• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

চন্দনের বনে

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: রবি, ২১/১২/২০০৮ - ৩:৪৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজকে মেঘলা ধূসর দিন, মনখারাপ করে দেওয়া ঘোলাটে সব। মাঝে মাঝে নামছে বৃষ্টি, বাদামী হলুদ শেষ পাতাগুলো ও ঝরে পড়ছে পর্ণমোচীদের শীতনগ্ন কঙ্কালশরীর থেকে। ওদের ভ্রূক্ষেপ নেই। ওরা জানে বসন্তে বসন্তে নবযৌবন আসে ওদের। আমাদের মনুষ্যজীবনের মতন কৃপণ নয় বৃক্ষজীবন।

হায়, " অল্প লইয়া থাকি তাই মোর যাহা যায় তাহা যায়।" কী ভীষণ ক্ষুরধার সূক্ষ্ম কৃপণ বর্তমান ! সময়ের ধারা কী বেগবান! ক্ষণিকের জীবন, ততোধিক ক্ষণিকের যৌবন! তারই মধ্যে আবার আধিভৌতিক, আধিদৈবিক, আধ্যাত্মিক সঙ্কটের শেষ নাই। এইসব মেঘলা শীতের মনখারাপী দিনেই এসব মনে পড়তে থাকে কেন?

না, আজকে এত সহজে ধরা পড়বো না। কিছু একটা করতে হবে। এইসবের থেকে পালিয়ে চলে যাবো দূরে, অনেক দূর সেই চন্দনের বনে। চোখ বন্ধ করে পর্দা টেনে দিই বিষাদ-বর্তমানের উপরে। নৌকা বেয়ে চলি দূরে, দূরে, অনেক দূরে যেখানে চির বসন্তের অক্ষয় যৌবন নিয়ে স্থির দাঁড়িয়ে আছে আমার তরুণ দিনের সেই চন্দনের বন।

সেই যেখানে আমরা সবাই গিয়েছিলাম.....মনে আছে, সব মনে আছে। মনে আছে সেই নদী, সেই অভয়ারণ্য, সেই মানমন্দির, সেই বাসন্তী বনফুল যা গাছ থেকে তুলে নিলে শুকায় না, শুকায় না অনেকদিন.....মনে আছে পাহাড়ী পথে চুলের কাঁটার বাঁ‌ক, অনেক উপর থেকে পক্ষীদৃষ্টিতে দেখা সেই নিবিড় সবুজ উপত্যকা, সেই অগণন ঝর্ণাদের অক্লান্ত ঝরঝর সঙ্গীত।

ওই তো স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি বর্ণালীর হাতে ভেলভেটের মত নরম ফুলের গুচ্ছ, পাহাড়ের গায়ে সবুজ বাগানে বাদামী পাথরের ধাপকাটা সিঁড়ি, নেমে গেছে কত নীচে, ফুল হাতে নিয়ে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে পোজ দিয়েছিলো বর্ণালী, রণেন ওর ছবি তুলছিল। বর্ণার সদাবিষন্ন মুখে সেদিন ছিলো হাসির ঝিকিমিকি। কোথায় বর্ণা আজ?কত দূরে? শিশুসন্তানদের ফেলে রেখে মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে কি বিদায় নেওয়া যায়? ভিতরে ভিতরে এত ভাঙন চললো অথচ সে কাউকে জানতে দিলো না? এমনকি রণেনকেও না? রুম্পি আর বাবুনকে নিয়ে রণেন চলে গেছে বিদেশে,সঙ্গে রুম্পিবাবুনের নতুন মা, তমালী। তমালীও আমাদের চেনা বন্ধু, সেবার ওর অসুখ করেছিলো বলে আমাদের সঙ্গে যেতে পারে নি।

আবার বিষাদ? জগতের তাপ? আবার অশ্রু? না না, আজকে কিছুতেই ধরা পড়বো না। আজকে চন্দনের বনে পৌঁছাবোই। ওই তো মীনাক্ষীকে দেখতে পাচ্ছি। ওর দীর্ঘ রেশমকোমল চুল বেণীতে বাঁধা, বেণীর গোড়ায় হাল্কা গোলাপী ফুলের থোকা। ওদের দেশের মেয়েরা রোজ চুলে ফুল লাগায়। মীনাক্ষী বলছিলো সে যদি সারাজীবন ঐ পাহাড়ে অরণ্যে থাকতে সুযোগ পেতো, তাহলে সারাদিন.....

তাহলে সারাদিন কী? কী করতো? মনে নেই, মনে পড়ে না। আমাদের বাস বাঁক নিচ্ছে পাহাড়ী পথে,সকালের ঘন কুয়াশা কেটে গেছে, সবার মাথাঘোরা ও কেটে গেছে। এখন ঝকঝকে রোদে ভেসে যাচ্ছে পথ পাহাড় উপত্যকা। পথের পাশের গাছগুলো গাঢ় কমলা রঙের ফুলে ভরা। দুপুরে শুধু খাবার জন্য একটু থামা, তারপরেই আবার চলা শুরু।

অবশেষে গন্তব্যে পৌঁছানো। তখন সন্ধ্যে হয়ে গেছে। এক আকাশ তারা ঝমঝম করছে। চন্দনের গাছে ভরা সেই পাহাড় ও উপত্যকা, তাই তার নাম সুরভী শৈল। সেই তারাময়ী রাত্রি, সেই চন্দন বন, সেই অপরূপ সুগন্ধী দক্ষিণা হাওয়া-আমাদের সবাইকে মুহূর্তে মন্ত্রমুগ্ধ করে দিলো।

রাতে খাবার পরে মই দিয়ে রেস্ট হাউসের ছাদে ওঠা। তারপরে সারারাত আমাদের গান ফুরালো না। একের পর এক চলল গান। তন্দ্রার গলা ছিলো সবচেয়ে মিঠা, এত সুর ছিলো ওর গলায়! ওই তো, ঐ তো তন্দ্রা গাইছে বসে, খালি গলায় গাইছে-"জাগরণে যায় বিভাবরী....", বয়ে যাচ্ছে চন্দনের বনে বসন্তরাত, আমরা ভেসে যাচ্ছি অপার্থিব সুরের সুধায়।


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চপল পায় কেবল ধায়
কেবল গায় পরীর গান
..
..

লেখাটা পড়ে ছন্দের যাদুকরের কবিতার কথা মনে পড়ল। আপনার লেখা খুবই চমৎকার।

তুলিরেখা এর ছবি

ধন্যবাদ নিন।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

কবে কোথায় যেন পড়েছিলাম, যে পাঠক লেখার সাথে সাথে মিলিয়ে মনের পর্দায় ছবি এঁকে ফেলে ঘটনার, সে আসলে সমঝদার পাঠক নয়। হয়তোবা একজন অসমঝদার পাঠকই আমি, আপনার লেখা পড়তে পড়তে মনের পর্দায় ঘুরে এলাম লেখায় বর্ণিত জায়গা, বিষাদময় ঘটনা, দক্ষিণা হাওয়া, তারা ভরা রাত এইসবের সেলুলয়েড ছবি। ভালো লাগলো আমার- ভীষণ।

তুলিরেখা এর ছবি

আপনি আসলেই সমঝদার।
ধন্যবাদ জানবেন।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

(y)
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তুলিরেখা এর ছবি

:-?
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সবুজ বাঘ এর ছবি

ওখানে আমিউ যেতে চাই। আরেক বার।

তুলিরেখা এর ছবি

যাইন গা।
:-)
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আপনার বর্ণণাগুলো অন্যরকম। স্বপ্নের জগতে টেনে নিয়ে যায়...

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

তুলিরেখা এর ছবি

লেখাটা আপনাকে স্বপ্নের জগতে নিয়ে যেতে পেরেছে জেনে বড় ভালো লাগছে।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

হুম। ভেসে গেলাম সেই একই অন্যপুরে।
এইরকম লিখতে গেলে মনে হয় তাত্ক্ষণিক নগদানগদি আবহাওয়ার ভেজাল থাকে না। শুধু ভাব-সংগ্রহ থাকে জলবায়ুর মতো। কী জানি! খুব ভুলও ব'লে থাকতে পারি। নিঃসহায় ঘোর লাগে ভীষণ!

-----------------------------------
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

তুলিরেখা এর ছবি

হ্যাঁ চারিপাশের জাল থেকে পালিয়ে যাওয়া যায়। পালিয়ে যাওয়া যায় সময়ের কাছ থেকেও।
চিরবসন্তের দেশের মুসাফির। নীললোহিত বলতো দিকশূন্যপুরের যাত্রী। সেই দিকশূন্যপুর, "চন্দ্রহার" নদী পার হয়ে সবুজ টিলা,টিলায় একলা শিমূলগাছ, সেই টিলা পার হয়ে গোলমরিচের লতায় ছাওয়া নারিকেলগাছের সারি, নীল ফুলের ঝাড়, লবণের পাহাড় যেখানে জীবজন্তুরা লবণ খেতে আসে, ভাঙা একটা পাথুরে বাড়ী, কোনোকালে সেটা মন্দির বা গীর্জে বা মসজিদ বা কোনো প্রার্থনালয় ছিলো, এখন সেখানে সবাই নিজেদের উত্‌পন্ন করা জিনিসপত্র--লাউকুমড়ো,শাকসব্জি, ফলমূল,মাটির পুতুল এইসব রেখে যায়(ওখানে টাকাকড়ির কারবার নেই কিনা, বিনিময় প্রথা),সেইসব পার হয়ে রোহিলা,বন্দনা, জয়দীপ, অচিন্ত্য, রাজারাপ্পা, বিজন দের দিকশূন্যপুর, যেখানে পথহারা ভালোবাসা পথ খুঁজে পায়।
আমরা সবাই সেই দিকশূন্যপুরের যাত্রী, যারা শুনছে আর যারা বলছে। :-)
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

অদ্ভুত!
পারেনও আপনি ভাই! একদম কলির রূপকথাকার! আপনার মাথা তো বিচিত্র ভার্টিকাল-হরাইজন্টাল সেগমেন্টেশন-সহ একটা স্ক্র্যাপবুক! অ্যাফোর্ড-ই করি না ঠিকঠাক।
আমার ভাবনা-কল্পনার দৌড় আর অতদূর যায় না। অনেক ছোট হয়ে আসছি দিনকেদিন।
এমন কিছু কল্পনার দিকশূন্যপুর কারো সাথে সাথ মিলিয়ে গ'ড়ে নিতে পারলে ভালোই হতো হয়তো, কী জানি!
দিক খুঁজি তবু। ক্লান্ত হই। ক্লান্ত হয়ে না খুঁজলেও, হঠাত্ আবার মনে পড়ে- পাওয়া হ'লো না।
দিক কখনও আমাকে খোঁজে না।
সেই সুন্দর শূন্য কখনও হয় না এই বলয়ে। নিজেই শূন্য হই মুহূর্মুহূ।
আমার জন্য এতগুলো বাক্য লিখলেন! সকৃতজ্ঞ আন্তরিক ধন্যবাদ। :)

-----------------------------------
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

তুলিরেখা এর ছবি

আরে, এ তো আমার না, এটা সত্যিই নীললোহিতের। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম নীললোহিত। তারই দিকশূন্যপুর। আমি শুধু বলে গেছি গল্পের পাতা থেকে। (যদিও আমার ও অমন একটা সবুজগাঁ, চিলওড়া নীল আকাশ, ফসলবিলাসী হাওয়া ছুঁয়ে যাওয়া ধানমাঠ,মাদারপলাশশিমূলকৃষ্ণচূড়ারাঙা চৈত্র বৈশাখ সব ছিলো। জলসইতে যাবার পুকুর, পুজোবেলার শেফালি আর কাশ সব ছিলো। এখন জায়গাটা আছে, যাদু সব হারিয়ে গেছে :-( )
নীললোহিতের গপ্প থেকে মেরে লিখলাম আগের পোস্টে আর আপনি তাতেই আমাকে রূপকথাকার ঠাওরালেন! এবারে তো আন্তর্জাতিক আইডিয়া-কেলেঙ্কারিতে ফেঁসে যাবো। :-?
ধরতে আসলে তখন আমি কইবো "আমি নীললোহিতের রেফারেন্স দিয়েছিলাম, ক্রেডিট মারিনাই, আমারে ধইরেন না।" ;-)
মাথা আর সেগমেন্টেশান ওলা স্ক্র্যাপবুকের তুলনা শুনে ভাবলাম--থাক। সে আর বলে কাজ নেই।
ভালো থাকবেন। খুশী ক্রিসমাস, শুভ নববর্ষ।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

ওহ আচ্ছা। আমার পড়াশোনার যেই দৌড়, বুঝছেনই তো! নীললোহিতের ওই অবলোহিত গল্প আমার জানা ছিল না। :) কেলেঙ্কারিয়াস বটে, আমার জন্য। ;)
যাক, জানলাম তো আপনার কাছ থেকে। ধন্যবাদ, বিনা ট্যাক্স-এ এই আইডিয়া এক্সপোর্ট-এর জন্য। ;)

মাথা আর সেগমেন্টেশান ওলা স্ক্র্যাপবুকের তুলনা শুনে ভাবলাম--থাক। সে আর বলে কাজ নেই।

:(

ভালো থাকেন। আপনার জন্যও বেস্ট উইশেজ।

-----------------------------------
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।