তিয়া আর তিশা গল্প শোনে বুড়ামানুষটার কাছে বসে, ঐ দূরে নীল-সবুজ গাছের রেখা টানা গাঁয়ের সীমা, তার বাইরে তারা দেখেছে বাজারের কাছে ইস্টিশান আর সেইখানে আসে লক্করঝক্কর ট্রেন। সেই ট্রেনে চেপে বাবাকাকারা রোজ যায় কাজে। তারা ইস্কুলে যায় রিকশা করে, সে ইস্কুল গাঁয়েই। কখনো কখনো তারা বাজারের কাছের বাসে চড়ার জায়গা থেকে বাসে উঠে বেড়াতে যায় মামাবাড়ি।
কিন্তু এইসবের বাইরে অনেক দূরে, অনেকবার ট্রেন বাস নৌকাবদল করে যাওয়া যায় এত দূরে নাকি ছিলো তাদের দেশ। বুড়ামানুষটা বলে সেই দেশ থেকে তারা সবাই চলে আসলো নৌকা বাস ট্রেনে করে। তিয়াতিশারা তখন জন্মায় নি। চলে আসলো তাদের মাবাপদাদাপরদাদারা।
চলে আসলো কেন? বড় বড় চোখ করে জানতে চায় তিয়া। বুড়ামানুষটা চোখেমুখে ভয় ফুটিয়ে বলে,"ওরে বাবা, ওরা!" ওরা কারা?
তিয়াতিশারা ঠিক মতন বুঝতে পারে না। শোনে ওরা নাকি খুব ভয়ানক, ওরা নাকি ধারালো অস্তর নিয়ে ছুটে আসতো অদ্ভুত সব শব্দ বলতে বলতে,ওরা নাকি কত মানুষ মেরে ফেলেছে, দাউদাউ আগুনে জ্বালিয়ে দিয়েছে ঘরবাড়ী। তিয়া ভাবে তাহলে কি ওরা মানুষ নয়, অন্যকিছু? তাদের ভয়েই কি মানুষেরা পালিয়ে আসছিলো? মনের চোখে সে দেখে দলে দলে মানুষ খালিপায়ে দৌড়ে দৌড়ে পালাচ্ছে,ছোটোদের নরম হাতগুলো বড়দের গিঁঠেপড়া হাতের মধ্যে ধরা আছে, যত জোরে সাধ্য ততজোরেই তারা দৌড়ায়। একদম যারা ছোটো, তাদের ঘাড়ে তুলে নেয় বড় কেউ। দৌড় দৌড় দৌড়! চারিদিকে ভয়ের ছবি। ওদের পিছনে যারা তাড়া করে আসছে সেই "ওরা"দের মনে মনে দেখার চেষ্টা করে ভয়ে ভয়ে থেমে যায় সে। ওরে বাবা, ওরা!! দরকার নেই দেখে।
তিয়ারা বড় হয় আস্তে আস্তে, গাছগাছালির গন্ডীটানা গাঁয়ের ইস্কুল আর তাদের ধরে রাখতে পারে না। আগে যে ট্রেনে তারা বাবাকাকাদের রোজ যেতে দেখতো, তাদের সেই ট্রেনেই চড়ে রোজ যেতে হয় তিন স্টেশান পার হয়ে। তিয়াতিশারা এখন বড় হয়ে গেছে, শাড়ী পরার মতন বড়। সেইসব বুড়ামানুষেরা কেউ আর নেই, কবেই বুকের মধ্যে ভিটেমাটি হারানোর যন্ত্রণার অন্ধকার গর্তটাকে সাথে নিয়েই চলে গেছে আরো অন্ধকার অজানায়। অত বুড়ারা কয়দিন থাকবে আর? মাখুড়ীবাবাকাকারাই বুড়া হতে চললো!
কিন্তু অজর অমর "ওরে বাবা, ওরা!!!" রয়ে গেছে। ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিয়ে যায়, ছোবল মারে, ছিঁড়ে ফেলে ফুলের তোড়ার বাঁধুনি। ফুলগুলো ছড়িয়ে পড়ে ধুলায়।
তিশার বড়দা দূরের শহরে পড়তে যায় সুকুমারশিল্প,সেখানেই তার পরিচয়,প্রণয় ও পরিণয় ভিনধর্মের এক মেয়ের সাথে। তিশার পরিবার সাবধানে ছেলের কাছ থেকে সরে গেলো বেশী হল্লা না মাচিয়ে, যতই হোক যুগটা তো আধুনিক। নিরালায় জিগ্গেস করলে শোনা যায় সেই একই কথা "ওরে বাবা, ওরা!!! "
একই আকাশের নীচে একই মাটির উপরে পুরাতন সুখদু:খ পুরাতন প্রতিশোধস্পৃহা পুরাতন অবিশ্বাস পুরাতন হিসাব নিকাশ মিটাতে মিটাতে জাল বুনতে বুনতে দেয়াল তুলতে তুলতে কবে কোথায় কতদূরে ছিটকে যায় মানুষ। দুনিয়ার নতুন নতুন হিসাব উঠে এসে আরো কতদূরে সরিয়ে দেয় আরো কত মানুষকে!
তাদের সেই সবুজ গাঁ প্রায় শহর হয়ে গেছে,ভীড়ে ভীড়াক্কার। তিয়া আর তিশা এখন দু'জনে দুই মহাদেশে। শুধু একটা ছোট্টো নীল ছাতা আটকে আছে তিয়ার স্মৃতিতে। অনেকদিন আগে বর্ষার বিকালে তিয়া আর তিশা সেই ছাতাটায় মাথা ঢেকে টুকটুক করে হেঁটে যাচ্ছে। "একটি ছোটো ছাতার নীচে এত্তটুকু স্বর্গ....."
মন্তব্য
দীর্ঘশ্বাস!!!
হ্যাঁ।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
অদ্ভুত!
বৃষ্টি হচ্ছে ঈর্ষেগুঁড়ি!!
ক্যাম্নে দ্যাখেন এইগুলা! আর, ক্যাম্নে আবার ল্যাখেনও!!
আপ্নে পুরা ল্যাখক একটা, মানুষ্ণা।
০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
লেখকরাও মানুষ।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আমিও সেরকমই ভাবতাম আগে। কিন্তু আপনার মতো এমন অ-মানুষিক লেখক দেখে সেই বিশ্বাস উইঠ্যা যায় মাঝেমইধ্যে।
০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
কন কি? অ-মানুষিক?
এদিকে চিরকাল আয়না আর ডারুইন সায়েব আমারে ডাবল সিওরিটি দিয়া আসতেছেন হয় মানুষ নাহয় তার পূর্বপুরুষ। এখন কিনা আপনে কন ......
ভাবনায় ফেলাইলেন।
এদিকে আমি কিষ্কিন্ধ্যা-ভ্রমণের প্ল্যান অবধি কইরা ফেলাইলাম!
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
করতে পারেন যা খুশি। কসুর নেহি হ্যায় কিসি ভি!
হাক বানতি হ্যায় আপকি!
০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
জীবন এমনই বুঝি!
জীবন, জীবন আহ জীবন।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপনার এই লেখাটা অন্য লেখাগুলো থেকে একটু আলাদা।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
যা বলতে চাই বলা হয় না, বারে বারে ভাবি এইবারে বুঝি পারবো কিন্তু শেষে
কেন জানি হয় না। হয়তো কোনোদিন, অনেক বছর পরে ......
ততদিন যদি বেঁচে থাকি, যদি বেঁচে থাকে মন.....
ভালো থাকবেন। আপনার সেই লেখাটা, নিরাময়, মাঝে মাঝেই পড়ি। ওরকম আরেকটা
লেখার অপেক্ষায় থাকি।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
হয়তো কোনোদিন...
'নিরাময়' আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো ভীষন।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ নজরুল।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
- দারুণ।
শেষ লাইনটার মতো একটা লাইন আজীবন মনে গেঁথে থাকবে আমার। "সবুজ প্যাকেটে মোড়া নীল আকাশ..."
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধন্যবাদ , ধূসর গোধূলি।
ঐরকম কিছু কিছু লাইন আমার মনের মধ্যেও ঘুরে বেড়ায়-
"বৃষ্টি আমার গহীন সবুজ ইচ্ছাবটের পাতা"
"ভোর হয়-হয় রাতের মতন চোখ তার, কালোয় আর আলোয় লুকোচুরি।"
"তার নীল শাড়ীর দু'পার বরাবর শঙ্খলতা আঁকা, তাকে নদীর মতন দেখায়"
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
গতকাল সকালে দেখলাম এই লেখায় একতারা, দেখে মনে হলো সত্যি হয়তো এইসব হাবিজাবি লিখে মানুষকে বিরক্ত করছি, কিছুদিন বন্ধ দেওয়া ভালো। আজকে
সচলদের কারুর কারুর কমেন্ট পড়ে মনে হলো হয়তো আমার ধারনা নাও ঠিক হতে পারে। তাছাড়া রেটিং ও দেখলাম বদলে গেছে।
কাউকে বিরক্ত করে থাকলে আগাম মাফ চেয়ে রাখি।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন