হিউস্টনের শহীদ মিনার নিয়ে পাকিস্তানি সক্রিয়তা

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৩/০৬/২০১০ - ৭:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কয়েকদিন আগে হিমু একটা ব্লগ লিখেছিল ঢাকাতে দুটো রাস্তার নাম ১৯৭১ এর দুইজন শহীদের নামে নামকরণ করার পরে পাকিস্তান সরকারের প্রতিক্রিয়া নিয়ে। রাস্তা দুটো পাকিস্তান এম্বেসির দুই ধারে হওয়াতে মনে হয় তাদের গাত্রদাহ হচ্ছিল এবং পাকিস্তানে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতকে ডেকে তারা তাদের কড়া আপত্তি জানায়। এই ব্লগে আমি একটা মন্তব্য করি যেটাতে বলেছিলাম যে হিউস্টনেও এর কাছাকাছি একটা ঘটনা ঘটেছে এবং সেখানে বাংলাদেশিদের শহীদ মিনার নির্মানের উদ্যোগ পাকিস্তানি সক্রিয়তার কারণে প্রায় ভেস্তে যেতে বসেছে। আমার এই ব্লগটা সেই ঘটনাটাই নিয়ে, সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে এই লেখাটা তৈরি করেছি।

হিউস্টন আমেরিকার চতুর্থ বৃহত্তম শহর এবং টেক্সাসের বৃহত্তম শহর। এই বিশাল শহর এবং আশে পাশের উপশহরের সম্মিলিত জনসংখ্যা হবে প্রায় ৬০ লাখের কাছাকাছি। উপমহাদেশ থেকে আগত অভিবাসীদের জন্য হিউস্টন একটি আকর্ষণীয় শহর। এর কারণ নানাবিধ, হিউস্টনের আবহাওয়া বেশ অনুকূল, জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম। হিউস্টনে বাংলাদেশি অভিবাসী আছে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজারের মত। হিউস্টনের পাকিস্তানি অভিবাসী এর কয়েকগুন হবে, এই বছরের শুরু পর্যন্ত হিউস্টন শহরের ১৪ জন সিটি কাউন্সিলম্যানের একজন ছিলেন অভিবাসী পাকিস্তানি, যার নাম মাসরুর জাভেদ খান, সংক্ষেপে এমজে খান। বাংলাদেশিদের শহীদ মিনার প্রজেক্টের বাধা এই কাউন্সিলম্যানই দিয়ে ছিলেন।

২০০৫ সালে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব হিউস্টন একটা সম্মেলন আয়োজন করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সাথে একই সময়ে। সেই সময় তৎকালীন একজন কাউন্সিলম্যান মিঃ গর্ডন কোয়ানকে বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে জিজ্ঞেস করা হয় যে হিউস্টন শহরে একটা স্থায়ী শহীদ মিনার সম্ভব হবে কিনা। মিঃ কোয়ান এতে সম্মতি প্রকাশ করেন। কিন্তু এর পরের চার বছর তেমন কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

২০০৯ সালে ফোবানার সময়ে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব হিউস্টনের পক্ষ থেকে একটা দল পাকিস্তানি বংশোদ্ভূতো কাউনন্সিলম্যান মাসরুর জাভেদ খানের সাথে দেখা করেন ফোবানার ব্যাপারে। উনি তখন হিউস্টনের তৎকালীন মেয়র বিল হোয়াইটের অফিসের সাউথ এশিয়ান এফেয়ার্সের লিঁয়াজোর দায়িত্বে ছিলেন। ফোবানার পাশাপাশি স্থায়ী একটা শহীদ মিনার নির্মানের জন্য একটা জমি অনুদান পাওয়ার জন্য মেয়রের অফিসে উনার মাধ্যমে অনুরোধ জানানো হয়। তিনি এই ব্যাপারে আশ্বস্ত করলেও পরে জানা যায় যে উনি কিছুই করেননি, এবং আরো পরে উনার ভূমিকাটা স্পষ্ট হয়।

এসময় ফোবানার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অন্য একটা সূত্রে মেয়র বিল হোয়াইটের অফিসে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হন। তাঁরা মেয়রকে ফোবানা উদ্বোধন করার আমন্ত্রন করেন এবং সরাসরি অনুরোধ করেন শহীদ মিনারের জন্য জমির অনুদানের ব্যাপারে। মেয়রকে একটা হিউস্টন ডাউনটাউনে সুপার ইম্পোজ করা শহীদ মিনারের ছবিও দেখানো হয়। মেয়র ফোবনার আমন্ত্রন গ্রহন করলে উনাকে ফোবানাতে এই বিষয়ে একটা ঘোষণা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয় আয়োজকদের পক্ষ থেকে।

মেয়রের অফিস এর পরপরই উদ্যোক্তাদের সাথে যোগাযোগ করে এবং এই বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়। মেয়রের কালচারাল এফেয়ার্স এসিস্ট্যান্ট মিনে বোয়েসেল (Minnette Boesel) এই ব্যাপারের খুঁটিনাটিগুলো দেখতে থাকেন এবং স্থান নির্বাচনের কাজও শুরু করেন। তাঁর আন্তরিকতার জন্যই কাজ দ্রুত এগিয়ে যায়। কিন্তু ফোবানার অল্প কয়েকদিন আগে তিনি এক ই-মেইল এই বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করে। মেইলটা বঙ্গানুবাদ না করে নীচে সরাসরি তুলে দিলাম।

We met with Deanea Leflore who is head of the Houston Protocol Alliance. She helps the many consular offices on arrangements for visiting dignitaries and meetings. She contacted UNESCO to understand how they are participating in the International Mother Language Day celebration. It was her finding that UNESCO does indeed celebrate each year but with a different theme. UNESCO is not using the icon as their official symbol for the day.

Council member Khan also talked to the Pakistani Consul and they would support a different sculpture/memorial that would be more reflective of all Mother Language Day celebrants. There seem to be some sensitivities at this time. After checking with the Mayor he will not be able to make an announcement regarding the memorial/icon as proposed.

পাকিস্তানি বংশদ্ভূতো কাউন্সিম্যান এবং পাকিস্তানি অভিবাসীদের ভূমিকাটা এখানে প্রকাশ্য। সামনা সামনি “ব্রাদার” ডাকা এই জাতির লোকেরা তাদের ক্ষোভ গত ৩৯ বছরেও ভুলতে পারেনি। ঢাকায় রাস্তার নামকরনের বিরোধিতা বা হিউস্টনে শহীদ মিনার নির্মানে বাধা, সবই তাদের জাতীয় চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ। এই তথ্যগুলো বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের জানা উচিত; অসততা, ভন্ডতা ও বর্বরতা পাকিস্তানিদের জাতিগত চরিত্র এবং নিশ্চিতভাবেই পাকিস্তান একটা ধর্মান্ধ ব্যর্থ রাষ্ট্র।

তবে সুখের বিষয় এটা যে হিউস্টনের বাংলাদেশিরা এতে দমে যাননি। তাঁরা ইউনেস্কোর সাথে কাজ করে যাচ্ছেন যাতে শহীদ মিনারকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অফিসিয়াল সিম্বল হিসাবে গ্রহন করা হয়। এই বিষয়ে তাঁরা নিউ জার্সিতে বসবাসরত বাংলাদেশি ডঃ নূরন্নবীর সহায়তায় জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ডঃ মোমেনের সাথে যোগাযোগ করেন। ডঃ মোমেন এই বিষয়ে যথাসম্ভব কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং হিউস্টনের বাংলাদেশিদের মত আমরাও অপেক্ষা করছি যে অচিরেই একদিন ইউনেস্কো শহীদ মিনারকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অফিসিয়াল সিম্বল হিসাবে গ্রহন করবে। এরই মধ্যে মাসরুর জাভেদ খান ২০১০ সালের নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন এবং বর্তমানে আর কাউন্সিলম্যান নন। সুতরাং এই ব্যাপারে পাকিস্তানি বাধাও দূর হয়েছে।

বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব হিউস্টনের পক্ষ থেকে আমাদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের একটা সার্ভে করা হচ্ছে এবং অচিরেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ডিজাইন ওঁদের ওয়েব সাইটে আপলোড করা হবে যাতে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশিরাও যেন নিজের শহরে শহীদ মিনার নির্মানের উদ্যোগ নিতে পারেন। এই প্রক্রিয়ার এক পর্যায়ে শহীদ মিনারের একটা পূর্ণাঙ্গ ডিজাইন অবশ্যই লাগবে এবং সেটা যাতে তাঁরা সহজে পেতে পারেন সেই জন্যই এই উদ্যোগ।

এ ব্যাপারে হিউস্টন বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের সংশ্লিষ্টদের নাম নীচে দেওয়া হোল। আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি এই ব্যাপারে তাঁদের নিরলস পরিশ্রমের জন্য। এত বাধা সত্ত্বেও তারা এই কাজ এগিয়ে নিয়ে চলছেন, সেই হার না মানা স্পিরিটটার জন্য আমাদের শ্রদ্ধা রইল। জয়ী আপনারা হবেন সুনিশ্চিত ঠিক যেমন আমরা ৭১ এ বিজয়ী হয়েছিলাম।

আর পাকিস্তানিদের কথা কি বলব? পরাজয়ের গ্লানি মনে হয় এক জন্মেও যায় না !!!

এই ব্যাপারে হিউস্টন বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের সংশ্লিষ্টদের নাম

আফজাল আহমেদ
ওলি মোহাম্মদ
আজাদুল হক
সৈয়দ দেলভি
হাসান রহমান
সেলিনা রহমান
ফখরুল আহসান মনি
ডঃ সেলিনা আহমেদ
খন্দকার রিয়াজ
সাদ্দাম আহমেদ

###


মন্তব্য

মূলত পাঠক এর ছবি

তাসনীম,

লেখার মূল বিষয় নিয়ে মন্তব্যের বন্যা শুরু হবার আগেই আপনাকে একটা ধন্যবাদ জানিয়ে যাই, এমন স্থিতধী উপস্থাপনা ও গঠনমূলক আলোচনার জন্য। শুধু আবেগে অভিষ্ঠ মিলবে না, দরকার এই রকম লক্ষ্যভেদী একাগ্রতা, যা হিউস্টনের বাংলাদেশিরা দেখাচ্ছেন। ওঁদের সাফল্য কামনা করি। আপনাকেও ধন্যবাদ এমন একটি যত্নশীল লেখার জন্য।

ভালো থাকুন।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে মূলোদা।

দরকার এই রকম লক্ষ্যভেদী একাগ্রতা, যা হিউস্টনের বাংলাদেশিরা দেখাচ্ছেন।

একমত। আসলেই দরকার। লক্ষ্য স্থির করে ঠান্ডা মাথায় কাজ করা।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

কোথায় কার কাছে যাব। তাই তাসনীম ভাইয়ের কাছেই এলাম। আশা করছি পাকিস্তানীদের জীনগত শত্রুতা প্রতিহত করার বুদ্ধি এবং শক্তি দুইই আমাদের আছে। শহীদ মিনার তো এখন আন্তর্জাতিক বিষয়। ভাষা ও মুক্তির প্রতীক, তাকে ঠেকাবে কার সাধ্য! অভিবাদন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

হিমু এর ছবি

অভিনন্দন আর শুভকামনা রইলো। কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হলে সচলায়তনে জানানোর অনুরোধ করছি।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

শুভকামনা রইল। আমি সব রকমের সাহায্য করতে আগ্রহী।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

এনকিদু এর ছবি

আমিও। আমি ঢাকায় থাকি, যারা সার্ভে করতে আসবেন তাদের জন্য পানির বোতল টানতে পারব।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

সাইফ তাহসিন এর ছবি

এম জে খানের জন্যে ___________________________________________
(ছাপার অযোগ্য)

সচলত্বের অভিনন্দন তাসনীম ভাই, লেখাটা খুব ভালো লাগল, প্রয়োজনীয় লেখা, আপনাদের সফলতা কামনা করছি

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অতিথি লেখক এর ছবি

পৃথিবীর তিন চতূর্থাংশ সমস্যা এই একমাত্র পাকিস্তান ও পাকিস্তানের মানুষের জন্য... কিছু করার নেই! আমাদের যেমন লোডশেডিং আর জ্যাম নিয়ে থাকতেই হবে, তেমনি পাকিস্তানিদেরও কিছু কিছু জায়গায় সহ্য করে চলতে হবে!!! তবে সহ্য করার সাথে সাথে এটো বুঝিয়ে দিতে হবে যে তারা পাকিস্তানি(ওরফে ছাগল)!!!

সাইফ তাহসিন এর ছবি

তেমনি পাকিস্তানিদেরও কিছু কিছু জায়গায় সহ্য করে চলতে হবে!!!

এইটা কি কইলেন ভাই/আপা?
লোডশেডিং আর জ্যাম তো সহ্য করা না করার অপশন নাই, কিন্তু পাকিদের কি করবেন, সে ইচ্ছা তো আপনার হাতেই।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অতিথি লেখক এর ছবি

তাদের অবস্থান সহ্য করা ছাড়া উপায় নাই... তবে সেটা সহ্য করে তাদের পশ্চাদ্দেশে লাথি মারতে কোন সমস্যা নাই...

---থাবা বাবা!

কাকুল কায়েশ এর ছবি

শুভ কামনা রইল! তবে একটা জিনিস আমি বুঝতে পারলাম না - যেহেতু বিকল্প মাধ্যম/সূত্র ছিল মেয়রের সাথে যোগাযোগের জন্য, তাই কেন শুধু শুধু ওই পাকী হারামজাদাকে অনুরোধ জানালাম আমরা? খুব বেশী প্রয়োজন ছিল কি এর?
যাই হোক, এ থেকে আমাদের শিক্ষা এটাই হবে যে, এরপর থেকে আমরা কার্যসিদ্ধির জন্য যেন কখনোই কোন পাকির দ্বারস্থ না হই!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

তাসনীম এর ছবি

ওই পাকিস্তানি তখন সাউথ এশিয়ান এফেয়ার্সের লিঁয়াজোর দায়িত্বে ছিল। সুতরাং সেই ছিল যেটাকে বলে "প্রোপার চ্যানেল"। মেয়রের অফিসের সাথে সরাসরি যোগাযোগটা পরে স্থাপিত হয়।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

গীতিকবি এর ছবি

লেখাটির জন্য ধন্যবাদ। হিউস্টন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনকে সাধুবাদ জানাই তাদের নিরলস প্রচেষ্টার জন্য। আশা করি তারা শীগগীরই সফল হবেন এবং অন্যান্য শহরেও শহীদ মিনারের স্থায়ী প্রতিকৃতি তৈরী হবে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে যুক্তরাষ্ট্রে আরো জনপ্রিয় করে তোলার জন্য বাংলাদেশী হিসেবে আমরা সবাই-ই ভূমিকা রাখতে পারি। আমরা সবাই আমাদের বাচ্চাদের স্কুলের সাথে যোগাযোগ করে দিবসটি স্কুলের ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানাতে পারি। সম্প্রতি আমি আমার বাচ্চাদের স্কুলের প্রিন্সিপালের সাথে এ ব্যাপারটা নিয়ে আলাপ শুরু করেছি। দেখা যাক কি হয়।
____________________________
শেখ ফেরদৌস শামস ভাস্কর
"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি।"

____________________________
শেখ ফেরদৌস শামস ভাস্কর
"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি।"

তাসনীম এর ছবি

এটা নিঃসন্দেহে একটা দারুণ উদ্যোগ। আপনার এক্সপেরিয়েন্স এখানে শেয়ার করুন অবশ্যই।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

বাউলিয়ানা এর ছবি

হিউস্টন থেকে অনেক দূরে আছি। সচলায়তনের মাধ্যমে যেকোন সাহায্যে পাশে আছি। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব হিউস্টনের সবাইকে স্যেলুট।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

১.
একদিন শুটিংয়ের জন্য লোকেশন দেখতে গেলাম ঢাকার উত্তরার পেছনে অনেক গ্রামের ভেতর। যেখানে রিক্সা থেকে নেমেও অনেকদূর হাঁটতে হয়। দুপুর রোদে অতোটা হেটেঁ ক্লান্ত আমি যখন ফিরলাম বাজারে। তখন অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম বাজারের এক কোনে একটা একেবারে ছোট শহীদ মিনার বানানো। এবং এটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।

আমার সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেলো। ঢাকার পাশের এই অজপাড়াগায়েঁ যেখানে রিক্সা যাবার পথই অপ্রতুল, সেখানে এলাকাবাসী একটা শহীদ মিনার বানিয়ে রেখেছে। হোক সেটা অনেক ছোট সাইজের। তবু তো শহীদ মিনার...

২.
আজকাল চারদিকে পাকিস্তানীরাও মানুষ, জাতিগতভাবে তারা সবাই অপরাধী না, তাই তাদেরকে গালি দেওয়া যাবে না।
আগে বিচার হবে, হাইকোর্ট রায় দেবে যে এই কয়জন অপরাধী, তারপর শুধু তাদের গালি দেওয়া যাবে!
ঘৃণার রাজনীতি আমাদের পরিহার করতে হবে...

এসব বানী শুনতে শুনতে এখন ক্লান্ত হয়ে গেছি। তবু এই পোস্ট পড়ে মনে মনে পাকিস্তানীদের জন্য একটা কথাই বরাদ্দ-

ফাকলাম না
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

আনেক বাজে কথাই ঘুরিয়ে বললে বেশ ভাল শোনায়।
আমিও উচ্চকন্ঠে বলতে চাইঃ পাকিদের গ্যাপলাম না।।।

>>>আইজুদ্দিন<<<

সাইফ তাহসিন এর ছবি

চলুক

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আশা রাখি, শহীদ মিনার অচিরেই মাতৃভাষা দিবসের আন্তর্জাতিক সূচক রূপে গৃহীত হবে সবার কাছে...

_________________________________________

সেরিওজা

বইখাতা এর ছবি

শুভকামনা রইল সংশ্লিষ্ট সবার জন্য। এইসব খবর শুনলে মন ভাল হয়ে যায়।

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব হিউস্টনের সবাইকে স্যেলুট।

পাকি কুলাংগারদের জন্য শুধুই করুনা।

===============================================
ভাষা হোক উন্মুক্ত

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

অতিথি লেখক এর ছবি

কয়লা নাকি ধুইলেও ময়লা যায় না। পাকিরা জন্মগত ভাবেই হারামি, ধর্মান্ধ, বর্বর। মানুষ রূপী অমানুষ, জানোয়ারের বংশ। '৭১ পরাজিত হয়েও ওদের লজ্জা হয়নি। যে জাতি অন্য জাতিকে সম্মান দিতে জানে না, সে জাতি আসলে নিজেকেও সম্মান দিতে জানে না। আজ পাকিদের অবস্থা দেখুন। পাপ বাপেরেও ছাড়ে না। ৫২তে পারেনি, ৬৯রে পারেনি, ৭১রে পারেনি, কোনো দিনও পারবে না। ওদের বিরুদ্ধ জয় আমাদের যুগে যুগে সর্বযুগে হবে।

>>>>>>>>>>>
কামরুজ্জামান স্বাধীন।

>>>>>>>>>>>

সুজন চৌধুরী এর ছবি

বাঙ্গালীর জয় হোক!
লেখাটা খুব ভালো লাগলো সবখানে ছড়িয়ে দেয়া উচিৎ।


লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ

নীলপিপড়া [অতিথি] এর ছবি

সংশ্লিষ্ট যাদের নাম লিখেছেন তাদের ইমেল ঠিকানা আপনার কাছে থাকলে দিতে পারেন, অন্তত একটা ধন্যবাদ দিয়ে তাদের উত্সাহ দিতে পারি আমরা সবাই

সুমন
জেনেভা

তাসনীম এর ছবি

এই ব্লগটা উনারাও পড়ছেন, আপনাদের ধন্যবাদ, অভিনন্দন ও উৎসাহ পৌঁছে গেছে উনাদের কাছে হাসি

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব হিউস্টনের সবাইকে স্যালুট।

-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

তানভীর হোসেন এর ছবি

সিডনীবাসী বাংলাদেশীরা এরকম একটা উদ্যোগে সফল হয়েছিলেন ২০০৬ সালে। সিডনীর এসফিল্ড পাের্ক শহীদ মিনারের ছবি দেখুন:
http://www.sangbad.com.au/wp-content/uploads/2010/02/IMG_2958.jpg

হিউস্টনবাসী বাংলাদেশীরা সফল হবেন এই আশা রইলো

রিগ্যান [অতিথি] এর ছবি

খুবই শান্তি লাগল। পাকিরা নিজের হোগা নিজেই মারছে, ওদের নতুন করে অভিশাপ দিয়ে সময় নষ্ট করার দরকার আছে বলে মনে করি না।
রিগ্যান

সাদাচোখ [অতিথি] এর ছবি

হিউস্টনবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি রইল এক বুক ভালবাসা।

আশা করছি অবশ্যই তারা সফল হবেন।

------------------------------
সাদাচোখ

মামুন হক এর ছবি

তাসনীম ভাই এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্যালুট। আন্তরিক শুভকামনা আর কৃতজ্ঞতা জানবেন।

বোহেমিয়ান এর ছবি

শুভকামনা , মন ভালো করা খবর
_________________________________________

_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!

অতিথি লেখক এর ছবি

বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব হিউস্টনের সবাইকে স্যালুট।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল

অতিথি লেখক এর ছবি

মন থেকে চাইলে, কে তারে আটকায়!!
শুভ কামনা রইল।

প্রাকৃত জন

শাফি এর ছবি

অনেক ভাল লাগল। আর পাকিস্থানী ভদ্রলোক মি.জে.কান কেও ধন্যবাদ। উনি না জেনেই আমাদের (বাঙ্গালিদের) একটা উপকার করে ফেলেছেন। বাঙ্গালি চ্যলেঞ্জ^ পছন্দ করে, আর চ্যলেঞ্জ আমাদের* অনেক চেষ্টাকেই তরান্বিত করে। এবং আমরা সফল হই।

ধন্যবাদ।

_________________
* প্রায় সকলেন ক্ষেত্রেই প্রযোয্য, তবে ব্যতিক্রম আছে-থাকবে।
^ চ্যলেঞ্জ বলতে আমি চ্যলেঞ্জই বুঝিয়েছি, "চ্যলেঞ্জিং বিহেইবিয়ার" বুবাইনি। আশা করছি ভুল বুঝবেন না।

তাসনীম এর ছবি

প্রিয় পাঠক, আপনাদের সবার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ব্লগটা লেখার পর থেকে এখন পর্যন্ত সবগুলো মন্তব্য পড়েছি। আমি যেহেতু মূলত বার্তাবাহক এখানে, তাই আর আলাদা করে মন্তব্যের জবাব দেই নি।

আপনাদের মত আমিও আশায় আছি একদিন হিউস্টনের বাংলাদেশিরা সফলকাম হবেন।

১৯৭১ পাকিস্তানের সাথে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর অনেক কিছুই ন্যায্য হয়নি। আমারা আমাদের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করিনি, বরং তাদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসিয়েছি, আমরা পাকিস্তানিদের বিচার করতে পারিনি, আমরা ক্ষতিপূরণ পাইনি, আমরা পাকিস্তানকে তাদের বর্বরতার জন্য ক্ষমা পর্যন্ত চাওয়াতে পারিনি। এরচেয়েও দুঃখজনক যে আমরা এক উদ্ভট উটের পিঠে উঠে পাকিস্তান অভিমুখেই যাত্রা শুরু করেছি।

এই সবই আমার নিজের চোখে দেখা। আমার পক্ষে এ জীবনেও এদের ক্ষমা করা সম্ভব নয়, আমি হয়ত শেষদিন পর্যন্ত অভিশাপ দিয়েই যাব তাদেরকে, যারা আমাদের বাতাস এভাবে বিষিয়েছে, প্রিয়জনের শবদেহ আমাদের মাথায় মধ্যে গেঁথে দিয়েছে।

কিন্তু যাদের জন্ম ৮০ কিংবা ৯০ এর দশকে? তারা কি বেনেফিট ও ডাউট দেবে পাকিস্তানকে? আমার তো মনে হয় তাদের জানা উচিত যে একবার বেঈমান সে বারবার বেঈমান...যারা একবার আমাদের নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল, তারা আবারও সুযোগ পেলে আমাদের নিশ্চিহই করবে।

মুখে ব্রাদার বললেও অন্তরে কোন প্রেম নেই তাদের। আমার কোন বোন আমার কোন ভাই দ্বারা ধর্ষিত হয় নি, ওরা আমাদের ভাই না।

পাকিস্তান নিয়ে আমার কোন মাথাব্যথা নেই। পাকিস্তান উপরে উঠলেও আমার কিছু যায় আসে না, আর তালিবানরা ওদের খেয়ে ফেল্লেও আমি নিশ্চুপ। পাকিস্তান নিয়ে আমার আছে শুধু নির্বিকারতা। অবশ্য অবস্থাদৃষ্টে ওদের উপরে উঠার কোন নজির দেখছি না...বরং শেষোক্তটাই ঘটছে ওদের ভাগ্যে। তা ঘটুক, আমি মানবতা নিয়ে মাঝে মাঝে ভাবি, কিন্তু মানবতা মানুষের জন্য...ওরা এখনো মানুষ হতে পারে নি। যেদিন ওরা মনুষ্যত্ব পাবে সেদিন ওদের কথা ভাববো।

ভালো থাকুন সবাই

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ওডিন এর ছবি

তা ঘটুক, আমি মানবতা নিয়ে মাঝে মাঝে ভাবি, কিন্তু মানবতা মানুষের জন্য...

গুল্লি
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

শিশিরকণা এর ছবি

যেদিন ওরা মনুষ্যত্ব পাবে সেদিন ওদের কথা ভাববো।

জীবনে যত পাকিস্তানির সাথে পরিচয় হয়েছে তার মধ্যে খারাপের সংখ্যাই ৯০%। কাজেই বাই ডিফল্ট আমি যেকোন পাকি কে শয়তান ধরে নেই যতক্ষণ না তার কাজে সে অন্যরকম কিছু প্রমাণ করছে। এবং এই প্রমাণ দাখিল করার দায়ও ঐ পাকির, আমি সেই প্রমান খুঁজতে যাবো না।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।