শিশুপালন-৭

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: বুধ, ০৭/০৭/২০১০ - ৩:৩২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


সাড়ে নয় মাসঃ

শিশুপালন শুরু হয় শিশুর জন্মের আগে থেকেই। যেই প্রথম আপনারা “হোম প্রেগনেন্সি কিট” এর পরীক্ষায় পাশ করলেন, ঠিক তখন থেকেই আপনি এই দায়িত্ব নিলেন, বুঝলেন তো? পরীক্ষায় ফেল করলে তো আরো ভালো, আবার পরীক্ষার “প্রিপারেশন” নেবেন। জীবনে এই একটা প্রিপারেশন সবাই আগ্রহের সাথেই যে সম্পাদন করেন সেই বিষয়ে কোন বিসংবাদ থাকায় কথাও নয়। যাহোক ধরে নিলাম আপনি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছেন, অর্থাৎ আর মাত্র নয় মাস হাতে আছে, দায়িত্ব প্রচুর। তা ভাই দায়িত্বটা কী? সোজা বাংলাতে এই মুহুর্ত থেকে আপনার ভূমিকা হচ্ছে আপনি বাসার ফুল টাইম “জরু কা গোলাম” (তবে কেউ কেউ শুনেছি সারাজীবনই এই পদে চাকরি করে যান)।

প্রথম কাজ হচ্ছে একটা ভালো ডাক্তার নেওয়া, উনিই আপনার বাচ্চার জন্মদিন জানিয়ে দিবেন, কোন অসুবিধা না হলে ওই দিনের আশে পাশেই ঘটনা ঘটে যাবে। ডাক্তার আপনাদের কিছু ভিটামিন ধরিয়ে দেবে, আর অনেক জ্ঞানও লাভ করবেন আপনারা, তবে সেগুলোর অনেক কিছুই বাসায় ফেরার আগেই ভুলে যাবেন, এই বিষয়ে আমি নিশ্চিত। আপনাদেরকে এখন থেকে দিন গুনতে হবে সপ্তাহে, আর পুরো সময়টা তিন ভাগে ভাগ করে দিবেন ডাক্তাররা, উনারা আমাদের মত আমজনতা নন, একেকটা ভাগকে উনারা ডাকবেন ট্রাইমেস্টার। এই পুরো সময়ই নানান ধরনের হরমোনের আধিক্যে বেগম সাহেবের মেজাজ “ফোর্টি টু” হয়ে থাকতে পারে, তবে উনাদের অনেকেই নাকি ২৪/৩৬৫ বেয়াল্লিশ সিন্ড্রোমে ভুগেন শুনেছি।

যাহোক, প্রথম ট্রাইমেস্টার দিয়েই শুরু করি। আপনি যদি “মর্নি সিকনেস” কথাটা শুনে থাকেন জীবনে কখনো, তবে এটার একটা প্র্যাক্টিক্যাল ট্রেইনিং আপনার মোটামুটি হয়ে যাবে। শুধু মর্নিং বলি কেন, হুটহাট যেকোন সময়েই এই “সিকনেস” দেখা দিতে পারে। হাতের কাছে বালতি রাখতে পারেন, বেশি অবস্থা টাইট হলে ওষুধ-পত্র পর্যন্ত লাগতে পারে। বেগম সাহেবের খাবারের রুচি উনার মেজাজের মতই উঠা-নামা করতে পারে। হঠাৎ করে অদ্ভুত সব জিনিস খাওয়ার বায়না ধরে বসা বিচিত্র নয় এবং খাবার শেষে সেটা উগরে দেওয়াও খুব অসাধারণ কোন ঘটনা নয়। এই গুলো সামাল দিতে গিয়ে মাঝে মাঝে ঈশ্বরে বিশ্বাস না করেও উনার ডিপার্টমেন্টে দরখাস্ত করতে ব্যাপক ইচ্ছে হতে পারে। তবে ভয় নেই, সামনেই আছে শুভ দিন।

দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারটা মনে হয় সবচেয়ে ভালো ট্রাইমেস্টার। বমি টমি কমে গিয়ে শরীরটা বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠবে বেগম সাহেবার। রুচিরও হয়ত উন্নতি হবে, খাবারের পরিমাণও বাড়বে, সেতো হতেই হবে, দুজন লোক খাচ্ছে যে। ওজন আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে, স্ফীত হতে থাকবে মধ্যপ্রদেশ। বাচ্চার প্রথম পরিষ্কার ছবির (আলট্রাসাউন্ড) ভিডিওটা করতে ভুলবেন না। লক্ষী পয়মন্ত কন্যা কিংবা বাঁদর প্রকৃতির পুত্র, সেটাও ছবিতে ধরা পড়বে। ভাগ্যিস বিধাতা কাপড় পড়িয়ে দুনিয়াতে কাউকে পাঠান না, তাহলে আপনাদের আনন্দটাই মাটি হয়ে যেত। আপনাদের জীবন মোটামুটি আগের ছন্দেই থাকতে পারে দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে, অর্থাৎ যেই লাউ সেই কদু স্তরে থাকবেন এই সময়টাতে।

তৃতীয় ট্রাইমেস্টারটা অনেকটা আমাদের বুয়েটের পরীক্ষা প্রস্তুতকালীন ছুটির (প্রিপেয়াটারি লিভ) মত লাগতে পারে। আর কী কী করতে হবে এই চিন্তায় চলে যাবে এই সময়টা। এদিকে বেগম সাহেবা দ্রুত আকারে বাড়ছেন আর আপনি চিন্তায় চিন্তায় কমছেন। লেবার রুম আর দূরের কোন বিষয় নয়, আপনি বাংলাদেশে না থাকলে আপনাকেও ঢুকতে হতে পারে এই ঘরে। ডাক্তার আপনাকে একটা ধারনা দিবে কী হতে পারে ভেতরে, অনেক ক্লাসফাসও আছে এই বিষয়ে। তবে ভাই, হীরক রাজার কথাটা মনে রাখবেন, যত কম জানে তত বেশি মানে। যত কম জানবেন ততই ভালো। বেশি জানলে লেবার রুমে বউয়ের বদলে আপনার চিকিৎসাও লাগতে পারে। ডাক্তাররা আপনাকে সাবধান করে দিতে পারেন যে লেবারের সময় বেগম সাহেবা আপনাকে কষে গালাগাল দিতে পারে, কেননা আপনিই যাবতীয় নষ্টের গোড়া এবং ঘুরে বেড়াচ্ছেন আরামসে, আর উনার পুরো ব্যারাছ্যারা সিচুয়েশন। তবে গালাগাল, সেটা আর নতুন কী? হাটে, মাঠে, ঘাটে, ব্লগে আমরা কত খাচ্ছি আর দিচ্ছি এই জিনিস।

তবে একেকজনের অভিজ্ঞতা একেক রকম হতে পারে, সে যাই হোক তিনটা ট্রাইমেস্টারের ধাক্কার পর আমাদের ফাইন্যাল পরীক্ষার দিনটা আর ভাববাচ্যে না বলে বরং আমার নিজের জবানিতেই বর্ননা করি।

জন্মদিনের গল্পঃ

মার্চ মাসের আট তারিখ আমাদের ডেইট ছিল। আমার ভালো কোন ক্যামেরা ছিল না। মার্চ মাসের চার তারিখ রাত আটটা পঁয়তাল্লিশ মিনিটে আমি মোটামুটি পদের একটা ক্যামেরা কিনি। সেটার উপর নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে রাত বারোটার সময় ঘুমাতে যাই। ভোররাতে এই অধমকে ডেকে তুললেন উত্তম অর্ধেক। ডাক্তার বলে দিয়েছিলেন কন্ট্রাকশন গুনতে, সেই মোতাবেক উনার ধারণা এখনই আমাদের হাসপাতালে যেতে হবে। প্রথমেই মনে মনে নিজের পিঠটা চাপড়ে দিলাম, ক্যামেরা কেনার টাইমিংটা দারুণ হয়েছে। স্যুটকেস একদম রেডি ছিল। দিনের আলো তখনও ভালো মতে ফুটেনি, পাখিরাও টেনে ঘুম দিচ্ছে। দিনটা ঘন অন্ধকার, একটু পরেই মুষলধারে নামবে বৃষ্টি। শনিবারের সেই সকালে আমিও দশটা পর্যন্ত ঘুমাতে পারতাম কিন্তু সেই আশা গুড়েবালি। গাড়িতে উঠে ১০ মিনিটের মধ্যে হাসপাতালের ট্রিয়াজ রুমে পৌঁছে যাই। এখানেই ঠিক হবে এটা কী নকল নাকি আসল প্রসব বেদনা। নকল হলে দিনটাই পুরো মাটি, আমার চেনা অনেকেই কয়েকবার হাসপাতালে আসা-যাওয়া করেছে। নাহ, আমাদেরটা একদম আসল লেবার পেইন, আলমের পঁচা সাবানের মত এক নম্বর। পত্রপাঠ আমাদেরকে নেওয়া হল লেবার রুমে, আমার হাতে একটা ব্যান্ড বেঁধে দেওয়া হল যাতে আমার স্ত্রী এর নাম লেখা। হাশরের ময়দানের মত লেবার ইউনিটের কাজকর্ম হয় মায়ের নামে, অর্থাৎ আপনি এখানে সাইড লাইনের খেলোয়াড়, ফাই-ফরমায়েশ আর গালাগালি খাবার জন্য আপনাকে রাখা হয়েছে।

লেবার পেইন কোন ডিজিটাল বস্তু নয়, এক লাফে উঠল আর বাচ্চা পয়দা হয়ে গেল। এটা ডিজিটাল যুগের আগের তৈরি একদম এনালগ জিনিস, এই উঠছে আর এই নামছে। কন্ট্রাকশন মাপার জন্য একটা যন্ত্র ফিট করা হলো, ডাক্তার আর নার্স মাঝে মাঝে এসে ডাইলেশন মাপছেন। এদিকে ব্যথার বহর দেখে আমার অবস্থা টাইট, কিন্তু একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ের আগে বাচ্চা ডেলিভারি করা যাবে না। লেবার ইন্ডিউস করার একটা ওষুধ দেওয়া হোল, তাতে ব্যথা লাফ দিয়ে দিয়ে বাড়া শুরু করল।

দুপুর দুইটার মধ্যেই আমার মনে হল যে আমি কনসান্ট্রেশন ক্যাম্পে আটক কারো অত্যাচার দেখছি। ডাক্তার মনে হয় আমার কষ্ট দেখেই বললেন যে একটা এপিডিউর‌্যাল দেওয়ার ব্যবস্থা করতে। একজন এনাস্থিশিওলজিস্ট এসে দ্রুত সেই সেই বস্তু দেওয়াতে কিছুটা শান্তি ফিরে এল। প্রসূতি মায়ের নাকি সেরা বন্ধু এই জিনিস। ব্যথা কমে যাওয়াতে আমরা যন্ত্রের পর্দাতে কন্ট্রাকশন দেখতে লাগলাম, বাচ্চার হার্ট রেইট আর ব্লাড প্রেশারও অজানা নেই। সব কিছুই আন্ডার কন্ট্রোল। আমি বুঝতে পারলাম ডাক্তাররা কেন এত পয়সা বেতন পান, আমরা ফেসবুক আর সচলায়তনের ফাঁকে ফাঁকে কাজ করি, আর উনারা কাজের ফাঁকে ফাঁকে ওইগুলো করেন, তাও যদি ফাঁকটা পাওয়া যায়।

বেলা গড়াতে লাগলো, কিন্তু কী ডাইলেশন আশানুরূপ না হওয়াতে অপেক্ষা চলতেই লাগলো। এদিকে ওষুধের প্রভাব কাটিয়ে ব্যথাবাবাজী আবার ফিরে আসছেন। রাত আটটার দিকে সত্যিকারে লেবারের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। পুরোটাই একটা ভয়াবহ মেকানিক্যাল প্রক্রিয়া, এমনিতেই যথেষ্ট ভয় দেখিয়েছি, আর দেখাতে চাইনা। একঘন্টা চেষ্টা করেও সম্ভব হোল না। ডাক্তার একটু বিরতি নিলেন। আমি লক্ষ্য করলাম সেই সকাল বেলার ডাক্তার এখনো কাজ করছেন। উনাকে জিজ্ঞেস করলে উনি বললেন উনার ২৪ ঘন্টা ডিউটি আজকে। কিছু সময় পরে আবারো একদফা চেষ্টা চলল। তারপর আরেক দফা।

রাত এগারোটায় উনি হাল ছেড়ে দিয়ে বললেন অপরেশনের জন্য প্রস্তুত হতে। উনিই করবেন সেই সি-সেকশন সার্জারি। আমি এসেছি প্রায় ১৮ ঘন্টা আগে, ডাক্তার একই সময় থেকে ডিউটি করছেন। আঠারো ঘন্টা কাজ করার পরে দাঁড়িয়ে থাকাই জটিল, আর সেইখানে অপরেশন? কিন্তু উনি কাজের মানুষ, দ্রুত সব রেডি করার নির্দেশ দিলেন। আমার হাতে একটা হলুদ গাউন দিয়ে বললেন এটা দ্রুত পরে নিতে। অর্থাৎ আমাকেও ঢুকতে হবে সার্জারি রুমে। সহ-মরনে যাওয়াটা কী রকম ছিল সেটা আমি এবার বুঝলাম। ডাক্তার আমাকে জানালেন যে উনি একটা পেডিয়্যাট্রিক টিম চান লেবার রুমে, আমার আপত্তি আছে কীনা। যিনি বউয়ের পেট কাটবেন, তাঁর সাথে কোন রকম তর্ক করাটা বুদ্ধিমানের কাজ না, আমি কোন কিছু না বুঝেই সম্মতি দিয়ে দিলাম।

শুরু হোল অপরেশন। একটা পর্দা টানা আছে, যার ওদিকে চলছে কাঁটাছেঁড়া, আর এদিকে আমি স্ত্রীকে বোঝাচ্ছি যে এইগুলো কোন ব্যাপারই না। এইসব সার্জারি চোখ বন্ধ করেই করা যায়। এর মাঝে একবার পর্দার ওদিকে উঁকি দিলাম, মাথাটা একটা চক্কর দিয়ে উঠল দৃশ্য দেখে। ওপাশে অন্তত দশ জন মানুষ এবং প্রত্যেকেই কিছু না কিছু করছে।

“বাচ্চার কানে তো আজান দিতে হবে...আচ্ছা তুমি আজান দিতে পারো?” স্ত্রী আমাকে জিজ্ঞেস করলেন।

আজান পুরোটা কীভাবে দিতে হয় সেটা আমি জানি না, শেষের দিকে প্যাঁচ লেগে যায়। কিন্তু একটু আগেই এক বন্ধু এসে কাগজে লিখে রেখে গেছে, ওটা দেখে দেখে দিতে পারব, পকেটে রেডি আছে একদম।

“চোথা রেডি আছে, চিন্তার কিছু নেই”। আমি একটু গর্বের সাথেই জবাব দেই। কেন জানি গিন্নি একটা জ্বলন্ত দৃষ্টি হানেন আমার দিকে।

কয়েক মিনিট হয়েছে অপরেশন শুরু হয়েছে, আমার মনে হচ্ছে কয়েক ঘন্টা। আমি জীবনে অনেকবার ধরা খেয়েছি, বড়, ছোট ও মাঝারি সব সাইজের। যে কাজেই হাত দেই, সেটারই প্রায় বারোটা বেজে যায়। সাফল্য ও ব্যর্থতা পাশাপাশি পাল্লায় উঠালে কোনটা যে ছিঁড়ে পড়বে সেটা বলাই বাহুল্য। যাকে সন্তানের মত ভালোবেসেছি এই জীবনে, সে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে একদম না ফেরার দেশে, আমার নিজের শিশুর কান্নাটা শুনে তার কথা মনে পড়তেই কোত্থেকে লুকানো অশ্রুগুলো ফিরে আসে, দুঃখ নয় আনন্দের রূপ নিয়ে। হঠাৎ মনে হল এই জীবনটা খুব মন্দ নয়, বেশ দারুণ একটা জায়গা। হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসাও ফিরে আসতে পারে এই এক জীবনেই।

যে গোলগুলো খেয়েছি জীবনভর, সেগুলো আজ ফ্যাবিয়ানোর মত (নাকি আসলাম) শোধ করে দিয়ে আমি যেন খেলায় ফিরে আসি বিজয়ীর বেশে। ক্রদনরত শিশুটাকে নিয়ে নার্স বললেন তোমার বাচ্চার মাথায় তো অনেক চুল, হোল্ড ইউর লিটল প্রিন্সেস ড্যাডি...কনগ্র্যাচুলেশসন...হাত পেতে দিয়ে নার্সের হাত থেকে তুলে নেই জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার, আমার প্রথমা কন্যা আনুশাকে।

শিশুপালন-৬ এইখানে, যদিও এটা মাসুদ রানা সিরিজের মত, অন্য পার্ট না পড়লেও কোন ক্ষতি নেই

###


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

মাঝ থেকে শুরু করলাম হাসি

তাসনীম এর ছবি

হাসি

এর মানে কি অর্ধেক লেখা পড়েছেন?

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হা হা ..
ধরে নিচ্ছি আপনি আরো ছয় পর্ব দিবেন হাসি

তাসনীম এর ছবি

আশা রাখছি...ছয় পর্ব লিখেছি আগে...আরো কয়েক পর্ব লিখার ইচ্ছে আছে হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সাইফ শহীদ এর ছবি

খুব সুন্দর উপকারী লেখা।

সাইফ শহিদ

http://www.saifshahid.com

সাইফ শহীদ

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ সাইফ মামা।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

আজকে নিধির পটপটানি এখনও কানে লেগে আছে। এটা পড়ে তাই অসম্ভব কিউট লাগলো! হাসি আদর জানের টুকরা গুলোকে!

অটঃ কাল পরশু চাচা-চাচীর সাথে একখান ঝটিকা দেখা হতে পারে ভাইজান! হাসি

-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ বালিকা।

অটঃ তাই নাকি? আমি ভালো আছি এটা জানায়ে দিও হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

এই পর্বটা আমার জন্য মনে হয়। সামনের দিনগুলোর কথা চিন্তা করে হাত পা পেটের ভিতর সেঁদিয়ে যাচ্ছে। মন খারাপ

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

তাসনীম এর ছবি

ভয় একটু লাগতে পারে, তবে প্রাপ্তি অনেক। শুভকামনা রইল।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

বোহেমিয়ান এর ছবি

@মুর্শেদ ভাই আপনার কাছ থেকেও সুখবর আশা করছি । আশা করি এই রকম একটা পোস্ট দেবেন ।

@তাসনীম ভাই এই পর্ব পড়ে তো সুযোগ চাই প্যারেন্ট হবো একটু ধাক্কা খেলো! তাও শেষে এসে আবার ত্বরান্বিত হলো!!
_________________________________________

_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!

তাসনীম এর ছবি

বোহেমিয়ান, সুযোগ অবশ্যই আসবে, সামনে আছে শুভ দিন হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

পুতুল এর ছবি

মুর্শেদ,
ভাই ভয়ের কিছু নেই। নতুন একটা জীবন শুরু হতে একটু আড়ম্ভর তো লাগেই।

তাসনিম ভাই খুব সুন্দর করে লিখেছেন আপনার অভিজ্ঞতা। সেদিনের আবেগ থেকে বের হতে পারলে লিখব কোন দিন। সুন্দর কাটুক আপনাদের প্রতিটি দিন।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ পুতুল ভাই। আপনাদের জন্যও শুভকামনা।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

কৌস্তুভ এর ছবি

তা কেন? আপনারও গ্লোরি আসতে যাচ্ছে শীঘ্রই... পাপন্তুস সিরিজ জারি থাকুক। সে ভাল করে ফুটবল খেলছে তো?

হিমু এর ছবি

খুবই ভয়ঙ্কর ব্যাপার। পান থেকে চুন খসলেই কোত্থেকে যে কী হয়ে যায় ... ।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

সবজান্তা এর ছবি

মন্তব্যটা আক্ষরিক অর্থেই সত্যি চোখ টিপি


অলমিতি বিস্তারেণ

তাসনীম এর ছবি

আসলেই হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

দ্রোহী এর ছবি

দারুণ!!!!!!!

শিশুপালন শেষ পর্বে একটা পিডিএফ তুলে দিয়েন। চোথা হিসাবে সংগ্রহে রাখা যাবে। দুঃসময়ে নির্দিষ্ট পাতা খুলে করণীয় কী তা জেনে নেয়া যাবে সহজেই। হো হো হো


কি মাঝি, ডরাইলা?

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ দ্রোহী।

ঠিকাছে, শেষ হলে পিডিএফ করে দিব। তবে দুঃসময়েরর সময়ে শর্ট সার্কিট মাথা নিয়ে সঠিক পাতাটা খুঁজে পেলেই হয় হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

রসিক লেখা

“চোথা রেডি আছে, চিন্তার কিছু নেই”।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

অটঃ আমার ভাতিজা জন্মের সময় আজান মুখস্থ ছিল। কিন্তু ভাইয়ের শ্বশুরাব্বা আমার পার্ফর্মেন্সে নিশ্চিত না হয়ে আরেকজনকে ধরে আনলেন। তারপর একসাথে দু'কানে আজান খাইছে
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার ভাইয়ের ঘটনাটা মজার। হাসপাতালে রেকর্ড করা আজানের ব্যবস্থা থাকা উচিত এই সময়ের জন্য হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আযানেও "ডুয়েট" সিস্টেম আছে দেখি! অপরজন, আই মিন আপনার ডুয়েট পার্টনার কি বালিকা ছিলেন?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আমার ভাতিজা জন্মের সময় আজান মুখস্থ ছিল। কিন্তু ভাইয়ের শ্বশুরাব্বা আমার পার্ফর্মেন্সে নিশ্চিত না হয়ে আরেকজনকে ধরে আনলেন। তারপর একসাথে দু'কানে আজান

কসম খোদার, এইটা খালি সিমন ভাইয়ের পক্ষেই বলা সম্ভব দেঁতো হাসি

_________________________________________

সেরিওজা

বাউলিয়ানা এর ছবি

পড়লাম এবং ভাল লাগল।

অনেক দিন পর যখন এরকম পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে, আবার উলটে পালটে দেখে নেবখন হাসি

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ বাউলিয়ানা।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

বয়স হয়ে যাচ্চে... এদিকে কিছুই হচ্চে না... দেঁতো হাসি

_________________________________________

সেরিওজা

তাসনীম এর ছবি

অবশ্যই হবে একদিন, "সুযোগ চাই প্যারেন্ট হব" এই গ্রুপের নাম শুনেছো তো? ধূগোর নেতৃত্বে যুব সমাজ এর পতাকাতলে জড়ো হয়েছে হাসি যোগ দিতে পারো।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

অনুভূতির এমন সুন্দর প্রকাশ,খুব ভালো লাগলো! আনুশাকে আদর।

সুমিমা ইয়াসমিন

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এমিল ভাই, এই পর্বের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে সময়টা, সেই সময়ে একজন হবু বাবার অনুভূতি নিয়ে লিখুন। এই অনুভূতি নিয়ে কেউ লেখেননি। আমার প্রকাশ করার ক্ষমতা দুর্বল, নয়তো আমি লিখতাম। আমাদের যাদের বাবা হবার অভিজ্ঞতা আছে তারা সেখানে নিজেদের কথা যোগ করতে পারবেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই। চেষ্টা করব, এই টপিকটা জটিল, আমার দ্বারা সম্ভব হবে কীনা সন্দেহ আছে।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

তবে কেউ কেউ শুনেছি সারাজীবনই এই পদে চাকরি করে যান

কেউ কেউ নয়, সবাই।

তবে উনাদের অনেকেই নাকি ২৪/৩৬৫ বেয়াল্লিশ সিন্ড্রোমে ভুগেন শুনেছি

আজ্ঞে, অনেকেই নন্‌, সবাই।

বেগম সাহেবের খাবারের রুচি উনার মেজাজের মতই উঠা-নামা করতে পারে। হঠাৎ করে অদ্ভুত সব জিনিস খাওয়ার বায়না ধরে বসা বিচিত্র নয় এবং খাবার শেষে সেটা উগরে দেওয়াও খুব অসাধারণ কোন ঘটনা নয়

পরবর্তীতেও এই ব্যাপারটা মোটামুটি এমনই বহাল থাকে, শুধু উগড়ে দেয়ার ব্যাপারটা ছাড়া।

বেগম সাহেবা আপনাকে কষে গালাগাল দিতে পারে, কেননা আপনিই যাবতীয় নষ্টের গোড়া এবং ঘুরে বেড়াচ্ছেন আরামসে, আর উনার পুরো ব্যারাছ্যারা সিচুয়েশন

এই স্টেটমেন্ট পরবর্তীকালেও সমানতালে জারী থাকে। কথাটাতো সত্যি, নাকি?

এর মাঝে একবার পর্দার ওদিকে উঁকি দিলাম, মাথাটা একটা চক্কর দিয়ে উঠল দৃশ্য দেখে

এই দৃশ্য সব পুরুষের দেখে রাখা উচিত। তাতে তাদের অনেকেই আর কখনো একজন নারীর সাথে অশ্রদ্ধার আচরণ করতে পারবেনা। তারপরও যারা অশ্রদ্ধা প্রকাশ করবে তারা মানুষ নয়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তাসনীম এর ছবি

দারুণ অবসার্ভেশন। তবে এই বিষয়ে মন্তব্য করে আর বেয়াল্লিশের কবলে পড়তে চাই না চোখ টিপি

আমার মনে হয় লেবার রুমে সব পুরুষ মানুষেরই ঢোকা উচিত, বিশেষত আমাদের দেশে। নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর একটা কুইক লেসন হবে এতে।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ওডিন এর ছবি

আর মায়ের জন্য ভালোবাসা নতুন করে শেখার জন্যেও! হাসি

আমার এক বন্ধুর সারারাত লেবার ওয়ার্ডে ডিউটি করে আসার পর প্রথম কথা ছিলো- 'কোনদিন আর আম্মুর সাথে গন্ডগোল করুমনা রে!' বলাই বাহুল্য ওর মা কে জ্বালানোর ব্যপারে সে ছিলো একজন বিশেষজ্ঞ!

লেখাতো বরাবরের মতোই চলুক হাসি

______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

তাসনীম এর ছবি

ওডিন, ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আসলেই, তাবৎ নারীকুলের প্রতি শ্রদ্ধাটা বাড়বে লেবার রুমে ঢুকলেই।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

কি কিউট !! লেখাটা পড়তে মজা লাগলো, কয়েক জায়গায় জোরে হেসেও ফেলেছি, আবার ''অন্যরকম'' একটা ভাল লাগাও কাজ করলো... ভাল থাকুন... হাসি

''চৈত্রী''

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ চৈত্রী। আপনিও ভালো থাকুন হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- হে হে হে
চোথা তো বুঝলাম ঠিকই আছে। কিন্তু আগে তো পরীক্ষায় বসতে হবে! সেশন জটে পড়ে পরীক্ষাই তো আসে না, চোথা অ্যাপ্লাই করবো ক্যামনে? মন খারাপ
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তাসনীম এর ছবি

আসবে, আসবেরে ভাই...পুরা জীবনইতো সামনে পড়ে আছে, খালি দরকার একটু ধৈর্য আর গুরুজনদের দোয়া হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আর কতো ধৈর্য ধরবো তাসনীম ভাই, আর কতো! মন খারাপ
দোয়ার রানরেট বাড়ানোর আবেদন করি গুরুজনদের কাছে!

বন্ধুবান্ধব সব তাদের নাত-বউ খোঁজা শুরু করে দিলো। আর আমি এখনো আপনার দেয়া চোথা পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়াই। নাতির বউ তো দূরের কথা, নিজের বউরেই দেখলাম না এখনো! এই জনমে মনে হয় না নিজের বিয়েটা দেইখা যাইতে পারুম! মন খারাপ
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তাসনীম এর ছবি

মামা বাড়ির মাঝি নাদের আলির মত খালি প্রত্যাশাই দিয়ে যাচ্ছি।

এবার স্পেসিফিকালি বলছি...আমি দোয়া করছি যেন ২০১১ সালে মধ্যেই (দেড় বছর হাতে আছে) তোমার নাক কাটা যাবে। নূপুর ভাবির ডেটাবেজে নাম লিখিয়েছ? আমেরিকার মহিলা ঘটকরা খুব এক্টিভ, আমার চেনা এক ঘটক এখনও আমাকে মাঝে মাঝে ফোন করেন মেয়ের খবর দিয়ে (সত্যি কথা)। ধরব কাউকে?

এছাড়া মেহবুবা ভাবির হাতে অনেক সুন্দরী মেয়ে আছে কিন্তু।

অটঃ আমি নাকি যেই দলের জন্যই দোয়া করি সেটাই নাকি হারে।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

শুনেছিলাম সাতটা বিয়ে দিতে পারলে বেহেস্ত এক্কেবারে পাকা। সংক্ষেপে বেহেস্ত যাওয়ার উপায় হিসাবে ঘটকালী হলো উত্তম পন্থা। এই জীবনে তো অনেক কষ্ট করলাম। মরার পর দোজখে যাওয়া পোষাবে না। তাই ঘটকালী করে রথ দেখা আর কলা বেচা দুই কাজ একসাথে করার ধান্দা করেছিলাম। মেয়ে আমার হাতে আছে কথা সত্যি। তাদের চেহারা ছবি ভালো সেটাও সত্যি। দু'গোর দুঃখে পরাণ ফাইটা যায় সেটাও ভুল নয়।
কিন্তু ঘটকালী করে যে বিয়ে লাগাতে পারছিনা, তার কী হবে? যেমন ধরো, প্রথম ঠিক করলাম দু'গোরে দিয়েই বউনি করি। রেনেট কয় দুগো নাকি ঐ কাম আগেই সাইরা ফেলছে। তারপর ভাবলাম ঠিক আছে হিমুই সই, আচ্ছা ভালো চেহারা সুরুত, বুদ্ধি শুদ্ধি খারাপ না। রান্না বান্নাও জানে, পাত্র হিসাবে চলবে না শুধু, দৌড়াবে। শুধু ভাবাই সারা কোন কাজে লাগলো না। ওর নাকি বালিকা বান্ধবীর সাথে চিরস্হায়ি ব্যবস্হা পাকা করা আছে। ইসতিয়াকের কথা বিবেচনা করার আগেই জানলাম হের ন্যাজ কাটা হয়ে গেছে। সুবিনয় মোস্তাফীর জন্য মেয়ে ঠিক করে খোঁজ নিয়ে জানলাম, দেশে গিয়ে ইতিমধ্যেই ওর ওই কাজটি সারা হয়ে গেছে।
এখন তুমিই বলো, এই সব হবু বাবাদের নিয়ে ক্যমনে কী?

--------------------------------------------------------------------------------

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আপনি বেহেশতে যাবেন, অবশ্যই যাবেন, একশবার যাবেন ভাবী। আমি আছি কী করতে? আপনার বেহেশতে যাওয়ার দিনেই যদি কাজে আসতে না পারলাম।

মোটে সাত'টা বিয়ে তো! আরে ব্যাপার না। অতো জায়গায় খোঁজাখুঁজির কী দরকার? সাতজন পাত্রী এনে আমার সাথেই বিয়ে পড়ায়ে দেন, আলহামদুলিল্লাহ্। আমি কি আর গুরুজনদের কথা অমান্য করবো নাকি?

গুরুজন বেহেশতে যাবেন, তাঁর জন্য আমি সামান্যতম স্যাক্রিফাইস করে মোটে সাতটা বিয়ে করতে পারবো না? তাই কি হয়?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

স্বাধীন এর ছবি

ভাল চোথা হচ্ছে ভবিষ্যতের বাবাদের জন্য। সিদ্দিকা কবীরের রান্নার বইয়ের মত আপনার শিশুপালনও তখন সবাই এক কপি করে বয়ে নিয়ে বেড়াবে, যে দেশেই যাক।

সিরিজ চলতে থাকুক এক শত পর্ব পর্যন্ত।

তাসনীম এর ছবি

হা হা হা...অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রাহিন হায়দার এর ছবি

চলুক
________________________________
মা তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো...

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ রাহিন।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

খুব, খুবই ভালো হয়েছে। যতোটা ভেবেছিলাম, তার চেয়েও বেশী। হবু বাবাদের জন্য অবশ্যই পাঠ্য।
তোমার বউ এর এতো লম্বা লেবারের কষ্ট কেন করতে হয়েছিলো? সি সেকশন তো প্রথমেই করতে পারতো। আহা রে বেচারী! কী কষ্টটাই না সহ্য করতে হয়েছিলো?

--------------------------------------------------------------------------------

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাবি।

ওর রেগুলার ডাক্তার ওইদিন সকাল থেকে ছুটিতে আউট অফ টাউন ছিলেন। বউয়ের আকার আর বাচ্চার আকার দেখে আমিও ভেবেছিলাম সি-সেকশন করতে হবে। আমি অন-কল ডাক্তারকে বলেও ছিলাম সেটা, উনি কর্নপাত করেন নি। সুতরাং দিনভর চেষ্টা চলেছে। ডেলিভারির দিন নিজের গাইনি উপস্থিত থাকা কত জরুরি সেটাও বুঝেছি।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

কৌস্তুভ এর ছবি

এসব বৃত্তের অনেক বাইরে, তাই দূর থেকে শুধু পড়ি আর উপভোগ করি। আপনার সিরিজ অক্ষয় হউক হাসি

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ কৌস্তুভ। আশাকরি বেশি দিন বৃত্তের বাইরে থাকবেন না হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তিথীডোর এর ছবি

চমৎকার লেখা, বরাবরের মতোই ...হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ তিথীডোর।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

নাশতারান এর ছবি

ভয় পেলাম।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

তাসনীম এর ছবি

ভয়ের কিছু নেই। এখনতো সব জানা হয়ে গেল। একমাত্র জ্ঞানই পারে ভয় প্রতিহত করতে হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

স্নিগ্ধা এর ছবি

এই পোস্ট পড়ে আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিলো - "আরে, এতে তো দেখি ভুলে ভুলে ধূল পরিমাণ!" পরে দেখি ষষ্ঠীচরণ ঠিক সেই সেই ভুলগুলো ধরিয়ে দিয়েছেন!! দেবেই, কার নাতি দেখতে হবে না!

আর, প্রমি জন্মানোর পর আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিলো প্রবল, প্রচণ্ড বিস্ময় হাসি

তাসনীম এর ছবি

হুম, ভুল শুদ্ধ করে আর বিপদ বাড়াতে চাই না, যেমন আছে তাই থাকুক।

জন্ম প্রক্রিয়াটা একটা বিস্ময়কর আনন্দময় অভিজ্ঞতাই বটে, তবে সেটা শেষ হওয়ার পরে হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমার মন্তব্য নিয়ে একটু ভয়ে ভয়ে ছিলাম। এখন যেহেতু ব্যাপারগুলো ঠাক্‌মা এনডোর্স করেছেন সুতরাং এই ব্যাপারে আর কোন সন্দেহ নাই। QED।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তাসনীম এর ছবি

হুম হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

তাসনীম ভাই, এই পর্বটা অন্যগুলির থেকে অনেক বেশি অন্যরকম। লেখাতো বরাবরের মতই ইন্টারেস্টিং লাগল পড়তে। তবে খেয়াল করে দেখলাম বাবারা ব্যাবহারিক ও প্রয়োজনীয় মন্তব্য করেছেন। ছেলেরা সাগ্রহ (!) মন্তব্য করেছেন। মেয়েরা এবং মায়েরা অনেক কম মন্তব্য করেছেন। বৃত্তের অনেক বাইরে থেকে বলছি, মা'দের অভিজ্ঞতা কেমন কে জানে! মন খারাপ তবে মা'কে আরেকবার কম জ্বালানোর কথাটা মনে পড়িয়ে দেবার জন্যে ধন্যবাদ।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ যাযাবর ব্যাকপ্যাকার। এই লেখাটা অনেকদিন ধরেই মাথায় ঘুরছিল, হঠাৎ করেই লিখে হুট করে দিয়ে দিয়েছি। আমি চেষ্টা করি তথ্যের ভারে লেখা ভারাক্রান্ত না করতে, কিন্তু কিছু তথ্য ও জন্ম প্রক্রিয়ায় একজন মেয়ের শারীরিক ও মানসিক কষ্টটা পুরুষ মানুষের জানা উচিত।

আমি বড় হয়েছি পুরুষবহুল পরিবেশে, ছেলেদের স্কুল ও কলেজে পড়েছি, নিজে শিশুপালন করার আগে পর্যন্ত দূরেই থাকতাম বাচ্চাদের কাছ থেকে। এই জগতটা অজানাই ছিল আমার থেকে, বাচ্চার জন্ম ও বড় হওয়ার খুঁটিনাটি গুলো আমি এখন উদঘাটন করছি, এবং যতই করছি ততই মনে হচ্ছে সংসারে মেয়েদের ভূমিকার মূল্যায়নটা আরো বেশি হওয়া উচিত। আমি মনে করি দেশের প্রতিটা ছেলেকে যদি তার স্ত্রীর সাথে লেবার রুমে ঢুকানো যায় তবে মেয়েদের প্রতি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন একটা প্রজন্ম পাব আমরা।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আমার ডাক্তার বন্ধুদের কাছে গ্রাম-গঞ্জ থেকে ক্রিটিকাল কন্ডিশনের আর অনেক সময়েই একদম শেষ মুহূর্তে সরকারী হাসপাতালে নিয়ে আসা মা'দের কিছু গল্প শুনেছি যা খুবই দুঃচিন্তার। কিন্তু শহরের তথাকথিত শিক্ষিত মানুষেরাই এমন কিছু আচরণ করেন যে এদের কথা আর কী বলা যাবে? শুধু লেবার রুমে ঢোকা নয়, আরো কিছু চিন্তাভাবনার মূল্যবোধের পরিবর্তন দরকার মনে হয়।
আসলে মা'রাও যদি নিঃসংকোচে তাঁদের কথাগুলি লিখতেন, তাঁদের ভার্সনগুলি, ঐ ট্রাইমেস্টারগুলিতে কী কী অবস্থা আসলে ওঁরা অনুভব করেছেন, তাহলে বেশ একটা অন্য দৃষ্টিকোণ জানা যেত।

আপনার লেখাটা ভাল লেগেছে, আর মন্তব্যে উঠে আসা চিন্তাভাবনাগুলিও।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

স্নিগ্ধা এর ছবি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার, আপনি মেয়েদের দিকের ভার্সনটা জানতে চাচ্ছেন, বিশেষ করে এতো কম মেয়ে বা মা এই লেখায় মন্তব্য করেছে দেখে বিস্মিত হচ্ছেন। আসলে এই মুহূর্তে আমি আর মনিকা রশিদ ছাড়া সচলাদের মধ্যে বাচ্চা আছে এমন আর কাউকে মনে করতে পারছি না, মানে মেয়েদের সংখ্যা সচলায়তনে বেএএশ কম, সেই স্বল্পসংখ্যকদের মধ্যে আবার মা'দের সংখ্যা আরওই কম হাসি

ঠিকাছে, আমার অভিজ্ঞতাই একটু বলি। আমার প্রথম ট্রাইমেস্টার ছিলো ভয়ংকর। এই সময় আমার হরমোনাল ডিপ্রেসনও হয়। আমি এমনিতে প্রচুর কথা বলি (খ্যাকখ্যাক করে হলেও), কিন্তু ঐসময় আমাকে কেউ মুখোমুখি এসে 'হাই' বললেও আমি উত্তর দিতাম না, কিছু করতেই ইচ্ছে করতো না। সেটা নিজেই কেটে যায় কিছুদিন পর। সেকেন্ড ট্রাইমেস্টার এর শেষ থেকে অবস্থা ভালোর দিকে গেলেও প্রায় পুরোটা সময় খুব খারাপ গেছে, বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ এপিসোডসহ। সেগুলো বিশদে বলার দরকার নেই কারণ বেশিরভাগেরই ওরকম হয় না। তখন আমি চাকরি করতাম। আমার মর্নিং সিকনেসের এবং শরীর খারাপের বহর দেখে আমার এক সিনিয়র পুরুষ কলিগ আমার জন্য অফিসে একটা ফোল্ডিং খাট এনে দিয়েছিলেন। এটা অবশ্য দেশে আমার জন্য আমার কোন ছেলে কলিগ করতেন কিনা আমি নিশ্চিত নই (করতেন না বলেই বরং প্রায় নিশ্চিত), মেয়ে কলিগ করলেও করতে পারতেন - যেহেতু এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যারা গেছেন তারা জানেন এটা কী জিনিষ! এদেশে প্রেগন্যান্সি নিয়ে সচেতনতা (অনেক সময় আহ্লাদীপনাও) অনেক বেশি, যার ফলটা সন্তাসম্ভবা মা'রা ভোগ করেন। ভাগ্যিস!

ডেলিভারি এক হিসেবে স্মুথ ছিলো, মানে পুরো প্রক্রিয়াটা খুব বেশিক্ষণ চলে নি। কিন্তু ...... কিন্তুটা হচ্ছে, আমি যখন ভোররাতে হাসপাতালে পৌঁছাই, এনাস্থেসিওলজিস্ট ছিলেন ও টিতে। ওনার আসতে দেরি হচ্ছিলো। আমাকেও এপিডিওরাল দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু, উনি আসতে আসতে আমাকে আর এপিডিওরাল দেয়া সম্ভব ছিলো না - ডায়ালেশনের একটা পর্যায়ের পর দেয়া যায় না। অতএব ...... !!!! অতএব, আমাকে কোনরকম কোন এপিডিওরাল বা অন্য কোন পেইনকিলার ছাড়াই আমার মেয়ের জন্ম দিতে হয়। আমার মেয়ের নাম প্রমিতি। আমার মনে আছে ভয়াবহ শারীরিক কষ্টটা শেষ হওয়ার পর শুধু স্বস্তিই নয়, প্রমির দিকে তাকিয়ে আমার অবাক লাগছিলো খুব! মনে হচ্ছিলো কিছুক্ষণ আগেও তো এ এখানে ছিলো না, আর এখন কিনা আস্ত একটা মানুষ! কী অদ্ভুত! স্নেহ বা বাৎসল্য ওসব কিছু অনুভব করার মতো অবস্থা ছিলো না। তবে, প্রকৃতি এসব ব্যাপার স্যাপার আগেই ঠিক করে রেখেছে, অনুভূতি আসতে খুব দেরিও হয় না!

আমি অনেকদিন আক্ষেপ করে বলতাম - আমার তো বাংলাদেশের গ্রামে মেয়েরা যেভাবে কোন এপিডিওরাল বা কিছু ছাড়াই লেবারের মধ্য দিয়ে যায় (এখন শুনেছি দেশে শহরেও দেয়, অন্তত আই ভিতে পেইনকিলার তো দেয়ই), ক্যালিফোর্নিয়াতে বসে সেই একইরকম অভিজ্ঞতা হয়েছে।

এরপর একদিন আমার কাজের দরকারে একটা প্রবন্ধ পড়ি। বাংলাদেশের গ্রামে সন্তান জন্মদান সংক্রান্ত একটা লেখা। ঐ লেখায় দুটো কেইস এর কথা ছিলো। আমার পক্ষে ওই দুটো কাহিনী লেখাও সম্ভব না, মুখে কাউকে বলা তো দূরের কথা। তবে, ওটা পড়ার পর নিজেকে বাংলাদেশের গ্রামের কোন মেয়ের সাথে তুলনা করার মতো ন্যাকামি বা ধৃষ্টতা - কোনটাই আর কোনদিন করিনি।

তাসনীম এর ছবি

আমি ইমো আইকনে খুব কাঁচা, নইলে এই মন্তব্যে "গুরু গুরু" আইকন দিতাম হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

স্নিগ্ধাপু, আগে খেয়াল করি নাই আপনার মন্তব্য। কেবলই দেখে আবার লগ-ইন করলাম। আমি ঠিক আপনি, মেহবুবা আপার মন্তব্য দেখেই আশা করেছিলাম কেউ অন্তত তাঁদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন। বাবাদের অভিজ্ঞতা প্রায়ই পড়ি ইদানিং, বা ভাইদেরক দেখি। তাঁদের বেটার হাফ-দের এই ট্রাইমেস্টারগুলিতে অদ্ভূত আচরণের মজার গল্প, আর পরবর্তীতে নিজেদের বাবা হবার পরের পরিবর্তীত অবাক আনন্দের অনুভূতি আজকের আধুনিক বাবারা গুছিয়ে করেন, ভালও লাগে। অথচ মা যারা হলেন তাঁদেরকে যে অসীম ধৈর্য্য আর কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হল, যার জন্যে ঐ ট্রাইমেস্টারগুলিতে ঐসব আপাত হাস্যকর অ্যাটিচিউড আর মুড সুইং-এর উপভোগ্য হাস্যরসের যোগানদার ওঁরা হলেন, সেগুলি এদেশের মা'রা কদাচিৎ লেখেন দেখি। বলেনও না! [বাবারা যেন আমার মন্তব্যের এই অংশগুলি ব্যক্তি আক্রমণ হিসেবে না নেন সেই আশা রাখছি! আর তাসনীম ভাই, সত্যি বলছি আপনার এই লেখাটা পড়তে খুবই ভাল লেগেছে আমার হাসি ] ।
আবার মা'দের এই অভিজ্ঞতাগুলি যে সব সময়েই যে খালি বিরক্তি বা কষ্টের তাও নয়, ক'দিন আগেই আমার কাছাকাছি বয়সী বাবার মামাত বোন, আমার এক ফুপুকে দেখলাম তার প্রথম সন্তানের জন্ম অনুভূতি কীভাবে সে নয় মাস ধরেই প্রতিটা দিনের মুডের সাথেই এমনকি ঘন্টা-দেড়েকের ব্যাবধানেও খুশি-রাগ-কষ্ট-আনন্দ মিশিয়ে উপভোগ করেছে ফেসবুকেই, সবার সামনে, খোলাখুলিই। কিন্তু সে বড় হয়েছে দেশের বাইরে, বিয়ে করেছে একজন আমেরিকানকে, এই জন্যেই কি তার চিন্তা-ভাবনার বহিঃপ্রকাশের এতটা ফারাক? হয়ত আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গীই আমাদেরকে দেশের মেয়েদেরকে প্রাকৃতিকভাবেই বাধ্য করে আবেগ প্রকাশের আগে পঞ্চাশবার ভাবতে (কাঁদলে আপত্তি নেই, মেয়েরাতো প্যানপ্যান করে কাঁদবেই! ঐ কাজটাই না তারা ভাল পারে?!), কিন্তু নিজের সন্তানের জন্মের অনুভূতি নিয়ে স্বামীরা যত ফ্রীলি আলাপ করতে পারেন, পরিচিত-স্বল্পপরিচিত দশজনের সাথে, মা-রা দেখি একদমই করেন না, অন্তত মহিলা সমাবেশ ছাড়া! লেখাতো অনেক দূরের কথা! আসলে কী বলি? সেই যখন সাহিত্যের শুরু তখন থেকেই শুধু ছেলেরাই দেখি লিখে আসছে মেয়েদেরকে নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা কাব্য, গদ্য, প্রবন্ধে। মেয়েরাতো কয়েক শতাব্দী পিছিয়ে পড়ছে তাঁদের দৃষ্টিকোণ থেকে ছেলেদের কথা লিখতে, আর কী বলছি ছাই, তাঁদের নিজেদের কথাই নিজেদের ভাষায় লেখা হয়ে ওঠে নাই এখনো ঠিকমত!

সচলে আসলেই মেয়ে খুব কম, আর মা-আরো কম, দেখছিইতো! সুযোগ আসলে একদিন আমিই লিখব তাই, নো ওরিজ। হাসি এখানে হোক, নিজের ব্লগে হোক, পত্রিকায় হোক, ভাল লাগাগুলিও, খারাপ লাগাগুলিও। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমার মন্তব্য খেয়াল করে উত্তর দেয়ায়, আমি ভাবি নাই আমার মন্তব্য সেভাবে চোখে পড়বে কারো বা আদৌ উত্তর দেবেন কোন মা! আপনার আর প্রমিতির জন্যে রইল এক রাশ প্রাণ ঢালা শুভেচ্ছা। হাসি

আর আপনার কলিগের ওই ফোল্ডিং খাট এনে দেবার কথায় আমার মনে পড়ল অন্য কথা। কানাডায় জানি এক বছরের ম্যাটারনিটি লীভ পাওয়া যায়, আমাদের এখানে সেই ব্যাবস্থা করা আরো জরুরী নয়?? আমাদেরতো প্রধাণমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী দু'জনাই মহিলা?! আবার শিক্ষা, কর্ম, দলীয় পদ সবখানেই নাকি মেয়েদেরকে প্রাধান্য দেয়ার নিয়ম এখন?! তাতেও এত বৈষম্য, তাইলে আর ক্যাম্নে কী?

দেশে মেয়েদের প্রজনন স্বাস্থ‌্য নিয়ে এতই জনসচেতনতার অভাব, আর আমি নিজেও এত ভয়াবহ কিছু গল্প শুনেছি আমার মেয়ে ডাক্তার বন্ধুদের কাছে যে মাঝে মাঝে খুব আফসোস হয়, এক পলকে সব কিছু পরিবর্তন করে দেবার ক্ষমতা কেন আমার নেই ভেবে। তা সেতো ছোট বড়, সামাজিক, রাজনৈতিক আরো কত কিছু দেখে-শুনেই হয়। জাতীয় পলিসি মেকিং-এ বড় পরিবর্তন আর তার সফল প্রয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আসলে, আমাদেরকে নিজেদেরকেই ব্যক্তিগতভাবে দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন আনতে হবে, তার উপরেই নির্ভর করতে হবে, যেমনটা তাসনীম ভাই বলেছেন যে লেবার রুমে ঢোকা দরকার বাবাদেরও। হয়ত আপনার আমার এই মন্তব্যগুলিও খানিকটা ভাবাবে অন্য যারা পড়ছেন তাঁদেরকে? এই কথাটাই কালকে রাতে মাথায় এসেছিল, আর আপনার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তাই এতবড় করে প্রতিমন্তব্য লেখা! আবারো ধন্যবাদ আপনাকে, আর তাসনীম ভাইকেও পোস্ট-টার জন্যে, নইলে উঠতোই না এ প্রসঙ্গে আলাপটা! হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

তাসনীম এর ছবি

আমাদের কালচারটাই হচ্ছে নীরবতার, কেউ কিছু বলতে চান না। সমস্যা হচ্ছে নীরবতা শোনা যায় না হাসি

আশাকরি মেয়েরাও এগিয়ে আসবেন ও শেয়ার করবেন তাঁদের অভিজ্ঞতা।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

উত্তর ফাল্গুনী এর ছবি

[আমি মনে করি দেশের প্রতিটা ছেলেকে যদি তার স্ত্রীর সাথে লেবার রুমে ঢুকানো যায় তবে মেয়েদের প্রতি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন একটা প্রজন্ম পাব আমরা।/quote]

সহমত।
আমার নিজস্ব ধারণা, এদেশের সব ছেলেরা যদি সন্তান জন্মদানের সময় স্ত্রীর কষ্টটা দেখতো, তাইলে অন্তত আমাদের দেশটা মানুষে মানুষে গিজগিজ করতো না।আর স্ত্রীর প্রতি এমন অবমাননাকর মানসিকতাও পোষণ করতো না।
আমি অবশ্য বিয়ের আগে লিখিত অঙ্গীকার আদায় করার ধান্দায় আছি, যেখানে লেবার রুমে ঢোকার জন্য প্রমিজ করা থাকবে। দেঁতো হাসি

তারানা_শব্দ এর ছবি

অসাধারণ হাসি

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

মেঘা এর ছবি

একটা গল্প লিখছি একটা বাচ্চা নিয়ে মায়ের আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে। এখনো ছোট বিয়ে করার পক্ষে তাই বাচ্চা হওয়া অনেক দূরের বিষয়। আপনার এই লেখাটা আর দিহান আপুর অ্যা ম্যাজিকাল জার্ণি খুব কাজে লাগছে।

ধন্যবাদ ভাইয়া।

বন্দনা এর ছবি

জ্ঞান লাভের সাথে সাথে ফ্রিতে ভয় ও পাইলাম। আপনি কেমন অসাধারন করে লিখেন ভাইয়া। গুরু গুরু

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।