বড় হয়ে যেসব জিনিস হওয়ার ইচ্ছে ছিল সেগুলোর কোনোটাই হতে পারি নি। আর যেসব জিনিস কস্মিনকালেও হতে চাই নি, সেগুলোই করতে হচ্ছে প্রতিদিন নিয়ম করে। বড় হয়ে যাওয়াটা খুব বাজে একটা ব্যাপার। ছোটরা স্বপ্ন দেখে আর বড়রা দেখে দুঃস্বপ্ন, ছোটদের জগতে স্কুলের সবচেয়ে রাগী স্যার হচ্ছেন পৃথিবীর সব চেয়ে বড় ভিলেন আর, বড়বেলাতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সেই স্যারই হয়ে যান পৃথিবীর সেরা মানুষদের একজন। শৈশবে কল্পনা থাকে, বয়স্কবেলাতে থাকে বাস্তবতা। আমার যদি সেই ক্ষমতা থাকত তাহলে প্রাত্যহিক বাস্তবতাকে ভেদ করে প্রতিদিন একটা করে গল্প লিখতাম আর ছবি আঁকতাম। তবে আঁকাআঁকিতে বলতে গেলে আমি ডান আর বাম দুই হাতেই প্রায় সমান দক্ষ, মানুষ আঁকলে সেটাকে কাক মনে হতে পারে।
ভাবছিলাম একটু ব্লগরব্লগর লিখব। সবাইতো করে দেখি, আমি বাদ যাই কেনো? যদিও আমার অন্য লেখাগুলো মূলত ব্লগরব্লগরই, তবুও এমন কিছু লিখতে চাচ্ছি যাতে যেকোনো বিষয় নিয়েই লিখতে পারি। একই সিরিজে আনন্দ-বেদনা, রম্য, ছবিব্লগ, গুরুগম্ভীর কিছু - সব মিলিয়ে একদম পাঁচমেশালি জিনিস। আজকে পাহাড়ে ওঠা তো আগামীকাল চাকরি চলে গেলে কি করবেন এই জাতীয় কিছু একটা। মাঝে মাঝে ছবি জুড়ে দেব, একটু আধটু গল্পও থাকবে, জায়গা মত গানও থাকতে পারে। পুরোদস্তুর জগাখিচুড়ি। সিরিজটার নামটা দিলাম সেই বইটার নামে, যেটা এতদিনেও মাথা থেকে সরাতে পারিনি।
আজকের গল্পের বিষয় বান্দরবান। আমি বাংলাদেশ তেমন দেখিনি। ঢাকা শহরের বাইরে গিয়েছি খুব হাতে গোনা কয়েকটা জায়গায়। এখন ঘোরাঘুরিও মনে হয় অনেক সহজ, প্রায়ই দেখি লোকজন এদিক-ওদিক যাচ্ছে। আশি ও নব্বইয়ের দশকে মধ্যবিত্ত সমাজে “ভ্যাকেশন” একটা ভ্রান্ত ধারণার কাছাকাছি কিছু একটা ছিল। আমার পরিবারে এখনও সেই ধারণাই রয়ে গেছে।
২০০৮ সালের এপ্রিল মাসে দেশে ফেরার পর সবাই মানা করল ঢাকা শহরের বাইরে যেতে। দেশের অবস্থা ভালো না, রাস্তাগুলো নাকি মরণফাঁদ, বাচ্চা-কাচ্চার পেটে একবার বাইরের খাবার পড়লে সোজা হাসপাতাল! একবার দেশে গিয়ে সত্যি সত্যি পিতা ও কন্যা দুজনেই হাসপাতালে দিন কাটিয়েছি। তবে এসব কথা আমি বিশ বছর আগেও শুনেছি, আমি নিশ্চিত বিশ বছর পরেও শুনব। এসব কারণেই বাংলাদেশটা অনেকখানিই না দেখা আমার।
বান্দরবান, অনেক শুনেছি এর নাম। ৮৮ সালে একবার প্রায় চলেই গিয়েছিলাম যদিও প্রায় চলে যাওয়া সত্যিকারে যাওয়ার মধ্যে পার্থক্য অনেক। আমার কাজিন ঝুমা সপরিবারে থাকে সেখানে। সকল বাধা পেরিয়ে এক দুপুরে সেখানে পৌঁছানো গেলো। বান্দরবানে ঢুকতেই মুখ থেকে একটা শব্দ বেরিয়ে গেল...বাহ। সারাজীবন শুনেছি শাস্তিমূলক বদলি বান্দরবানে দেওয়া হয়। বান্দরবানের সাথে কলোরাডোর মিল আছে কোথাও যেন, যদিও কলোরাডো অনেক রুক্ষ আর অনেক বেশি বড়। শাস্তি দিয়ে কাউকে বান্দরবানে পাঠানো...অনেক জিনিস আর এই জীবনেও আর বুঝে ওঠা হবে না আমার।
আমাদের নিবাস সাঙ্গু নদীর কাছে। এপ্রিল মাসে বেশ গরম। টেক্সাসেও প্রচুর গরম পড়ে, আমরা অনভ্যস্ত নই এতে। আমি চারদিক দেখতে লাগলাম। বান্দরবান দারুণ জায়গা তবে এখানে সাপ থাকা উচিত প্রচুর – এটা মনে হোলো। আমি গোপন গুন হচ্ছে যে কোনো জায়গায় গেলে আমি সেখানে সাপের প্রাচুর্য আছে কিনা টের পাই। টেক্সাসে যতজন বন্ধুকে বাসায় সাপ আছে বলেছি, প্রায় সবার বাসায় সেই প্রাণী এসে হাজির হয়েছে। একবার নিজের বাসার সামনের গাছ থেকেও ফলের মত টুপ করে ছোট একটা সাপ...যাক সে কথা।
বান্দরবানে ঝুমার অন্ন ধ্বংস করলাম, বেশ সুস্বাদু অন্ন ছিল নিঃসন্দেহে। এরপরই দৌড় দিলাম নীলগিরির দিকে। দুই ঘন্টার পথ। যতই উঠছি সৌন্দর্য বাড়ছে। পাহাড়ের গায়ে জঙ্গল আর ছোট ছোট বাড়িঘর বা বাজার। পথে চিম্বুক পাহাড়ে একটু থামলাম। পাহাড়ে উঠতে আমার দারুণ লাগে, যদিও কোনোদিন ট্র্যাকিং করিনি। আকাশের কাছে পৌঁছানোর আর কোনো সহজ উপায় আমার জানা নেই। আকাশের দিকে হাঁটা দিলেই আমার এই গানটা খালি মনে পড়ে।
বিশেষত এই লাইনগুলো।
Can't keep my eyes from the circling skies
Tongue-tied and twisted Just an earth-bound misfit
নীলগিরিতে পৌঁছে চোখে জুড়িয়ে গেল। এটা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রিসোর্ট। বেশ সুন্দর তিনটি বা চারটি বাংলো, একটার নাম আকাশলীনা। জেনারেলরা কাব্যচর্চা করছে নাকি আজকাল?
রাষ্ট্রপ্রধান কি মেনে নেবেন আমার প্রস্তাবগুলো
জেনারেলদের হুকুম দেবেন রবীন্দ্রচর্চার? মন্ত্রীদের
কিনে দেবেন সোনালি গীটার? ব্যাঙ্কারদের
বানিয়ে দেবেন কবিতার নিপুণ সমাঝদার?
(শহীদ কাদরি)
রাষ্ট্রপ্রধান মনে হয় মেনে নিয়েছেন কিছু কিছু প্রস্তাব, তবে জেনারেলরা রবীন্দ্রচর্চার বদলে জীবনবাবুর চর্চা করছে। তাও সই, এর পরই হয়ত সেনাবাহিনীর জন্য অবশ্য পাঠ্য হবে শিল্পকলার দীর্ঘ ইতিহাস আর ভালোবাসা ছাড়া অন্য কিছুর চোরাচালান হবে না সীমান্তে।
মেঘের সাথে আমার আড়ি ছিল। আমি অনেক উঁচু পাহাড়ে উঠেও একফোঁটা মেঘের সন্ধান পাই নি। দুর্ভাগ্যক্রমে আমি যেদিনই উঠছি, সেদিনই ছিল ঝকঝকে ফর্সা একটা দিন। আছড়ে পড়া মেঘের দেখাতো মিলেই নি বরং দূর দিয়ে যাওয়াও মেঘমালাও অদৃশ্য হয়েছে কোনো এক মন্ত্রবলে। নীলগিরিতে এসে মেঘের সাথে একটা সন্ধি চুক্তি হোলো, আমরা মিটিয়ে নিলাম আমাদের সমস্যাগুলো। এখন আমার সাথে মেঘের ভালোবাসা চরমে, এরপর যেখানেই গিয়েছি মেঘের দেখা পেয়েছি।
নীলগিরিতে আসার পথে বিশাল একটা দাঁড়াশ সাপ দেখলাম। মিশমিশে কালো আর অসম্ভব দ্রুত। আমার সর্পবাণী এবারো সফল হলো। আমি মনে হয় সাপের ওঝা হওয়ার সহজাত ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছি। সাপটাকে দেখে শিরদাঁড়া দিয়ে কেমন একটা ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে গেল। নীলগিরির বাংলোগুলোর কেয়ার টেকারকে বললাম ব্যাপারটা। উনি জানালেন জুম চাষের সময় সাপেরা বাস্তুহারা হয়ে প্রায়ই রাস্তায় উঠে যায়। একটা বাংলোতেও নাকি সাপ দেখা গেছে দুই দিন আগে, তবে চিন্তার কিছুই নেই, উনাদের কাছে সাপের কামড়ের ওষুধ আছে। কোনো বিষয়ে বেশি জানতে নেই –সাপের ভয়ে আমার রাতে ঘুমের পরিমাণ একটু কমই হলো। সাত সকালে ঘুম থেকে উঠে সূর্যোদয় আর মেঘের খেলা দেখতে পেলাম। মনে মনে সেই দাঁড়াশ সাপটাকে একটা ধন্যবাদই দিলাম। সূর্যোদয় দেখলেই আমার মনে হয় জীবনবাবুকে...অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে ...সূর্যোদয়ের এরচেয়ে শক্তিশালী বর্ণনা আমি আর পড়িনি। উত্তরাধুনিক কবিরা কেউই ভোরে উঠেন না, ওদের কবিতায় এগুলো খুঁজেও লাভ নেই।
নীলগিরির বাংলোগুলোর বাসিন্দাদের খাবারের জন্য একটা রেঁস্তোরা আছে। সেটাতে অবশ্য বেশি চয়েজ নেই, পাহাড়ের চূড়ায় মেঘ দেখবেন, স্যানিটারি বাথরুম ব্যবহার করবেন আবার একই সঙ্গে মেন্যুতে বিশ রকম আইটেম চাইবেন, এটা বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যায়। তবে ওদের রান্না ভালো অথবা পাহাড়ে উঠলে খিদে পায় বেশি।
পাহাড়ে ওঠার সবচেয়ে ক্ষতিকর দিকটা হচ্ছে একসময় নেমে আসতে হয় সেখান থেকে। নীলগিরিতে আমি পুরো চব্বিশ ঘন্টাও থাকিনি। টম পেটি নামে আরেক ভদ্রলোক একই নামে (লার্নিং টু ফ্লাই) একটা গান লিখেছেন। উনিও কিছুটা সত্যদর্শন করেছেন।
I'm learning to fly, around the clouds
But what goes up must come down
I'm learning to fly, but I ain't got wings
Coming down is the hardest thing
গানটা পাবেন এইখানে।
যদি কোনোদিন দেশে ফেরা হয় তাহলে খুব খারাপ কিছু করতে হবে যাতে বান্দরবানে বদলি পাওয়া যায়। সেই আশায় আছি আপাতত। অনেক গল্প করলাম। এবার বান্দরবান আর নীলগিরির ছবিগুলো জুড়ে দিলাম। গল্প আর ছবি, মাঝে মাঝে গান – এই আর কি।
মন্তব্য
ছবি জুড়তে একটু সমস্যাই হচ্ছে। দুটো ছবি ব্লগে জুড়তে পারছি না। এদুটো জুড়লে দুবার করে আসছে। কী করা যায়?
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আরও কিছুক্ষণ গুঁতোগুঁতি করলাম ছবি নিয়ে। এবার ফল হলো, শেষ ছবিটা সাত বার এসেছে। হাল ছেড়ে মডুদের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছি না। আরো চেষ্টা করতে হয়ত বিশবার এসে যাবে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হাহাহা
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
এখন তো ঠিকই দেখছি!
আমিও তাই দেখছি। রাতে শেষ ছবিটা সাতবার এসেছিল, কোনো অদৃশ্য মডু এসে ঠিক করে গেছে হয়ত। আরেকটা জিনিস, ফ্লিকার থেকে কোড এম্বেড করা কি কাজ করবে?
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ফ্লিকার থেকে কোড এম্বেড করেই তো আমি ছবি আপ করলাম ক'দিন আগে। কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম না, আপনি পাশাপাশি ছবি দিলেন কী করে?! আমিতো পারছিনা!
আমাকে যদি শুধু RTE-টা ফিরিয়ে দিত!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
বান্দরবানে যাইনি, তবে রাঙামাটি খাগড়াছড়ি ইত্যাদি দেখে আমারও একই জিনিস মনে হচ্ছিলো। যাদের জন্য এটা শাস্তি তাদের জন্য মনে হয় প্রতিদিন ঘন্টা কয়েকের ট্রাফিক জ্যাম আর সিভিক সেন্সের অভাবে ধূলিধূসরিত হওয়াটা পুরষ্কারবিশেষ - আমার জন্য উল্টো, সম্ভবতঃ আপনার জন্যও :)।
তাই তো দেখছি। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ অপছন্দনীয়।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
"নীলগিরিতে এসে মেঘের সাথে একটা সন্ধি চুক্তি হোলো, আমরা মিটিয়ে নিলাম আমাদের সমস্যাগুলো। এখন আমার সাথে মেঘের ভালোবাসা চরমে, এরপর যেখানেই গিয়েছি মেঘের দেখা পেয়েছি।"
নীলগিরি - নামটাই কি ভীষণ স্বপ্নমাখা! জায়গাটাও।
আপনার জগাখিচুড়ি ভালো লাগলো খুব। খুব গভীরে কোথাও কিছু একটা হলোও। কী যে...
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
হুম। পেট-টেট খারাপ হয় নি তো?
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
মাইর খাবা তিথী!
ইয়ে মানে, জনাব...হলো তো মনের গভীরে...
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
বুঝেছি সেটা, কিন্তু একটু ফাজলামি করার লোভ সামলাতে পারলাম না, লেগ পুলিং আর কি
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
সচলে যে সবাই ভালু সেই বিশ্বাস আর নাই গো দাদা...
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
অনেকদিন পর লিখে পারলাম না। এত সুন্দর করে লিখেন কিভাবে! আর সাথে জুড়ে দিয়েছে পিঙ্ক ফ্লয়েডের আমার অন্যতম পছন্দের গান। আর আছে নীলগিরি। আর কি চাই। নীলগিরি এখনো যাওয়া হয়নি। অসাধারণ সুন্দর এক জায়গা।
অনন্ত
নীলগিরি নাকি এপ্রিল পর্যন্ত বুকড। যাওয়ার সময় অবশ্যই পিঙ্ক ফ্লয়েডের কিছু গান নিয়ে যাওয়া উচিত। একটা কটেজের নাম রাখা উচিত...উইশ ইয়ু ওয়্যার হিয়ার।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আকাশের সাথে লীন হয়ে থাকা কুঁড়েঘরটির নাম যদি আকাশলীনা হয়, তবে কবুল করি তা যথার্থই হয়েছে ! আপনার ব্লগের কথায়, মাতোয়ারা গানের সুরে আর চোখ জুড়িয়ে দেয়া ছবির শোভা দেখে ভাবছি নীলগিরি যেতেই হবে আগামী বর্ষায়।
ভেজা ভেজা মেঘবালিকারা এসে আমার জানালায় হানা দেবে, বুকের পাঁজর এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়ে, নিঠুর হাসি হাসতে হাসতে বেরিয়ে যাবে অন্য জানালা দিয়ে। বুক ভ'রে ক্ষত-বিক্ষত হতে হতে উপেক্ষায়, আদরে, ভালোবাসায় দ্রবীভূত হতে হতে আমি একসময় ধ্রুপদী সঙ্গীতের মতো ঠাই পাবো বাতাসের গায়। আহা কতই না সুখের হবে এইসব ক্ষয়ে যাবার ক্ষণ, কতই না মধুর হবে এইসব সান্দ্র আয়োজন!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
কুঁড়েঘরটি আকাশীনা নয়। ওটা যে কী সেটা মনে পড়ছে না। তবে বর্ষায় নীলগিরি সবচেয়ে সুন্দর থাকে, একদম মেঘ থৈ থৈ। আপনার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হোক রোমেল ভাই।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
বাহঃ, সুন্দরতো! ঠিক কাল যে কথাটি বলতে চেয়েও পারলাম না, সহজ ও সাবলীলভাবে আজ তা বলে দিলেন ?
.......সুখ পাঠ্য ভ্রমন কাহিনী। ছবিগুলোও যেন আপনার সাবলীল গদ্যের মত।
---নুর নবী দুলাল
চট্টগ্রাম।
অনেক ধন্যবাদ নুর নবী দুলাল।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ভালো লেগেছে
...........................
Every Picture Tells a Story
ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
শুধু আপনার লেখার নয়, আপনার কাব্যরুচির ও যে ভক্ত হয়ে পড়ছি।
আপনার লেখায় আশায় আশায় থাকি, হয়তো কোনো কবিতার টুকরো পাওয়া যাবে।
খুব ভাল লেগেছে পড়তে। তাসনীম ভাই, আমি আশা করব আপনি বড় কোনো লেখায় হাত দেবেন। আর সেই লেখা কে বই বানিয়ে বিক্রি করে আমি বড়লোক হব, আর সেখানের কবিতাগুলো মানুষের সামনে উদ্বৃত করে আমি বিমলানন্দ উপভোগ করব। সত্যি বলছি।
অনেক শুভকামনা রইল।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
সর ছেমড়ি! আমি আগে ইটা রাখছি! তাসনীম ভাই, মুস্তাফিজ ভাই, ধুগো'দা, এনাদের বইয়ের পাইকারী এবং খুচরা বিক্রেতা কেবল আমি। আমি এখন ব্যস্ত বলে ওনারা বই বের করতেছেন না! খালি পিএইচডি আর গোটা চারেক পোস্ট ডক করেই পড়াশোনার বেডরুমে আগুন দিয়ে দেশে গিয়ে উঠবো। তারপর বাকি জীবন বর্ষাকালে চাষ করবো, শীতকালে বই বেচবো আর গরমকালে বাংলা মদ খেয়ে ঝিমাবো আর বেলেল্লাপনা করবো...
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধুর মিয়া! সবতের বইয়ের এক ও একমাত্র পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা আপ্নে কইলেই হইলো আরকি! আপ্নে একাই ইটার মালিক? দরকার হলে ইটার ফ্যাক্টরি দিমু আমি! আচ্ছা খ্রান, আপনি বিক্রেতা হইলে আমি না হয় পরিবেশক হব, ডিল!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমার আশায় বসে থাকলে মনে হয় শুধু বাংলা মদ খেয়ে ঝিমাতে হবে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমার লেখালেখি করার সময় বড়ই সংকীর্ণ। তারপরও তোমাদের উৎসাহে কলম (কি-বোর্ড) ধরি। বড় লেখার সময় কোথায় বল? ২০ বছর আগে ব্লগের সন্ধান পেলে ভালো হতো। কিন্তু তখনো ইন্টারনেটে নিয়ে গবেষণা পত্র লেখা হচ্ছে...তবে সময় তোমাদের পক্ষে আছে, প্রযুক্তির এই যুগের সুযোগ তোমরা পাচ্ছো। আমি মুগ্ধ হয়ে তুমি সহ অনেকের লেখাই পড়ি। সত্যি কথা বলতে গেলে হয়ত একদিন তোমাদের লেখাই বই বানিয়ে আমিই হয়ত বড়লোক হতে পারবো।
তোমার জন্যও শুভকামনা রইল।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনার নতুন পোস্ট দেখলেই একটা উৎসব উৎসব ভাব হয় মনে। সবসময়ই বেশ আয়েশ করে পড়ি। তাড়াহুড়া থাকলে পরে পড়ব বলে রেখে দেই অথবা পড়ার আশায় তাড়াতাড়ি শেষ করি হাতের কাজ...
এই সিরিজটা কিন্তু কোনোমতেই মার্কিন মুল্লুকে (ড্রিম জব, ড্রিম নাইট, ড্রিম ডেট, ড্রিম ট্যুর এইরকম সব বিষয়ে হলে ভালো ), স্মৃতির শহর (আমি মানতে রাজি নই যে স্মৃতির শহরের গল্প কখনো শেষ হতে পারে!), আর শিশুপালন (আমার ভাতিজিরা আজীবন শিশুই থাকবে) কে প্রতিস্থাপন করেনি! এটার সঙ্গে আগের সিরিজগুলোও চলবে [প্লাকার্ড ইমো]
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
তোমাদের এই মন্তব্যগুলোই এত উৎসাহ যোগায় যে কখনো রাত জেগে বা কখনো অফিস ফাঁকি দিয়ে লেখি। শৈশব নিয়ে অনেক কিছুই লিখব এই সিরিজে। তবে এটা হবে অনিয়মিত। বুয়েট লাইফ নিয়ে কিছু লেখার পরিকল্পনা আছে। এর পাশাপাশি গল্প-টল্প লিখতে পারি -- সব আশা বাস্তবায়ন করতে হলে ২০০ বছর বাঁচতে হবে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনারে ২০০ বছর বাঁচতে মানা করছে কোন পামরে!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সুযোগ পেয়েও যাওয়া হচ্ছে না নীলগিরি! একদিন যাবোই যাবো!
শুনলাম নীলগিরি নাকি এপ্রিল পর্যন্ত বুকড! অবশ্যই যাওয়া উচিত এখানে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
দারুণ!
আজকে পিঙ্ক ফ্লয়েড না, আজকে টম পেটি শুনি। খুবই ভালো লাগলো পুরো ছবি-গল্প-গান।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
টম পেটিও দারুণ। যদিও বেশি শুনিনি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমি তো আপনার, নজরুল ভাই, ওডিন আর খেঁকুদার সুবাদে অনেক নতুন জিনিস শুনছি এখন, আগে টম পেটি শুনি নাই একদমই।
আচ্ছা, ব্রিজের ছবিটা কি মেঘলার? আর পাশাপাশি দুইটা ছবি কী করে দিলেন বললেন না তো!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ব্রিজটা মেঘলার। ছবি দেওয়ার সময় হাফ-পেইজ বলেছিলাম তাই মনে হয় পাশাপাশি এসেছে। সিওর নই।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনার লেখা সত্যিই দারুণ। ভালো লাগলো। সর্পরাজ নামটা কেমন লাগে? হা হা হা ...
আমার প্রথম এবং শেষ রাঙামাটি ভ্রমণের কাহিনী কোনদিনই লিখব না। অসাধারণ সেই অনুভূতি। ওটা মনের গভীরেই থাক।
ধন্যবাদ মন্তব্যে জন্য। সর্পরাজ...হা হা হা...মন্দ নয়। মানুষ আজকাল বাসা কিনলে সাপ নিয়ে আমার মতামত চায়। রাঙামাটিতে একবার গিয়েছিলাম। সেটা পার্বত্য জেলায় প্রথম সফর। ছবি নেই শুধু স্মৃতি আছে। আপনার মত ওটাও মনে গভীরে রেখে দিয়েছি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনাদের ঐদিকে অনেক সাপ নাকি? কথা শুনে তো মনে হচ্ছে আপনি কনসালটেন্সি খুলতে পারবেন
প্রচুর সাপরে ভাই...কেউ সাপ নিয়ে বেশি ভীত নয়। আমার অফিসের সামনের বাগানে বাদামী রঙ-এর একটা সাপ আসতো প্রায়ই। অধিকাংশই নির্বিষ।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
চমৎকার লেখা ! তবে প্রথমেই একটু সমালোচনাঃ 'স্মৃতির শহরের' মত মোহময় হলো না কিন্তু। আপনি কি সময়ের অভাবজনিত কারনে একটু হাল্কার উপর দিয়ে যেতে চাইছেন ? তবু অন্যদের মতই আশা করবো, সিরিজের আইডিয়া একেবারে বাতিল করে দেবেন না; এবং ঐ রকম যাদুময় গদ্যে আরো সিরিজ / দীর্ঘ লেখা লিখবেন। আপনার হাতটা আমার মনে হয় সুনির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে লম্বা লেখাতেই খুলে সবচেয়ে ভালো। সুতরাং এই আবদারটা থাকলই।
বছর দুয়েক আগে শীতের সময় বান্দরবান আমিও গিয়েছিলাম। নীলগিরি, রুমা, বগা লেক। নীলগিরিতে, ইচ্ছা থাকলেও মেঘের সাথে ঠিক জাপটাজাপটি, মাখামাখি, ভালোবাসাবাসি হয়নি - তবে যাওয়ার পথে নীচ দিয়ে তাকে ভেসে যেতে দেখেছি। এটাও কম না আমার জন্য, কারন মাটিতে দাঁড়িয়ে জীবনে এর আগে কখনো নিজের পায়ের তলা দিয়ে মেঘ যেতে দেখিনি। তাও আবার আজীবন জানা সমতলভূমি বাংলাদেশে। অপূর্ব যেমন, তেমনি একটু কেমন ডিসওরিয়েন্টিংও যেন।
আর্মির ঐ রিসর্টে কয়েক ঘন্টা কাটিয়ে ফিরে এসেছি। কেউ কেউ বলছিল ওখান থেকে নাকি বঙ্গোপসাগর দেখা যায় বাইনোকিউলার দিয়ে। বিশ্বাস হয়নি অবশ্য। অপূর্ব জায়গা তাই না ? এরকমটা বাংলাদেশে বোধহয় কমই আছে (যদি আদৌ থাকে)। ওখানকার কটেজে ২টা দিন থাকতে পারলে খুব ভালো হতো।
বগা লেকের যাত্রাটাও দারুন ছিল। এটা নাকি বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত লেক। তবে গন্তব্যের চেয়ে যাওয়াটাই বেশি স্মরনীয় হয়ে আছে আমার কাছে। বিশেষ করে রুমা বাজার থেকে বগা লেক পর্যন্ত পাহাড়ের গা কেটে তৈরি হাজার ফুট উঁচুতে, স্রেফ ইট-বিছানো সরু এবং প্রচন্ড খাড়াই-উতরাই সম্পন্ন রাস্তা দিয়ে এক বদ্ধ পাগলা ড্রাইভারের চালনায় প্রায় ২য় বিশ্বযুদ্ধকালীন আমলের ধ্যাধ্যেড়ে ল্যান্ডরোভারে করে, শরীরে এ্যাড্রেনালিনের টাইফুনটা তারিয়ে তারিয়ে চাখতে চাখতে আর হেঁড়ে গলায় চিৎকার করে গান গাইতে গাইতে যাওয়াটা ছিল সত্যি অসাধারন। অবশ্য, আমার সঙ্গীদের কারো কারো জন্য যদিও অভিজ্ঞতাটা উলটো হয়েছিল। এই বুড়া বয়সে এই নিখাদ ছেলেমানুষি উত্তেজনাটা আর কোথাও হলে আমাকে কেটে ফেললেও প্রকাশ করতে পারতাম না।
বান্দরবান জেলাটা আমার দারুন লেগেছে। বিশেষ করে স্থানীয় আদিবাসি মানুষকে। ভালো লেগেছে তাঁদের রিল্যাক্সড, সহজ, স্বচ্ছন্দ চলন-বলন। কেন জানি এখানে নিজেকে আমার অনেক ভারমুক্ত মনে হয়েছে। চারিদিকে চালবাজ লোকের কিলবিলানি নেই। অন্য অনেক বিষয়ের মধ্যে এঁদের অন্যের বিষয়ে খামাখা নাক গলানোর বদভ্যাসটা নেই দেখে খুব ভালো লেগেছে। অন্ততঃ অপ্রয়োজনীয় কৌতুহলি চোখের ধাওয়া খাওয়ার অত্যাচার থেকে বাঁচা গেছে। আর সবচেয়ে বড় প্রাপ্তিটা হলো, এখানে আসার ফলে বহু-বহু-বহু-বহু বছর পরে আমার শৈশবের এক প্রিয় মারমা বন্ধুর সাথে আবার দেখা হয়ে গেল - যার সাথে আর কোনদিন দেখা হবে বলে ভাবিইনি। একটা দিন কাটলো তাদের পাহাড়-ঘেরা মাছের খামারে পান-ভোজনে-পিকনিকে, আর শীতের নির্জন, নিঝুম রাতে শহরটা দল বেধে চক্কর দিয়ে।
মনমাঝি
ধন্যবাদ মনমাঝি। কয়েক লাইন পড়েই আপনার নিক না দেখেই বুঝেছি এটা মনমাঝির মন্তব্য। এই সিরিজটা অনিয়মিত হবে, কোনো বিষয়ভিত্তিক নয়, একেক দিন একেক টপিক। অবশ্যই হালকা পাতলা, সময়ের অভাব একটা কারণ, লেখাটাও চালু রাখতে চাই তাই আপাতত হালকাই সই।
বগা লেইকের গল্পও শুনেছি, কিন্তু যাত্রাপথের বর্ণনা (যেটা একবন্ধুর কাছ থেকে আগে শুনেছিলাম, অনেকটা আপনার বর্ননার মতই) শুনে আর সাহস হয়নি। সাথে চার বছরের কম দুটো বাচ্চা ছিল।
নীলগিরি থেকে দিন পরিস্কার থাকলে বঙ্গোপসাগর দেখা যায়, এটা আমাকেও বলেছে ওখানকার লোকেরা। সম্ভব হতে পারে।
আমারও একই অভিমত।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
-অতীত
ধন্যবাদ অতীত।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ নজরুল ভাই।
নীলগিরিতে আমারও বুকিং ছিল না। ওইদিন একটা ক্যানসেলেশন ছিল, আমি বান্দরবানে থাকাতে সেটা ধরতে পেরেছি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
নীলগিরিতে যাওয়ার ইচ্ছা অনেকদিনের। কিন্তু এতো আগে থেকে বুকিং দিতে হয়... আমার আবার সবকিছুই হুটহাট, এতো আগে ভেবে তো কিছুই করি নাই জীবনে
এই অংশটা দুর্দান্ত লেখছেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দেখে মনে পড়ল, আমারও কয়েকটা ভিডিও ক্লিপ ছিল নীলগিরির। সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
সবাই এত সুন্দর ভাবে লেখে ! সাবলীল অথচ শৈল্পিক। অক্ষর নয় স্বচ্ছন্দ অক্ষর চিত্র।
কিভাবে সম্ভব, মাথা চুলকাই....
ইনশাল্লাহ সামনের শীতে আমি নীলগিরি চলে যাব।
--- নুশান
আমি দেশের লালমনিরহাট থেকে ভেড়ামাড়া পর্যন্ত টো টো করে বেড়ালেও অজ্ঞাত কারণে এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামে যাই নাই গত হপ্তাতেও একদল গেলো নাফখুম দেখতে, যেতে পারলাম না। কে জানে কবে যাবো?
আর তাসনীম ভাইও টম পেটি আর দ্য হার্টব্রেকারসের ফ্যান নাকি? এদের খুব ভালো লাগে আমার, ক্যামন সহজিয়া মনখারাপকরা সব গান লেখে তাইনা?
লেখা যথারীতি সেইরকম, আর ছবিগুলোও দুর্দান্ত! আপনার জন্য তাই কয়েকটা তারা আর একটা গান
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
গানের জন্য ধন্যবাদ ওডিন। ল্যাপটপের স্পিকারে কী একটা অসুবিধা হচ্ছে শুনতে পাচ্ছি না এখন।
পার্বত্য জেলার মধ্যে খাগড়াছড়ি বাকি আছে, ওটাতে একবার যাবো ভাবছি। সম্ভব হলে নীলগিরিকেও কোনো একটা সফরসূচিতে ঢুকিয়ে দিও, ওটা মিস করা ঠিক হবে না।
টম পেটির ঠিক ফ্যান বলা যাবে না, অল্প কিছু গান শুনেছি। বেশ ভালো লাগে, যেমনটা বলেছ, সহজিয়া এবং কিছুটা দুঃখ জাগানিয়া। আমার ঠিক যেমনটা পছন্দ
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
লেখা অতীব চমত্কার, ছবিগুলোও.. যদিও আগেও দেখেছি।
নাহ, মরে-টরে যাওয়ার আগে নীলগিরি যেতেই হবে একবার!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আমার মনে হয় শাস্তি এই সেন্সে বলা হয় যে ওখানে ঘুষ পাওয়া যায়না সহজে। হতদরিদ্র পাহাড়ীরা ঘুষ দেবে কোত্থেকে? এছাড়া ওইসব এলাকায় সোসালাইজেশন, এন্টারটেইনমেন্ট, তারপর মাগীবাজী, এগুলোর সহজলভ্যতা নেই। একেই মনে হয় মোড অফ পানিশমেন্ট ধরা হয়েছে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
একদম ঠিক।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমার মনে হয় আরো দু'টো সহজ স্বাভাবিক কারন বাদ দিচ্ছেন আপনি।
১। পার্বত্য অঞ্চলের টের্যাইন আজন্ম সমতলবাসী নবাগত বাঙালির জন্য বেড়ানো বাদে দীর্ঘমেয়াদী বসবাসের ঠিক উপযোগী না, অন্তত আরামপ্রদ বা সহজ না। বগা লেক যাওয়ার পথে রুমা বাজারের কাছে আমার কাছে এক আদিবাসি (গাইড) অভিযোগ করেছিলেন যে একটা নতুন ধরনের ফসল চাষে কৃষি সঙ্ক্রান্ত সাহায্যের জন্য তিনি স্থানীয় কৃষি দফতরের বাঙালি কর্মীকে অনেক বলে কয়েও কিছুতেই নিজের বাড়ির কাছের পাহাড়ি জমিতে আনতে পারেননি। তার অভিমানী ধারনা বাঙালিরা তাদের এসব বিদ্যা শিখাতে চায় না। তবে আমার মনে হয়েছিল তার ঐ পাহাড়ি গ্রামে স্রেফ পাহাড়ি পথে দীর্ঘপথ পাড়ি দেয়ার ভয়েই ঐ সাময়িক পোস্টিংপ্রাপ্ত বাঙালি সরকারি কর্মচারী যায়নি।
২। উপজাতি সম্প্রদায়ের সাথে বাঙালিদের একটা প্রচ্ছন্ন দ্বন্দ্ব বা টেনশনও বোধহয় কাজ করে। নিরাপত্তাহীনতাবোধ থাকে।
বগা লেকে আর্মি ক্যাম্পের সদস্যরা আমাদের বারবার তাদের দৃষ্টিসীমার বাইরে যাওয়ার ব্যাপারে বারন করছিলেন। ওখানে চতুর্দিকে পাহাড়ঘেরা লেকের পারে স্থানীয় আদিবাসীদের কিছু সস্তা কটেজ আছে যার কিছু কিছু তারা টুরিস্টদের কাছে ভাড়া দেন। আমি এখানেই ছিলাম। এরই একদিকে কিছুদুরে ওভারলুকিং উঁচু জায়গায় আর্মির ছোট্ট ক্যাম্প ও অবজার্ভেশন পোস্ট যেখান থেকে তারা ঐ কটেজ-টটেজ ও সংলগ্ন স্থান দেখতে পান। এর বাইরে যাওয়া বা পাহাড়ে উঠতে বারন ছিল। তাদের বক্তব্য, মুক্তিপন বা অন্য কারনে কিডন্যাপিং ইত্যাদি এখনো হচ্ছে সুযোগ বুঝে প্রত্যন্ত বা নজরদারি-বহির্ভূত এলাকায়। আমাদের কিছু হলে আমাদের উদ্ধার করতে বা খুঁজতে তাদেরই লাইফ হেল হয়ে যাবে এই ডিফিকালট টের্যাইনে। এমনটা নাকি আগেও হয়েছে একাধিকবার। সুতরাং আমরা যেন তাদের কথা শুনি। এটা পুরো সত্য কিনা জানি না, তবে আমার ধারনা কিছুটা নিশ্চয়ই সত্যি। তবে তারা যে সিরিয়াস এবং নজরদারি ভালোভাবেই করেন সেটা লক্ষ্য করেছি যখন একদিন হঠাৎ দেখলাম নিয়মিত টহল বা নজরদারির সময় হঠাৎ করে তাদের ছটোছুটি শুরু হয়ে গেল কারন ওখানে আসা একটা বাঙালি ছেলেকে তারা হঠাৎই দেখতে পাচ্ছেন না। কোথায় গেল! কোথায় গেল! অর্থাৎ ক্যাম্পে বসেই তারা এত টুরিস্টের সত্বেও ঐ একজনের হিসাবেরও খেয়াল রেখেছিলেন। ভাগ্য ভালো তাকে পেতে দেরি হয়নি। কিন্তু যদি অত সহজে পাওয়া না যেত ? এমনকি আর্মিরও এসব করতে ভালো লাগার কথা নয়। একজন তো বলেই ফেলেছিলেন - উনি বদলির আশায় তীর্থের কাকের মতো দিন গুনছেন।
টুরিস্ট হিসেবে আমার নিজেরও অবস্থা খুব সুবিধার ছিল না। বগালেকের কাছাকাছি পৌঁছে রাস্তা মেরামতিজনিত কারনে বন্ধ থাকার কারনে আমাদের ল্যাণ্ডরোভার এমন জায়গায় নামিয়ে দিয়েছিল যেখান থেকে আমাদের পাহাড়ের চড়াই ধরে কিনারাঘেষা খাড়া আলপথ ধরে প্রায় ঘন্টাখানেক পাহাড়ে উঠতে হয়েছে ভারিক্কি শরীরখানি নিয়ে (ফিরতি পথেও একই অবস্থা)। জিহবা বেরিয়ে গিয়েছিল একেবারে। গন্তব্যে পৌঁছে নিজের কান মলেছি - মনে মনে বলেছি "ন্যাড়া দ্বিতীয়বার আর বেলতলায় আসিবে না" ! বেড়ানো উপলক্ষে আমার মত অনভ্যস্ত, গড়পড়তা, ছাপোষা সমতলবাসীর জন্য এই অভিজ্ঞতা এক-আধবার এডভেঞ্চারের রসদ হতে পারে, কিন্তু রোজ-রোজ ? নো ওয়ে, ম্যান! তবে, স্থানীয় বা এখানেই বড় হওয়া বা পাহাড়ি পথে ট্রেকিং-এ অভ্যস্ত বাঙালিদের কথা আলাদা। অথবা, যারা পাহাড়ি গ্রামে বা গাড়ি যায় না এমন কোন জায়গায় যেতে চান না বা যাবার দরকার পড়ে না এবং বেশির ভাগ সময় শহরেই থাকতে চান, বা যারা এখানে থাকা ছাড়া জীবিকার ক্ষেত্রে নিরুপায়, তাদের কথাও আলাদা ! বাকিদের জন্য (সমতলবাসী) আমার মনে হয় এখানে দীর্ঘমেয়াদে থাকা কিছুটা কঠিন মনে হওয়া খুব অস্বাভাবিক নয়।
মনমাঝি
আচ্ছা এমিল এটা কি সেই বইটা, যেটাতে গল্প গুলো ছিলো " মাও করলো কে?" অথবা "তিনটি বেড়াল ছানা"
আমার প্রথম বইটাও ছিলও রুশ দেশের," "বাবা যখন ছোট্ট"। লেখকের নাম পুরো মনে নেই। বরিস কি যেন। পুরনো দিনের কথা মনে করে দিলে। ভালো লাগছে।
--------------------------------------------------------------------------------
নতুন মন্তব্য করুন