আমি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলাম। সেসময়ের অনেক কিছুই আমরা দেখেছি, অনেক কিছুর ভেতর দিয়ে আমরা সময় পার করেছি। কাজেই আপনার ফিলিংসটা ভাল বুঝতে পারছি।
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

আমার এখন একটি গুরুত্বপুর্ন অফিসিয়াল ফাইল রেডি করার কথা কিন্তু নিঘাত তিথি'র লেখাটি পড়ে অফিসের কাজ করতে পারছি না। চোখের সামনে ভাসছে সেই সব সিনেমাগুলি আর কানে বাজছে গান ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

ধ্রুব হাসান এর ছবি

তিথি কিছু মনে করবেন না আপনার লেখার শেষে যুক্ত হওয়া নতুন প্যারাটিতে খানিকটা তথ্যগত ভুল আছে। অনুরোধ করছি ঠিক করে নেয়ার জন্য। আপনি উল্লেখ করেছেন,

""মুক্তির গান"। টিভিতেই দেখেছিলাম। এবং মুক্তিযুদ্ধের সমরকার এরকম একটি প্রামাণ্যদলিল দেখে গাঁয়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিলো। একটি দৃশ্যের কথা মনে আছে, এখনও লিখতে গিয়ে চোখে পানি আসছে-- ভারতে যাবার আগে তারেক মাসুদ বাংলাদেশ সীমান্তের এক মুঠো নরম কাদা হাতে তুলে নেন। ওই মুহুর্তে হৃদয়ের গভীর থেকে উপলদ্ধি করি "আমার দেশের মাটি/ খাঁটি সোনার চাইতে খাঁটি"। এই সিনেমাতেই প্রথম শুনি মৌসুমি ভৌমিকের কণ্ঠে মর্মস্পর্শী "যশোর রোড" গানটি"

বোল্ড করা অংশটি 'মুক্তির কথার' দৃশ্য, 'মুক্তির গানের' নয়। আর মৌসুমি'দির "যশোর রোড" গানটিও 'মুক্তির কথা'র গান। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধের আরো কিছু উল্লেখযোগ্য ছবির কথা আমি আমার পূর্বের কমেন্টের নীচের দিকে উল্লেখ করেছি, ওসব ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্রের ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ধন্যবাদ আপনাকে।

নিঘাত তিথি এর ছবি

কিছু মনে করছি না। "মুক্তির গান", "মুক্তির কথা" দু'টোই দেখেছি। স্মৃতি একটা থেকে আরেকটায় লম্ফ দিয়েছে ! ব্যাপারটা "তথ্যগত ভুল" না ভেবে "স্মৃতিগত ভুল" হিসেবে দেখলে শান্তি পেতাম হাসি । আমি বরং স্মৃতি ব্যাটাকে একটা কড়া বকুনি আর আপনাকে ধন্যবাদ দিতে পারি এক্ষেত্রে। ধন্যবাদ।

তবে আপনি যেসব ছবির কথা উল্লেখ করেছেন, সেগুলো এই পোস্টে আমি উল্লেখ করতে পারছি না, কারণ আপনি বোধহয় পোস্টের শিরোনাম লক্ষ্য করেন নি, "আমার দেখা বাংলা সিনেমা"। আমি গবেষণা থেকে এই পোস্ট লিখছি না, আমি কেবল সেই সব সিনেমাগুলোর কথাই বলেছি, যেগুলো আমার নিজের দেখা। বাংলাদেশের সমস্ত মুক্তিযুদ্ধের সিনেমার ইতিহাস হিসেবেও এই পোস্ট আমি লিখি নি, কাজেই ইতিহাসের সম্পূর্ণতা-অসম্পূর্ণতার কোন প্রশ্ন আসে না। এই পোস্টটি আমার আগের পোস্টের সিক্যুয়েল, সম্পূর্ণই ব্যাক্তিগত। এখান থেকে আমার যেটা লাভ হতে পারে, আমি যেসব মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা দেখি নি সেগুলো অন্যদের কাছ থেকে জেনে আমি দেখে নিতে পারি। আপনার বলা সিনেমাগুলো দেখার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

ধ্রুব হাসান এর ছবি

দুঃখিত, আমি আসলেই আপনার শিরোনামটা ঠিক খেয়াল না করেই পড়া শুরু করেছিলাম, তাই বাকীগুলো যুক্ত করতে বলেছিলাম। আর আপনার কথাই ঠিক, ঐ তথ্যগত ভুলটা এসেছে আপনার "স্মৃতিগত ভুল" থেকেই। আবারো ধন্যবাদ।

অমি রহমান পিয়াল এর ছবি

ভালো লাগলো তোমার লেখাটা। স্বাধীনতার পর স্বাধীনতা দিবস আর বিজয় দিবসে বিটিভিতে মুক্তিযুদ্ধের ছবি মানেই ওরা ১১ জন। আবার তোরা মানুষ হ ছিলো আমার সেই বয়সেই দেখা প্রিয় ছবি। দুই বাংলার গল্প নিয়ে ধীরে বহে মেঘনা তালিকায় তার পরেই। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুলে আমাদের মধ্যে সেলিব্রিটি ছিলো আদনান। ও অভিনয় করে ছিলো মেঘের অনেক রং নামে অসাধারণ একটি ছবিতে- সম্ভবত মাথিন ছিলেন নায়িকা। অরুনোদয়ের অগ্নি স্বাক্ষী আমার মনে হয় গল্পের বিচারে সেরা ছবিগুলোর একটি। মোরা একটি ফুলকে বাচাবো বলে যুদ্ধ করি গানটা এ ছবিরই। স্বাধীনতার ইঙ্গিত দেয়া ছবিগুলোর মধ্যে জীবন থেকে নেয়ার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। জিয়ার আমলে কলমি লতা নামে একটা ছবি তৈরি হয়েছিল। কাজরী আর সোহেল রানার। সেলিনা হোসেনের হাঙ্গর-নদী-গ্রেনেড উপন্যাস নিয়ে তৈরি হয়েছে একই নামের ছবি, সুচরিতা অসাধারণ অভিনয় করেছেন সেখানে। একই কথা খাটে একাত্তরের যীশু নিয়ে- এটা ঠিক স্বল্পদৈর্ঘ্য না, মুক্ত দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ডিসগাস্টিং কিছু হিন্দি ছবিও আছে। এর একটা দারা সিং অভিনীত। সে জয় বাংলা বলতে বলতে ঘোড়ার পিঠে চড়ে গাদা বন্দুক নিয়ে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। এছাড়া বাঘা বাঙালী নামে একটা ছবি সম্ভবত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক- আমার দেখা হয়নি।


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই

সুমন চৌধুরী এর ছবি

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অ্যাকশান ছবি তৈরীর প্রয়োজন বেশী ছিল বলে মনে হয়। একেবারে হলিউড যেমন পরাজয়ের ইতিহাস ঢাকতে র্যাম্বো বানায় সেরকম আমাদেরও বিজয়ের ইতিহাস প্রচার করার প্রয়োজন ছিল। যেখানে মুক্তিযোদ্ধার গুলিতে উর্দুভাষী সৈন্য নিহত হচ্ছে, গ্রামবাসী উৎসব করে রাজাকারদের ছিন্নভিন্ন করছেন এই দৃশ্যগুলি লাইভলি দেখানো হচ্ছে। অবশ্যই সময় ফুরিয়ে যায় নি। কেউ হয়তো করবেন ও। মুশকিল হচ্ছে সত্যপ্রচারে কোন শ্যালকপুত্র টাকা দেয় না, মিথ্যে ব্যাপারে আগ্রহ করে টেন্ডার ডাকে.....



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

নিঘাত তিথি এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ পিয়াল ভাই। "মেঘের অনেক রঙ" দেখার খুব ইচ্ছা ছিলো, এখনও আছে, কিন্তু সুযোগ পাই নি কখনও দেখার। "একাত্তরের যীশু" দেখেছি, অসাধারণ সিনেমা, ভুলে গিয়েছিলাম এটার কথা। ""কলমী লতা"ও দেখছি, সেও ভুলে গিয়েছিলাম। অনেকগুলো দেখা সিনেমার কথাই উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছি দেখি! এগুলো পোস্টে সংযোজন করে দিবো নাকি নতুন করে আরেকটা পোস্টা দিবো বুঝছি না!
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

টিটো রহমান এর ছবি

দারুণ পোস্ট। সামনের ২৬ মার্চ এই নিয়ে আমার হাউজ থেকে একটা প্রদর্শনীর আয়োজন করছি

নিঘাত তিথি এর ছবি

ইশ, আমি থাকলে তো যেতাম নিশ্চয়ই। যাক, করতে থাক...সামনের বার এসে ধরব নি।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

অপালা এর ছবি

পোস্ট এর সাথে মন্তব্য, পড়ে, কেমন যেন লাগছে, সব ছবির দৃশ্য গুলো, বা গান গোলু খোচাচ্ছে নিজের ভিতর।

নিঘাত তিথি এর ছবি

এরকমই হয় আপু...আমি পোস্টটা লিখে আবার "মুক্তির গান" দেখা শুরু করেছিলাম, একই অবস্থা হলো।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

বিপ্লব রহমান এর ছবি

সাংবাদিকতার দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে কি না জানি না, এ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের ওপর দেখা তাকের মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদের 'মুক্তির গান' এবং জহির রায়হানের 'স্টপ জেনোসাইড' ছবি দুটি সবচেয়ে ভালো লেগেছে। এরপরেই এই তালিকায় আছে আলমগীর কবিরের 'ধীরে বহে মেঘনা'।

শৈশব থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত একাধীকবার ছবিগুলো দেখেছি।

তিথি আপুকে এই গুরুত্বপূর্ণ লেখাটির জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। পরের পর্বের অপেক্ষায়।...


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

নিঘাত তিথি এর ছবি

ধন্যবাদ বিপ্লব ভাই।
"স্টপ জেনোসাইড" আমার এখনও দেখা হলো না। ----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

১৯৯৬ সালের সরকার বিটিভিকে যতোই দলীয়করণে জড়াক না কেনো, কাজের কাজ করেছিলো সিনেমা নিয়ে।
শুক্র-শনিবারে একটানা মুক্তিযুদ্ধের ছবি। একাত্তরের যীশু, বাঘা বাঙালী, ধীরে বহে মেঘনাসহ অনেক ছবি ঐ সময়ে দেখেছি।
-

"আমার দেখা বাংলা সিনেমা" সিরিজটি চলুক।
শিরোনামে ব্রাকেটে আসুক; প্রেমভিত্তিক, বিরহভিত্তিক, কমেডী, বিদেশী, ডাবিং, ফাইটিং, বিরক্তিকর; এরকম যা কিছু সম্ভব ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।