এই খবরটা এখন আর গোপন নয়। বাংলাদেশি একদল বিজ্ঞানী পাটের জিনোম ডিকোড করেছেন। আর এই দলটাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন আরেক মার্কিন প্রবাসী বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ডঃ মাকসুদুল আলম। ইতিপূর্বে তিনি পেঁপে ও রাবারের জিনোম সিকোয়েন্স ডিকোডের কাজ করেছেন। এই প্রযুক্তিগুলো যথাক্রমে আমেরিকার হাওয়াই অঙ্গরাজ্য ও মালয়শিয়া ব্যবহার করছে তাদের কৃষিতে। পাটের জিনোম ডিকোড করার বিশ্বমানের এই কাজটি হয়েছে বাংলাদেশে, সরকারের আর্থিক সাহায্যে। জিনতত্ত্বের পাশাপাশি এই গবেষণাতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার করতে হয়েছে, কেননা প্রায় ১২০ কোটি বেইজ পেয়ারের তথ্য উপাত্ত যাচাই করেই এই জিনোম সিকোয়েন্সটি বের হয়েছে। কাজটি জটিল ও ব্যয়বহুল এবং একই সাথে আমাদের জন্য দারুণ গর্বের একটা বিষয় যে কাজটা আমরা আমাদের দেশেই সম্ভব করেছি, দেশীয় বিজ্ঞানী ও তথ্য প্রযুক্তিবিদের সমন্বয়ে তৈরি একটা টিমের অক্লান্ত পরিশ্রমে।
সচলায়তনের পক্ষ থেকে আমি ডঃ আলমের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হই হিউস্টন প্রবাসী বাংলাদেশি আজাদুল হকের সহায়তায়। আমি ডঃ আলমকে কয়েকটা প্রশ্ন পাঠিয়েছি ই-মেইলে, যেগুলোর জবাব দিয়েই এই ব্লগটা সাজিয়েছি। অনেক ব্যস্ততার মাঝেও সচলায়তনের পাঠকদের জন্য সময় দেওয়াতে সচলায়তনের পক্ষ থেকে আমি উনাকে ধন্যবাদ জানাই। এই সাফল্য নিশ্চয় আমাদের তরুন প্রজন্মের জন্য একটা বিরাট উৎসাহের ব্যাপার হয়ে থাকবে এবং সেই উৎসাহ সামনের দিনগুলোতে আরও বড় সাফল্যের জন্ম দিবে এই আশা আমাদের সবারই।
প্রশ্নোত্তরগুলো নিচে দেওয়া হোল। উত্তরগুলো ডঃ আলম ইংরেজিতে দিয়েছেন, আমি সেগুলোর বঙ্গানুবাদ করে দিলাম। একই সংগে মূল ইংরেজি উত্তরগুলোও যুক্ত করলাম।
১/ বাংলাদেশের প্রধান ফসল ধান হওয়া সত্ত্বেও জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার জন্য কেন পাটকে বেছে নেওয়া হল? এর পেছনের মোটিভেশনটা কী ছিল?
"আমাদের বাংলাদেশীদের জন্য পাট শুধুমাত্র একটা আঁশ উৎপাদনকারী গাছ নয়; বরং এটা আমাদের জন্য একটা জাতীয় প্রতীক। পাটের সাথে আমাদের সেই প্রবাদতুল্য সোনার বাংলার একটা যোগসূত্র আছে। যেই সোনার বাংলাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে আমাদের জাতিগত ঐতিহ্য, সেখানে ঢেউ খেলানো সোনালী ধানের ক্ষেত আর সোনালী আঁশ এ দুটো যেন আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তিরই সন্ধান দেয়।" বলেছেন অষ্ট্রেলিয়া নিবাসী জিন বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী (যিনি এই প্রজেক্টের অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা) তাঁর "সোনালী আঁশ" লেখায়।
পাট নিয়ে গবেষণার মূলমন্ত্র ছিল এই কথাগুলোই, দারুণ একটা মেধাবি ও দেশপ্রেমী একটা দল পাট নিয়ে তাঁদের কাজ শুরু করেছে একদম সঠিক সময়ে। প্রজেক্টের শুরু এবং ডিটেল জানার জন্য ভিসিট করতে পারেন http://www.jutegenome.org।
২/ ভবিষ্যতে বাংলাদেশে এরকম আরো রিসার্চ চালানো কোন পরিকল্পনা আছে কি আপনার [যেমন ধান, আম বা ইক্ষুর জিনোম সিকোয়েন্সিং]? গবেষণা কাজে ব্যবহৃত টেকনলজি এবং ট্রেইনড লেবার কীভাবে কাজে আসতে পারে?
৩/ মেধাবী মানুষ গুলোকে দেশে ফিরিয়ে আনতে এবং তাদের মেধাকে যথোপযুক্ত কাজে ব্যবহার করতে কী ধরনের সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ এবং নীতি ও কৌশলগত সহায়তা দরকার বলে মনে করেন?
৪/ বাংলাদেশে জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার জন্যে একটি পৃথক ও নিবেদিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান করা কী সম্ভব? এটি নির্মাণের জন্যে এখন কাদের পক্ষ থেকে কী কী করণীয় বলে আপনি মনে করেন?
৫/ বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের বর্তমান পাঠক্রম কি এর জন্য ( জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণা) উপযুক্ত? পাঠ্যসূচিতে কোনো বড় ধরনের পরিবর্তন কি এ ধরনের গবেষণাকে আরো বেগবান করে তুলতে পারে বলে মনে করেন?
(এই প্রশ্নগুলোর উত্তর উনি একসাথে দিয়েছেন।)
মলিক্যুলার ও প্ল্যান্ট বায়োলজিসহ অনেক অগ্রগামী বৈজ্ঞানিক গবেষণাতেই বাংলাদেশী বিজ্ঞানীদের দক্ষতা অসাধারণ। তাঁরা মেধাবী, পরিশ্রমী কিন্তু তাঁদের কাজ করতে হয়ে পুরানো ও দুর্বল একটা অবকাঠামোতে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়তে পর্যন্ত কোন উচ্চমানের প্রযুক্তিগত কোন সুবিধা নেই।
সরকারের কী উচিত নয় বৈজ্ঞানিক গবেষণা ক্ষেত্রে আরো বিনিয়োগ করা এবং উচ্চতর প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ল্যাবরেটরি তৈরি করে দেশের মেধাবী মানুষদের সহায়তা করা যাতে তাঁদের মেধার যথার্থ প্রয়োগ হয়? অবশ্যই। সরকার এই ভূমিকা না নিলে কোনমতেই ব্রেইন ড্রেইন ঠেকানো সম্ভব নয়।
মানব ইতিহাস, এমনকী আমাদের নিজেদের ইতিহাস ও উদ্ভাবনের ধারা থেকে এটা নির্দ্বিধায় বলা যায় সুন্দর ও সমৃদ্ধ সমাজ তৈরির জন্য শিক্ষাতে (প্রাথমিক থেকে স্নাতকোত্তর) স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের কোন বিকল্প নেই। সেই শিক্ষায় "কিউরিওসিটি-ড্রিভেন" মানবসম্পদ তৈরির প্রচেষ্টা অবশ্যই থাকতে হবে।
ডঃ মাকসুদুল আলমের সংক্ষিপ্ত পরিচিত নিচে দেওয়া হলো।
শহীদ পরিবারের সন্তান ডঃ আলমের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকা শহরে। তিনি গভঃ ল্যাবরেটরি হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর উচ্চ শিক্ষার্থে রাশিয়ায় যান। ডঃ আলম মস্কো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাইক্রোবায়োলজিতে মাস্টার্স ও ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন যথাক্রমে ১৯৭৯ ও ১৯৮২ সালে। এরপর ১৯৮৭ সালে তিনি জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট থেকে বায়োকেমিস্ট্রিতে তাঁর দ্বিতীয় ডক্টরেট ডিগ্রি নেন। ডঃ আলম ১৯৯২ সালে ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াইয়ের (ম্যানোয়া) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে যোগদান করেন এবং ২০০১ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত একই বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত আছেন। তাঁর বিভাগে মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরিটা তাঁর নামেই (আলম ল্যাব) পরিচিত।
মূল ইংরেজি উত্তরগুলো
১নং প্রশ্ন
"For Bangladeshis, jute is not just a plant that produces fibre; it is rather a national icon, linked to the adage: Sonar Bangla. It was also linked to our quest for economic emancipation. In mythical golden Bengal, around which much of our national lore is constructed, we have undulating rice fields together with a field of fibre, both golden." Abed Chaudhury, The Golden Fibre"
It worked as an orchestra, the timing was right; the team members were passionate and talented. About the initiation and details, please visit http://www.jutegenome.org by Swapnojaatra.
২-৫ নং প্রশ্ন
The intellectual capabilities of Bangladeshi scientists in the fields of molecular and plant biotechnology and in other frontier sciences are excellent. They are brilliant, dedicated and passionate with extremely poor and outdated infrastructure. It was/is very sad and unfortunate that our team at Dhaka University does not have even ultracentrifuge and elementary high throughput technology.
Government should invest more in R&D in Bangladesh and provide supports to our homegrown geniuses and build better lab facilities so that they can do justice to their talents? ABSOLUTELY. If Government does not invest, we may forget the rest. The braindrain will continue.
The human history, our own history and the science discovery paths have shown without any reservation, that if you need a Healthy Economy and Society, short and long-term investment for Education (from primary to higher to post graduate) with emphasis to “Curiosity-driven” human resources IS A MUST.
কৃতজ্ঞতাঃ আজাদুল হক, হিমু, মুর্শেদ
মন্তব্য
এই ধরনের মানুষের কাজ দেখলে নিজেরও দেশের জন্য কিছু করার আগ্রহ জাগে, জানি না কতদুর কি করতে পারবো।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
ডঃ মাকসুদুল আলমকে অভিনন্দন।
প্রশ্নগুলো ইটালিক আর উত্তরগুলো প্লেইনে দিলে মনে হয় ভালো হয়।
আপনাদেরকে এই উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ।
ড. মাসুদুল আলমকে অভিনন্দন।
একটি সংশোধনী:
ম্যানোনা নয়; ম্যানোয়া হবে।
উপপস্। টইপো। মাকসুদুল আলম হবে।
ধন্যবাদ, ঠিক করলাম।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
অনেক ধন্যবাদ এই সাক্ষাতকার নেওয়ার জন্য। এরকম একটি পোস্টের অপেক্ষায় ছিলাম।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
অভিনন্দন এই সাক্ষাৎকারটি নেওয়ার জন্য। এই লাইনে আছি বলে এটি নেওয়ার আমারই ইচ্ছা ছিল, কিন্তু দৌড়ে বেড়াবার দায়ে সময় পাইনি। আর ডঃ আলমকে ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ, আপনি এই বিষয়ে (জিনতত্ত্ব) লিখুন। এই বিষয়গুলো সহজ ভাষায় লিখলে অনেকেরই বুঝতে সুবিধা হবে। এছাড়াও কৃষিতে জিনতত্ত্বের প্রয়োগের উপর বেশি লেখা দেখিনি, আমি সহ অনেক পাঠক পাবেন
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ তাসনীম ভাই সাক্ষাতকারটার জন্য
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
একটি সময়োচিত ও সুন্দর পোস্ট এর জন্য অভিনন্দন। ডঃ আলমকেও জানাই অশেষ কৃতজ্ঞতা। এই অর্জনটি যেমন জিনবিজ্ঞানের, ঠিক তেমনি আমাদের দেশের কম্পিউটার প্রকৌশলীদেরও। এত বড় আকারের ও এত সুচিহ্নিত তথ্যবিশ্লেষনের সফল প্রকল্পে কথা আমাদের দেশে গন্ডীতে হয়েছে বলে মনে পড়েনা।
একটা প্রশ্ন। পাট এর জিনোম নকশা জানা হল, আমাদের দেশের একটি একটি বৌদ্ধিক সম্পদ তৈরী হল। কিন্তু এই বৌদ্ধিক সম্পদটি মালিকানা কার? একে কেন্দ্র করে পরে বিদেশে যদি আরো উদ্ভাবন হয়, তাহলে সেগুলোতে কি বাংলাদেশের কোন অধিকার থাকবে? আমি জানিনা এ প্রকল্পের খরচাপতি কে যোগালো। যদি বাংলাদেশ সরকার দিয়ে থাকে, তাহলে তো এর মালিকানা আমাদের চাষিদের হওয়াটাই যুক্তিযুক্ত, নয়কি?
বাংলাদেশে পাটের প্রয়োগ সোনালী আঁশ হিসেবে। আর নবায়ন যোগ্য জ্বালানী শিল্পে এর কদর দ্রুতবর্ধনশীল ও নবায়ন যোগ্য জীবাশ্ম হিসাবে। আরসব নবায়ন যোগ্য জীবাশ্ম যেখানে শুকনো জমি দখল করে খাদ্যশস্যের সাথে প্রতিযোগীতা করে, সেখানে পাট ও সে পরিবারের অন্যান্য উদ্ভিদেরা আপাত দৃষ্টিতে অব্যাবহারযোগ্য নিচু ও লম্বা সময় বন্যাপ্লাবিত জমিতে বর্তে যায়। কাগজ শিল্প পাটের কথাও সবাই জানে। সে বিবেচনায়, এই বৌদ্ধিক সম্পদটি সঠিক মূল্যায়ন শুধু আঁশ/তন্তু শিল্পে বসে করলে চলবে না।
রবারের কথা জানিনা, তবে পেঁপে নিয়ে জিনোমের যে কাজটি হাওয়াইতে হয়েছে তার প্রায়োগিক অবস্থানে আছে নপুংসক ফলদায়ক গাছের বীজ। জেনেটিক ভাবে 'উফশী' করা আরসব ফসলের ক্ষেত্রেই এটা হয়। এতে করে চাষীকে প্রতিবছর বানিজ্যিক বীজ সরবারাহকারির কাছে ফিরে আসতে হবে, হাতে বীজ কেনার টাকা নিয়ে। বড় আকারের খামারির কাছে এটা আকর্ষনীয় হলেও ছোট চাষীর কাছে এটার আকর্ষনীয়তা প্রশ্নযোগ্য থাকে।
এটা বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে হয়েছে। সুতরাং এর পেটেন্টের মালিক হওয়া উচিত সরকারের।
আমার জ্ঞান সীমাবদ্ধ এই বিষয়ে, আমি টেকনিক্যাল ডিটেলও যাই নি আমার লেখাতে। কিন্তু আপনার এই প্রশ্নটা বেশ ইন্টারেস্টিং। আমি ডঃ আলমকে এটা পাঠাবো এবং উত্তর পেলে এখানে পোস্ট করব।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ দুর্দান্ত।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
বিজ্ঞান বুঝি না। কিন্তু এইটা যে একটা বিরাট কান্ড হইছে সেটা বুঝছি। ডঃ মাকসুদুল আলমকে আকণ্ঠ শ্রদ্ধা
আর আপনাকে ব্যাপক ধন্যবাদ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অনেক ধন্যবাদ এই পোস্টের জন্যে!!
[ উনাকে স্কুলে থাকতে চিনতেন? ]
---------------------
আমার ফ্লিকার
---------------------
আমার ফ্লিকার
না উনি আমার অনেক সিনিয়র। আমার বড়ভাই চিনতেন।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ আপনাদের মন্তব্যের জন্য।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমি জানি আপনি এই লেখাটার মধ্যে জিনোম সম্পর্কিত কিছু প্রাথমিক তথ্য সব ধরনের পাঠকের জন্য দিতে পারতেন, যা আমি আপনার অন্য লেখায় পড়েছি। তাতে লেখাটা আরো বেশি তথ্যবহুল আকর্ষণীয় হয়ে উঠতো। সাথে ড. মাকসুদুল আলম ও সম্ভব হলে তাঁর সহকারিদের ছবি যুক্ত করলে খুবই ভালো হতো। চাইলে এখনো হয়তো করা যায়, যদিও তা সম্পূর্ণ লেখক-স্বাধীনতা। তবে সাক্ষাতকার ও লেখাটার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
গর্ব করার মতো এই বিশাল অর্জনে ড. আলম ও তাঁর সহকারিদের প্রতি অশেষ অভিনন্দন।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
ধন্যবাদ রণদা। আমার কিছু তথ্য দেওয়ার ইচ্ছে ছিল কিন্তু দেইনি দুটি কারণে।
১। আমি এই লাইনে বকলম, আমার তথ্য হবে গুগোল সার্চ করা, সেটা সবাই করতে পারেন
২/ জাফর ইকবাল স্যার একটা দারুণ লেখা দিয়েছেন, সেটা সহ অন্যান্য তথ্য বহুল লেখার লিঙ্ক ব্লগে আছে। নীচে দুইটা লিঙ্ক দিলাম।
লিঙ্ক-১
লিঙ্ক-২
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
চমৎকার লেখার জন্য ধন্যবাদ ।
ইংরেজি অংশটূকু ঠিকমত পড়তে পারছি না , ওভারলেপ করছে ।
_________________________________________
ৎ
_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!
এই আলোচনাগুলো দেখলে একটা মিশ্রপ্রতিক্রিয়া হয় নিজের ভেতরে। বেশীরভাগ সময় চেপে যাই। মানুষের আনন্দ উৎসাহে ভাটা পরুক এমন কথা বলতে চাই না।
মানুষ, মানুষের জেনোম সিকোয়েন্স করে, এখন জানে যে মানুষের ৯৪ ভাগ জেন বানরের সাথে মিলে। পাটের জেনোম সিকোয়েন্স করে আমরা কার সাথে মেলাব!
মুক্ত মনা এবং এখানে পোষ্ট দেখে মুল খবরটাও পড়লাম। কিন্তু মুগ্ধ হওয়ার মতো কিছু খুঁজে পেলাম না! শুনেছি ঢাকায় এক বিজ্ঞানী টেস্টটিউব বেবীর কারিগরি শিখে তার প্রয়োগও করেন। যে দেশে জনসংখ্যা একটা সমস্যা সে দেশে জড়ায়ূর বাইরে ডিম্ব এনে বীর্জ ঢুকিয়ে নিষিক্ত করে আবার জড়ায়ূতে ঢুকিয়ে গর্ভধারণে সহায়তা করার কী দরকার হলো, তার যুক্তিটা আমি ঠিক বুঝতে পারি না।
পাটের সমস্যাটা কী সেটাও বুঝি না। পাটের ফলন কম? না কী গুন বা কোয়ালিটি খারাপ যে পাট নিয়ে গবেষণা করতে হবে? সমস্যাটা কী? কোন বিশেষ অজ্ঞাত রোগে পাট বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে? না কী আমরা পাট ব্যবহার করা ছেড়ে দিয়েছি?
পাটের বীজের মতো একটা জেনোম সিকোয়েন্স করা খুব কঠিন কোন ব্যাপার না। কঠিন হলো পাটের কোন জেনকে পরিবর্তন করা। পরিবর্তন করতে হলে পাটের জেনোম জানা জরুরী। কিন্তু পাটের জেনেটিক পরিবর্তনটা কেন করতে হবে? পাট দিয়ে আমরা পাশমী চাদর তৈরী করবো?
জেনেটিক পরিবর্তন করে সাধারণত কোন উদ্ভীদ বা প্রাণীর কিছু বৈশিষ্ট বদলে দেয়া হয়। জেমন আমাদের দেশে এখন হাইব্রীড ধানের বীজ।
দুর্দান্তদার এই মন্তব্যের মানে হলো, খাসী করা ছাগলের মাসং সুস্বাদু লাগে কিন্তু খাসী প্রজনেন অক্ষম। এই হাইব্রীড বীজ প্রজননক্ষম নয় বা তাদের প্রজনন ক্ষমতা খর্ব করেই বাজারে ছাড়া হয়, যাতে বীজের জন্য কৃষক আবার গবেষকের কাছে যায়।
জানি এমন কোন কুমতলবে ড. মাকসুদুল আলম পাটের জেনম প্রজেক্টে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন নি। পাটের সম্ভাব্য কী ধরনে জেনেটিক মডারেসন দরকার সেটা না জেনেই বাংলাদেশের মতো একটা দেশ এমন পণ্ডশ্রমটা কেনো করলো? ধরুন আপনার টাকা আছে, কিন্তু গায়ের রং শ্যামলা। যদি মনে করেন আপনার গায়ের রং সাদা করতে হবে, তাহলে প্লাষ্টিক সার্জারী করাবেন, গায়ের রং সাদা করাতে।
এখন যদি বলেন আমি প্লাষ্টিক সার্জারী করাবো, তো যে সার্জনকে তা বলবেন তিনি জানতে চাইবেন, মানে আপনি ঠিক কোন অঙ্গের প্লাষ্টিসার্জারী করাবেন?
পাটের জেনোম আমাদের জানা আছে। কিন্তু পাট দিয়ে কী বানাতে চাই সেটা কী জানি? কিন্তু এটা জানি যে, পাট থেকে উল পাওয়া সম্ভব নয়। উন্নত দেশে এসব করা হয় ফলন বাড়ানোর উদ্দেশ্যে। কিন্তু পাটের ফলন তো আমাদের জন্য সমস্যা। যে পাট আছে তারই কোন ব্যাবহার আমরা করতে পারছি না! পাটের দড়ি দিয়ে কৃষক গলায় ফাঁসি দিতে পারবে বড়জোড়।
এতো গেলো গাই না কিনে দোহানী কেনার কিচ্ছা। এবার আসুন ধরে নেই আমরা পাটের এমন জেনেটিক মডিফিকেসন করলাম যে, পাট থেকে তুলা উপন্ন হচ্ছে। এখন যে জেনটা তার জন্য নতুন সংযোগ করা হলো, সেটা তো ক্ষেতে বা জাগ দেয়ার সময় পানিতে ছরিয়ে যেতে পারে। অন্য কোন প্রাণীর শরিরে সেটা ঢুকে গেলে তার কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে সেটা কী আমরা জানি? মাটিতে কেঁচো ছাড়া আরো কতরকমের ফ্লোরা আছে, এই নতুন জেনটা তাদের ভেতর ঢুকলে তাদের কী পরিবর্তণ হতে পারে সেটা জানি?
জানার দরকার নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশ সফল করার জন্য আমরা চাঁদের অর্ধেকটা কিনে নিয়েছি। ড. মাকসুদুল আলম অভিযোগ করেছেন যে, আমাদের দেশে এমন কি একটা আল্ট্রা সেন্ট্রিফোজে পর্যন্ত নেই। পাটের বীজ থেকে ডিএনএ পৃথক করতে চায়ের ফ্লাক্সের চেয়ে সামান্য বড় একটা যন্ত্র লাগে, যেটা সেন্ট্রিফোজ (সম্ভাব্য বাংলা মনে আসছে না)। তারপর থর্মাল সাইকেলার, তারপর সিকোয়েন্সার মেসিন। একটা সিকোয়েন্সার মেশিনের দাম ইউরোর হিসাবে মিলিয়নের ঘরে। তার থেকে কঠিন হলো কেমিক্যলস। যে সব রিয়েজেন্ট লাগে তা কেনার সাধ্য অন্তত আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নেই। ঈশ্বর জানে পাটের জেনোম পড়তে আমাদের কত কোটি খরচ হয়েছে। এতো গেলো প্রথমিক ব্যায়। কোন জেন মডিফাই করতেই তো খরচটা বেশী। তার চেয়ে কাজের হতো যদি পাটের ব্যবহারে দিকে মনযোগী হতাম।
পাটেন্ট। আমরা জানি পাটের ডিএনএ কেমন। ধরে নিচ্ছি, সেটা আমরা গোপন রাখব। এখন যদি পশ্চিম বঙ্গের কোন চাষী তার পটের ডিএনএ কোন জনদরদী বায়োলজিষ্টকে দিয়ে করিয়ে আনে। তা হলে আমরা বলতে পারবো না যে, এটাতো আমাদের পাটের জেনোম, তোমাকে দেব না। পাটেন্ট পাওয়া যায় কেবল নিজের উদ্ভাবিত মৌলিক জেনে-এর জন্য।
যাক অনেক কথা বলে আপনাদের বিরক্তি ধরানোর জন্য দুঃখিত। রাজনীতির এইসব জনপ্রিয় জনবিচ্ছিন্ন খেলাতো সব সময়ই ছিল। তার সাথে আর একটা না হয় যোগ হলো আর কী! হোক সেটা আমজনতার টাকায়।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
পাটের জিন প্রাকৃতিকভাবে অন্য কোনো ফ্লোরাতে ছড়াতে পারবে কি? ফনাতে ছড়ানো সম্ভব যদি একমাত্র কোনো ধরনের রেট্রোভাইরাসে করে সেটা প্রবেশ করানো যায়। সে ধরনের ভেক্টর যদি জমিতে থাকে, তাহলে এতদিনে একটা সাধারণ কেঁচোও খুঁজে পাওয়া যেতো না, সব ধান পাট আলুর জিনে একাকার হয়ে যেতো।
পুতুল ভাই, কী বললেন এটা!
এসব কোনো কথা হইলো?
জ্যামিতির গল্পটা মনে পড়ে গেল আমার। ঐ যে হাজার বছর আগে। যখন জ্যামিতির এত-শত ব্যবহার আবিষ্কারই হয়নি। তখন জ্যামিতি শেখার সময় এক ছাত্র বারবার "এ শিখে আমার কী লাভ"। জিজ্ঞেস করছিলো। সেসময় সেই শিক্ষক বেয়ারাকে ডেকে বলে, "তুমি এই বালক কে দুইটা পয়সা দাও কারণ লাভ ছাড়া সে কিছুই করতে রাজি না!"
আর জিন গবেষণায় কী কী লাভ হতে পারে সেটা একটু খোঁজাখুঁজি-পড়াশুনা করলেই চোখে পড়বে। কারণ আমরা তো আর এর আপ্লিকেশন থেকে সেই জ্যামিতি ছাত্রের মত 'হাজার বছর দূরে' নেই।
বাংলাদেশের যে আর্থসামাজিক অবস্থা তাতে 'ডাইরেক্ট আপ্লিকেশনহীন' যে কোনো ধরণের মৌলিক গবেষণাকেই জাস্টিফাই করা মুশকিল হয়ে যায়। আর পাটকেই কেন আপনি মূখ্য ভাবছেন? একটা 'কাটিং-এজ' গবেষণা আমাদের গবেষকরা সফল ভাবে সম্পাদন করতে পারল এটা কী বড় পাওয়া নয়।
আশরাফুল সেঞ্চুরী করলে সবার উচ্ছাসের বাঁধ ভেঙ্গে যায়। তখন তো আমরা প্রশ্ন করিনা। এই সেঞ্চুরীতে কী লাভ। কার গলায় দঁড়ি? কত কোটি টাকা? কিন্তু যে গবেষণায় সম্ভাবনার দুয়ার খুললো। হাজারটা কিশোর স্বপ্ন দেখার আকাশ পেল। সেটা নিয়ে তাহলে এত দ্বিধা কেন?
এডিট করে এই ১৫ মিনিটের ভিডিওটা যোগ করছি।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
টেড-এর এই ভিডিওটা অসম্ভব ভাল লাগল স্পর্শ।
ধন্যবাদ।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
অন্যান্য প্রজাতির জীবের উপর এফেক্ট সম্পর্কে আমার স্বল্প বৈজ্ঞানিক জ্ঞানে যা বলতে চাচ্ছিলাম, তা হিমু ভাই ইতিমধ্যে বলে দিয়েছেন।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ পুতুল।
কাজটা করতে খরচ হয়েছে পাঁচ কোটি টাকার মত। অর্থ সংস্থান করেছে সরকার।
কাজের সুফল সেটা প্রয়োগে, সেটা ঠিক করবেন নীতি নির্ধারকেরা বিজ্ঞানীরা নন। পাট একটা বিরাট অর্থকারী ফসল হতে পারে আবারো, কিন্তু সেটা বিজ্ঞানীর পক্ষে করা সম্ভব নয়।
কাজটা আপনি যতখানি সহজ বললেন, ততখানি সহজ মনে হয় নি আমার কাছে। আমি জিনের বিষয়ে বকলম, কিন্তু যে পরিমাণ ডেটা এনালাইসিস এর কাজ এর সাথে জড়িত, সেটাও কম নয়।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ তাসনীম ভাই... দেশের কত কাজেইতো কোটি কোটি টাকা খরচ হয়...এরকম একটা গঠনমূলক কাজেই না হয় হলো। যারা ভাবছেন এই সিকোয়েন্স দিয়ে কি হবে তার ঠিক না করেই অপচয় হল - তাদের জন্য বলি। আমাদের এই দেশে বেশীর ভাগ পরিকল্পনাই হয় গাছে ওঠার আগে এক কাদি হিসেব করে - তার ফলে গাছেই আর ওঠা হয়না - এখন না হয় আমরা গাছে উঠি, এর পর ফল দিয়ে কি করব তা ঠিক করার অনেক সময় পাওয়া যাবে। আর তাছাড়া জাফর স্যারের লেখা পড়ে মনে হল মেধাসত্ত্ব সংরক্ষণের তাগিদে ব্যপারটায় যথেষ্ঠ গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়েছে
মাকসুদ ভাইকে এবং তার সহকর্মীদের অভিনন্দন জানাই কঠিন কাজটা সহজে এবং কম খরচে করে ফেলার জন্য। মাকসুদ ভাইকে চিনি ছোটবেলা থেকে, স্কুলে থাকতে উনার কাছ থেকে উৎসাহ পেয়েছি বিজ্ঞান ক্লাব করার জন্য। উনি আক্ষরিকঅর্থেই একজন নিবেদিতপ্রাণ সফল বিজ্ঞানী।
বাংলাদেশে বসে পাটের জিনোম ডিকোড করে ওনারা প্রমান করেছেন উপযুক্ত সহায়তা পেলে বাংলাদেশে সবই সম্ভব। সবচে বড় জিনিস হলো এই প্রজেক্টে উনি তারুন্যের সমাহার ঘটিয়েছেন, তারুন্যের প্রকল্পের নাম করা হয়েছে স্বপ্নযাত্রা। এরচেয়ে সুন্দর নাম আর কি হতে পারতো ? আমাদের মানবসম্পদ আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ, এর যথাযথ ব্যবহার হলে আমার বিশ্বাস আমরা একদিন বিশ্ব দরবারে মাথা উচুঁ করে দাড়াতে পারবো।
আবারো ধন্যবাদ সবার মন্তব্যের জন্য।
একটা ব্যক্তিগত ঘটনা। আমার খুব ইচ্ছে ছিল কম্পিউটার প্রকৌশল পড়ব। তখন বুয়েটে সিএসসিতে সিট ছিল মাত্র ৩০টা, আমি ঢুকতে পারিনি। মধ্যবিত্ত পরিবারে সামর্থও ছিল না বিদেশে গিয়ে পড়ার। সেকেণ্ড ইয়ারে ওঠার পর আব্বা একটা কম্পিউটার কিনে দেন। ৩৮৬ মেশিন, ৪ মেগা র্যাম, বিশ মেগা হার্ড ড্রাইভ। সেটার দাম ছিল প্রায় ৭০ হাজার টাকা। সারাদিন পড়ে থাকতাম সেই যন্ত্র নিয়ে। আমার কম্পিউটার প্রযুক্তির হাতেখড়ি সেটা দিয়েই। আমি এখন কম্পিউটার প্রকৌশলী হিসাবেই কাজ করি, খুব বেশি একাডেমিক জ্ঞান ছাড়াই। সেই সময় কম্পিউটার কেনাটা আমাদের জন্য বেশ কষ্টকর ছিল, আমার বাবা/মা দুজনেই রিটায়ার্ড তখন। তবে পরে বুঝতে পেরেছি, এটা ছিল অন্যতম সেরা একটা ইনভেস্টমেন্ট।
খুব অল্প কথায় ডঃ মাকসুদুল আলম আমাদের প্রশ্নগুলোর জবাব দিয়েছেন। অনুবাদ করতে গিয়ে অনেকবার পড়েছি ওগুলো। সরকারের শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা উনি বলেছেন। আমি নিজের জীবনেই দেখেছি এই বিনিয়োগের রিটার্ন কতখানি। শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে সরকারি বিনিয়োগের "রিটার্ন অফ ইনভেস্টমেন্ট" যে কতখানি হবে তা আমি আন্দাজ করতে পারি। আমি নিজে আরেকবার উপলদ্ধি করেছি, কত অল্প কথায় কতখানি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বলা যায়।
জিনোম সিকোয়েন্সের কাজটা করা ভালো কী মন্দ হয়েছে, টাকার অপচয় হয়েছে কীনা এই সব নানান ব্যাপারে অনেক মন্তব্য ও দ্বিমত থাকতে পারে সন্দেহ নেই। তবে আমি আনন্দিত হয়েছি অন্য একটা কারণে। আমাদের দেশের বিশ্বমানের রিসার্চ করা সম্ভব এটা কেউ একজন করে প্রমাণ করে দিয়েছেন। আমাদেরতো সাধারণত মরে প্রমাণ করতে হয় যে আমরা মরি নাই।
এর প্রয়োগ ও অপপ্রয়োগ সবই থাকতে পারে, কিন্তু দারুণ একটা কাজ করা বাংলাদেশে বসে করা অবশ্যই সম্ভবপর হয়েছে। আমি শুনেছি এই কাজের মূল ওয়ার্কফোর্স ছিল একদম সদ্য পাশ করা ছাত্র ছাত্রীরা। এঁদের যে উৎসাহটা যোগালো এই কাজটা সেটাও একটা ইনভেস্টমেন্ট এবং এর হয়ত একটা পজেটিভ মোমেন্টাম আমরা দেখব অচিরেই। আমি ছোটবেলা থেকেই শুনছি দেশ রসাতলে যাচ্ছে। আশাকরি আমার প্রজন্মের হতাশা নতুন প্রজন্ম কাটিয়ে উঠবে এইসব সাফল্যের আলোক ছটায়।
দেশের যে কোন একটা ভালো খবরই (সেটা ক্রিকেটই হোক আর জিনতত্ত্বই হোক) মনে হয় আমার নিজেরই সাফল্য। মনে হয় আমার ব্যক্তিগত ভিকারিয়াস থ্রিলটাই এই পোস্টের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমাদের দেশের বিশ্বমানের রিসার্চ করা সম্ভব এটা কেউ একজন করে প্রমাণ করে দিয়েছেন।
ঠিক, এ পাওয়াটিও ছোট করে দেখবার নয়।
আমার মন্তব্যে আপনাদের প্রতিক্রিয়ার জন্য ধন্যবাদ। সবগুলো কথার উত্তর আলাদা করে দেয়া একটু কঠিন। আমার মনে হচ্ছে মলিকুলার বায়োলজীর কিছু প্রাথমিক আলোচনাও দরকার। সব মিলিয়ে আমি একটা পোস্ট দেবো কয়েকদিনের মধ্যে। আপাতত বলে রাখি; আমাদের দেশের যেকোন সাফল্যে আমিও আপনাদের মতো গর্বিত হই আর ব্যর্থতায় কষ্ট পাই। আমি মোটেও বিজ্ঞান বিমুখ নই। বছর পাঁচেক জেনেটিকের উপর কাজ করেই রুটিরুজি করেছি। কাজেই আমি এর বিরোদ্ধে নই।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
পুতুল, আবারো ধন্যবাদ। এই ব্যাপারে আমারো কৌতুহল আছে, লিখে ফেলুন তাড়াতাড়ি, অপেক্ষায় রইলাম।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
নতুন মন্তব্য করুন