আমার একবন্ধু রক্ত এবং চক্ষুদান কর্মসূচিতে গেলে সর্বদাই চক্ষুদান করে আসত, কখনোই রক্তদান করার নাম মুখেও আনতো না। কারণটা বেশ সহজ, রক্তদান করলে সেটা সাথে সাথেই দিতে হবে যে, চোখ দানের ব্যাপারগুলো আসবে মৃত্যুর পরে। হাতে অনেকটা সময় পাওয়া যাবে আর আচমকা সুঁইয়ের খোঁচাও খেতে হবে না।
ঠিক একই রকম বুদ্ধি ছিল মায়ান জ্যোতিষীদেরও। উনারা বলেছেন ২০১২ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। হয়ে গেলেও অসুবিধা নেই – উনারা ধরাধম আগেই ত্যাগ করেছেন, পৃথিবী ভেঙে তিন টুকরা হলেই বা কি? আর যদি ধ্বংস নাও হয় তবে উনাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করা যেতে পারে বড়জোড়, শূলে চড়ানো যাবে না নিশ্চিত। এটাকেই বলে উইন-উইন সিচুয়েশন। আজকের কোনো জ্যোতিষীকে জিজ্ঞেস করলে সেও পৃথিবীর “এক্সপায়ারি ডেট” নিজের এক্সাপায়ারেশনের পরের কোনো তারিখে ফেলবে নিশ্চিত।
আমি যখন ছোট ছিলাম তখন ইংরেজি নববর্ষ নিয়ে বেশি মাতামাতি হতো না। পত্রিকায় বিদায়ী বছর নিয়ে একটা ফিচার থাকত। ওতে থাকতো পুরানো বছরে সালতামামি। আর মহাজাতক রাশিফল গুনে জানাতেন আগামী বছরটা দেশের জন্য কেমন যাবে। ওনার ভবিষ্যতবাণী থাকত বেশ জেনেরিক – যেমন আগামী বছর বর্ষীয়ান একজন রাজনীতিকের মৃত্যু হতে পারে। তবে বাংলাদেশের ভবিষ্যতবাণী দিতে গেলে জ্যোতিষী হতে হয় না সেটা আমরা শৈশবেই বুঝে গেছি। আমিও চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারি যে ২০১২ সালে ছাত্রলীগ অনেককেই হতাহত করবে, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজী অব্যাহত থাকবে। বিএনপি আরো রোড মার্চ-টার্চ করবে এই আশাতে যে ওগুলো হয়ত দইয়ের বীজের মতো সরকার পতনের আন্দোলনকে জমিয়ে দিবে। আমি আরো দেখতে পাচ্ছি যে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে, সড়ক দুর্ঘটনা ঘটবে - আবুলের কল্যাণে তথ্য মহাসড়কেও আইপি প্যাকেটগুলোতে গিঁট লেগে যেতে পারে। দুর্ঘটনা এড়াতে হলে ভালো একজন ড্রাইভার নিয়োগ করুন। মন্ত্রীদের কথাবার্তা ভাঁড়ের মতো লাগতে পারে।
এইসব ভবিষ্যতবাণী বাদ দিলে নতুন বছরে মজাদার কিছুই থাকতো না সেই সময়ে। স্কুলে পড়ার সময়ে বন্ধু-বান্ধব কেউ হ্যাপি নিউ ইয়ার বলেছে কিনা এই নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। আমাদের কাছে ওটা ডিসেম্বর মাসের ৩১ তারিখের পরের দিনই ছিল, তেমন নতুন কোনো অর্থবহন করত না। আর নতুন বছর কখনই তেমন শুভ হতো না। নতুন ক্লাসে উঠলে সব টেরর স্যারের নতুন অত্যাচার সহ্য করতে হবে এই দুঃশ্চিন্তাতে সর্বদাই থাকতাম আমরা। তবে বছরের প্রথম দিন সবাইকে একটা টাইটেল দেওয়া হতো - যেটাকে আমরা বলতাম নববর্ষের খেতাব। আমার অনেক বন্ধুই সেই নববর্ষের দেওয়া খেতাব আজীবন বহন করে বেড়াচ্ছে - যেটা হয়ত তাদের চরিত্রের সাথে সবচেয়ে মানানসই উপাধি। বাচ্চা ছেলে-মেয়েদের মতো অন্তর্দৃষ্টি বড়দের থাকে না। কেউ বিয়ের কার্ডে লিখবে না...আমার কনিষ্ঠ পুত্র ডিব্বা মঈনের সাথে...জানি না নববর্ষের খেতাব এখনো কেউ দেয় কিনা।
ঢাকাতে আশির দশকের মাঝামাঝি ইংরেজি নববর্ষ একটু একটু করে প্রতিষ্ঠা পায়। পার্টিগুলো মূলত গুলশানকেন্দ্রিক ছিল। আরও পরে আমারাও নববর্ষ উদযাপন করতাম, বন্ধুদের অনেকের মদ্যপানে হাতেখড়ি এই দিনেই। তবে ভালো মদ অধরাই থাকত, কেরু এন্ড কোং ছিল একমাত্র ভরসা। আর মাথাপিছু যেই পরিমাণ পানীয় জুটতো তাতে হয়ত বড়সড় একটা পিঁপড়ার নেশা হবে।
মার্কিন দেশে আসার পরে নববর্ষের ফজিলত টের পেলাম। বর্ষবরণ এখানে আসলেই অনেক বড় উৎসব। স্থানে-অস্থানে প্রচুর পার্টি এবং বাজি পোড়ানোর মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয় ওরা। আরো একটা জিনিস করে সেটা হচ্ছে নিউ ইয়ার্স রেজেলিউশন বা নতুন বছরের প্রতিজ্ঞা। নতুন বছরটা অনেকটা কম্পিউটার রিস্টার্ট করার মতো - বছর শুরুতে অনেক কিছুই সম্ভব মনে হয়। প্রথম আলোর মতো জীবনটা বদলে দিতে চান অনেকেই। যদিও অনেকক্ষেত্রেই কিছু দিন পরে যে লাউ সেই কদু রয়ে যায়।
গুগল করে মার্কিনিদের নববর্ষের প্রতিজ্ঞাগুলোর একটা তালিকা তৈরি করলাম। এই দেশে থাকার কারণে এই তালিকার অনেক প্রতিজ্ঞাই আমার প্রতিজ্ঞার সাথে মেলে। যেই দেশে যেই আচার আরকি। আপনি নিজেও নিজের পণের সাথে (যদি থাকে) ওগুলো মিলিয়ে দেখতে পারেন।
১. ফিট থাকা এবং ওজন কমানোঃ নতুন বছরের প্রতিজ্ঞার মধ্যে মনে হয় সবার উপরে থাকে ওজন কমানোর চেষ্টা। হলিউডের ছবির নায়িকাদের দেখে বিভ্রান্ত হবে না। মার্কিন দেশ বোঝাই মোটা লোকজন। অন্যদের কথা বাদ দেই – আমি নিজেও মাঝেমাঝে আয়নাতে স্বমূর্তি দেখে ঘাবড়ে যাই। মোটা লোকদের অনেকেই বিষণ্ণতা এবং নিসঙ্গতায় ভুগেন এবং এর ফলস্বরূপ ব্যাপক আহার করেন এবং আটকা পড়েন এক দুষ্ট চক্রে। নতুন বছরের শুরুতে জিমনেসিয়ামে দৌড়াদৌড়ি আর পরিমিত আহার তাই বেড়ে যায়। গত দশ বছরের মতো এই বছরেও আমি এই প্রতিজ্ঞা করেছি। সকলের দোয়াপ্রার্থী।
২. ধূমপানত্যাগঃ আমি জীবনে এই একটা প্রতিজ্ঞাই রাখতে পেরেছি। বেশ কয়েকবছর আগে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম সিগারেট ছেড়ে দিব – ঠিকঠাক সেটা করতে পেরেছি। শুধু তাই নয় – নয়া মুসলমান যেমন কড়া মুসলমান হয় এবং সবাইকে হেদায়েত করে, আমিও ঠিক তেমনি মানুষজনকে ধূমপান ত্যাগের জন্য নানান নসিহত করে থাকি। আপনি যদি ধূমপায়ী হন, তবে এই বছরই ধূমপানত্যাগের প্রতিজ্ঞা করে ফেলুন, ২০১৮ সাল নাগাদ হয়তো ফল পাবেন। এই বিষয়ে একটা টিপস দিতে পারি - প্রথমে নিজের পয়সায় সিগারেট কেনা বন্ধ করুন, বন্ধুর থেকে ধার করে খাওয়া শুরু করুন। সিগারেট চেয়ে চেয়ে বন্ধুদের বিরক্তি উৎপাদন করবেন যথেষ্ট পরিমানে। ওদের গালাগাল আপনাকে পূর্ণাঙ্গভাবে ধূমপানত্যাগের জন্য উৎসাহী করবে নিশ্চিতভাবেই।
৩. মদ্যপানত্যাগঃ সঙ্গত কারণেই মার্কিনিদের তালিকাতে মদ্যপানত্যাগের ইচ্ছেটা থাকবে। মদ খেয়ে গাড়ি চালিয়ে ধরা পড়লে যথেষ্ট পরিমাণে ঝামেলাতে পড়ার সম্ভবনা আছে। মদের দাম বেশ কম থাকাতে এই নেশা অনেকেই ছাড়তে পারেন না। আমি যেহেতু মদ্যপান ঠিক মতো ধরতেই পারিনি, এই প্রতিজ্ঞা করার প্রশ্নই ওঠে না। দেশে মদের দাম অনেক, মনে হয় সেই কারণেই ফেন্সিডিলসেবিদের সংখ্যা অনেক। জানি না দেশের কেউ “ডাইল” ছেড়ে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন কিনা।
৪. পরিবারের সাথে সময় কাটানোঃ আমি যথেষ্ট পরিমাণ সময় পরিবারের সাথেই কাটাই। আমাকে দেখতে দেখতে পরিবারের লোকজনের বিরক্ত হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু মার্কিনিদের কথা ভিন্ন। আমাদের দেশের কি অবস্থা?
৫. ঋণমুক্ত হওয়াঃ এটা শপথটা মনে হয় মার্কিন রাষ্ট্রযন্ত্রের করা উচিত। বছরের প্রথম দিনে নয়, প্রতিদিন সকালে একবার করলে আরও ভালো। শাস্ত্রে ঋণ করে ঘি খাওয়ার উপদেশ আছে। কিন্তু ভারতীয় সেই শাস্ত্রের কথা এই দেশের লোক কেন যে এতো অক্ষরে অক্ষরে পালন করে সেটা আজও বুঝে উঠতে পারি না। বাংলাদেশের অনেক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে থাকে, কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষের শপথের “টপ চার্টে” এটা আসবে বলে মনে হয়।
৬. শান্তিতে থাকাঃ স্ট্রেস শব্দটার সাথে আমার পরিচয় এই দেশে এসে। এই চিন-পরিচয়ের পর থেকে আমিও যথাসম্ভব চেষ্টা করি শান্তিতে থাকতে। কাজটা দিনে দিনে কঠিন হয়ে যাচ্ছে যদিও। ক্লাস সিক্সের ফাইন্যালে অংক পরীক্ষা খুব খারাপ হয়েছিল। রেজাল্টের দিন ভয়ে সকালে কিছু খেতে পারি নি। স্কুলে গিয়ে মার্কশিট হাতে নিয়ে দেখি...অঙ্কে পেয়েছি ৩৪, অর্থাৎ পাশমার্ক থেকে একনম্বর বেশি। সেই দিন দুপুরবেলা নিউমার্কেটে অনেকক্ষণ ঘুরেছিলাম। এরপরে “মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি” নামের একটা বই কিনে নিজের ঘরে শুয়ে শুয়ে সারা বিকেল পড়েছিলাম। "শান্তি" শব্দটা শুনলেই আমার সেই নিস্তরঙ্গ দুপুরবেলার স্মৃতি মনে পড়ে। নিজের ঘরে শুয়ে শুয়ে বই পড়া, শীতের নরম রোদে, বাইরে একটু কোলাহল - একদম ভারহীন সময়। এরপরে অনেক কঠিন কঠিন পরীক্ষা এক চেষ্টাতেই পাশ করেছি, তবুও সেই শান্তির স্মৃতি একদম জ্বলজ্বলে হয়ে আছে। বড় হওয়ার পরে সেটাকে ১০০% শান্তি বলে ঘোষণা করেছি।
এই ২০১২ তেও আমি সেই খোঁজই করব, এটাই করে আসছি জীবনভর। শুধু আমি নই, কেন জানি মনে হয় সব্বাই সেটা করেন...
ওঁম শান্তি...জগতের সকল প্রানী সুখী হোক।
মন্তব্য
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনি অংকে ৩৪ পেয়েছেন জেনে আশ্বস্ত হলাম - যাক, আমারো আশা আছে তাহলে (অংকে আমি যাকে বলে "লবডঙ্কা")। লেখাটা ভাল লাগলো, তবে আরেকটু বড় হবে ভেবেছিলাম।
নতুন বছরে ঠিক করেছি - কষে পড়াশোনা করব, একেবারে ছ্যাড়াব্যাড়া করে দিব, আর নয় প্রোক্যাস্টিনেশান - কসম।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ ফাহিম। আশা করছি "ফাডায়ে ফালাবেন"।
দুইমাস পরে লিখলাম, কলম (ডিজিটাল) চলে না রে ভাই...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ফাহিম ভাই, পেছনে দাঁড়ান। এ লাইনে আমি গুরু বিশেষ।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
হা হা হা...ধন্যবাদ হাসিব।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এর উপরে আর কথা হতেই পারেনা। ধ্রুপদি সত্য।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
অনেকগুলোই খাপে খাপে মিলে গেছে
আধুনিক যুগের মানুষদের সমস্যাগুলো কাছাকাছি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এই বছরের লক্ষ্য নিজের আউলা স্বভাবে লাগাম পরানো। চিন্তা করলেই মন খারাপ হয়ে যায়। কেম্নে লক্ষ্যে পৌছাব আল্লা মালুম।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
চেষ্টা চালিয়ে যান...এরপরে তো ২০১৩ আছেই...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
চিন্তা করে দেখলাম এক বছর লক্ষ্য ধরে রাখা আমার কম্মো না। ম্যাক্সিমাম লিমিট এক সপ্তাহ। আগামী সপ্তাহের লক্ষ্য ঠিক করলাম সকাল ৮টার মাঝে অফিসে পৌছানো। বাসা মাত্র ৩ মিনিট দূরে বলে প্রতিদিন সকাল ৮ঃ৩০এ ঘুম ভাঙ্গে অফিস যাওয়ার জন্য।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
নয়া বছরে একটাই প্রতিজ্ঞা করুম ভাবছিলাম, শান্তি। শান্তিমতো ঠাইস্যা ভাত খাওয়ার সুনির্দিষ্ট নিশ্চয়তা চাই।
কিন্তু ৩১ তারিখ রাত থেকেই বাৎসরিক ফ্লু শ্যালকের আক্রমনে জীবনটা ত্যানা ত্যানা হয়ে গেলো। শান্তিমতো ঘরে বাংলা দ'য়ের মতো পড়ে থাকার নিশ্চয়তা পেলেও, ঠাইস্যা ভাত খাওয়ার নিশ্চয়তার প্রতিজ্ঞায় ভাটা পড়েছে। জীবন হালায় (একই স্রোতে) বহমান, অর্থাৎ এই বছরও আগের বছরগুলোর মতোই অনাহারে-অর্ধাহারে যাবে। তবে, ঘি খাওয়া বাড়াইয়া দিবো, এনশাল্লা।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আমেন...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ফিট থাকা - ওজন কমানো সব নিউ ইয়ারেই এক নম্বরে থাকে কিন্তু এখানে মোটা মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়তে দেখি, কমতে তো দেখি না
মোটা লোকের সংখ্যা কমে না দেখেই তো টপচার্টে ওজন কমানো সর্বদাই বিরাজমান। ওজন কমানো বেশ কঠিন কাজ, যত বয়েস বাড়ে আরো কঠিন হয়ে যায় সেটা।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
শান্তিতে কাটুক আপনার ২০১২
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
ধন্যবাদ। আপনারও শান্তিতে কাটুক ২০১২।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
অনেকদিন পর লিখলেন ভাইয়া।
'খুকি' উপাধির ভারে আমি ক্লান্ত!
এ বছর আমি সিরিয়াসলি বড় হয়ে যেতে চাই।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
প্রায় দুইমাস পরে লিখলাম।
তোমার খুকি উপাধি শুনতে শুনতে আমিও ক্লান্ত। তাড়াতাড়ি বড় হতে চেষ্টা কর।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এক্কেবারে ধনুক ভাঙা পণ করেছিলুম...এই বছরে হতচ্ছাড়া পেটটাকে কেটে ৬ টুকরো করবো। তারপর হাসিব ভাইয়ের লিস্টির মত সংশোধনী আনলাম...যাই প্যান্টগুলো একটু বাড়িয়ে আনি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
নতুন বছরে যত্ত যত্ত এক্সাম দেয়া বাকি আসে সব দিয়ে ফেলব, পাশা-ফেল দেখা যাবে। দেশান্তরী হব।
লিখা
গুড লাক।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
নতুন বছরের প্রতিজ্ঞা কয়টা করা উচিত, চিন্তা করতে করতে ৫ দিন চলে গেলো। প্রতিজ্ঞা কবে করবো আর কবে বাস্তবায়ন শুরু করবো আল্লাহ মালুম
আরো ৩৬১ দিন আগে, এই বছরে প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নের জন্য একটি বোনাস দিনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমাদের দেশে নববর্ষের তালিকাটা এরকম হতে পারে :
১. গায়ের চামড়া আরো কয়েক ইঞ্চি মোটা করিতে হইবে, যেন উহা সকল ধরনের উন্নয়েনের জোয়ার আর মূল্যস্ফীতি হইতে রক্ষা করে।
২. বিখাউজ কুদ্দুস এর নিকট হইতে পঞ্চবর্ষীয় পুরোনো টাকা উদ্ধারের সমস্ত প্রচেষ্টা পুন: শুরু করিতে হইবে।
৩. ২৪ঘণ্টায় যেন ২৪বারের অধিক লোডশেডিং না হয় এ ব্যাপারে গণ আন্দোলনের সাথে যোগদান করিতে হইবে।
....
এ বছর অক্ষত থাকিয়া আগামী বছরের জন্য শুধু ১নং এ আরও কয়েক ইঞ্চি যোগ করিতে হইবে!
শুভ নববর্ষ তাসনীম ভাই
love the life you live. live the life you love.
শুভ নববর্ষ আপনাকেও।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমার কোন রেজ্যুলেশান নাই নিউ ইয়ারএ। আগের বছরের মতই হেসে খেলে কাটাইতে পারলেই আমি খুশি :D।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
শুভ কামনা রইল। মনের ইচ্ছা পূর্ণ হোক।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এ যে আমারও শান্তির কথা...
লেখায়
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
ধন্যবাদ। আশাকরি অনেক বই পড়তে পারবে তুমি (পড়ার বই নয়)।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
কামনা করি, এ বছর আপনার পণগুলো পরিপূর্ণতা লাভ করুক।
শুভেচ্ছা রইল।
আপনাকেও শুভেচ্ছা।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
নতুন বছরের একটাই প্রতিজ্ঞা- দেইখা-শুইনা-মাথা ঠাণ্ডা রাইখা ফেসবুক স্ট্যাটাস দেয়া। জেলে যাইতে মন চায় না।
_________________
[খোমাখাতা]
স্ট্যাটাসে সর্বদাই দীর্ঘজীবন কামনা করবেন।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
সবকিছু ঠিক থাকলে এই বছর আমি গলায় দড়ি (বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হব) দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করব, আর এমফিলে ভর্তি হব।
সকলেই দোয়া করিয়েন আর সচলের মডারেটরের মতিবিভ্রম কামনা করব যেন তিনি আমাকে অতিথি থেকে পূর্ণ সচল করেন। এই অতিথি জীবন ভাল লাগে না।
বাহ...গুড লাক...অগ্রিম অভিনন্দন।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
কিছুই বলার নাই। আপনি সব বলে দেন, তাই নিজে বাক্যহারা হয়ে যাই সবসময়। কি জানি ভালোও লাগে আমার একটা চাপা যন্ত্রণা এসে জড়িয়ে ধরে...
অনেক ভালো থাকুন দাদা। জানি ভালো থাকুন বললেই ভালো থাকা যায়না...
ডাকঘর | ছবিঘর
ভালো থাকা কঠিন হলেও চেষ্টা করতে দোষ নেই। আপনিও ভালো থাকুন...নতুন বছর শুভ হোক।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
তাসনীম ভাইয়া,
এরকম একা একা বই পড়ার সময় আবার কবে আসবে?
বৃদ্ধ বয়েসে সুযোগ মিললেও মিলতে পারে
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমার নতুন বছরের কোনো কর্মতালিকা নাই! পুরোনোগুলাই শেষ হয়নাই! আবার নতুন!
পিচ্চিগুলা কেমন আছে ভাই?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
পুরানগুলোই শেষ করা প্রতিজ্ঞা করে ফেল।
পিচ্চিরা আছে ভালোই, দ্রুতই বড় হয়ে যাচ্ছে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনার পোস্ট মানেই আমার জন্য ট্রিট পাবার মত দারুন একটা ব্যাপার।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
বাহ...ধন্যবাদ আপনাকে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমি খুব ঘটা করে সেদিন নিউ ইয়ার রেজোলিউশান লিখে রাখলাম গুগল ডকস-এ। এক নাম্বারেই কি আছে? হা হা, মিলে গেছে, ওজন কমানো। মিলেছে আরো কিছু। আবার লিখতে শুরু করার ইচ্ছাও সেখানে আছে, যে ইচ্ছা গত দুই/তিন বছর ধরে মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়াই, লেখা হয় না। এই দেখুন তবু তো আপানার পোস্টের জন্য একটা মন্তব্য লিখে ফেললাম। ভালো থাকুন অনেক, শান্তিতে থাকুন। হ্যাপী নিউ ইয়ার
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
দেখা যাচ্ছে আপনি শেষ লেখা দিয়েছিলেন দুই বছরের একটু বেশি সময় আগে। নিউ ইয়ার রেজোলিউশানের গুগল ডকটা আপডেট করুন, এই বছর অন্তত ৪টা লেখা দিবেন। মন্তব্য দিয়ে শুরু রানের খাতা উদ্বোধন হলো।
আপনাকেও নতুন বছরের শুভেচ্ছা। সুখে কাটুক দিনগুলো।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ওজন, সিগারেট আর শান্তিতে থাকা।
প্রবাসে আসার পর এমনিতেই ওজন ১২ পাউন্ড কমে গেছে। সিগারেট কমলেও ছাড়তে পারিনি। আর শান্তিতে থাকার চেষ্টায় আছি যদিও বেকার।
...........................
Every Picture Tells a Story
মার্কিন দেশে এসে প্রথম কয়েকমাসে আমারও ওজন কমে গিয়েছিল। পরে পিৎজার দোকানে কাজ করার সুবাদে লুপ্ত ওজন সুদে আসলে ফেরৎ পেয়েছিলাম।
আশা করছি ২০১২ শান্তিতে কাটবে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনার লেখা মানেই ভ্যাপসা দুপুরে হঠাৎ আসা ঠান্ডা হাওয়া---একেবারে মন-প্রাণ জুড়িয়ে দেয়া!
এরচেয়ে চমৎকার ভাবে এই বছরটা শুরু হতে পারত না।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাদের সবার বছরের শুরুটা এত হৃদয়-গ্রাহ্য করে তোলার জন্য।
শুভেচ্ছা নিরন্তর!
অনেক ধন্যবাদ অনিকেত।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ভালো লাগলো লেখাটা।
ধন্যবাদ ধ্রুব।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
২ নাম্বার পয়েন্ট তাসনীম ভাই, ধূমপানত্যাগের ব্যাপারে বন্ধুদের বিরক্তি উৎপাদনের সিস্টেম সব সময়ে কাজে দেয় না। বিশেষ করে সিগারেটদাতা সংস্থা হিসেবে যদি বিখাউজ কিছু মানুষজন থেকে থাকে! আমার ক্ষেত্রে একজাক্টলি সেটাই হইছে। আমি যখন নিজের টাকায় সিগারেট কেনা ছাড়লাম, তখন রিহ্যাবের এক পর্যায়ে আমার বসরে একবার কইলাম, 'অই মাতারি, একটা বিড়ি দে।' তো সে দেখি একাধিক দিয়ে দিলো। আমি বললাম, আমি তো রিহ্যাবে আছি। একটাই যথেষ্ট! বস মাতারী কয়, 'আমি একলা মরুম ক্যান? আমি মরুম আর তুমি বাঁইচা থাকবা, সেইটা ক্যামনে হয় চান্দু!" কয়দিন পর দেখি এয়ারপোর্টের ডিউটি ফ্রি শপ থেকে পুরা এক কার্টুন বিড়ি নিয়ে আসছে, আমার রিহ্যাবকালীন সময়ের জন্য।
আরেকজন, বিড়ি চাইলে সেকেন্ডের মধ্যে বের করে দিতো। তাকে যখন বলতাম, দেখো আমাকে এইভাবে বিড়ি দিয়ে আপ্যায়ন করা কিন্তু উচিৎ না তোমার! সে জবাব দিতো, 'একটা প্রবাদ আছে, বিড়ি কখনোই সঞ্চয়ের জিনিস না!'
তো বলছিলাম, এইরকম বিখাউজ পাবলিকের পাল্লায় পড়লে আপনার ধূমপান ত্যাগ আর হবে না। বরং নবোউদ্যোমে শুরু করা হবে আবার।
এদের অতিরিক্ত হসপিটালিটিতে ত্যাক্ত হয়ে পরে আমি নিজেই বিড়ি কেনা শুরু করছিলাম। কিন্তু, সেখান থেকে একটা বিড়ি নিয়ে বাকি প্যাকেটটা আরেকজনকে উপহার দিয়ে দিতাম। এইটাই কাজ দিছে আমার ক্ষেত্রে। একটা বিড়ির জন্য পুরো একটা প্যাকেট কেনা যে সিস্টেম লস, সেইটা নিজেকে বুঝাইতে পারছিলাম সহজেই।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
গঞ্জিকা সেবন করে দেখতে পারো। ওতে নাকি ক্ষতি কম হয়।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এইখান থেকে দুইটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাইরায় আসছে -
১। রঙিন ভাইয়ের চোরাচালানকারি কর্মযজ্ঞের হাই কমান্ড আছে।
২। সেই হাই কমান্ড একজন মহিলা।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
তার মানে, স্মোকিং ছেড়ে দিতে পেরেছেন আপনি ?! বাহ ! সেইটা নিয়ে একটা লেখা হয়ে যাক না। [ নাকি আছে অলরেডি? কোন চিকন চিপা দিয়ে আমার চোখ এড়িয়ে গেছে ? ]
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
হুম। বছর পাঁচেক আগে ছেড়েছি। আমার দ্বিতীয় কন্যার জন্মের সময়ে। আরও অনেকদিন বাঁচার ইচ্ছায়। আশা আছে মেয়েরা বড় হবে, আমি বৃদ্ধ, ওদের নিয়মিত বিরক্ত করব, প্রতিটি দুষ্টামির শোধ তুলব।
দুঃখের বিষয় সিগারেট ছাড়ার পর থেকে শরীরের অধঃপতন শুরু হয়েছে। যখন নিয়মিত ধূমপান, মদ্যপানসহ শরীরের নানান অযত্ন করতাম তখন শরীর ছিল একদম ফিট। স্বাস্থ্যরক্ষার বিধিতে অনেক তথ্য গোপন রাখা হয়।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
শান্তি শান্তি ....
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
কোন রেজুলেশন ছিলো না... আমার মনে হয় নিজের জীবনের হিসাবনিকাশ খুব সহজ। কোন কিছু করতে ইচ্ছা করলেই করা যায়, আর তা করতে না পারলে আমার আত্মনিয়ন্ত্রণে ঘাপলা আছে অথবা আমি তা করতে চাই না। কিন্তু দেখলাম একটা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবার দরকার আছে নিজের কাছেই, আমার কর্ম আর ব্যক্তিজীবনের ফ্রাস্ট্রেশনের শোধ বাবা-মা-এর উপরে তোলা বন্ধ করার দরকার আছে জরুরি ভিত্তিতে। তো এবার, ঐটাই।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
নতুন মন্তব্য করুন