বইপড়ার অভ্যেসটা আমার বেশ অল্প বয়েসেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশে টেলিভিশনের তখন একটাই চ্যানেল, তার সাথে যুদ্ধ করে বিনোদন মাধ্যম হিসেবে বইয়ের টিঁকে থাকা বেশ ভালোই সম্ভব ছিল। বন্ধুদের অনেকেই প্রচুর বই পড়ত, আমাদের বাসাতেও অনেক ধরণের বই ও পত্রিকা আসত। আমি আনন্দমেলা পড়তাম নিয়মিত, বাংলাদেশে ছোটদের পত্রিকা বলতে ছিল “কিশোর বাংলা” আর “ধানশালিকের দেশে”। মুহাম্মদ জাফর ইকবালের “দীপু নম্বর টু” মনে হয় কিশোর বাংলাতেই বেরিয়েছিল। কিশোর সাহিত্যের জন্য পশ্চিমবঙ্গের উপরই বেশি নির্ভর ছিলাম, সুনীল, শীর্ষেন্দু সহ প্রায় সব নামজাদা লেখকই নিয়মিত লিখে চলেছেন কিশোর সাহিত্য। ফেলুদা সহ সত্যজিৎ রায়ের অন্যান্য বইও বের হচ্ছে হরহামেশা। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যয়ের টেনিদা অনেক পুরানো হলেও সেটার আবেদন ফুরায় নি, সত্যি বলতে কী টেনিদার গল্প পড়তে আমার এখনো দারুণ লাগে।
আমাদের বাসায় দেব সাহিত্য কুটিরের পূজা সংখ্যার স্তুপ ছিল, সবচেয়ে পুরানো সংখ্যাটার নাম ছিল রাঙারাখি যেটা বের হয়েছিল ৪০ এর দশকে, আর সবচেয়ে নতুনটার নাম ছিল ইন্দ্রনীল, সম্ভবত ৭০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে বের হওয়া। দেব সাহিত্য কুটির মনে হয় আনন্দ পাবলিশার্সেরও আগের আমলের, ওদের পূজা সংখ্যাগুলো ঝকঝকে অফসেটে ছাপা হত, হার্ড কভারের মলাট আর দারুণ বাঁধাই ছিল বইগুলোর। দেব সাহিত্য কুটিরের অস্তিত্বও মনে হয় নেই আর আজকে।
আম্মার কাছে শুনেছিলাম যে ত্রিশের ও চল্লিশের দশকে শিশু কিশোরদের জন্য অনেকগুলো পত্রিকাই বের হত, রংমশাল, মৌচাক, শিশুসাথী, শিশু সওগাত। আমি সেগুলো চোখেও দেখিনি। আনন্দ পাবলিশার্স “সেরা সন্দেশ” বের করাতে সেগুলোও কিছু পড়া হয়েছে, যদিও সন্দেশ মনে হয় ষাটের দশকের পত্রিকা। দুঃখজনক হলো সে তুলনায় আমার শৈশবে অনেক কম পত্রিকা ছিল বাচ্চাদের জন্য। এখনকার অবস্থা হয়ত আরও করুণ। তবে সেই সময় কোন দুঃখ ছিল না, বাসা থেকে হাঁটা পথ দূরে খালার বাসার ব্যক্তিগত লাইব্রেরিতে পনের হাজারের বেশি বই ছিল। আমার ডুব দেওয়ার মত প্রচুর রসদ ছিল সেখানে। বই পড়ে পড়ে আমার মনটা বেশ কল্পনাপ্রবণ হয়ে গিয়েছিল, দৈনন্দিন জীবনের বাইরের একটা জগত ছিল একদম আমার নিজস্ব।
বইয়ের পাশাপাশি ছেলেবেলায় অভ্যেস ছিল উদ্দেশ্যহীন হাঁটারও। একেকদিন হাঁটা দিতাম একেক দিকে, কোন গন্তব্যে নয়। ঢাকা শহরটাও তখন এলোমেলো হাঁটার জন্য মন্দ ছিল না। বিকেল বেরিয়ে সন্ধ্যের একটু আগে বাসায় পৌঁছাতে পারলেই কোন ঝামেলা নেই। আমি হেঁটে তেঁজগা স্টেশনে যেতাম, প্ল্যাটফর্ম পেরিয়ে রেললাইন ধরে হাঁটতে থাকতাম। মাঝে মাঝে রেললাইনের নুড়ি পাথরে ছোট একটা লাথি দিয়ে দেখতাম কতদূর নিতে পারি। তখন ঢাকায় ফাইভ স্টার হোটেল যেমন তৈরি হয়েছে, তেমনি বাড়ছে ছিন্নমূল মানুষের ভিড়। রেললাইনের পাশে গড়ে উঠছে বস্তি, ঢাকা আস্তে আস্তে মেগাসিটি হতে চাইছে। আমার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই, মাথার মাঝে সদ্য পড়া ভ্রমণ কাহিনী, চারপাশের জমে ওঠা দুঃখ-কষ্ট আর আবর্জনা আমাকে স্পর্শ করে না। আমি ভাবছি আনন্দমেলাতে পড়া মানস সরোবরে ভ্রমণ কাহিনী, এই উত্তর দিকেই তো সেটা। এই পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে এই শহরের কোলাহলগুলো পেরিয়ে, জয়দেবপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর পার হয়ে ইন্ডিয়া আর ভূটান পার হলে তিব্বতে পৌঁছানো যেতে পারে। আমি হাঁটছি আর মাথা ভেতর ছবি আঁকছি দূরের কোন দেশে পাহাড়ের মাঝে শুয়ে আছে এক বিশাল হ্রদ। ভূগোলের অসম্ভবতাকে পরাজিত করে আমার কল্পনার সেই সরোবরের পাশেই আছে প্যাগোডার মত মন্দির, আর তার পেছনেই চির হরিৎ গাছের সারি, গেরুয়া পরা সন্ন্যাসী আর নাম না জানা সব ফুলের সমারোহ। সেই হ্রদের জলে কি রাজহাঁস সাঁতার কাটে? মনে হয় না, ঠান্ডায় তো সব জমে বরফ হয়ে থাকার কথা।
হাঁটতে হাঁটতে নাখালপাড়ার রেলক্রসিংয়ে পৌঁছে মনে হয়, এইবার ফেরা উচিত। হোমওয়ার্কের কাজ অনেকটাই বাকি। প্রায় প্রতিদিনই স্কুলে এরজন্য নানান হেনেস্তা হতে হয়। আমি তখনো ঢাকা শহরের বাইরেই বেশি যাই নি, মধ্যবিত্ত পরিবারে ভ্রমনটা প্রায় বিলাসিতাই। কিন্তু ফেরার পথে হয়ত অন্য কোন দেশে ভ্রমণ হয়ে যায়। এভাবে আমি হেঁটে হেঁটে আমি আল্পসের আশেপাশে গিয়েছি, মিশরের পিরামিড দেখেছি, টেমস নদী দেখেছি, আমেরিকার রকি পর্বত পর্যন্ত দেখেছি। তেঁজগা থেকে রমনা পার্ক, সংসদ ভবন, নাবিস্কো আর নাখাল পাড়ার সীমাবদ্ধতায়ও যে পুরো পৃথিবী ঘোরা যায়, সেটা সেই সদূর শৈশবেই জানা হয়ে গেছে।
ঠিক করা ছিল বড় হয়েই ঘুরতে বের হব, যতটা পারব ঘুরে দেখবে এই পৃথিবী। জীবনের লক্ষ্যের কাছাকাছি না হলেও আমি যখনই পেরেছি তখনই মোটামুটি চরে বেড়িয়েছি। কিন্তু কোন ভ্রমণই শৈশবের সেই ভ্রমণকে অতিক্রম করতে পারেনি। কল্পনার রথে চড়ে যে যাত্রা তাকে জেট প্লেন, রেন্ট-এ-কার, ট্রেন বা বাস কীভাবে হার মানায়? এই যে প্রতিদিন সকালে গান শুনতে শুনতে অফিসে আসার সময় ঢু মেরে আসি নয়াটোলা বা পলাশী, সেটা আমার মনের সেই রকেটের মত দ্রুতগতির গাড়িটা না থাকলে কীভাবে পারতাম? শৈশবের পড়া বইগুলোকে ধন্যবাদ, এই গাড়ির কারিগর মনে হয় ওরাই। এই রথে চড়ে আজ আর দুনিয়া চষে বেড়াই না, বরং টুক করে ঢুকে যাই অনেক দূরে পড়ে থাকা এক অভিমানী শহরে। ওখানে মায়ের হাতে সন্তান খুন হয়না, সপরিবারে কেউ আত্মহনন করেনা, রাস্তায় পিটিয়ে মানুষ মারা হয় না, মলম পার্টি কারো জীবন কেড়ে নেয় না, ওখানে এখনো ভালোবাসা হারিয়ে যায় নি, গাছের ডালে পাখিরা ঠিকই ডাকাডাকি করে, ভোরের কুয়াশা ঢেলে রোদের আলো পৌঁছে যায় সবার বাসায় বাসায়। ফেরিওয়ালার হাঁকডাক, রেলগাড়ির শব্দ, রিকশার টুংটাং, ঠ্যালাগাড়ির ক্যাঁচক্যাঁচ যেমন শুনতে পাই ঠিক তেমনি দেখতে পাই হলদে রংয়ের লম্বা বিকেলে খেলার মাঠে বালকদের বল পিটানো।
এখন আমার যাত্রাগুলো যেন শৈশবের দিকেই, বেলা কিংবা অবেলায় কী আশ্চর্য এই ভ্রমণ!!!
###
স্মৃতির শহর-৯ এখানে, যদিও এরা ধারাবাহিক নয়, লেখাগুলো স্মৃতির মতই ছন্নছাড়া।
বানান কৃতজ্ঞতাঃ তিথীডোর
মন্তব্য
লেখাটা বেশ কিছুদিন আগে লিখেছিলাম। আরো কিছু যোগ করব দেখে অনেকদিন পড়ে ছিল। এখন দেখলাম কী যোগ করব সেটাই মনে নেই। তাই সই...দিয়ে দিলাম...
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনাদের, যারা ঢাকা শহরে হেঁটে বেরাতে পারতেন, তাদের খুব হিংসা হয়।
খুব হিংসা হয়। আমরা তো আপনাদের বয়সে গেলে এরকম সুন্দর স্ম্তিচারণ লিখতে পারবো নাঃ(
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
হাঁটার স্মৃতি না হোক, অন্য স্মৃতি লিখবেন
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এখনকার অবস্থা আরও খারাপ, ভিডিও গেমস আর প্লেস্টেশনের তোড়ে পত্রিকার প্রতি আগ্রহ গায়েব হয়ে গেছে। তাইতো আজ প্রিয় খেলা জিজ্ঞেস করলে উত্তর পাই, রেসলিং।
এই একটা জিনিস অষ্টম শ্রেণী থেকে করে আসছি, উদ্দেশ্যে আবার নিরুদ্দেশে।
প্রথমবার চাংখারপুল পার হয়ে চলে গিয়েছিলাম বঙ্গে।
কলেজে ২য় বর্ষে থাকতে প্রতিদিন কলেজ থেকে হেঁটে ধানমণ্ডিতে আসতাম, আমি আর আমার বন্ধু সোহাগ।
অনেক কিছু মনে পড়ে গেল। সময় যে কিভাবে চলে যায়!!!
মাঝে মাঝে মনে হয় বড় না হলেই ভালো হত। অনেক কিছুই আবার করতে ইচ্ছা করে, নতুন করে।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আমারো তাই করে মাঝে মাঝে।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমাদের প্রজন্মের পরে কি কেউ এমন স্মৃতিচারণ করতে পারবে? মাঝে মাঝে আমিও পারি না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ঢাকা এখন প্রচন্ডভাবে এন্টি-শিশু শহর, ছোটদের করার মত জিনিস বেশি নেই, বই পড়ার অভ্যেসও কমে গেছে। এই প্রশ্ন আমিও করি মাঝে মাঝে।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আহ্! কালকে বলতে না বলতেই আজকে প্রিয় সিরিজ চলে এসেছে।
আসলেই ছোটদের পত্রিকার অবস্থা এখন আরো করুণ, আপনার আগের একটা পর্বে মনে হয় বলেছিলাম যে আনন্দমেলা কিন্তু আমাদের শহরে পেতে অনেক কষ্ট হত। আর আমরা ছোট থাকতে এল সেবার 'কিশোর পত্রিকা'। শুরুর প্রথম সংখ্যাটা থেকে শেষ পর্যন্ত সবগুলোই থাকার কথা আমার কাছে। কত যে আগ্রহ নিয়ে এর জন্যে বসে থাকতাম তা ভাবলে এখনো শিহরণ হয়! হায়রে, দির্ঘদিন নাকি ভর্তুকি দিয়ে টেনেটুনে চেষ্টা করেও নাকি চালান গেল না এইটা! ক্যাম্নে কী?! ঐদিকে কিশোর পত্রিকার বছর দুয়েক বয়সে মনে হয় এসেছিল রিটন ভাইয়ের 'ছোটদের কাগজ' হাতে আকাশের চাঁদ পাবার মতোই ঘটনা! ততদিনে আমরা একটু বড় হয়েছি। কিন্তু তাও বন্ধ হয়ে গেল ছোটদেরকে অকূলে ভাসিয়ে দিয়ে।
ধান-শালিকের দেশ কি এখনো বের হয়? কেউ জানেন? এইটা কেন জানি সেভাবে পড়ার সুযোগ হয় নাই। আরেকটা পত্রিকা বেরুত, 'কিশোর তারকালোক', এইটা অনেক সময় গ্রাহক না হলেও খবরের কাগজের সাথে দিয়ে যেত, কিন্তু কখনোই আমার তেমন ভাল লাগে নাই পড়ে। সাহিত্য, ভ্রমণ, কার্টুন কম থাকত। সন্দেশ যেহেতু আমরা পেতাম না, একবার জন্মদিনের উপহারে 'সেরা সন্দেশ' পাবার অনুভূতি ছিল বর্ণনাতীত ভাল লাগার!
শিশু পত্রিকা মনে হয় এখনো শিশু একাডেমী থেকে নিষ্ঠার সাথেই বের হয়। তবে এইটা শিশু একাডেমী ছেড়ে আসার সাথে সাথেই ছেড়ে আসতে হয়েছে, কারণ শিশু একাডেমী ছাড়া মনে হয় অন্যত্র বিক্রয় হয় না!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
তোমার সাথে কথা বলেই মনে হলো যে এই পর্ব দিয়ে দেওয়া যায়। একটু ফাঁকিবাজি আছে যদিও, সেটা ধরাও পড়েছে
বাংলাদেশে এখন বাচ্চাদের পত্রিকার অবস্থা কী?
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
বাংলাদেশে ছোটদের পত্রিকার অবস্থা কালকে বইয়ের দোকানে খোঁজ নিয়ে যা বুঝলাম তা হল - জিরো! তেমন কোন পত্রিকা বেরও হচ্ছে না, নাইও। আনন্দমেলার পূজা সংখ্যা নাকি আসবে, কিন্তু গত বছরেরটা অনেক শখ করে কিনে আমি বেশ হতাশ হয়েছিলাম। আর শিশুপত্রিকা সম্ভবত বের হচ্ছে এখনো, কিন্তু খোঁজ জানি না। দোকানে পাই না এটা।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
কোন পিচ্চিকালে একটা আনন্দমেলায় পড়েছিলাম কারাকোরাম হাইওয়ের কথা- পেশোয়ার থেকে কাশগড়, এখনো মাথায় ঢুকে আছে সেইটা।
তীব্রভাবে নস্টালজিক করে দেবার জন্যে এই লেখাটাকে 'আপত্তিকর অভিযোগে অভিযুক্ত' করা উচিত।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ওডিন।
নস্টালজিয়ার সর্দির মতই ছোঁয়াচে, এই মুহূর্তে দুটোই লেগে আছে, এই দুই রোগের মধ্যে ভালোটাই তোমাকে দিয়েছি
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এই পর্বে মহা ফাঁকি দিলেন, কারণটা লিখে দিলেই পাঠক ছেড়ে দেবে এমনটা ভুলেও ভাববেন না যেন। বাঁচার একটাই উপায়, দ্রুত পরের পর্ব পোস্টানো।
টিকে > টিঁকে
ক্যাচক্যাচ > ক্যাঁচক্যাঁচ
আপনার কল্পনালম্ফ শ্রীমান পৃথ্বীরাজের সন্ন্যাসযাত্রার কথা মনে করিয়ে দিলো: তাদের গাঁ থেকে উত্তরে গেলে রানাঘাট, আর সেখান থেকে উত্তরে গেলেই তিব্বত, এই জাতীয়ই কিছু ছিলো।
দেব সাহিত্য কুটির থেকে শারদীয়া সংখ্যা বেরোতো প্রতি বছর, আর সারা বছর বেরোতো/বেরোয় শুকতারা। অন্যান্য শিশু-কিশোর প্রকাশনার মধ্যে ছিলো/আছে কিশোর জ্ঞান বিজ্ঞান ও কিশোর ভারতী (নিউ বেঙ্গল প্রেস), এদেরও শারদসংখ্যা ছিলো।
আর কী যোগ করব সেটা একটা নোটে লিখে রেখেছিলাম, সেই নোটও গায়েব, মাথাও ফাঁকা এর পরের পর্ব এক বৈঠকে লিখতে হবে, নইলে আপনার রক্তচক্ষু দেখতে পাচ্ছি...তবে আপনার "কলেজ স্ট্রীটের" কী হবে? ঋণখেলাপি হয়ে যাচ্ছেন যে?
দেব সাহিত্য কুটির কি আছে এখনো? ওদের ঠিকানা ছিল ঝামাপুকুর লেনে...আমার খুব ইচ্ছে ছিল ঝামাপুকুর দর্শনের।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হুমম, মূলোদাকে আমি একাই জ্বালাই না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
কলেজ স্ট্রীট নিয়ে পরিকল্পনাটা এতো বিশালাকায় ছিলো যে এখন লেখার কথা ভাবলে আতঙ্ক হয়। তবে এবার পোস্ট করলে পুরোটা লিখে নিয়েই করার ইচ্ছে, নইলে আবার গাড়ি মাঝপথে থেমে যাবে।
দেব সাহিত্য কুটিরের বইপত্র তো বেরোয় দেখি, শুকতারা ইত্যাদি, তবে ঝামাপুকুর লেনে আছে কি না জানি না। ঐ জায়গাটা যে আদতে কোন মুলুকে তাও জানা নেই, শুধু ছাপার অক্ষরে পড়েইছি।
মূঃপা এট্টু ভুল হল যে! আপনাকে শিগ্গির একবার হযবরল পড়তে হবে। নাহলে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান আর বেড়ালের দেখান রাস্তা এক মনে হতে পারে। দুটোই আবিশ্যি তিব্বত যাওয়ার সিধে রাস্তা, গেলেই হয়
------------------------------------------------------------------------------
"ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে"
ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে
হযবরল ভুল হওয়া মোটামুটি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ, এক কথায় মেনে নিচ্ছি। তবে যেমনটা আপনি বলেছেন, আমার সূত্রটাও নেহাত ভুল না।
আগ্রহী পাঠকের জন্য এইখানে লিঙ্ক দিলাম। চিঁড়ে, পেঁয়াজ, উচ্ছে, বাতাসা, ছুরি (বাঘ কিম্বা ডাকাতের জন্যে), থানকুনি, টিঞ্চার আয়োডিন, খঞ্জনি, এই নিয়ে শ্রীমান পৃথ্বীরাজ তিব্বতের পথে যাত্রা করে যে পথ ধরে তার হদিশটা এইরকম:
"এখান থেকে কইডুবি, সেখান থেকে ইশটিশান, তারপর এ-ই চলে যাচ্ছে ইটপোতার (?) জাংশন, তারপর সেখান থেকে রেলে চেপে - দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান কোন রাস্তায় তিব্বত গিয়েছিলো, কিছু খেয়াল রাখিস? ইতিহাসটা মাঝে মাঝে পড়িস, কাজে দেবে।"
ছোটবেলায় সঙ্গী ছিল শিশুদের পত্রিকা টইটম্বুর ,আরেকটু পরে টান ছিল রহস্য পত্রিকা কিশোর তারকালোকের দিকে। বাসায় দেশ রাখা হত বরাবর, যদিও ও বয়েসে সেটা চেখে দেখতাম কদাচিত।
আজকে সবাই বড্ড বেশি স্মৃতিকাতর করে দিচ্ছে
-------------------------------------
আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ অদ্রোহ।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এইখানে অনেক পুরোনো একটা অসাধারণ বইয়ের কথা সবাইকে জানাই: দীনেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের "দুরন্ত ঈগল"। আনন্দ থেকে বেরোলে সে সব বই যথেষ্ট প্রচার পায় (এবং সেটা ভালো কথা), কিন্তু এই বইটা নিউ বেঙ্গল প্রেসের (প্রথম বেরিয়েছিলো কিশোর ভারতীতে)। এই গোত্রের বই বাংলা ভাষায় খুব কম আছে। আমরা যারা চাঁদের পাহাড় নিয়ে মুগ্ধ, এই বইটা তাদের জন্য অবশ্যপাঠ্য। ভারতের উত্তর-পশ্চিমের পার্বত্য এলাকার (কাবুল কান্দাহার আরাকান ইত্যাদি) পটভূমিতে এক রোমাঞ্চকর অ্যাডভেঞ্চার। এখনো ছাপা হয়, এবং আমি কিনে কিনে অনেক কিশোরকে উপহার দিয়েছি অতীতে, যদিও নিজের কপিটাই এখন খুঁজে পাই না। বাংলাদেশে পাওয়া যায় কি না জানা নেই, তে কলকাতায় কলেজ স্ট্রীটে পেয়ে যাবেন।
ধন্যবাদ, জোগাড় করে পড়তে হবে। কলকাতা থেকে বই আনার সার্ভিস আছে, বেশ ভালো।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
চাঁদের পাহাড় এর ভাল পিডিএফ লিংক আছে আপনার কাছে?
সজল
দুঃখিত সজল, লিঙ্কের ব্যাপারে আমি একেবারেই কাজের নই, অতন্দ্র প্রহরী থাকলে এক্ষুণি ঝপ করে দিয়ে দিতে পারতেন।
কী অদ্ভুত একেকটা পর্ব!
মন খারাপ করিয়ে দেওয়া, অনেককিছু মনে পড়িয়ে দেওয়া, অনেক টুকরো দীর্ঘশ্বাসকে আরো খানিকটা বাড়িয়ে দেওয়া...
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
বানানশুদ্ধির অফিসিয়াল ধন্যবাদ।
বয়স যত বাড়তে থাকে দীর্ঘশ্বাস তত দীর্ঘতর হতে থাকে...
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
যথারীতি মারাত্মক
ছোটদের পত্রিকা নিয়ে সবার অভিজ্ঞতাই মনে হয় কাছাকাছি।
আনন্দমেলার পূজা সংখ্যা খুব আগ্রহ নিয়ে প্রতিবারই কিনি, কিন্তু অনেক বছর ধরেই একদম যা-তা, তবু স্মৃতির জড়তায় কিনে ফেলি।
আরো একটু ঘন ঘন লিখুন, আরেকটু বড়।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
ধন্যবাদ সবজান্তা উৎসাহ দিয়ে যাওয়ার জন্য।
ঠিক আছে, পরের পর্ব বড়ই হবে
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ভাল লাগলো।
সজল
ধন্যবাদ সজল।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
বাহ মন ভাল করে দিলেন আবার-ও। সন্দেশ এবং দেব সাহিত্য কুটির আজও আছে, হয়তো একটু মলিন আর দরিদ্র হয়েছে সমগ্র (পঃ)বাংলা শিশুসাহিত্যের মতোই কিন্তু আশার কথা হল এখনো আছে। ঈদ মোবারক, ভাল থাকবেন।
--------------------------------------------------------------------------------
"ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে"
ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে
ধন্যবাদ।
দেব সাহিত্য কুটিরের টিঁকে আছে জেনে ভালো লেগেছে, যদিও ঢাকাতে ওদের বই আর দেখি নি।
আপনাকেও ঈদ মোবারক, ভালো থাকবেন।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমি ছোটবেলায় বাবার সময়কার বইগুলো পড়তাম যেগুলো ভাগ্যবশত আমার সময়েও টিঁকে ছিল। হার্ডকভার মলাটের ভেতর মোটা আর চকচকে কাগজের মজাই আলাদা ছিল। শুধু বইয়ের কোয়ালিটি না, লেখার কোয়ালিটিও আরো ভাল ছিল তখন।
পুজোর সময় ট্রেনে করে মামারবাড়ি যেতাম, প্রায় ঘন্টাদশেক লাগত। বাঁধা ছিল টিপিনকৌটোয় করে লুচি-আলুরদম। এবং সঙ্গে স্বাস্থ্যবান শারদীয়া (এখন দাম বাড়ছেই কিন্তু সাইজ অর্ধেক হয়ে গেছে)। এছাড়াও সারাবছর যখনই যাওয়া হত তখনই প্ল্যাটফর্ম থেকে সে মাসের শুকতারা, চাঁদমামা বা আনন্দমেলা কিনে পড়তে পড়তে যেতাম। আহ, সেসব কী দিন ছিল!
পুরো সিরিজটার মনে হয় এটাই সারমর্ম
বাবার আমলের সেই বইগুলো এখনো টিঁকে আছে কী?
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ কৌস্তভ।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আছে বটে, কিন্তু পোকায় কতটা কী রেখেছে সন্দেহ... তাও এখনও নামিয়ে পড়ি মাঝে মাঝে।
বই পড়ার অভ্যাস মনে হয় আজকাল আসলেই অনেক কমে গেছে। ছোট কাজিনদের দেখলে কিছুটা টের পাই। আমার বই পড়ার অভ্যাসটা গড়ে উঠেছিল বাসার সামনের এক লাইব্রেরি থেকে। বই পড়তে পড়তে চোখের সামনে সমস্ত দৃশ্য গুলো যেন দেখতে পেতাম। এমনিতেই আমি চুপচাপ মানুষ তাই ছোটবেলা থেকেই মানুষজনের সাথে বন্ধুত্ব হতে সময় নিত। তারপর বাবার বদলির চাকরির কারণে প্রতিবার নতুন নতুন বন্ধু তৈরি করা বেশ কষ্টের কাজ ছিল তারথেকে বই ছিল সবচেয়ে পুরাতন এবং বিশস্ত বন্ধু
তবে তাসনীম ভাই আপনাকে একটা পুরষ্কার দেওয়া উচিত। ব্লগে লোকজন সাধারণত কয়েকদিন পরেই সিরিজ খেলাপি হয়ে পরে সেই জায়গায় আপনি দুই দুইটা দারুণ সিরিজ একসাথে চালাচ্ছেন
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
ধন্যবাদ নিবিড়।
বই আসলেই মানুষকে অনেক কল্পনাপ্রবন করে তুলতে পারে, যেটা অডিও-ভিস্যুয়াল মিডিয়ার মাধ্যমে সম্ভব নয়।
ইনফ্যাক্ট আমি তৃতীয় একটা সিরিজ চালু করেছি, নাম মার্কিন মুল্লুকে। স্মৃতির শহর মনে হয় আর খুব বেশি দূর টানবো না। সুতরাং দুটোই থাকবে।
পুরস্কারটা দিলে একদম মাথা পেতে নেব তবে আপনাদের মন্তব্যগুলো পড়তেও দারুণ লাগে, আপাতত এটাই আমার "প্রাইজ"।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমার বই পড়ার শুরু বড়দের বই পড়ে। ক্লাস ফাইভে থাকতে মাসুদ রানা ধরেছি। হুমায়ুন মিলনও একই সময়ে। তার আগে পড়েছি বাপের কালেকশনের বনহুর সিরিজ।
ছোটদের বই পড়েছি আরেকটু বড় হয়ে
আর আমার হাঁটার খুব বাতিক ছিলো। ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় শিশু একাডেমিতে গান শিখতে যেতাম। শুক্রবার সকালের ক্লাসটা শেষ করে সোজা হাঁটতে শুরু করতাম। কোথায় যেতাম কিছুই জানি না। শুধু জানি খুব অসুবিধায় পড়লে বেবিট্যাক্সিতে চড়ে গাবতলী চলে গেলেই হলো। তারপর আমাকে আর পায় কে। তখন থেকেই টিএসসিতে নিয়মিত বিচরণ। ঢাবির একদল প্রবল বড় ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয়, আড্ডা। এরশাদবিরোধী মিছিল, পুলিশ কাঁদানো গ্যাস... সবগুলো সময় চোখের সামনে হাজির হলো এই লেখাটা পড়ে।
হাঁটতে হাঁটতেই একদিন সেন্ট্রাল রোডে হাজির হলাম। দেখলাম খুব নিড়িবিলি একটি বাড়ি। গেট খোলা। তখন তো অনেক সাহস, ঢুকে গেলাম। খুব অবাক... ঝোপঝাড়ে ঘেরা একটি পুকুর, পাখিদের কুজন। ইঁট কাঠ ঘেরা এই শহরে এরকম নিভৃত একটি জায়গা! আমি তার ঘাটে চুপ করে বসে বসে বই পড়তাম। আশ্চর্য কেউ আমাকে কিছু বলতো না। এটা একসময় অভ্যাস হয়ে গেছিলো। খুব ভালো লাগতো আমার। একেবারে একাকী সময়। তারপর একসময় অন্য প্রেমে মত্ত হয়ে সেই পুকুরকে ভুলে গেলাম।
তার বহুবছর পরে, যখন বেশ বড় হয়ে গেছি, তখন একদিন গভীর রাতে যাচ্ছি অভিনেতা শহীদুল আলম সাচ্চুর বাড়িতে। সেন্ট্রাল রোডে। আর তখন দেখলাম সাচ্চু ভাইয়ের বাড়িটা হয়েছে সেই পুকুর ভরাট করেই! কী যে মন খারাপ হয়েছিলো সেই রাতে...
নাহ্, খুব নস্টালজিক করে দিলেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল ভাই, দারুণ লাগলো আপনার স্মৃতিচারণ। আপনার থেকেও একটা সিরিজ দাবী করা যায়।
ধন্যবাদ।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
দারুন লাগল। ছোট বেলার কিছু ঘটনার মিলও পেলাম-বিশেষ করে রেল লাইন ধরে হেটে যাওয়া। আমরা যেতাম ফেনী শহর থেকে লেঙ্গুরা বলে একটা জায়গায়। ফিরে আসতাম এক গাদা রঙ বেরংএর পাথর নিয়ে। শেষে সেই পাথর ফেলে দিতে হতো রাখার জায়গা থাকতনা বলে।
ধন্যবাদ বাউলিয়ানা।
সবার শৈশবে মনে হয় প্রত্যেকের শৈশবের কিছু ছাপ রয়ে যায়। আমার একটা ব্লগে হিমু এই মন্তব্য করেছিল। এটার সত্যতা আমি অনেকবার দেখেছি।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
পাথর? আমিও কত কুড়োতাম... এখনও কুড়োই। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পাথর সংগ্রহের উত্তেজনাটা হয়ত কমে যেত, কিন্তু এখন বিদেশে বিভুঁইয়ে ঘুরে আরো কত নতুন রকমের পাথর পাচ্ছি, না নিয়ে থাকা যায়! অবশ্য বাড়ি গেলে সেগুলো যে কোথায় ডাঁই হয়ে যায় মা ছাড়া কেউ জানে না...
অনেক মিল পাই আমিও। শৈশব কখনো ফিরে আসে না, স্মৃতি সততই দুঃখের... সে হোক না কেন সুখের স্মৃতি বা দুঃখের স্মৃতি
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ দেবোত্তম দাশ।
সত্যিই...
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
"পাখির ডানার শব্দে সচকিত সকাল বেলার মতো আমার কৈশোর
প্রত্যাবর্তনের দিকে মুখ ফেরাবে না কস্মিন কালেও"
ধন্যবাদ রোমেল ভাই। শামসুর রাহমানের এই লাইনগুলো দিয়েই এই সিরিজ শুরু করেছিলাম।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ভাই,
সবকটি সিরিজ একটানে পড়ে শেষ করার ইচ্ছে ছিলো। একটু পেশাগত দৌড়ের উপর আছি, তাই এ মুহূর্তে নেশার কল্কেটা ভুলে থাকছি। কাজের দানোটা একটু আস্ফালন কমালেই ফুসরত নিয়ে পড়ে ফেলবো। আগাম অভিনন্দন!
পড়লাম। ভালো যে লাগবে সে তো তুমি জানোই। কিন্তু সব চেয়ে ভালো লাগলো----
এখন আমার যাত্রাগুলো যেন শৈশবের দিকেই, বেলা কিংবা অবেলায় কী আশ্চর্য এই ভ্রমণ!!!------- এই কথা গুলি।
তারপর কেমন আছো তোমরা? ডোরা ঈদে আসতে পারেনি। একবার ভাবলাম ডোরাকে বলি তোমার ওখানে যেতে, তারপর কেন জানি আর বলা হলো না। ভালো থেকো তোমরা। ঈদের শুভেচ্ছা সবাইকে।
--------------------------------------------------------------------------------
বললেন না কেন? আমি এবার অবশ্য জ্বর ও সর্দিতে আক্রান্ত নিজেও ঈদে বাইরে যাইনি বেশি। ডোরার সাথে দেখা হলে ভালোই হতো।
ফোন দিব আজকে বা কালকে, অনেক দিন কথা হয় না।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ঈদের শুভেচ্ছা রইল।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এমিল, লেখা পড়লাম। খুব ভাল লাগল, চালিয়ে যাও--আব্বা আম্মা
এই হাঁটতে হাঁটতে বিশ্ব বেড়ানোর রোগ কি তাহলে সবার মাঝেই থাকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে!
আপনার রেল লাইনের বর্ণনা শুনে আমার চোখের সামনে একটা জায়গার দৃশ্য ভেসে গেলো। কলেজে থাকতে গিয়েছিলাম নরসিংদী আর ব্রাহ্মনবাড়িয়ার বর্ডারের এক গ্রামে। এক বন্ধুর বাড়ি। আমার চোখে এখনও লেগে আছে সেই সবুজে ঘেরা, ছায়ামাখা পাথর বিছানো রেলপথটা। অনেকদূর হেঁটে যাওয়া যায় সেই পথ ধরে পাখির ডাক শুনতে শুনতে। এই মন্তব্যটা যখন লিখছি, আমি ঐ পথে হাঁটতে হাঁটতেই লিখছি। আমার পায়ের নিচে কুটুর-কাটুর শব্দে সরে যাচ্ছে পাথরের টুকরোগুলো, একে একে...
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আপনার 'স্মৃতির শহরে' আজ এক এক করে ঢুঁ মারছি। দেখি আমারো কিছু মনে পড়ে যায় কিনা, কোন মিল পাই কিনা!
শৈশবের বই আর পত্রিকাগুলির কথা বলেছেন। 'কিশোর বাংলা' আমার জন্যও বাড়িতে রাখা হতো। সেই সাথে 'নবারুন'। 'নবারুন' পড়েছেন বা মনে আছে? এছাড়া আরেকটার কথা মনে পড়ছেঃ 'পাতাবাহার'। এটা বোধহয় ঢাকা শিক্ষাবোর্ড থেকে বের করা খুব স্বল্পজীবী একটা হার্ডকাভার (?) ম্যাগাজিন ছিল।
বইয়ের মধ্যে ছিল রাশান (অনুবাদ) বইগুলি। দুটির নামই এখন মনে আছে - 'রুশদেশের উপকথা' আর 'উভচর মানুষ'। তবে অনেকগুলি চরিত্রের কথা মনে পড়ে যা নিয়ে তখন স্বপ্ন দেখতাম -- রাজকুমারী ভাসিলিসা, বাবা ইয়াগা, ইভান, মাশা...এমন আরো কত কি। একসময় 'ফ্রাঙ্কলিন বুক সোসাইটির' বই পাওয়া যেত; একটির নাম এখনো মনে পরে -- 'আজব হলেও গুজব নয়'। এটা অনেকটা অনেক পরে সেবা প্রকাশনীর 'বিশ্বের বিস্ময়'-এর মত ছিল।
একটু বড় হলে পাঠ্য তালিকায় যোগ হলো - রাহাত খানের 'দিলুর গল্প', মোহাম্মদ নাসির আলীর 'লেবু মামার সপ্ত কান্ড' (লেবু মামার অস্তিত্বহীন ৮ম, ৯ম, এবং পরবর্তী কান্ডগুলির জন্য এক সময় কত খোঁজাখুজি করেছি, বিচলিত হয়েছি, ভাবলে এখন কেমন একটা সস্নেহ হাসি পায় তখনকার নিজের প্রতি) - আর আমার সবচেয়ে প্রিয় '...ফারাবী'-র "মামার বাড়ির বরযাত্রী"। এই বইটা নিয়ে আমার অনেক সহর্ষ স্মৃতি আছে। বইটার সবগুলা চরিত্রই পোলাপাইন - শুধু তাদের এক পাড়াতুতো অতি-চালাক চাপাবাজ প্র্যাক্টিকাল জোকার ও প্র্যাঙ্কস্টার বড়ভাই 'কামাল ভাই' ছাড়া, যিনি সবসময় ঐ পোলাপাইনদের ঘোল খাইয়ে তাদের উপর নেতাগিরি করতে চাইতেন। মজার ব্যাপার হলো, বাস্তবে আমাদের বিল্ডিংয়েও ঠিক একই নামে একই রকম এক কামাল ভাই ছিলেন (ইন্টারের ছাত্র তখন)। আমার থেকে একবার উনি ঐ বইটা নিয়ে পড়ার পর দেখা গেল উনারও ঐ বইয়েরই নকল করে বিভিন্ন প্র্যাকটিকাল জোকের মাধ্যমে আমাদের বোকা বানিয়ে আমাদের বয়সী পোলাপাইনদের উপর মাতবরি করার একটা বাতিকে পেয়ে বসেছে। একবার ঢিল মেরে হেলিকপ্টার ফেলে দেবার প্ল্যান কষেছিলেন (চাপাবাজি)। এখন ভাবলে হাসি পায়। ভাবি ঐ কামাল ভাই এখন কোথায়! উনি কি বাই এনি চান্স এই মন্তব্যটা পড়ছেন? "মামার বাড়ির বরযাত্রী"র লেখক ফারাবী এক অসাধারন লেখক ছিলেন -- মাত্র ১১-১৩ বছর বয়সে সে এমন একটা বই লিখে ফেলেছিল যা বাংলাদেশের সেরা শিশু সাহিত্যিকরাও বোধহয় লিখতে পারেননি। ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময়ই ফারাবীর মৃত্যু হয়। তাসনীম, আপনি পড়েছেন এদের লেখা ? এইসব বইগুলির বেশির ভাগই তখন প্রকাশ করত 'মুক্তধারা'। ভাবলে খারাপই লাগে যে সেই 'মুক্তধারা' আর বোধহয় নেই - অন্ততঃ এর প্রাণপুরুষ চিত্তরঞ্জনবাবু তো নেইই। পাঠকও কি এখন আর তেমন আছে? জানি না!
এই সবের পাশাপাশি ক্লাস ফাইভ-সিক্সে উঠেই আমার পরিচয় ঘটে 'সেবা'র সাথে। প্রথমে বিভিন্ন 'দস্যু' সিরিজ (বনহুর, বাহরাম, মোহন, ইত্যাদি) দিয়ে শুরু করে পরে সেবার অপেক্ষাকৃত রুচিশীল 'ভয়াল' ও 'কুয়াশা' সিরিজে স্থিতি লাভ। আরো কিছু পরে 'মাসুদ রানা'। আমার প্রথম মাসুদ রানা কিনি টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে (মাসুদ রানা তখন বড়দের চোখে প্রায় পর্ন ম্যাগাজিনের মত একটা কিছু ছিল - আর আমাদের জন্য নিষিদ্ধ গন্ধম ফল) ইন্দিরা রোডের 'তোফাজ্জল বুক হাউস' থেকে। সাথে সাথে বন্ধুদের সাথে বইয়ের লেনদেন শুরু। নাইন-টেনে উঠে অবশ্য আমার স্কুল-লাইব্রেরির কল্যানে পাঠরুচি কিছুটা ভিন্নখাতে চলে যায় - বঙ্কিম, শরৎ, তারাশঙ্কর এরা ঢুকে পড়েন পাঠের জগতে ব্যাপকভাবে - কিন্তু মাসুদ রানা তারপরও থেকে গিয়েছিল বহু বছর। সেবার আজব ও উপন্যাস সিরিজের বইগুলিও খুব ভালো লাগত - তিনটি উপন্যাসিকা, ছায়া অরন্য, পঞ্চ রোমাঞ্চ, ছয় রোমাঞ্চ, রবিনহুড, দাঁড়াও পথিক, বিশ্বাসঘাতক, ইত্যাদি। কাজী আনোয়ার হোসেনের কাছে আমি সত্যি কৃতজ্ঞ। আমার এবং আমার জেনারেশনের অনেকের পাঠাভ্যাসই গড়ে উঠেছে তাঁর হাত ধরেই। আমার মনে হয় ঐ সময় ঐ পাঠাভ্যাসটা গড়ে না উঠলে, পরে আর উচ্চতর সাহিত্যের জগতে ঢোকাটা সহজ হতো না। সমবয়সী অনেক বন্ধুর ক্ষেত্রে দেখেছি যারা প্রোফেশনালি হয়তো অনেক উচ্চ মার্গের, কিন্তু তার বাইরে রুচিটা হুমায়ুন আহমেদেই আটকে আছে।
তাড়ার মধ্যে লিখছি। স্মৃতির শহরে সুস্বাগতম।
নবারুনের কথা মনে আছে। যে বই গুলোর কথা বললেন প্রায় সবগুলোই পড়া...কাজীদা অনবদ্য...কুয়াশা-১১ বাদে সব পড়েছিলাম স্কুলে থাকতে...২৫ বছর বয়েসে হঠাৎ নীলক্ষেতে হঠাৎ কুয়াশা-১১ পেয়ে পড়লাম...পাঠকের মৃত্যু নয় বরং পুনর্জন্ম হয়েছে মনে হয়। পরে কয়েক বছর আগে বইমেলাতে দেখলাম সেবা বইগুলো আবার ছেপেছে...কিনেছিলাম কয়েকটা আনতে পারি নি।
কুয়াশা বাদেও জুলভার্নের বইগুলোসহ অনেক ক্লাসিক পড়া হয়েছে সেবার কল্যাণে...আর রাশান বইগুলো...রেখে দিয়েছি ওইগুলোর কথা মাথায় কোন এক কোনায়...কুয়াশা মাখা ভোরে বা বৃষ্টির দুপুরে শুয়ে শুয়ে পড়ছি বৃষ্টি আর নক্ষত্র, শহরের মেয়ে, ইশকুল, তিয়াপা বরকা আর রকেট, উভচর মানুষ...বেঁচে থাকুক ওরা আর বাঁচিয়ে রাখুক আমাকে।
লেবু মামার সপ্তকান্ড, দিলুর গল্প, মামার বিয়ের বরযাত্রী...সবই পড়েছি...মনে করিয়ে দিলেন...অনেক ধন্যবাদ। স্মৃতির শহর আসলেই বড় মনোরম।
একটা ই-মেইল করুন না...tmhossain@জিমেইল ডট কম।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এই বইটা আমি পড়েছি ছোটবেলায়, দারুণ লাগত। রাজকুমারী ভাসিলিসার নাম করলেন, আহা, ছোটবেলায় তাকে আমি বড় ভাল পেতাম। ফ্যান্সি, রাজপুত্তুর-এসে-বাঁচাবে টাইপের মেয়ে না, নিজের দায় নিজেই নিতে জানে, এরকম অসাধারণ একটা মেয়েকেই বউ হিসাবে দরকার, ভাবতাম...
ভাবছি, আজি হতে চৌদ্দটি বছর পর, আমিও যদি এমন 'স্মৃতির শহর' লিখতে চাই, তবে কি লিখবো?
পড়ার অভ্যাস ইন্টারনেট পাওয়ার পর আরো গেছে
নতুন মন্তব্য করুন