টিভির নিউজে অথবা পত্রিকাতে খবর পড়লে পৃথিবীর যেই চিত্রটা দেখতে পাই সেটাতে ভালোবাসার কণামাত্র থাকে না। পৃথিবী জুড়ে ক্রোধ এবং ঘৃণার বাম্পার ফলন হচ্ছে। ঘৃণার চাষাবাদ প্রায় সব জায়গাতেই হয় এবং আগাছার মতো সে বেড়েই চলছে। ঘৃণা যদি আগাছা হয় তাহলে ভালোবাসা নিশ্চিতভাবে খুব পরিপাটি বাগান - যারা গাছপালা লাগান, তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন যে ফুল বাঁচানো পরিশ্রমের কাজ এবং আগাছা উৎপাটন আরো কঠিন কাজ।
"ডিসপ্লেসমেন্ট অফ অ্যাঙ্গার" বলে একটা ব্যাপার আছে। আমার দক্ষিণ ভারতীয় এক সহকর্মী বন্ধু ছিল। নাম ছিল রাহুল। রাহুলের অফিস রুম আমার অফিসের খুব কাছেই ছিল, নানান আলাপ হতো ওর সাথে। ওর কাছে ওর এক প্রতিবেশী বাঙালি ভদ্রলোকের গল্প শুনতাম, কলকাতার লোক। রাহুল আমাকে অনেকবার বলেছে সে আমাকে বাঙালি দাদার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে। রাহুলের বাচ্চার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে সেই সুযোগ এসে গেল।
জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দেখা হওয়ার পরে ভদ্রলোক একটা বিরক্ত "লুক" দিলেন, ওর দেহের ভাষাতে অপছন্দ ফুট উঠছিল, আমার সাথে কথাও হলো ইংরেজিতে। জানলাম দেশ বিভাগের আগে উনারা পূর্ববঙ্গেই থাকতেন। ওনারা পূর্ব পুরুষেররা দেশ বিভাগের সময় পশ্চিমবঙ্গে চলে গিয়েছেন। সম্ভবত সেই ক্রোধ পরিবারে রয়ে গেছে, বংশানুক্রমিকভাবে উনিও হয়ত পেয়েছেন। উনারা পরিবারের দেশত্যাগের পেছনে আমার কোন হাত না থাকলেও আমারই কোন দূরবর্তী জাতভাই ষাট বছর আগে যেই ইতরামি করে ওনাদের বিতাড়িত করেছিল, সেই ক্রোধের ধারাবাহিকতার কিছু অংশ আমাকে দেখে উনার হয়ত চাড়া দিয়ে উঠেছে। কিছু না বললেও আমি বুঝতে পারলাম যে উনি আমাকে পছন্দ করছেন না। রাহুলও বুঝতে পেরেছিল এবং বিব্রত হয়েছিল।
টুকটাক আলাপের পরে আর কথা বাড়াইনি। উনারা সাথে আমার কোন বিরোধ নেই, আমরা বর্তমানে একই দেশের লোক বলা যায়। কিন্তু পৃথিবীতের যেই ঘৃণার চাষাবাদ চলে তার ফসল সোমালিয়া থেকে আমেরিকা সর্বত্রই পৌঁছে যায়, একটু ভিন্ন ভিন্ন মোড়কে আরকি। বেকুব হলেও এটা আমি জানি, ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে জন্ম নেওয়াটাই মানুষের সবচেয়ে বড় অপরাধ।
ঘৃণার চাষাবাদের মতো কি ভালোবাসার চাষবাস করা যায়? এর বিপরীত চিত্রও দেখেছি। ১৯৯৬ সালের জানুয়ারি মাসের এক বিকেলে কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের এক বইয়ের দোকানদার যখন জানতে পারলেন আমি ঢাকার, তিনি আপ্লুত হয়ে গেলেন। তাঁর পরিবারও পূর্ববঙ্গের, বরিশাল থেকে গিয়েছিলেন। বুঝতে পারি যে নিজ বাসভূম মানুষ স্বেচ্ছাতে ছেড়ে যায় না, কিন্তু সেই পড়ন্ত বিকেলে বইয়ের গন্ধওয়ালা দোকানে আমিই ছিলাম তাঁর ফেলে আসা জন্মভূমির স্মৃতিচিহ্ন। আমার সাথে কথা বলতে বলতে তিনি দেশ-কালের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন শৈশবে, একদম তাঁর নিজের দেশে।
সত্যি কথা বলতে, আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাতে ভালোর ঝুড়িটাই ভারী। আমার স্ত্রীর গানের শিক্ষিকার সাথে আলাপে জানতে পেরেছিলাম ওনাদের আদি নিবাস ছিল আমাদের গ্রামের একদম কয়েক মাইলের মধ্যে। উনি বলেছিলেন কলকাতাতে বিয়ের কার্ডে পূর্ববঙ্গের লোকেরা নাকি এখনো লিখে...কুমিল্লা জেলার ওমুক পরিবারের, অধুনা কলকাতা নিবাসী তমুকের সাথে...পঞ্চাশ বছর পরেও সেই "দেশ" ধরে টান দেয় মানুষ। মানুষের ভেতর থেকে শৈশবকে বের করা যায় না, আর সেই শৈশবের ভেতরেই রয়ে যায় একটুখানি "দেশ"।
যেটা আগেও বলেছি - ভালোবাসা আর ঘৃণার মধ্যে - ঘৃণা অনেক শক্তিশালী, এর আওয়াজ শোনা যায় অনেক দূর থেকে। দেশের সীমান্ত সে অনায়াসে পাড়ি দিতে পারে। এর বিপরীতে ভালোবাসা স্কুলের ভালো ছাত্রের মতো নিরীহ, ব্যক্তি সীমানার বাইরে এর আওয়াজ মোটামুটি মিনমিনে। বউয়ের একচিলতে বাগানে মোটাতাজা আগাছা উপড়ানোর সময় আমি আধমরা গোলাপ গাছটার দিকে তাকাই মাঝে মাঝে - নানান যত্ন করার পরেও তাঁর অবস্থা টাইট। অথচ আগাছাগুলো কি দুর্দান্ত সবুজ, সতেজ স্বাস্থ্য।
দুইদিন আগে নর্থ ক্যারোলিনাতে তিন তরুণ মুসলমানের মৃত্যু হলো। পত্রিকা পড়ে যেটুকু বুঝেছি, ছেলে-মেয়েগুলো ছিল একদম আদর্শ মানুষ। একটা দেশ ঠিক যেই রকম মানুষ দিয়ে গড়ে উঠে। কিন্তু কোথায় কোন উন্মাদ কি করেছে, সেটার দায় হয়তো এদেরকে দিতে হয়েছে। যদিও বিষয়টা প্রমাণিত নয়, কিন্তু বুঝতে পারি যে আগাছার মতো দ্রুত বেড়ে ওঠা ঘৃণার কিছু নিশ্চয় ভূমিকা আছে। যদিও দেশে দেশে বেড়ে ওঠা মুসলমান মৌলবাদীদের হাতে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে মুসলমানরাই, কিন্তু সারা পৃথিবী জুড়ে এদের কর্মকান্ডের দামটাও দিতে হবে মুসলমানদেরকেই। ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করলে এটা পুরোই "নট ফেয়ার"...কিন্তু পৃথিবীটাই বোধকরি "ফেয়ার" নয়।
ঘৃণার আগুন বোমা মেরে নিভানো যায় না। আমি তাই ভালোবাসা দিবসে পক্ষে। নিজেকে ভালোবাসুন, নিজের পরিবারকে ভালোবাসুন, নিজের স্বামী বা স্ত্রীকে ভালোবাসুন, নিজের সন্তানদের ভালোবাসুন, সেই সাথে সামান্য কিছু ভালোবাসা রেখে দিন অন্যদের জন্য। এই সামান্য ভালোবাসাটাই অন্যকে দিলে পৃথিবীটা অসামান্য হয়ে উঠতে পারে। গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায় যে ভালোবাসাতে টান পড়ার সম্ভবনা নেই। ঘৃণার সাপ্লাই যেমন অফুরন্ত, ভালোবাসটাও সেই রকম।
ঘৃণার চাষাবাদ রুখে দিতে পারে একমাত্র ভালোবাসা। এর শক্তিটাও কম নয়, একটা সুযোগ দিয়েই দেখুন না।
সবাইকে ভ্যালেন্টাইন দিবসের শুভেচ্ছা।
মন্তব্য
"বিয়ের কার্ডে পূর্ববঙ্গের লোকেরা নাকি এখনো লিখে...কুমিল্লা জেলার ওমুক পরিবারের, অধুনা কলকাতা নিবাসী তমুকের সাথে...পঞ্চাশ বছর পরেও সেই "দেশ" ধরে টান দেয় মানুষ। মানুষের ভেতর থেকে শৈশবকে বের করা যায় না, আর সেই শৈশবের ভেতরেই রয়ে যায় একটুখানি "দেশ"।"-------(১)
"দেশে দেশে বেড়ে ওঠা মুসলমান মৌলবাদীদের হাতে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে মুসলমানরাই, কিন্তু সারা পৃথিবী জুড়ে এদের কর্মকান্ডের দামটাও দিতে হবে মুসলমানদেরকেই। ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করলে এটা পুরোই "নট ফেয়ার"...কিন্তু পৃথিবীটাই বোধকরি "ফেয়ার" নয়।"-------(২)
এই দুইটা বিবৃতি আমার ভেতরটাকে দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছে। শ্বাস ফেলতেও কষ্ট হচ্ছে।
যাক বলতে চাই ধর্মের নাম নিয়ে আর কতেদিন মানুষকে বাচতে হবে? আর কতো?হাইস্কুলে পড়ি তখন , একদিন এক ক্লাসমেট জিজ্ঞাসা করলো, তুমি কোন ধর্মের ? আমি বললাম ,আমি মানুষ ও আমার ধর্মটা হিন্দু।সে অকস্মাত বলে উঠলো , তাহলে তো তুমি বিধর্মী। আজ পর্যন্ত অনেক বার আমি বিধর্মী এটা শুনতে হয়েছে কিন্তু কারনটা বের করতে চাইনি। থাক না, বলুক, কি দরকার বের করার । চাপা কষ্ট ভেতরেই চাপা থাকুক।
তারপরেও ভালবাসা দিয়ে জয় করার চেষ্টা চালাতে হবে আমাদের।
---------
রাধাকান্ত
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এত এত ডে, এত এত আনুষ্ঠানিকতা, এত এত খরচাপাতির আয়োজন! ভালো লাগে না। সাবধানে পাশ কাটিয়ে যাই। কখনো বা বিরক্তি নিয়েই। ১৪ই ফেব্রুয়ারি আমাদের স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস। এ দিনের ঐতিহাসিক গুরুত্বকে ভ্যালেন্টাইনস ডে দিয়ে প্রতিস্থাপিত করার চেষ্টার ধিক্কার জানাই বরাবরই। তাই বলে ভালোবাসার বিরোধী নই। আমার ভালোবাসা প্রতিদিনের। ঘটা করে তার উদযাপন আমার কাছে আবশ্যিক নয়। সবার ভাবনা এমনটা নাও হতে পারে। মরার ও মারার এই পৃথিবীতে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসার বোধ হয় খুব খরা। সচেতনভাবে ভালোবাসার চাষাবাদের প্রয়োজন আছে হয়ত। মানুষ ভালোবাসতে শিখুক। ভালোবেসে বাঁচতে শিখুক। যার যেভাবে ইচ্ছে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
মানুষ ভালোবাসতে শিখুক।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
বাজারী দুনিয়ায় পালন করা ভালোবাসা দিবস যদি ১৪ই ফেব্রুয়ারি না হয়ে ২১শে ফেব্রুয়ারি হতো তাহলেও কি বাংলাদেশের মানুষ এমন করে ভালোবাসা দিবস পালন করতো? চারপাশে এতো বিস্মৃতপরায়ণ, জ্ঞানপাপীদের দেখি যে আমার মনে হয় তখনো এরা ভালোবাসা দিবসই পালন করতো। যারা বলবেন, 'না, না! তা কী করে হয়'! তাদেরকে বলবো, আচ্ছা বলুন তো, ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে কী ২১-২২শে ফেব্রুয়ারির চেয়ে কম মানুষ জীবন দিয়েছিলেন? ঐ দিনের আন্দোলনের উদ্দেশ্যটা কি খুব খেলো কিছু ছিল? যদি তা না হয়ে থাকে, তাহলে যে কাজ ২১শে ফেব্রুয়ারিতে করার কথা ভাবতেও পারেন না সেই কাজ ১৪ই ফেব্রুয়ারি কী করে করেন?
বাংলাদেশের যারা সবার জন্য ভালোবাসা জানাতে চান তারা বছরের যে কোন দিনই জানাতে পারেন; কারণ, ভালোবাসা তো প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তের ব্যাপার। এর জন্য ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে বাতিলের খাতায় পাঠানোর দরকার নেই।
বাজারী ভালোবাসা দিবসের গুষ্টি কিলাই। বিনম্র শ্রদ্ধাসহ ভালোবাসা জানিয়ে যাই ১৪ই ফেব্রুয়ারির বীরদের, যারা আমাদের জন্য জীবন দিয়েছিলেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১৯৮৩ সালের ১৪ ই ফেব্রুয়ারির ঘটনা আমার মনে আছে। আমি স্কুলে ক্লাস এইটে পড়তাম। আম্মা কাজ করতেন শিক্ষাভবনে। ওইদিনের ছাত্র হত্যার ঘটনা অনেকেই স্বচক্ষে দেখেছেন। ওই দিন বিকেলে বাসায় ফিরে খুব বিচলিত হয়ে গিয়েছিলেন, এইরকম নির্মম দৃশ্য থেকে শান্ত থাকা সম্ভব না।
স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রথম এবং স্বতঃস্ফুর্ত প্রতিবাদ ছিল সেই দিন।
কাকতালীয়ভাবে এটা ভ্যালেন্টাইনস ডে, সেইদিনও তা-ই ছিল। এইরকম অনেক দিবস আছে, বস দিবস, বাথরুম দিবস, বন্ধু দিবস, ভূত দিবস। কিন্তু ভালোবাসা দিবস সবচেয়ে ব্যবসা সফল। সম্ভবত এটা মানুষের মৌলিক অনুভূতির একটা বলেই এটার গ্রহনযোগ্যতা সবচেয়ে বেশি। মা-দিবস আর বাবা দিবসের বেলাতেও একই কথা খাটে।
ব্যবসার এলিমেন্ট বাদ দিলেও আমি মনে করি এই দিবসটার দরকার আছে। স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস আর ভালোবাসা দিবস একসঙ্গে পালন করতে বাধা কোথায়?
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের রাত থেকে শুরু করে ১ঁঁ৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, বাংলাদেশের ভূমির প্রতিটি ইঞ্চিতে সেই কষ্টগুলো লেখা আছে। অথচ আমরা প্রতিবছরই এই দিনগুলোতে খাচ্ছি, দাচ্ছি, ঘুমাচ্ছি, আড্ডা দিচ্ছি, বিয়ে করছি, জন্মদিন করছি, উৎসব করছি, খিস্তি আউড়াচ্ছি, রমণ করছি। জীবনের যা যা অনুষঙ্গ আছে সবই পালন করছি।
শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা শোকের মতো ভারী বস্তু না, আমরা একই সঙ্গে শোকের ভার বইতে পারি আর ভালোবাসা শক্তিটাও অর্জন করতে পারি।
বাচ্চা-কাচ্চা বড় করতে গিয়ে আমি বুঝতে পারি, ভালোবাসাটাও শিখতে হয়। ঘৃণাটা শেখার হাজার পথ আছে, ভীতি শেখার হাজারটা পথ আছে, ভালোবাসা শেখানোর পথটা সংকীর্ণ।
বাংলাদেশে ভ্যালেন্টাইন দিবস প্রেমিক-প্রেমিকা নির্ভর, এইখানে সেই রকম নয়। এটা সব ধরনের ভালোবাসাকেই ধারণ করে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ভালোবাসার প্রয়োজনীয়তা যেমন আমি অস্বীকার করি নাই, তেমন ভালোবাসা দিবস পালনকেও আমি অস্বীকার করি নাই। তবে ১৪ই ফেব্রুয়ারি দিনটাতে বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবস পালনে আমার আপত্তি আছে, সেটাই জানিয়েছি। ভালোবাসা দিবস পালন করতে গেলে বাংলাদেশে গোলাপ রেহমানদের কায়দায়ই পালিত হবে। বাজারী শক্তিরা ভিন্ন কিছু করতে দেবে না। ভিন্ন কিছু করলেও ২১শে ফেব্রুয়ারি বা ১৫ই অগাস্ট বা ১৪ই ডিসেম্বরে এমন অন্য কোন উৎসব পালন করার চিন্তা যেমন বিবমিষাকর তেমন ১৪ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবস পালন করাটাও আমার কাছে বিবমিষাকর বলে মনে হয়। এটাকে যদি আমার সীমাবদ্ধতা বলেন তাহলে আমি এই সীমাবদ্ধতা নিয়েই থাকতে চাই। ১৪'র বদলে ১৩ই ফেব্রুয়ারি (১লা ফাল্গুন) ভালোবাসা দিবস পালন করলে কোন্ মহাভারতটা অশুদ্ধ হয়ে যাবে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১৪ই ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস - ১৯৯৩ সালের আগে বাংলাদেশের মানুষ/মিডিয়া এই তথ্য ব্যাপকভাবে জানত বলে মনে হয় না। তখন পর্যন্ত কিন্ত ১৪ই ফেব্রুয়ারি আসলে সবাই মূলতঃ এরশাদ সরকার এবং ছাত্রহত্যার কথাই স্মরণ করতো।
Emran
ধন্যবাদ।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
মুল লেখা যতখানি,আপনার ৪ নাম্বারে করা কমেন্ট ঠিক ততটাই মুগ্ধ করেছে তাসনীম ভাই!
ধন্যবাদ।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
অসম্ভব ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে। চারপাশে আজকাল ঘৃণার আবাদই বেশি। সবখানে গিজগিজ করছে ঘৃণায় ভরা মানুষ। উপচে পড়ছে তাদের ঘৃণা... অসহিষ্ণুতা, অসহনশীলতা। এর মাঝে একাধটু ভালোবাসার পরশ পেলে সেটা দাগ কেটে যায় মনে। আপনার লেখাটা সেরকমই দাগ কাটলো।
ধন্যবাদ।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ঘৃণার আগুন বোমা মেরে নিভানো যায় না। আমি তাই ভালোবাসা দিবসে পক্ষে। নিজেকে ভালোবাসুন, নিজের পরিবারকে ভালোবাসুন, নিজের স্বামী বা স্ত্রীকে ভালোবাসুন, নিজের সন্তানদের ভালোবাসুন, সেই সাথে সামান্য কিছু ভালোবাসা রেখে দিন অন্যদের জন্য। এই সামান্য ভালোবাসাটাই অন্যকে দিলে পৃথিবীটা অসামান্য হয়ে উঠতে পারে। গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায় যে ভালোবাসাতে টান পড়ার সম্ভবনা নেই। ঘৃণার সাপ্লাই যেমন অফুরন্ত, ভালোবাসটাও সেই রকম।
ভালো লাগলো আপনার লেখাটি ।
ভালোবাসা আর ঘৃণার মধ্যে যে দ্বন্দ্ব, হয়তো সেটা সৃষ্টির শুরু থেকেই হয়ে আসছে । এই বিরোধে আসলে কে জয়ী হয়েছে বা কে জয়ী হবে তাতো বলা যায় না । আমরা যারা ভালোবাসার পক্ষে তাদের শুধু চেষ্টা করে যেতে হবে । নিঃসন্দেহে ভালোবাসাই জয়ী হবে ।
মহাবিশ্বের পরিব্রাজক
কে জয়ী হবে মাঝে মাঝে মনে সেটা আমি জানি
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারীর শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই বলছি, [img]DSCN0367 by Kabir Ahmed 26, on Flickr[/img]
ধন্যবাদ।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এতদিন সবটুকু ইতিহাস না জেনে খুব ঘটা করেই প্রতি বছরে শুভেচ্ছা জানিয়েছি একে ওকে।
কিন্তু নজরুল ভাইয়েরএই পোস্টটা পড়ে
ঠিক করেছি আর জীবনেও এই দিনে ভালুবাসা নিয়ে মাতামাতি করবো না।
ঘৃণার চাষবাস আজীবনই থেকে যাবে একটা দেশের প্রতি। দেশটার নাম পাকিস্তান।
প্রতিদিনের জন্যই ভালোবাসার প্রতি ভালোবাসা'র চর্চা জারি থাকুক বরং...
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমি ভালবাসা দিবসের পক্ষে বলতে চাই ৷ঘৃণা আমাদের মনে আজীবন থাকবে ৷শুধু এক দিন নয়,যাদের ঘৃণা করা দরকার,উঠতে - বসতে কোন না কোন কারণে ঘৃণা কি তাদের আমরা জানাই না? কিন্তু পরিবারের প্রতি,বন্ধুদের প্রতি আমাদের যে ভালবাসা - তা আমরা তাদের ক'বার জানাই! তাই আমার মনে হয়,এই ব্যস্ত জীবনে প্রিয় মানুষগুলোর জন্য একটি দিন তো রাখা যেতেই পারে |হোক না সেটা ভিনদেশি সংস্কৃতি | যদি ভাল লাগে তো তাই না হয় গ্রহণ করলাম !
ধন্যবাদ।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হ
তারচেয়ে, আয়নাদি'র কথা ধার করে বলিঃ
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ধন্যবাদ।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
পৃথিবীটাই বোধকরি "ফেয়ার" নয়।
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
এইটা আমি এখন বিশ্বাস করি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ঝরঝরে লেখা, ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ভালোবাসার জন্য সহনশীল হওয়া খুব জরুরী। মানুষের ধৈর্যশক্তি মনে হচ্ছে দিন দিন কমে যাচ্ছে!
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
সত্য কথা। আমারও সেই বিশ্বাস। আমরা ক্রমেই অধিকতর খারাপ একটা পৃথিবী পাচ্ছি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
টেস্ট মন্তব্য।
দিবসের মোড়কে, জীবনের মোড়কে তবু ভালোবাসি।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
আপনার লেখায় বহুবর্ণা গোলাপের সমাহার। কখনো টকটকে লাল, কখনো শুভ্র শাদা।
একটি বিবর্ণ গোলাপ মরে যেতে যেতে যতটুকু সৌরভ ছড়াতে পারে, রাশি রাশি পুষ্ট আগাছার বুকে যত ঘন সবুজ বাসা বাঁধুক না কেন, সেসব জঞ্জালের কি সেই সাধ্য থাকে? ভালোবাসা পুঁজি করে বাঁচার ছন্দে চলতে শেখার মধ্যেই জীবনের সারাৎসার খুঁজে পাই। হোক না কেন কাগজ দিয়ে তৈরি ফুল, হোক না কেন দিন-ক্ষণ ঠিক করে প্রদীপ জ্বালানো, তবু যেন ভালোবাসা ভোরের ফিনিক ফোটা আলোর মত আমাদের পৃথিবীকে আলোকিত করে। তবে ভয় হয় বড়বেশি, অনাগত দিনের কানে কানে অস্ফুটে বলি,
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
নতুন মন্তব্য করুন