কত কী সম্ভব-অসম্ভব কান্ড ই না ঘটে যায় আমাদের এই আশ্চর্য দুনিয়ায় ! চেনা ছিলো না জানা ছিলো না কোনোদিন দেখা হবে এমন কথা ছিলো না, হঠাৎ করে তেমন মানুষের সংগে দেখা হয়ে যায়,চেনা হয়ে যায়, এমন হয় যেন যুগযুগান্তর ধরে একসাথে চলছি। মানুষজীবন কম আশ্চর্য না।
নেটে ঘোরাঘুরি করি অনেকদিন, পুরানো পাপীই বলা যায়। খুঁজে খুঁজে বাংলা সাইটে যাই, সাইটে ফোরাম ধরনের কিছু থাকলে দুচারটে বকবক করে আসি, বাংলাহীন প্রবাসে আর কী ই বা করবো এই ছাড়া। চ্যাট করতে ভালো লাগে না, রোমান হরফে বলে বোধহয় টানে না, খাপও খায় না। কিন্তু কেজানে কপালে কি লেখা, বাংলা হরফ না দেখলে উপোসী উপোসী লাগে! অথবা তৃষ্ণার্ত। হোক না কীবোর্ডে, কিন্তু বাংলা হরফে কথা কইতে পারলে ঠিক সেই ছাতিফাটা মাঠ পার হয়ে জলসত্রে এসে একপাত্র জল পান করার মতন অনুভব হয়।
এক সাইটে পরিচয় হয় এক দারুণ সম্ভাবনাময় লেখকের সংগে, গদ্য লেখার বাঁধুনি দেখে আমি থ। আর মনটা তার বাংলায় বাঁধা। কথায় কথায় জানতে পারি "বড় হয়ে" তার এক প্রকাশনালয় করার ইচ্ছা। সেখান থেকে বাংলায় বই বেরোবে, গল্প, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক এইসব। মনে লেগে রইলো কথাটা, বাঃ বেশ তো! কেমন সুন্দর স্বপ্ন!
তারপর বহুদিন কেটে গেছে। কত কত কথা ভেসে গেছে, কত হারানো কত পাওয়া কত কিছু ভুলে যাওয়া কত কিছু মনে পড়া। কত স্বপ্নদেখা কত স্বপ্নভাঙা। কড়া পড়ে পড়ে শক্ত হয়ে গেছে মনের কতকিছু। আর কিছু আশা করতেও সাহস হয় না, ইচ্ছা ও হয় না। কী হবে আশা করে! সেই তো খাড়া বড়ি থোড়-একই কথা চলছে ঘুরে ঘুরে!
তারপর হঠাৎ একদিন! অন্ধকারে জ্বলে ওঠা আলো! আগুন! দেশলাইকাঠির আগুন, এতটুকু আগুন এত আলো করতে পারে! সেই বন্ধুর কাছেই শুনলাম তারা অণুগল্প সংকলন বের করেছে। কোথায় গেলে দেখতে পাবো সেই হদিশও দিলো সে।
সেই দেখতেই আমার প্রথম সচলে আসা। কড়া পড়া মন অনেকদিনের খরার পরে আসা প্রথম বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে বিবাগিনী র ব্লগ পড়ে(বিবাগিনীর নতুন লেখা অনেকদিন দেখিনা)। তারপর থেকে প্রায় রোজ আসতে থাকি, পড়তে থাকি আর টের পেতে থাকি এই কখনও না দেখা এখানকার মানুষদের আমি চিনি, মনে মনে চিনি। এতদিন কেন আসিনি! আহা কেন এতদিন জানতাম না!
রেনেটের ক্রিকেটকাহিনি পড়ে বহুদিন পরে প্রাণ খুলে হাসি। সন্ন্যাসীর গোলরুটি খাই আর আরাম পাই। কনফুসিয়াসের হাওয়াই মিঠাই খাই আর মনে মনে ধন্যবাদ দেই। জাপানী ভুতের গল্প কয়াইদান পড়ে ভালো লাগে। হিমুর লেখা দেখি আর দেখি নীচে লেখা হাঁটুপাণির জলদস্যু। ভাবি বেশ মজার তো! তানবীরার লেখা, মাসুদার লেখা, শ্যাজার লেখা......খুব ভালো লাগে। তীরন্দাজের তীরের মতন লেখা......
অভিজিৎ, শিক্ষানবিস, সবজান্তা, অনিকেত এদের লেখা দেখে মনে হয় আহা এদের লেখা থেকে কত কিছু পাই, কিন্তু ধন্যবাদ জানানো হয় না! সিগনেচারে কবিতাপংক্তি দেখে মন কেমন করে ওঠে! নিজেরও কত কী বলতে ইচ্ছা করে!
লেখা আর হয় না! শুধু পড়ে পড়ে চলে যাওয়া! এরকম করে বহুদিন গেলো!
তারপর একদিন......
সেকথা পরের পর্বে।
(চলবে)
মন্তব্য
আপনে এই এতদিনে একটা লেখা লেখলেন যেটা আমি ঠিকঠাক বুঝতে পারলাম। বাহ্... আনন্দ হইতেছে।
বিজ্ঞান, ইরাকের সমূদ্র, অনিল কুম্বলে, কবিতা... এগুলা আমি বুঝি কম...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
- হ।
মাঝে সাঝে আমার আর নজু ভাইয়ের জন্যও কিছু লেইখেন এরকম।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
নজরুল,
ইরাকের সমুদ্র? ))
আজিব... আপনেই না গত কয় পোস্ট ধরে ইরাকের সমূদ্র ব্যাখ্যা করে যাচ্ছেন? আমি জিজ্ঞাস করতে বললেন আমি নিজেই নাকি সেই সমূদ্রে অবগাহন করতেছি?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এতটুকুতেই তুলির কালি শেষ হয়ে গেল? আরো একটুখানি নাহয় লিখতেন..
পড়লাম এই দারুন লেখাটা তুলিরেখা। মজার কথা কি জানেন এমন লেখা সাধারনত এখানে দেখতে পাই কারো অতিথি স্ট্যাটাস ঘুচে যাবার পর। যা সচলবক্তৃতা নামেই পরিচিত। আপনার কাছ থেকে পেয়ে তাই ভিন্ন অনুভূতি হল। পরের পর্ব পড়বার অপেক্ষায় রইলাম।
--------------------------------------------------------
আরে সেই গল্পে ছিলো এইরম-নতুন একজন ছাত্র বদলি হয়ে এসেছে,মাস্টারমশায় বলছেন,"জানিস তো এই ইসকুলের নিয়মকানুন খুব কড়া! প্রথমদিন নিজের পরিচয় দিয়ে ৫ মিনিট বক্তৃতা দিতে হয়! নে শুরু কর,ঘড়িতে স্টাপ দিলাম।করলি শুরু!":-))))
আরে না! সচল, অতিথি এইসব নিয়ে ভাবি না। উপোস ভাঙতে আসি দিনের শেষে,বাংলার জলে তেষ্টা মিটাই। আপনাদের এই ঘর না থাকলে কোথা যেতাম? চারিদিকে মরুভূমি।
ভালো থাকবেন।
বইটার নাম বোধহয় দীপু নাম্বার টু ।
আপনার সচলচারণ চলুক।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
চলুক সচল কাহিনী।
হা হা। মজা পাইলাম।
তোমার বাকি লেখাগুলা বুঝবো না বইলা পড়া হয় না, এইটার শিরোনাম দেখে মনে হইলো বুঝতেও পারি, তাই ঢুকলাম।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
কবিতা আমি বুঝি না, তাই আপনার লেখা পড়া হয় না। এরকম আরো লেইখেন, তাইলে নিয়মিত পড়ব।
আমার পাঠক আরেকজন পেয়ে খুব ভালো লাগল। ধন্যবাদ
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
এতটুকু লেখা দিয়ে ঝুলিয়ে রাখলেন আবার! পরের অংশটুকু তাড়াতাড়ি লিখেন...
এই লেখাটা আমিও ভাল বুঝতে পেরেছি
_______________
বোকা মানুষ
হুম......... সত্য কথা ।
নিবিড়
আইসসা, আইজ সইন্ধ্যাবেলা পরের পর্ব লিখুম নে।
তাইলে তো আপনার মত ভাল সিরিজ লেখক আর সচলে আছে বলে মনে হয় না কারণ সব সিরিজ লেখক হছে খেলাপী । একবার লেখা দিলে আর দশ দিন দেখা নাই । যাই হোক দোয়া করি আপানার সিরিজ লেখা দীর্ঘায়িত হোক ।
নিবিড়
লেখার সাথে নিজেকে মেলাতে পারলাম।
চলুক।
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
মজা।
নতুন মন্তব্য করুন