এ্যাই, খোলা চিঠি সুন্দরের কাছে পাচ্ছিনা, তুমি দেখেছো ? না, কই না কই রাখো তুমি- ছেলে ,ভাতিজা আছে সেটা তোমার খেয়াল থাকে না। বকবক করছি আর খুঁজছি। পাওয়া গেল একসময় ছেলের বইয়ের মাঝখানে । আনিসুল হক এর কবিতা ওর খুব পছন্দ। -তুই কি আমার দুঃখ হ’বি ? / এই আমি এক উড়নচন্ডী আউলা বাউল / রুক্ষ চুলে পথের ধুলো / চোখের নিচে কালো ছায়া / সেইখানে তুই রাত-বিরেতে স্পর্শ দিবি / তুই কি আমার দুঃখ হ’বি ? অথবা আমার কবিতারা আসলে কিছু নয়, তোমাকে চাইবার অস্ত্র ... এখনও ওর আবৃত্তি শুনি তন্ময় হয়ে।
খুব একটা চ্যুজি নই, কিন্তু বিয়ের খাটটা আমি নিজের পছন্দে বানিয়েছি। মাথার পাশটায় একটা খোলা বক্সের মত, বিশেষত্ব এই-ই। হাতের কাছে পছন্দের কিছু বই থাকবে, শুয়ে বসে সেগুলোয় চোখ বুলাবো এটা আমার শখ। অপু খুব কবিতা পাগল। রাত বিরেতে ওর আবৃত্তি শোনারও লোভ ছিল । ল্যাম্পের আলোয় বিছানায় শোয়া আধশোয়া আমরা দুজন, ও আবৃত্তি করবে মুগ্ধ হয়ে শুনবো- এমন একটা স্বপ্ন ও ছিলো মনের গোপন কোণে।
বাবাই হওয়ার আগে পর্যন্ত কাটছিলোও এমন। বাচ্চা জন্মের পর, প্রথম দুইমাস কাঁথা কাপড় লাগে বেশি। ঘন ঘন চেঞ্জ করানো লাগে তখন। হাতের কাছে জিনিসপত্রের প্রয়োজনীয়তা তখন বেশি অনূভূত হয়। প্রথম দিকে বালিশের কাছে কিছু জামা, কাঁথা কাপড় রাখতাম, দেখা গেলো ওগুলোয়ও কুলোয়না। বার বার উঠে ওর প্লাস্টিকের মিনি আলমিরা থেকে কাপড় বের করা একটা ঝামেলা, তাছাড়া বিছানাও কেমন এলোমেলো মনে হয় এত কাপড়ে। চোখ পড়ে মাথার কাছে রাখা খোলা বক্সে। প্রথমে কয়েকটা বই সরিয়ে অর্ধেক বই অর্ধেক কাপড় এভাবে রাখলাম-কিছুদিন পরে দেখি পুরো বই রাখার জায়গাটাই বাবাইর দখলে। আমিও কেমন সরে পড়লাম বইগলোকে বুকশেলফে রেখে।
বইয়ের জায়গা দখলের পর কাঁথা কাপড়ও স্বস্তিতে ছিলনা। চার মাস বয়স থেকেই বাবাইকে বাড়তি খাবার দেওয়া লাগলো। আজকালকার বাচ্চার খাবার কি আর এমনি এমনি রোঁচে! নানা ধরনের খেলনা বদলায়ে বদলায়ে দেওয়া লাগে, তবেই বাবু ঢোক গিলেন, নাহয় মুখে নিয়েই বসে থাকেন। খেলনা বদলানোর সময় আবার না মুড চলে যায় সেদিকেও নজর রাখা লাগে। হাতের কাছে খেলনা রাখারও প্রয়োজন দেখা দেয় তখন। হাতের নাগাল মানে খাটের বক্স। আবারও আগের মত, অর্ধেক কাপড় অর্ধেক খেলনা এরকম রাখলাম। দিন যায়, মাস যায় একসময় দেখি পুরো বক্স খেলনার দখলে চলে গেল।
খাটের জায়গা বেদখল হলেও বইগুলো কিন্তু যথাযোগ্য মর্যাদায় বুক সেলফে তোলা আছে। এবং এই বুকশেলফ কখনও বেডরুম থেকে বেরও হয়না।
পরিবর্তনের এমন ধারাবাহিকতায় মাঝে মাঝে আর্শ্চয্য হই, বিস্মিত হই, মুগ্ধ হই। পরিবর্তন বরণের মানসিকতা নিয়েই মনে হয় মেয়েদের জন্ম। পুরো পৃথিবী একপাশে আর সন্তান একপাশে এই নিয়েই যে মা । আমার বাবাইটাও বুঝে গেছে তার বাবার বইপ্রীতি । আমি ঠোট চেপে কেবল হাসি আটকানোর চেষ্টা করি যখন দেখি বাবাই তার ভাইকে বলছে , বই ধরবে না ,শেষে বাবা এসে একটা আছাড় দেবে...
এই লেখাটার পেছনে একটা গল্প আছে। সুমনা আপা আমার সহকর্মী। অবসরে একদিন অফিসের কম্পিউটারে রাখা ছবিগুলো দেখছি। বাবাইর জন্ম থেকে এখন পর্যন্ত, সব ছবি। ছবি দেখার সূত্রে উনাকে বল্লাম খাটের জিনিস পরিবর্তনের কাহিনীগুলো। উনি বল্লেন, এই কথাগুলোই কেন আমি লিখি না। তারপর থেকে প্রায়ই তিনি আমাকে তাড়া দেন। বাধ্য হয়েই ঠুকে ঠুকে লিখলাম।
আজ পহেলা ফেব্রুয়ারী। বাবাইসোনা আজকের দিনেই আমার কোল জুড়ে এসেছিলো। ভাবলাম লেখাটা নাহয় আজকেই দেই...
মন্তব্য
শুভজন্মদিন বাবাই , বাবাইর মা এন্ড বাবাইর বাপ ।
ইতি
বাবাইর চাচ্চু ।
অনেক ধন্যবাদ বাবাইর চাচ্চুকে।
বড়ো হও বাবাই, মেধায় মননে...
আমার চোখে এখন ভাসছে, আপনার কোলে চড়ে বাবাই আমাদের বাড়ির পেছন দিকের টিলায় যাচ্ছে। আপনাদের শুভকামনায় বাবাই বেড়ে উঠুক।
শুভ জন্মদিন বাবাই সোনা।
বড় হয়ে তুমিও মা বাবার মতো সচলে লিখো কিন্তু।
এখনই খাতা ভরে ফেলছে। সচলে কুলাবে না মনে হয়...
বাবাই সোনা
মায়ের মতো লক্ষীসোনা হও
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
বাবাইর বাপের বন্ধুদের কাছ থেকে এম শুভকামনা পাওয়াই আমার বড় পাওয়া। ধন্যবাদ রানা।
*************** শুভজন্মদিন ****************
তুই সচলে ঢুকেছিস! যাক সুমতি হইছে তাইলে...
শুভ জন্মদিন বাবাই !
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক ধন্যবাদ।
- ইদানিং কেনো জানি খুব রিলেট করতে ইচ্ছে করে আপনাদেরকে। আপনাকে, অপু ভাইকে, বাবাইকে!
কখনো, যেদিন সুযোগ আসবে দেখা করার, আসবো অবশ্যই। এসে কথা বলে যাবো মন খুলে।
বাবাইয়ের জন্য অযুত নিযুত শুভকামনা রইলো।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কখনো, যেদিন সুযোগ আসবে দেখা করার, আসবো অবশ্যই। এসে কথা বলে যাবো মন খুলে।
অবশ্যই আসবেন। সেদিন আর আমরা কথা বলার সুযোগই পাবোনা। আমার বাবাইর স্কুলের নাম গল্পদাদু। সে কি আর সুযোগ দেবে আমাদের...
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
অনেক ধন্যবাদ বাবাইর চাচ্চুকে।
শুভ জন্মদিন বাবাই সোনা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বড় হও বাবাই
জন্মদিনে এই প্রার্থনা করছি।
বাবাইকে জন্মদিনের আদর।
---------------------------------------------------------
আমরা যারা শিখিনি চাষবাস,ফসলের গীত
গুলালিতে পাখি হত্যা
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা বাবাই, তাড়াতাড়ি বড় হও!
ইতি, তোমার 'ঢার্লিং'!
-------------------------------------------------------
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।
দৃশা
বাবাই সোনাকে জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা। অনেক বড় হও, আর সারাটা জীবন বাবা-মা'র আদরের "বাবাই-সোনা" হয়েই থাকো।
জন্মদিনে অনেক অনেক আদর বাবাই সোনাকে !
এতো ভালো লিখে যার বাবা মা, সে তো বড় হয়ে...
ঠিকাছে... অপেক্ষায় রইলাম...
আমার মেয়েটারে এখন থেকেই বাবাইয়ের পিছনে ছেড়ে দিতে হবে টাঙ্কি মারার জন্য...
শুভ জন্মদিন বাবাই...
বাবাইয়ের বাপ কই?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
শুভ জন্মদিন।
বাবাই বাবা-মাকে নিয়ে বড়ো সুখে থাকুক।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
লেখাটা খুব চমৎকার লাগলো। নিয়মিত লিখছেন না কেন?
সুমিমা ইয়াসমিন
আনিসুল হকের এই একটা কবিতাই পড়েছি।
শুভ জন্মদিন বাবাই।
বাবাইয়ের পিতা- মাতা দুজনেই সচলে নিখোঁজ কেনু কেনু?
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
বৌমা, জন্মদিনটা আসলে তোমার আর বাবাইর। একবার চিন্তা কর দেখি কি পরিমান ত্যাগ তোমাকে স্বীকার করতে হয় সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে। অপুও নিশ্চয়ই চিন্তা করে, কিন্তু মায়ের চিন্তার ডাইমেনশনই অন্যরকম।
অনেক ভালবাসা তোমাকে। চারপাশে তাকালে ভয় হয়- কি পৃথিবী রেখে যাচ্ছি বাবাইদের জন? তারপরও মনে হয় ওরা নিজেদের মত করে এই পৃথিবীর জঙ্গল সরিয়ে নিজেদের জায়গা করে নেবে। সেই ভরসায় আছি।
বাবাই আর তার মা-বাবাকে ভালবাসা।
প্রীতিধন্য খেয়া'দি
এত মায়া দিয়ে যিনি লিখতেন তার এক্কেবারে 'হাওয়া' হয়ে যাওয়াটা একরকমের অপরাধ!
সচল ভর্তি অপরাধী
নতুন মন্তব্য করুন