আলো ঝিলমিল জলের উপর দিয়ে ভোরের তরী এগিয়ে যায়, পাড়ে কুশি-কুশি ফুলকুঁড়িরা আস্তে আস্তে খুলতে থাকে ভীরু ভীরু পাপড়ি। দূরে কুয়াশাকুয়াশা নিমফুলী আর্দ্র আভায় ভরে আছে ধানগন্ধী হেমন্তমাঠ। এখানে রূপা-চিকচিকে নদী, ঢেউয়ে ঢেউয়ে রঙধনু ফলিয়ে তোলে।
পাড়ে সবুজ এক বাগান এখন, নর্মরজনীক্লান্ত রজনীগন্ধার শুভ্র বৃন্ত নুয়ে পড়ে পল্লবের সবুজ ওষ্ঠাধরে। কোথায় জানি পাতার ফাঁকে লুকিয়ে বসে কুটুমপাখি ডাকে ! আহা, কার ঘরে কুটুম আসবে আজ?কেমন সে কুটুম? সেই যাকে রূপশালী ধানের চিঁড়া, বিন্নি ধানের খই আর সাদা-বাতাসা রাঙা-বাতাসা দিতে হয়?আলুনি পিঠা লবনি পিঠা সেও কি কুটুমকেই দেয়?
চোখ বোজে শমিতা, দেখে নতুন খইয়ের গন্ধে ম ম উঠান, কুয়াশা আর রোদের মিলমিশ, কনকচূড় আর নতুন পাটালি। শাপলাফোটা দিঘি, নাওবাওয়া খাল, পাটক্ষেতে জলপোকা আল্পনা টেনে যায়, নিকানো উঠানে শঙখচক্র। পর্দা সরিয়ে ও কে আসে কাছিয়ে?
পৃথু বলে," শমী, তুই জানিস কবিতা কাকে বলে?"
শমিতা চোখ খোলে, কিছু বলে না, হাসে শুধু। পৃথু উঠে গিয়ে ছইয়ের নীচ থেকে নিয়ে আসে ওর ক্যামেরা, বাইনোকুলার এইসব।
রোদ এখন আরো ঝকমকে, আকাশ পরিষ্কার নীল। পৃথু ছবি তুলছে।
শমিতা জলের কাছে ঝুঁকে পড়ে, ডানহাত ডুবিয়ে দেয় জলে। শিরশিরে এই অনুভব ওকে কোন্ পুরাতন বিস্মৃত জলজীবনের কথা মনে পড়িয়ে দিতে চায়।
অস্ফুটপ্রায় স্বরে সে বলতে থাকে,
" কবিতা ভোরের তরী আলো ঝিলমিল
কুশিকুশি ফুলকুঁড়ি
খুশী খুশী জলনুড়ি-
ঢেউ ঢেউ রঙবোনা হাওয়ার মিছিল।
কবিতা ভোরের তরী আলো ঝিলিমিল ........"
আস্তে আস্তে স্ফুটতর গলা তার এখন-
"কবিতা আলোয় গাঁথা রঙের মিছিল
হাওয়ার সুতায় মুড়ে
জল-আল্পনা জুড়ে
বৃষ্টিধনুর বুকে হাসি খিলখিল।
কবিতা আলোয় গাঁথা রঙের মিছিল......"
কবিতা তারার সখী রাত্রির নীল-
অতিথি পাখির ডানা
বাঁশির আকুল টানা
অসীম আকাশ ভরে নীহারিকা তিল।
কবিতা তারার সখী রাত্রির নীল.........."
মন্তব্য
'নর্মরজনীক্লান্ত ' মানে কী?
যা:, এর মানে বলবো কি? শরমে কান বেগুনী হয়ে যাবে না?
নিতান্তই জানতে চাইলে অভিধান দেখুন।
So nice!
Did you published any book?
So romantic.
অনেক ধন্যবাদ ফারুক।
না, মুদ্রিত বই প্রকাশ করা হয় নি, কিছু ওয়েবজিনে কিছু কিছু লেখা- গদ্য ও কবিতা দুই ই, বেরিয়েছে।
এইখানে একটা সাম্প্রতিক-গত শরতে প্রকাশিত।
http://www.banglalive.com/bisheshhasamkhaa/sharadiya1415/Jhinuk1.html
নতুন মন্তব্য করুন