১।
সূর্যশিশির,সূর্যশিশির,সূর্যশিশির -মাঝে মাঝে কেমন হয় যেন হয় আশমানির। এক একটা শব্দ সারাদিন রিনরিন করে মনের মধ্যে বাজতে থাকে। আজকে যেমন এই সূর্যশিশির! কি সুন্দর কথাটা। অথচ এর মানেটা তেমন কিছু ভালো নয়, একরকমের পতঙ্গভুক উদ্ভিদ, কলসপত্রীর মতন। কলসপত্রী নামটাও কী চমত্কার! এইসব গাছেদের এরকম সুন্দর নাম দেওয়ার পিছনে মানুষের কি কোনো বিশেষ মানসিকতা আছে?
সূর্যশিশির,সূর্যশিশির,সূর্যশিশির-আশমানি হাঁটতে হাঁটতে পেরিয়ে এলো পার্কিং লট, পলিমার-সায়েন্সের বিশাল সুন্দর বিল্ডিংটার পাশ দিয়ে চলার সময় সারিবাঁধা পাইনের দিকে চাইলো , তারপরে ক্রস করলো চওড়া লিংকন রোড-পুরো সময়টা মনের মধ্যে রিনরিন করে বাজছে সূর্যশিশির। গ্রীন হাউসের সামনে এসে হঠাত্ ওর মনে হলো,"আরে ফোন করার কথা ছিলো তো! এখন কি পাওয়া যাবে?" মুঠাফোন বের করে ফোন করতে করতেই কুয়াশা কেটে একঝলক রোদ পায়ের কাছে, হালকা একটু হাওয়া, আকাশে এক ফালি নীলও। রিং হচ্ছে, কেউ একজন ধরেছে, কথা বলছে। আশমানি অল্প কেঁপে যাওয়া গলায় বললো,"হ্যালো, সূর্য আছে?
২।
সবাই যখন ব্যস্ত থাকে নানা কাজে, তখনই কি কুঁড়িরা ফুল হয়ে ফুটে যায়? টুপ টুপ করে তারাগুলো কি তখন নেমে পড়ে সমুদ্দুরে?কেউ যখন দ্যাখে না ওদের? ছোট্টো মিমি চুপ করে ভাবে করবীগাছের তলায় দাঁড়িয়ে, এখান থেকে কতদূর দেখা যায়!
ঝুরিনামা বটের পাশ দিয়ে মাটির রাস্তা, একটু এগোলেই রমাদিদের বাড়ি, তারপরে জোড়া মাঠ পেরিয়ে জোড়া পুকুর, তারপরে ঝুনিদিদের বাড়ী। ঝুনিদিদের পাশেই অনুদের বাড়ী, ওর ভালোনাম অনুব্রতা।
ঐ তো ওরা গানের ক্লাসে চলে যাচ্ছে খাতা নিয়ে, শনিবারের বিকেলমাঠ একলা পড়ে আছে চুপ, কেউ খেলবে না চু-কিত্কিত্, বুড়ী বসন্তী, কাকজোড়া, নামপাতাপাতি বা বানানো কোনো খেলা আজ এখানে। তাই বুঝি মাঠের মনখারাপ?মিমির চোখে শিশির জমে ওঠে, সে একা একা খেলতে যেতে পারে না। সে দাঁড়িয়ে থাকে করবীতলায়, কেউ যদি ফিরে আসে? কারুর যদি গানের ক্লাস আজ না হয়?
৩।
"কালপুরুষ চেনা খুব সোজা। ওই যে দ্যাখ তিনখানা তারা জ্বলজ্বল করছে একলাইনে, কালপুরুষের কোমরবন্ধ ওটা।" বসন্তের সন্ধ্যা, বাতাস বইছে ধীরে। ভারী মধুর এইসময়টা। আকাশের দিকে হাত বাড়িয়ে মনামীকে তারা চেনায় হিন্দোল।
অবাক হয়ে জ্বলজ্বলে কালপুরুষের দিকে চেয়ে থাকে মনামী, সামনে অন্তহীন ঢেউ আসে ঢেউ যায়। অতলান্তিক মহাসাগরের ঢেউ। নতুন খইয়ের মতন অগনন তারা ছড়ানো নির্মল বাসন্তী সন্ধ্যায় কি এক তরঙ্গ এসে লাগে তার প্রাণের গভীর গোপণ নিশীথবীণায়, সেখানে মঞ্জরিত স্বর্ণপলাশের নিচে কে যেন বসে আছে স্তব্ধ অপেক্ষায় তার জন্য। কে সে? অন্ধকারে তার মুখ দেখা যায় না। এই কি সেই গানের মানুষ-"ডুব ডুব ডুব রূপসাগরে আমার মন/তলাতল খুঁজলে পাতাল পাবিরে সেই কৃষ্ণধন" ? সেই? মনামী ঠিক বুঝতে পারে না। দু'চোখ জলে ভরে ওঠে তার! কেন সে এমন? সাথীদের সাথে থেকেও এত একা? তীব্র দলছুট হৃদয় তার নির্জন বনে অশ্বত্থগাছের নিচে দাঁড়িয়ে আছে। যেন এখুনি কোথা থেকে উড়ে আসবে লোককথার সেই অলৌকিক নীলপাখি, একটি পালক এসে পড়বে তার সামনে।
***
মন্তব্য
ভালো লাগলো
...........................
Every Picture Tells a Story
মুস্তাফিজ, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সুন্দর
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
রানা মেহের,
ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আমারো মাঝে মাঝে এমন হয়, একটা শব্দ কিংবা বাক্য গেঁথে যায় মাথার মধ্যে; আর তা অনেকক্ষণ ধরে ঘুরতে থাকে। যদিও তা কখনো পদ্য হয় না। আমি তো আর পদ্যকার নই। ক্যামনে হবে তাহলে!
পান্থ,
পদ্য হোক আর গদ্য হোক, শিগগীর দিয়ে দিন। পড়ে ধন্য হই।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
অসাধারণ লেখার হাত আপনার ।চমত্কার ।
--------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন
---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন
নিঝুম,
আপনাদের ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে আপনারা সবই ভালো দেখেন।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপনার লেখা পড়ে একটা শব্দই বারবার ব্যাবহার করতে হয় - দারুন!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
এতদিন পরে পিছনের পাতায় ঘুরে দেখতে গিয়ে দেখি উত্তর দেওয়া হয় নি।
কীর্তিনাশা, অনেক ধন্যবাদ। দেরি হলো বলে আন্তরিক দু:খিত।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
উথাল পাথাল দিগ্বিদিক!
-----------------------------------
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
তাই নাকি?
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন