বইয়ের দোকানকে কেন লাইব্রেরি বলে এই প্রশ্নের জবাব আজও পাইনি। এরকম না পাওয়া অনেক প্রশ্নের “এক্স-ফাইল” তৈরি আছে মনে ভেতর। উত্তর পাব এই আশাও রাখি না। আজকের গল্প ফার্মগেটের একটি “লাইব্রেরিকে” নিয়ে। আমাদের তেজগাঁর বাসা থেকে দশ মিনিটের হাঁটা দূরত্বে ফার্মগেট। বড় ব্যস্ত এই জায়গা। বাসগুলো রাস্তা আটকে লোক উঠাচ্ছে আর নামাচ্ছে। পাশের ফুটপাথে বিক্রেতারা হাজারো পণ্যের পসরা সাজিয়ে হাঁকডাঁক দিচ্ছে, সেদ্ধ ডিম থেকে পরকালে যাবার চাবিকাঠি সবই বিক্রি হচ্ছে দেদারসে। রিকশা, অটোরিক্সা, টেম্পো কেউ কোন নিয়ম মানার ভেতরে নেই, পুলিশ স্যার খুশি থাকলেই হল। বারো আনা পয়সা থেকে আধ খাওয়া বিড়ি, সবই গ্রহণযোগ্য পুলিশের কাছে, উনাদেরকে সর্বভুক না বলে আগুনকে কেন সর্বভুক বলা হয় সেই প্রশ্নেরও সুরাহা হয় নি। একটু দূরেই “আনন্দ” সিনেমা হল , একটু ভালো করে তাকালে সেখানে রাজ্জাক আর কবরীর স্বর্ণযুগ দেখা যাবে সুনিশ্চিত। পাশের ওভারব্রিজটাতে অনেক মানুষ উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাফেরা করছে, আমাকেও হয়ত পাবেন ওদের ভিড়ে। একটা ছোট পার্কও আছে, এই দুপুরবেলাতে সেখানে ঝিমাচ্ছে কিছু মেয়ে যাদের অফিস খুলবে সন্ধ্যা হলেই। আরো আছে বায়ু দূষণ, বিকটদর্শন সব ভিখিরি আর সর্বরোগের ঔষধ বিক্রেতারা। আমার জীবনে দেখা প্রথম “মুক্তবাজার” হচ্ছে এই ফার্মগেট ।
হাবিবিয়া লাইব্রেরি ছিল ফার্মগেটের মোড়েই। আমি এখন এটাকে হয়ত একটা নিউজস্ট্যান্ডই বলব। দোকানে ঢোকার উপায় কোন নেই, ক্রেতারা সব বাইরে দাঁড়িয়ে। ক্রেতার চেয়ে পাঠকই বেশি, কেউ পাঠ করেছেন দৈনিক পত্রিকা, কারো মনোযোগ সাপ্তাহিকে, কেউ গিলছেন প্রগতি বা সেবা প্রকাশনার বই, কেউ ধর্মীয় বই পড়ে হাফেজ হচ্ছেন অথবা কেউবা ঝোলাঝুলি করছেন রসময় গুপ্তের বইগুলো একটু পাওয়ার জন্য। ফার্মগেট এলাকার বহুমুখি চরিত্রটা অনেকখানিই ধারণ করে এই হাবিবিয়া লাইব্রেরি। আমি এগারো বছরের বালক এসেছি দেখতে আনন্দমেলা পত্রিকাটা এসেছে কিনা। আনন্দবাজার পাবলিশার্সের এই কিশোর পত্রিকাটা পাক্ষিক বের হয় কলকাতা থেকে, ঢাকায় আসতে প্রায় দুই সপ্তাহ লেগে যায়। টাকা আর রুপির বিনিময় রেটকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দুই টাকা দামের এই পত্রিকার দাম বাংলাদেশে রাখা হয় ছয় টাকা। তাও সই, পাতা উল্টালেই যে আছে আনন্দের সম্ভার, বলতে হবে ছয়টাকা কমই দাম। মলাটের ভেতর আছেন কাকাবাবু, সন্তু, কেইন শিপটন, ক্যাপ্টেন হ্যাডক, গবা পাগলা, অম্বর সেন, উইং থেকে গোল, শব্দকল্পদ্রুম, রোভার্সের রয়, গাবলু, ক্লাস টেনের ফার্স্ট বয়, হারানো কাকাতুয়া, বসু বাড়ি আর শৈশবের ভুলে যাওয়া সব গল্প আর ছবি।
“আজকেও আসে নাই ভাইয়া, কালকে আসতে পারে, কি একটা ধর্মঘট চলতাসে” বিক্রেতার সস্নেহ জবাব।
আমি আবার যাই পরদিন। পত্রিকাটা হাতে পেলে সুট করে ঢুকে যাই পাশের রেঁস্তোরা “হোটেল সাইনু পালোয়ানে”। ওখানের লাস্যি আমার খুবই পছন্দের, দই আর বরফের ভালোবাসার এই পরিমিতবোধ আর কেউই দেখাতে পারেনি। লাস্যি সাবাড় করতে করতে দ্রুত পাতা উল্টাই, বাসায় গেলেই আনন্দমেলাতে ভাগ বসাবে অনেকেই, শুনেছি আনন্দ নাকি ভাগ করলে বেড়ে যায়, তবুও কেন আমার এই স্বার্থপরতা !!!
আমি বড় হতে থাকি, হাবিবিয়াতে গেলে আমিও আনমনে নাড়াচাড়া করি গুপ্তবাবুর বইগুলো। দোকানি দেখে ও না দেখার ভান করে, ক্রেতা হচ্ছে লক্ষী, তাকে নীতিকথা বলে পায়ে ঠেলার কোন মানে হয়? তাছাড়া আগের বুড়ো দোকানির সাথে এক ছোকরা বসে এখন। হিসেব করে দেখলে আমার চেয়ে অল্পই বড় সে। ক্রেতাদের চরিত্রে কোন পরিবর্তন নেই, আমি না খুঁজলেও কেউ না কেউ কিনছে আনন্দমেলা। ছোকরা দোকানিই সব সামলায়, গ্যাংগ্রিনে কাটা পড়েছে বুড়োর একটা পা, পেটের ক্ষিধে তাও কমে না তাই হয়ত রিটায়ারমেন্টে যাওয়া আর হয়ে উঠে নি। বিষন্ন বুড়োটা সারাদিন ঝিমায়, একটু খিটখিটে হয়ে গেছে তার মেজাজ, একটু তরিবত করে কেউ কিছু দীর্ঘক্ষন ধরে পড়লেই সে তেতে উঠে।
ফার্মগেট আমার শৈশবের প্রিয় ভ্যাকেশন স্পট, কারণ অকারণে প্রায়ই যেতাম সেখানে। একদিন সকালে হাঁটতে গিয়ে দেখি বিশাল জমায়েত। রাজউকের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ চলছে। এই প্রথমবারের মত জানলাম হাবিবিয়া লাইব্রেরি আর হোটেল সাইনু পালোয়ান দুটোই অবৈধ। একটু দূরে নতুন তৈরি হওয়া একটা আধুনিক বার্গারের দোকান, সেটাও নাকি অবৈধ। হাজার হাজার উৎসুক জনতার সামনে ভাঙ্গা হল সবগুলো স্থাপনা। চোখের সামনেই ধ্বংস হোল হাবিবিয়া লাইব্রেরি, বুড়োর হাউমাউ কান্নাতেও কারো মন গলল না, দ্রুত কার্যকর হল হাবিবিয়া লাইব্রেরির মৃত্যুদন্ড। এরশাদের আমল তখন, উনার কথাই আইন, উনি চাইছেন ফার্মগেট আরো সুন্দর হোক। তাছাড়া সাধারণ মানুষের হাহাকারগুলোও বেশিদূর যেতে পারে না।
এর কয়েকদিন পরে দেখলাম ছোকরা দোকানিকে। আগের দোকানের কাছেই এবার ফুটপাথে পাটি বিছিয়ে বেচছে দৈনিক পত্রিকা আর ম্যাগাজিন। এবারের দোকানের অবৈধতা নিয়ে কোন সংশয় নেই। বুড়োকে দেখলাম না আর ধারে কাছে। ছোকরা জানাল বুড়ো অসুস্থ। ওই পথ দিয়ে আসা যাওয়া ছিল, প্রায়ই কথা হত ছোকরার সাথে। একদিন শুনলাম বুড়ো মারা গেছে। আমার বইয়ের আগ্রহ তখন নানামুখি, হাবিবিয়া আর পূরণ করতে পারে না সেই চাহিদা তাও মাঝে মাঝে কথা হয় দোকানির সাথে। বিদেশে আসার আগেও বিদায় নিয়েছি সেই দোকানির কাছ থেকে।
কয়েক বছর আগে দেখলাম কলকাতা থেকে বইপত্র আনার সার্ভিস চালু হয়েছে। আমি একবছরের জন্য গ্রাহক হয়ে গেলাম আনন্দমেলা পত্রিকার। আমার বয়স তখন ছত্রিশ আমার কন্যারা দুইয়ের নীচে। ঠিক কে হবে এই পত্রিকার পাঠক সেটা আমিই নিজে বুঝলাম না। কলকাতা থেকে রাজিব চক্রবর্তী প্রথম সংখ্যাটা পাঠিয়ে আমাকে ই-মেইল করে দিলেন, জানালেন সাত থেকে দশদিনের মধ্যেই পেয়ে যাব আমি। এই এক কথায় আমি ক্লাসে ফাইভে ফিরে গেলাম, প্রতিদিন চিঠির বাক্স হাতড়াই সেই বালকবেলার আগ্রহ নিয়ে। মাঝে মাঝে ফিরে আসে হাবিবিয়া লাইব্রেরি, ছিমছাম এই পাড়ার নৈঃশব্দ ঠেলেঠুলে ফার্মগেটও এসে দাঁড়ায় তার কলরবময় আপন সৌন্দর্য নিয়ে। সেই প্রথম পাঠ, কোলাহলমুখর নগরী, পুলিশের দুর্নীতি, রাজ্জাক, কবরী, ফুটপাথের বিক্রেতা, ভিখিরি আর দুঃখী দুঃখী চেহারার “নষ্ট” মেয়েরা আসতে লাগল দলবেঁধে। তারপর সত্যি একদিন ডাকপিয়ন নানান বিলের সাথে রেখে গেলেন মলাটবন্দি আনন্দ। পড়ন্ত বিকেল বেলার শেষ আলোয় চিঠির বাক্সের চাবি খুলে আমি যেন আবিষ্কার করে নেই একটুকরো স্মৃতির শহর। কি আশ্চর্য এই শহর, সময় যেন ওখানে স্থির হয়ে আছে কি এক মায়ামন্ত্র বলে!! এইজন্যই কি কাজ ফেলে এখানে আসা হয় এত ঘন ঘন?
স্মৃতির শহর -৬ এখানে, যদিও এরা ধারাবাহিক নয়, লেখাগুলো স্মৃতির মতই ছন্নছাড়া।
###
মন্তব্য
ইসসসস, আনন্দমেলা!!!
এই পর্বটা কেন যেন বেশি ভালো লাগলো!
আমারো তাই মনে হয়েছিল...পড়তে গিয়ে বুঝেছিলাম পাঠকের অনেক আগেই পঞ্চত্বপ্রাপ্তি হয়েছে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ স্নিগ্ধা।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
দেরী করে দিলেও, এই রকম মন ভরানো পোস্টই চাই!!
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ফাহিম। দেরি মনে হয় হবে এখন থেকে
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আনন্দমেলা পূজা সংখ্যা গুলো কিনতাম, আমার কাছে মনে হত এটাতে লাভ বেশি , কারণ এখানে সবগুলো উপন্যাস দাম পড়বে ১০০-১৪০ টাকা, যেগুলো পরে আলাদা বই হয়ে বেরুলে এক একটাই কিনতে হবে ৮০-১০০ টাকা দিয়ে।
আব্দুর রহমান
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ৮০ এর দশকের শুরু থেকে মাঝামাঝি সময়ে কলকাতার বই তিনগুন দামে বেচা হত ঢাকায়। রুপি তখন টাকা দেড় গুন ছিল, অর্থাৎ পুরো ডাবল দামে বই কিনতে হত। পূজা সংখ্যা কিনলে আসলেই লাভ হত।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ফরাসি ভাষায় বইয়ের দোকানকে বলে লাইব্রেরি। হয়ত এই কারণেই বাংলাতেও এর প্রচলন হয়েছে।
এটা জানতাম না, ধন্যবাদ মন্তব্য ও তথ্যের জন্য।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এই সিরিজের প্রতিটা পর্বের সাথে মন খারাপ ফ্রি, বুক ঠেলে অন্তত একটা দীর্ঘশ্বাস তো বেরুবেই। তবুও বারবার চুন খেতে ফিরে আসি।
আসলে না এসে উপায়ও নাই, আমিও যে আপনার পথেরই যাত্রী, ,মাত্র কয়েক কদম পেছনেই হাঁটছি...
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ মামুন হক। ঠিকই বলেছেন, যত বয়স বাড়ে মনে হয় তত ঘন ঘন যাতায়ত শুরু হয় স্মৃতির শহরে, প্রবাসে থাকলে হয়ত আরো বেশি।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আহা, আনন্দমেলা আর অদ্ভুতূড়ে সিরিজের ছোট আকারের বইগুলোর কথা মনে করিয়ে দিলেন...
আমি কিন্তু এখনো সুযোগ পেলেই চেয়েচিন্তে আনন্দমেলা পড়ে নেই...
_________________________________________
সেরিওজা
ধন্যবাদ সুহান মন্তব্যের জন্য। ৩৬ বছর বয়েসে আনন্দমেলা পড়ে আর সেই আনন্দ পাই নি, বরং অপেক্ষায় আনন্দ ছিল আরো বেশি।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আনন্দমেলা হাতে পেলে এখনো আনন্দ নিয়ে গিলি!
অদ্ভূতুড়ে সিরিজের শীর্ষেন্দুর বইগুলো না পড়লে কেউ কখনোই শীর্ষেন্দুর পূর্ণ স্বাদ পাবেনা। এখনো কিনি অদ্ভূতুড়ে সিরিজ, পড়ি। মাত্র কিছুদিন আগে কিনলাম শীর্ষেন্দুর 'গোলমেলে লোক'!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
শীর্ষেন্দুর অদ্ভূতুড়ে সিরিজ আমি বড় হওয়ার পরে চালু হয় মনে হয়। কিন্তু ক্লাস সিক্সের ফাইনাল দিয়ে "মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি" পড়ে যে মুগ্ধতার সূচনা, তা মনে হয় এখনো কাটেনি।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ছত্রিশে গ্রাহক হলেন শুনে হিংসালাম। আমার ভিতরের পাঠক এত সহজে মরলো কেনো কে জানে।
আমাদের এক ছোকড়া পেপারওয়ালা নিয়মিত আনন্দমেলা দিয়ে যেত। দেয়ার আগে সে নিজে পুরোটা পড়তো। টের পেয়ে আমরা চ্যাঁচামেচি করতাম। কিন্তু ও পড়বেই।
মেয়ে
পত্রিকাটা আসার পরে পাঠকের মৃত্যুটা আমিও প্রত্যক্ষ করেছি।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
- বেশ!
অনেক আনন্দমেলা যখন জমে যাবে তাসনীম ভাই, কষ্ট করে এদিকে পাঠিয়ে দিয়েন। আমি এখনও বালক আছি।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধন্যবাদ ধূগো।
আনন্দমেলা বেশি পড়া হত না, তাই এক বছর পরে ক্যান্সেল করে বউয়ের চাপে সানন্দা নিয়েছি। বাচ্চারা আনন্দমেলাগুলো ছিড়বিড়ে একাকার করেছে, তবে আছে কিছু মনে হয়।
সানন্দা অনেক আছে, তোমার স্বপ্নে দেখা পাত্রীর সাথে বিয়ের পরে পাঠিয়ে দেব
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
- হা হা হা
সানন্দাই দিয়েন তবে।
আমার স্বপ্নটা আসলেই বেশ 'কেমন জানি' ছিলো তাসনীম ভাই। কোনো মানে দাঁড় করানো যাচ্ছে না। যে আম গাছে উঠেছিলাম, ঐ গাছের আম ছিলো আমার খুব প্রিয়। গাছটা ছিলো ভাঙা। আমি কেমন দুলছিলাম... নিচে কে জানি ডেকে বলতেছিলো ফাইলের ভেতরে রাখা বায়োডাটার কথা!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এর অর্থ হচ্ছে কোন গেছো মেয়ের সাথে তোমার বিয়ে হবে, এবং সে তোমার অবস্থা টাইট করবে।
(ভাঙ্গা গাছে ওঠা, বায়োডাটা এবং দোলা দেখে খাবনামা বললাম)
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হা, হা, হা! আই অ্যাগ্রি!
পুরা 'হুজুর সাইদাবাদী' - ''স্বপ্নযোগে প্রাপ্ত ......'' কেইস!
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
লেখাটা দেরী করে পড়া হল তাসনীম ভাই, আর সেকারণেই ধুগোর আগেই আপনার ঐ আনন্দমেলা কালেকশন একটু এদিকে পাঠিয়ে দেবার অনুরোধ করা হল না। কিন্তু দেখছি অসুবিধা নেই, ধুগো-কে তো আপনি সানন্দা পাঠিয়ে দেবেন বলছেন (স্বপ্নলোকের পাত্রীকে শুনলাম তিনি ছোট থেকেই দেখে আসছেন, মানে স্বপ্নটা আরকি!), কাজেই আমাকে ঐ ছেঁড়া আনন্দমেলাগুলিই পাঠিয়ে দিতে পারেন অন্য আর কোন দাবীদার না থাকলে।
আমাদের রাজশাহী শহরে কিন্তু এত সহজে এই পত্রিকা পাওয়া যেত না, তাই অনেক কষ্টে যোগাড় করা পুরোনো দিনের আনন্দমেলার অনেক ভাল লাগা স্মৃতি দোলা দিয়ে যায় এই নামটা শুনলে। মনে আছে একবার ছোট চাচা আমার চিঠির প্রেক্ষিতে প্রবাসী ছোট আমার জন্যে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন অনেক গুলি সেবা প্রকাশনীর থ্রিলার আর একটা পূজোসংখ্যা আনন্দমেলা, কত-শত বার যে ভাজা ভাজা করেছিলাম সেগুলি! এখনো একই রকম মজা লাগে মাঝে মাঝে বের করে পড়তে।
যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
আনন্দমেলার পাঠক ও প্রেমিক দেখা যাচ্ছে অনেক
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমাদের বাসায় আসত শারদীয় দেশ আর আনন্দমেলা। কাড়াকাড়ি হত ভাইবোনদের মধ্যে। আমার হাতে আসার পর সবার প্রথমে সত্যজিত রায়ের লেখা পড়তাম।
লেখাটা পড়ে জানতে ইচ্ছা হচ্ছিল, এত বছর পর আনন্দমেলা পড়ে কেমন লাগল। মন্তব্যে জানালেন পাঠকের মৃত্যু হয়েছে। আসলে এটাই হয়তবা স্বাভাবিক, সব কিছুরই একটা বয়স আছে। শৈশবের ভালোলাগা পরবর্তী জীবনে হারিয়ে যায়, থেকে যায় ভালোলাগার স্মৃতিটা। (অবশ্য ব্যতিক্রমও আছে, কিছুদিন আগে ফেলুদা সমগ্র পড়তে আমার ভালোই লেগেছিল।)
স্মৃতির শহর আরো চলুক, আপনার সাথে ঘুরে আসি ফেলে আসা দিনগুলোতে।
-লাবণ্য-
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ লাবণ্য। ফেলুদা পড়তে আমার এখনো ভালো লাগে। সত্যজিৎ রায়ের ছোট গল্পগুলোও অনবদ্য। প্রফেসর শঙ্কু অবশ্য বড় হয়ে আর পড়িনি।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এই নিয়ে পরপর দুটো বইমেলায় নওরোজ কিতাবিস্তানে হানা দিয়ে সত্যজিৎ কালেকশন সম্পূর্ণ করে এনেছি প্রায়... এখনো বাকি দু'চারটা বই, যা কিছুতেই যোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। আমার ভেতরের পাঠক মরে নাই এখনো, ভাল লাগে খুঁজে খুঁজে এই বইগুলি কিনতে, পড়তে, আবার পড়তে।
যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
খুব ভাল লেগেছে এ পর্বটা তাসনীম ভাই! আমাকেও ঘুরিয়ে নিয়ে এসেছেন ছেলেবেলা থেকে! আমাদের পাড়ায় (বকশীবাজার) প্রথমদিকে এরকম কোন লাইব্রেরী ছিল না! তাই আমি চলে যেতাম আজিমপুরের দুটা লাইব্রেরীতে! একটার নাম ছিল ছাত্র-ছাত্রী লাইব্রেরী, আরেকটা ছিল স্কুল-কলেজ লাইব্রেরী! ছেলেবেলার প্রায় সব বইগুলাই কেনা হয়েছে এই দুই লাইব্রেরী থেকে!
পরে আরেকটু বড় হলে আমাদের পাড়াতেও একটা লাইব্রেরী হয়! তাই পরবর্তীতে আর আজিমপুরে যেতে হয়নি! কিন্তু আজ স্মৃতির পাতায় আজিমপুরের লাইব্রেরী দুটাই শুধু দোলা দিচ্ছে! এমনকি বকশীবাজারের লাইব্রেরীটার নামও মনে করতে পারছি না!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ কাকুল কায়েশ। আপনিও লিখতে শুরু করুন না শৈশব নিয়ে।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
বানান সংশোধনের জন্য অফিসিয়াল ধন্যবাদ এবার দিয়ে দিলাম
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
প্রতি পর্বের মতো এবার-ও স্মৃতির শহর পড়তে দারুন লাগলো তাসনীম। নিয়মিত না হলেও শারদীয়া আনন্দমেলা প্রতি বছর পড়ি, প্রায় আগের মতোই ভাল লাগে এখনো। আমার পুত্র-কন্নার একটু অক্ষরপরিচয় হলেই ভাবছি পাক্ষিক আনন্দমেলার গ্রাহক হবো ভাবলেই রোমাঞ্চ হয়, হয়তো এটাই বুড়ো হওয়ার লক্ষণ
------------------------------------
"ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে"
ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ হরফ। আশাকরি সন্তানদের আনন্দমেলা পড়ার আনন্দটা আপনিও উপভোগ করবেন।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এই পর্বটাও যথারীতি।
একদমই বাড়িয়ে বলছি না- যে কয়টা নাম সচলের পাতায় দেখলেই লেখা পড়ে ফেলি, আপনি সেই দলের মধ্যে রীতিমতো প্রতাপের সাথেই আছেন।
এই পূজা সংখ্যাগুলি নিয়ে আরো অনেকের মতো, আমারও অনেক স্মৃতি। তবে আপনার মতো এতো সুন্দর করে আঁকতে পারবো না সবার চোখের সামনে।
ধন্যবাদ। এই লেখাগুলি সারাদিনের হাজার রকমের ঝামেলার মধ্যেও একটু আনন্দ দেয়, একটু বিষণ্ন করে।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
জেনে খুবই খুশি হলাম
আমি নিজেও খুব আনন্দ পাই এই সিরিজটা লিখে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ সবজান্তা।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমার ধারনা, বাংলাদেশের অর্ধেক ছাত্রের জীবনের একটা অন্যতম সময় ফার্মগেটে কেটেছে। খুব সুন্দর করে এঁকেছেন এলাকাটাকে, সাথে আনন্দমেলার প্রতি ভালবাসাও।
----------------------------------
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
ফার্মগেট এলাকায় বাসা আর নিউমার্কেট এলাকায় স্কুল থাকার কারণে এই দুটো জায়গার প্রতি আমার মমতা মনে হয় একটু বেশি।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ স্পার্টাকাস ।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোর্ট রোডে আলী লাইব্রেরীর কথা মনে করিয়ে দিলেন।
প্রতি সপ্তাহে কি মাসে ওদের অর্ডারে অর্ডারে বিপর্যস্ত করতাম। ঢাকা ঘুরে ফিরে যাবার পরেই ওদের কাছে ছুটে যেতাম- 'কোন বই এলো?'
এমনকি ঢাকায় চলে আসার পরও হাতের কাছে নিউমার্কেট ফেলে বইয়ের অর্ডার দিতাম সেই আলী লাইব্রেরীতেই!
জীবনে ব্যাখ্যাতীত ঘটনার আসলেই অভাব নেই।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আসলেই অভাব নেই। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ মর্ম।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ফার্মগেইট এর কথা ভাবলেই একটা কথাই মাথায় আসে - এতো ভীড়
আমাদেরো একটা 'লাইব্ররি' ছিল। জনতা লাইব্রেরি।
অনেক ভালো লেগেছে লেখা পড়ে তাসনীম ভাই
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
অনেক ধন্যবাদ রানা মেহের। ফার্মগেট সবসময় "ভীড়ময়" জায়গা। সমস্যা হচ্ছে ভীড়ে একবার অভ্যাস হয়ে গেলে শান্ত ও নিরিবিলি জায়গা ফাঁপর দেওয়ার মত খালি খালি লাগে
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনার লেখা যে আমার এত ভাল লাগে, সে কি আর এমনি এমনি?
আনন্দমেলার মান এখন বড় পড়ে গেছে। সুনীল গাঙ্গুলীও এখন আর সেরকম লিখতে পারেন না। পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলা হাতে পাওয়ার রোমাঞ্চ এখনও আছে কিন্তু পড়তে গেলে আর সেই আনন্দ পাই না।
কৌস্তুভ
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ কৌস্তুভ।
পাঠকের মৃত্যুও হয়ত আরেকটা কারণ। তবে রোমাঞ্চটাই আসল।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
গুপ্ত ব্যাপারগুলো বুঝি এভাবেই উন্মুক্ত করতে হয় ভাই??? উত্তরাধুনিক কনফেশন?
লেখা যথারীতি প্রাণল ও স্মৃতিপ্রেমাতুর।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
হা হা হা... ধন্যবাদ মহাস্থবির জাতক।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
প্রতি কিস্তির মতোই দারুণ ভালো লাগল। এবারেরটা শৈশবের কিছু স্মৃতিও মনে করিয়ে দিলো।
নব্বইয়ের শেষভাগে যখন দেশে চলে এলাম, উঠেছিলাম বড় মামার ইন্দিরা রোডের বাসায়। তেজগাঁ কলেজের ঠিক উলটো পাশে। ছিলাম মাসখানেক। সেই ওভারব্রিজ, সেই পার্ক, সেই আনন্দ সিনেমা হল, ফার্মভিউ সুপারমার্কেট, পুলিশ, তেজগাঁ কলেজের রোজকার মারামারি, গোলাগুলি। আমার সমবয়সি মামাত ভাইটা কলেজের দেয়ালে লেখা চিকা দেখে হাতের লেখা প্র্যাক্টিস করত। "হাবিবিয়া লাইব্রেরি" ততদিনে আর ছিলো না বোধহয়। বইয়ের দোকান বলতে ছিলো "তোফাজ্জল"। সেটা এখনো আছে। কলেবরে অনেক বেড়েছে এখন।
শৈশবে প্রতি সপ্তাহে আমি অপেক্ষা করতাম বুধবারের জন্য, যেদিন ইত্তেফাকে 'কচিকাঁচার আসর' দিত। আর প্রতি মাসে অপেক্ষা করতাম 'ছোটদের কাগজ' আর 'কিশোর তারোকালোক'-এর জন্য। 'ছোটদের কাগজ' এখনো সংগ্রহে আছে। এখনো পড়তে ভালো লাগে। পুজোর সময় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় ছোটোদের জন্য সাহিত্যসংকলন বেরুতো। "ছুটির সানাই", "ছুটির ঘণ্টা" ... ওগুলো ছিলো আমার জানের টুকরা। এক একটা বই যে কত্তবার পড়েছি!
"... কিছু মেয়ে যাদের অফিস খুলবে সন্ধ্যা হলেই ..." নির্মম বাস্তবতা্র এমন মমতামাখানো বর্ণনা দেখে মুগ্ধ হলাম।
|| শব্দালাপ ||
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ বুনোহাস সেই সঙ্গে শব্দালাপের জন্যও।
"তোফাজ্জল বুক হাউজ" মনে হয় ছিল দোকানটার নাম। ওটার সাইজ দিনে দিনে বড় হয়েছে, পড়ার বই, গল্পের বই সবই পাওয়া যেন ওখানে। ইন্দিরা রোডেও যেতাম একসময় প্রায়ই। এই সমস্ত ভীড়ের রাস্তায় হাঁটতে
যে কি মজা লাগত...
তুমি হলিক্রসে পড়েছ, ফার্মগেট ভুলবে কেমনে?
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে এই "তোফাজ্জল বুক হাউজ" থেকেই আমার প্রথমে রোমেনা আফাজের'দস্যু বনহুর', 'মোহন', 'দস্যু বাহরাম', 'নাগিনী', ইত্যাদি এবং পরে সেবা প্রকাশনীর 'কুয়াশা' আর 'ভয়াল' সিরিজের বই কেনা শুরু - আরো পরে 'মাসুদ রানায়' উত্তরন। এখান থেকেই আমি বোধহয় 'রবিনহুড' (সেবা) প্রথম কিনি। মনে আছে সেসময় বিশালবপু দোকানমালিক (তোফাজ্জল সাহেব?) নিজেই বসতেন দোকানে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ মনমাঝি।
মনে হচ্ছে আপনি ইন্দিরা রোডে থাকতেন
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
বানানে বিদঘুটে একটা ভুল হয়েছে আমার।
তারোকালোক > তারকালোক
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
তাসনীম, ব্লগের জানালায় চোখ রাখতে বলেছিলেন । ঠিকই রেখেছিলাম । খুব ভাল লাগল এই পর্বটিও । রবীন্দ্রনাথের একটা গানের চরণ একটু বদলে দিয়ে বলতে ইচ্ছে করছে,
স্মৃতিরা ঘিরে ধরে, বলে না না…………
জীবনের একটা সময়ের পর বোধহয় স্মৃতিমেদূরতা পেয়ে বসে সবাইকে । যখন কৈশোরে, তারুণ্যে বাবা মায়ের মুখে ফেলে আসা দিনের (/হারিয়ে যাওয়া মানুষের) কথা শুনতাম তখন মনেই হয়নি স্মৃতির মেঘ এমন করে আচ্ছন্ন করবে আমাকে সে দিন খুব দূরে নেই…।
আনন্দমেলার কথা বলেছেন । আমাদের বাসায় মানিক মিয়ার পত্রিকা ইত্তেফাক ছিল অনেক বছর । আমার মায়ের খুব আবেগের জায়গা ইত্তেফাক, আমাদেরকে রীতিমত সংগ্রাম করে সংবাদ পত্রিকার গ্রাহক হতে হয়েছিল (তা নইলে বোধহয় এখনো সাধূভাষার ভূত ঘাড়ে চেপে থাকত) । ইত্তেফাকে শিশু কিশোরদের জন্য ছিল দাদা ভাই(রোকনুজ্জামান খান)-এর পাতা । সেটাই গোগ্রাসে গিলতাম । তারপর একে একে এল আনন্দ মেলা (পুজা বার্ষিকীগুলো হাতে ধরার আনন্দই ছিল অন্যরকম), সেবা প্রকাশনীর কিশোর জগত, রহস্য পত্রিকা, উন্মাদ, ইত্যাদি । বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত বিচিত্রা ছিল অন্যতম প্রিয় পত্রিকা । আরেকটি পত্রিকার কথা না বললেই না, “সচিত্র সন্ধানী” । ইন্ডিয়ার দেশ পত্রিকার সমান্তরালে সচিত্র সন্ধানী অনেক সৃজনশীল লেখকের সুতিকাগার । জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি প্রথম কিন্তু সচিত্র সন্ধানীতেই প্রকাশিত হয় । মনে পড়ে তখন এক একটি পর্ব পড়ে পরের পর্বের জন্য ব্যাকুল হয়ে অপেক্ষায় থাকতাম । মনে হত লেখকের সঙ্গে আমিও যাপন করছি সেই জীবনের উত্তাপ, উৎকন্ঠা…
নিউজ স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে বই পড়া, এর ওর কাছ থেকে ধার করে বই পড়া, বাড়িতে নিয়মিত আর যা হোক না হোক বই পড়া,…………সেই সব দিনগুলোর স্মৃতির সঙ্গে লেগে থাকা আনন্দ বেদনার মধ্যে নিয়ে গেলেন । ভাল লাগল অনেক । জানি না এখনকার প্রজন্ম আমাদের মত এমন করে অপেক্ষায় থাকে কিনা একটি প্রার্থিত বইয়ের কিংবা উপন্যাসের পর্বের জন্য । হয়তোবা ব্যস্ততার এই সময়ে সময়ই নেই এইসব অর্থহীনতার অসুখে ভোগার………
ও হ্যা, আরেকটা কথা ফার্মগেটের ছোট্ট পার্কটার কথা বলছিলেন না ! আমার জীবনের প্রথম দেখা পার্ক । ছোট্ট আমি প্রথম এই পার্কটি দেখেছিলাম মুগ্ধচোখে, সেটা সত্তরের দশকের শেষের দিকে । ছোট্ট ছিমছাম এই পার্কটি ব্যস্ত নগরীর কেন্দ্র বিন্দুতে একটি সবুজ মায়াম্য় দ্বীপের মত ছিল । কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি যে বিবর্তনের মধ্য দিয়ে গিয়েছে তা একটি মায়াময় স্বপ্নের মৃত্যুই বলা চলে । ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল সংলগ্ন এই পার্কটি হতে পারতো পথচারী ও রোগিদের একটি শান্ত বিশ্রামস্থল । তা না হয়ে হয়েছে হতছিন্ন, সর্বহারা, অসহায় গৃহহীনদের আশ্রয় । দূঃখ করেই বা লাভ কি? যে দেশ, যে সমাজ মানুষের ন্যুনতম চাহিদার যোগান দিতে পারে না, সে দেশের সে সমাজের একজন হয়ে আমি পার্কের দাবী করি কি করে? তবু তো এই পার্কটা আছে বলে, এইসব “নষ্ট” মেয়েদের দিনের আলোতে ঝিমানোর একটা জায়গা আছে…
……………………………………
বলছি এক জ্যোতির্ময়ীর কথা
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
ধন্যবাদ। ফার্মগেটকে ভুলে যাওয়া খুবই দুরূহ কাজ।
সচিত্র সন্ধানীও পড়তাম, ওখানেই প্রথম এসেছিল শফিক রেহমানের যায় যায় দিনের মত লেখাগুলো।
একাত্তরের দিনগুলি প্রসঙ্গে যথার্থ বলেছেন।
ঢাকাকে খুব অশান্ত শহর মনে হয় এখন আমার, পাঠকের মত মনে হয় নাগরিকেরও মৃত্যু হয়। যেই আনন্দ নিয়ে ঘুরতাম একসময় সেই আনন্দের ছিটেফোঁটাও পাইনা এই নগরীতে হেঁটে আজকাল (যাই অবশ্যও কয়েক বছর পর পর)। আমি ও ঢাকা, দুজনের একজন মনে হয় ভীষণ পালটে গেছে, অচেনা হয়ে গেছে পরস্পরের। এরচেয়ে অনেক আনন্দ স্মৃতির শহরে, সব ওখানে রয়ে গেছে অমলিন।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
খুব ভালো লাগলো ভাইয়া, সবসময়ের মতোই...
তোমার লেখা পড়ে আমারও লিখতে ইচ্ছা হলো...দেখি আজ কাল বা পরশু, কোনও একদিন লিখেই ফেল্বো!
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
অনেক ধন্যবাদ দুষ্ট বালিকা।
অপেক্ষায় রইলাম, দেরি যেন না হয়
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
'স্মৃতির শহর' পুস্তকাকারে প্রকাশ হওয়া উচিত।
কি যে লিখেন ভাই, বুঝিনা।
কিন্তু কেমন যেন সপ্নালু হয়ে যাই, অফিসে কাজের ফাকে লুকিয়ে লুকিয়ে পড়ি, কলিগ দের কমেন্টস শুনি, বসের বকা খাই। কেন যেন চোখে পানি চলে আসে। মনে হয় চোখের প্রব্লেম।
আরও লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
নতুন মন্তব্য করুন