দেখি এক আশ্চর্য গাছ, পাহাড়ের উপরে। মস্ত বড়ো সেই গাছের মাথা যেন হারিয়ে গেছে আকাশে। মেঘ ফুঁড়ে, আকাশ ফুঁড়ে কোথায় যে চলে গেছে কত উপরে কিছুই বুঝতে পারিনা। শিকড় তার নেমে গেছে কত নীচে মাটির কত গভীরে---তাই বা কেজানে! হয়তো চলে গেছে পাতালে, ঝিমঝিমে দুপুরের ঘুমঘুম বাসায় মায়ের ঘুমপাড়ানি গল্পে যে পাতালের রাজ্যের কথা শোনা যেতো। কেজানে!
গাছের এক ডালে ছিমছাম এক ছোট্টো বাসা। হেলাফেলার খড়কুটোকাটার বাসা না, অচেনা উদ্ভিদতন্তু দিয়ে বহু যত্নে বোনা বাসা, সোনালী তার দিয়ে মজবুত করে বাঁধা, ভিতরে নরম তুলোর আস্তরণ। সেই বাসায় বসে তাকাই আকাশের দিকে, খোলা আকাশ ছড়িয়ে আছে অনেক অনেক দূর, নীল আকাশে রোদ্দুর আর মেঘেরা লুকোচুরি খেলে। পাখির দল উড়ে যায় মাঝে মাঝে। ওদের কথাবার্তার টুকরো-টাকরা মাঝে সাঝে এসে পৌঁছায় আমার কাছে, কখনো বা বাতাসে উড়ে যায় অন্যদিকে।
উপরে তাকাই, গাছের শেষ মেলে না, নীচে তাকাই, গাছের শেষ মেলে না। এর মাঝখানে বসে থাকি সাধের বাসায় আমার, ভাবি এই বুঝি বাতাসে ডানা ভাসিয়ে ভাসিয়ে এলো সুখপালকের পাখি! ভাবতে না ভাবতেই মস্ত পুচ্ছে অজস্র ঝলমলে রঙ আর মস্ত দুই ডানায় রঙধনু ঝলকিয়ে উড়ে এসে নামলো এক অচিনপাখি! আকাশের বিদ্যুতের মতন তীব্রোজ্জ্বল তার রূপ, সমারোহ ধরে না।
সে পাশের ডালে বসে আমার দিকে চেয়ে হাসলো, বললো, "তুমি কোন দেশের পাখি ? এখানে, এই গাছে আগে তো তোমায় দেখিনি!"
উত্তেজনায় ধকধক করে হৃৎপিন্ড, কোনোরকমে আমি বলি, "আমি তো এই সেদিন এলাম। আগে এখানে ছিলাম না তো! দেখবে কিকরে? তুমি কে? তুমিই কি সুখপালকের পাখি?"
সে হাসে, নির্মেঘ আকাশে যেন বিদ্যুতের সমারোহ জাগে সে হাসিতে--- হাসি থামলে সে বলে, "সুখদুখ জানিনা, আমি এইখানে থাকতাম। বেড়াতে গেছিলাম দূরের দেশে, ফিরে এসে তোমার বাসা দেখে অবাক হয়েছি।"
আমি অবাক, বলি,"তুমি এইখানে থাকতে? কই, তোমার বাসা তো দেখিনি!"
সে বলে, "আমার তো বাসা নেই। আমি বাসা গড়ি না। গাছের ডালে থাকি আর আকাশে আকাশে উড়ে বেড়াই। বাসা গড়ে কী হবে?"
আমি বিস্ময়ে চোখ বড়ো বড়ো করে চেয়ে থাকি, সেই অদ্ভুত কনকনে ঘুম ভেঙে যায়। আহ, সব স্বপ্ন! এত স্পষ্ট স্বপ্ন ? অফুরান সেই গাছ, ঝলমলে সেই পাখি, সব স্বপ্ন? যাঃ।
ছলছলে রূপোগলা জ্যোৎস্না আরো তীব্র এখন, এর মধ্যেও যেন স্বপ্নাভা লেগে আছে। একা জেগে বসে থাকি বাসায়। সর্বচরাচর ঘুমিয়ে আছে, কী অসীম নিতল রহস্যে ভিজে আছে সবকিছু!
(চলবে)
মন্তব্য
গতকাল হ্যাং হয়ে গিয়ে একটা বড়ো লেখা হারিয়ে গেছে। ঠিক যখন দিলাম, তখনই হ্যাং হলো।
তাই আজকে ভয়ে ভয়ে ছোটো অংশ দিলাম। পরেরবারে শেষ হয়ে যাবে।
- তাইলে পরেরবারেই মন্তব্য দিবোনে, এবার খালি নাম দস্তখত করে গেলাম যে পড়ছি।
স্বাক্ষর (অস্পষ্ট)
ধুসর গোধূলি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঠিক, আগে পুরা লেখা পোস্টান তারপর মন্তব্য পাবেন।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
হু... আমিও নাম দস্তখত করে গেলাম... পুরোটা শেষ করে কমেন্টাবো...
আপনের ইরাকের সমূদ্র আর কবিতার নদী ছাইড়া গদ্যে পাইছি... আমারে কালা কালা কুতুবিহি ভাবার ঝাল তুলবোই তুলবো...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনেরে কালা কালা ? কে কইছে? নামডা কন দেহি একবার! দেহাইয়া দেই কারে কয় কালা! মু হা হা হা।
না, আজকে শুভদিনে আর এইসব না, প্রমাণ হয়েছে "কালো জগতের আলো"। সকলে বলুন যেন সব আরো ভালোর দিকে যায় আজ থেকে। সকলের দৃষ্টি যেন আরো প্রসারিত হয় দিন দিন।
ভালো থাকবেন।
আমিও নাম স্বাক্ষর করে গেলাম।
সবাই নাম দস্তখত কইরা পালাইলো!!!!
অনন্যসাধারণ! চমত্কার দৃশ্যকল্প, যথারীতি।
দস্তখতের অধিক কিছু বলাই বরং মুশকিল হবে। আমার তো আবার নামও সত্যি সত্যিই লিখেই দিতে হয় নিজের। অনেক কষ্ট
ভালো থাকবেন। চলতে থাকবেন।
_ সাইফুল আকবর খান
সাইফুল আকবর খান,
আপনার শুভেচ্ছার জন্য ধন্যবাদ। আপনিও ভালো থাকবেন।
শেষটুকু পোস্টিয়ে দিয়েছি।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকেও।
পড়ছি শেষটুকু।
_ সাইফুল আকবর খান
নতুন মন্তব্য করুন