জন্মভূমি

ঝমঝম বৃষ্টির বর্ষাকাল দেখিনা প্রায় পাঁচ বছর।

"এই আঠারো বছরে মার্কিনি হতে পারিনি, সেই চেষ্টাও কোনদিন করেছি বলে মনে হয় না। আর সেই সুযোগে আমার নিজের দেশটাও যেন হাফপ্যান্টের ছেঁড়া পকেটে রাখা মার্বেলের মতো গলে বের হয়ে গেল। দেশটা মাঝে মাঝে আমার দাড়িওয়ালা মধ্যবয়েসী বন্ধুদের মতো হঠাৎ হঠাৎ উদয় হয়। নিজের শহরটাও একদম অচেনা হয়ে গেছে।" -

এক জীবনে কি জন্মভূমি অতিক্রম করা যায়?

মাসুদ সজীব

আঠারো বছর!
ফিরবেন নাকি এবার?

মার্কিনি হতে না পারেন, বিদেশি হয়ে গেছেন নিশ্চিত। দ্বিতীয় প্রজন্ম সেট হয়ে গেছে, কখনো যদি ফিরতে চান ভগ্নাংশ হয়ে ফিরতে হবে।

নিজের ভবিষ্যত আপনার কলমে দেখতে পাই, কোথা থেকে যেন কিছু দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে..................

দেশে ফিরে আসেন তাসনীম ভাই। লেখা বরাবরের মতই অত্যুত্তোম।; কেমন মেঘ জমে যায় হৃদয়ের আকাশে।

গোঁসাইবাবু

দেশে থাকলেও দেশটা ফুটো পকেটে মার্বেলের মতো বের হয়ে যেত। আমি দেশে গিয়ে দেশ চিনি না।

জীবন বড়ই অদ্ভুত! ছেঁড়া শেকড়গুলোই বেশি কষ্টের

মন ছুঁয়ে গেল। ফিরে আসুন, যদি উপায় থাকে।

আপনার মতো মায়া নিয়ে স্মৃতিকথা আর কেউ লিখতে পারে না। আমি যদিও নিজে কখনো দেশ ছেড়ে যাই নাই, আপনার লেখাটা পড়ে আমার বুকটা ভারী হয়ে যাচ্ছিল।

.........................

প্রশ্ন

দেশের কথা মনে করিয়ে দিলেন এই সকাল বেলায় তাসনীম ভাই, আপনার লেখা সবসময় মন স্পর্শ করে যায়।

তবে হাসিব ভাইয়ের কথা ঠিক, দেশে গিয়ে আমি আমার ছেড়ে আসা সেই দেশকে খুঁজে বেড়াই।

আমি যাচ্ছি মাসখানে বাদে! আপনার আয়নায় দেখে নিই নিজের ভবিষ্যত!!!

আপনি আঠার বছরে পারলেন না, আমি চার বছরে বুঝে গেছি পারব না, তাই দেশ হারিয়ে যাবার আগেই ফিরে যাচ্ছি

ধোপার গাধা, না ঘরকা না ঘাটকা। আর বইয়ের কথা বলছেন, হা.. বউ হাতছাড়া হয়ে গেলে সে আবার কখনও ফিরে আসতে পারে কিন্তু একখানা ভাল দুষ্প্রাপ্য বই একবার হাতছাড়া হয়ে গেলে তা আর কখনও ফেরত পাওয়া যায়না।
লেখাটা বড্ড ভাল লাগলো।

কবিতা দিয়ে তো মোহময় করে ফেলছিলেন.......চলত না হয় আরেকটু রাস্তা

নির্বাসিত প্রবাসজীবনের সাত মাস কাটল সবে!
আমি গতি চাই না, দেশ হারাতে চাই না...

এমন বিষাদী পিছুটান!

আপনারা বিদেশে আছেন - দেশে ফিরতে চান। অন্তত স্মৃতিতে তাকে খুঁজে পান, সেখানে ফিরে যান। আমি দেশেই আছি, অথচ কোথাও তাকে খুঁজে পাইনা। এমনকি স্মৃতিতেও না - বর্তমান তাকে বহু আগেই ওভাররাইট করে দিয়েছে। প্রতিনিয়ত দিচ্ছে। আমি কোন দেশে ফিরব?

মন খারাপ করিয়ে দিলেন যে ! মাত্র আট মাসেই কষ্টটা বুঝতে পারছি, আর কত দিন পাড়ি দেব কে জানে !

রাজর্ষি

কিছু বুঝে উঠার আগেই পাঁচ বছর জীবন থেকে নাই হয়ে গেলো, প্রায়ই ফিরে যাবার প্রস্তুতি নিয়ে ভাবি। আবার এটাও বুঝি, প্রস্তুতি নেয়া কখনোই শেষ হয়না। ফিরতে হলে হুট করেই একদিন ফিরতে হবে।

হৃদয় ছুয়ে যাওয়া নরম আর হাহাকার পুর্ন লেখা। ভালো লাগলো। দেশে আসার দরকার নেই। এই দেশে এখন শুধু বেঁচে থাকাই সবচেয়ে বড় বিস্ময়। ভালো থাকবেন।

এই লেখা পড়ে বুকের ভিতর হু হু করে ভাইয়া। আমার সাত বছর হয়ে গেলো ভাইয়া, হয়তো একদিন আপনার মত আমি ও অমন করে লিখবো।

মন কেমন করে এমন লেখা পড়লে! লোপামুদ্রার গান্টা আপনার জন্য(প্রথমে হিন্দি শুনে ভড়কে যাবেন না ভাইয়া)

এদেশ টাকা দিয়েছে, সম্মান দিয়েছে, দিয়েছে পায়ের তলায় শক্ত মাটির অস্তিত্ব কিন্তু এর জন্য মূল্য দিয়েছি অনেক। অনেক কাটিয়েছি বিরহের সময় আরও অনেক কাটাতে হবে। মাঝে মাঝে হয়ত প্রবাসের চিঠির মত স্বদেশ তোমার দুএকটা খবর নিয়ে আলোচনায় বসব। তবু অধিকাংশ সময়ই তুমি আমার কাছে এক না পাওয়ার ব্যাথা, যেন সে আছে তবু বহু দূরে, যেন তাকে ইচ্ছে হলেই ছোঁয়া যায় না। মাঝে মাঝে রাত জেগে তোমার কথা ভাবি আমি। ভাবি একদিন ফিরে যাব। একদিন আবার সেই শহরে সেই রাস্তায় তোমার সাথে মিলব আমি। একদিন আবারও ঝুম বৃষ্টিতে ভিজব আমি মায়ের বকুনি উপেক্ষা করে। একদিন আবার কাল বৈশাখী ঝরে দাদু বাড়ীতে গিয়ে আম কুড়াব। একদিন আবার পদ্মার পাড়ে ইলিশ খেতে যাব। পালা পার্বণে শাড়ি পরে, হাতে চুরি, কপালে টিপ দিয়ে উৎসব করব। একদিন আবার বাঙ্গালী হব। কিন্তু তাহলে কি এখন আমি বাঙ্গালী নই? অবশ্যই আমি বাঙ্গালী। হয়ত এত নানা রঙের মানুষের ভিড়ে নিজেকে খুঁজে পেতে সময় লাগে তবু আমার অস্তিত্বের ভেতর থেকে এখনও আমি বাঙ্গালী আর আজীবন বাঙ্গালীই থাকব।
আপনার লেখা পড়ে এই হচ্ছে আমার মনের অবস্থা।

ফাহিমা দিলশাদ

চলে আসেন ভাইয়া এক বিকেলে বাক্স পোটরা গুছিয়ে।।।।।।এ দেশের এত এত রাজনৈতিক জ্বালাযন্ত্রণা সত্ত্বেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। মাথা পিছু আয় দেখেন।