২
টিনিয়াম এক ছোট্টো গ্রহ, টাইনি থেকে টিনিয়াম৷ এটা স্বাভাবিক গ্রহ নয়, যেসব অ্যাস্টরয়েডদের গতিপথ পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে কাছ দিয়ে গেছে, পরিভাষায় যাদের নীয়ার আর্থ অ্যাস্টরয়েড বলে, যারা বহুকাল পৃথিবীর পক্ষে খুব বিপজ্জনক ও ভয়ের ছিলো, ইম্প্যাক্টের সম্ভাবনার জন্য-- সেইসব নিকটপৃথিবী স্পেসপাথর জুড়ে জুড়ে তৈরী হয়েছে টিনিয়াম৷ যা ছিলো বিপদের ও ভয়ের, তাই এখন হয়ে দাঁড়িয়েছে সম্পদ সুযোগ গর্ব ও ঈর্ষা৷
তবে কিনা টিনিয়াম পৃথিবীর মানুষের পক্ষে একা একা তৈরী করা সম্ভব হয়নি, এটার জন্য গ্যালাকটিক স্পনসরেরা সাহায্য করেছে, পৃথিবীর একটি ছোট্টো গ্রুপ যাদের মূল হোতা এই রুবেন, এরা ই প্রধান উদ্যোগ নিয়ে খুবই লেগে থেকে কাজটা দাঁড় করিয়েছে৷ প্রথমদিকে বিরোধীরা খুবই সরব ছিলো, কালক্রমে টিনিয়াম ব্যাপারটা ভালো দাঁড়িয়ে যাওয়ায়, বিরোধীদের সরব গলা আস্তে আস্তে নীরব হয়ে গেছে৷
টিনিয়াম টুকরো টুকরো অ্যাস্টরয়েড জুড়ে তৈরী, তবে চেপে একসঙ্গে গলিয়ে সলিড করে দেয়া না, আলগা চাপে জোড়া, ইচ্ছে করেই সুপরিকল্পিতভাবে অমন করা, ফলে গ্রহটার সারফেসে কেউ থাকতে না পারলেও ভেতরে বিস্তর জায়গা৷ সেখানে বাতাস ও আছে, বাগানও ও শস্যঘরও আছে যারা কিনা নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের থেকে পাওয়া শক্তিতে যে আলো জ্বলে সেই আলো থেকে ফোটোসিন্থেসিস করে৷ সমুদ্র না থাকলে কি হয়, বিভিন্ন জলসমৃদ্ধ কমেট থেকে পাওয়া জলও বিস্তর৷ সারফেসে শুকনো পাথুরে পাহাড়ী ন্যাড়া গা আর স্বচ্ছ আবরণে ঢাকা সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট! আর এইসব পাহাড়ী ঢাকনার আড়ালে আড়ালে সুরক্ষিত প্রবেশপথ, রীতিমতন পাসওয়ার্ড আর ডিএনএ আইডি মিলিয়ে ঢোকবার ব্যবস্থা৷
রুবেন ও তার ছোট্টো গ্রুপই প্রথম ওখানে থাকতে শুরু করে, কালক্রমে অন্য লোকেরাও যেতে শুরু করে ফর্মালি অ্যাপ্লাই করে ও সিলেক্টেড হয়ে৷ এখন পপুলেশন বেশ ভালোই, সেখানে সুযোগসুবিধাও নাকি বিস্তর, ক্রমে টিনি ঐ টিনিয়াম রীতিমতন ঈর্ষাযোগ্য হয়ে পড়েছে, সঙ্গে কিছুটা ভয়েরও৷ ঐ অতীব দক্ষ লোকেরা যদি পৃথিবীকেই নিজেদের কলোনী করে ফেলে, এই ভয় থেকেই প্রথমে লড়াইটা শুরু হয়৷
মাত্র দশ বছরে এতটাই উন্নতি হয়েছিলো টিনিয়ামের যে সত্যি সত্যি অভিনিবেশ দাবী করার মতন৷ তার উপরে যে গ্যালাক্টিক গ্রুপ ওদের স্পনসর তারা খুব রিসোর্সফুল৷ টিনিয়াম সেইজন্যেও অন্যের ঈর্ষার কারণ৷ এখন সৌরজগতের বিভিন্ন হ্যাবিটেবল গ্রহে উপগ্রহে অনেক ছোটো বড়ো কলোনী আছে, নিজেদের মতন করে তারাও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জীবনযাত্রা উন্নত করার, যথাসম্ভব জ্ঞানবিজ্ঞানচর্চার উন্নতি করতে, সকলে মিলে পৃথিবীর সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টায়৷ কিন্তু টিনিয়াম এইভাবে বাইরের স্পন্সর পাওয়ায় এই সৌর-অ্যালায়েন্স নীতিতে একটা বিরাট চিড়, সেইজন্যেই নীতিগতভাবে অনেকেই টিনিয়ামের বিপক্ষে৷
টিনিয়ামের পক্ষে যুক্তি ছিলো পুরো প্রোজেক্টটাই অসম্ভব হতো বাইরের সাহায্য না পেলে, পৃথিবী আর অন্যান্য কলোনীর সমস্ত রিসোর্স কাজে লাগালেও ওটা করা কঠিন হতো, অন্যসব জায়গার উপরে চাপ পড়তো এই প্রজেক্টের ভার বইতে গিয়ে৷ তাই যাদের আছে সম্পদ ও শক্তি ও প্রযুক্তি তারা দিয়েছে, অনেক কষ্টে তাদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে, এতে খারাপ কি হলো? বিরোধীপক্ষ বলে তারা কি এমনি এমনি দেবে? নিশ্চয় কোনো মতলব আছে, পরে আদায় করবে সুদে আসলে৷
এইরকম অনি:শেষ তক্কবিতক্ক চলতে থাকে আর টিনিয়ামও একটু একটু করে গড়ে উঠতে থাকে, শুরুর সময় রুবেন একদম তরুণ, ওর সহযোগী বন্ধুরাও৷ এখন দশবছর কেটে গেলেও ওরা একদম প্রায় সেইরকমই আছে, হয়তো ভালোবাসার কাজ আর সেই কাজ নিয়ে প্রচন্ড উদ্যম উদ্যোগের মধ্যে থাকলে সময় তাদের কাছে হেরে যায়, কেজানে!
টিনিয়ামের ভেতরে কোনো ক্ষতি হয় নি, বিস্ফোরক শুধু বাইরের কিছু সোলার প্ল্যান্ট বিধ্বস্ত করেছে, এই খবর পাবার পরে রুবেন একটু বোধহয় শান্তি পেয়েছে, ক্লান্ত হেসে ধন্যবাদ দিলো সত্যকের হাত দুহাতে ধরে নিজের কপালে ঠেকিয়ে৷ ক্ষতগুলোতে অ্যান্টিসেপ্টিক লাগিয়ে দিতে দিতে সত্যক রুবেনের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে, রুবেনের চোখ বন্ধ, নইলে নিশ্চয় অপ্রস্তুত হয়ে যেতো৷
রুবেন এত ক্লান্ত অবস্থায় আছে যে ক্ষমা চেয়ে রেখেছে আগেই চোখ খোলা রাখতে না পারার জন্য৷ সম্ভবত রুবেন একটা ঘোরের মধ্যে আছে, গভীর ক্লান্তির ঘোর৷এরকম আগে কাউকে দেখে নি সত্যক, কিছুক্ষণ আগে ওর সঙ্গে নিষ্ঠুরতা করেছে ভেবে খারাপ লাগছিলো সত্যকের৷ আস্তে আস্তে ওর কপালে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে কেমন অদ্ভুত লাগে প্রৌঢ় সত্যকের, মনে হয় সম্পূর্ণ অনাত্মীয় এই ছেলেটির সঙ্গে হয়তো কোনো যোগ আছে তার৷কোনো যুক্তি নেই এই মনে হওয়ার নেপথ্যে, তবু তার মনে হয়।
মন্তব্য
অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এ তো মেগা উপন্যাস !!
মেগা? না না, টাইনি।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
হা গণেশ
গল্প মনে করে ঢুকে দেখি বিজ্ঞানের ইসকুল....
সেই গল্পটা জানেন? সেই যে ছোটোভাই তার বড়ভাইকে বলছে,"দাদা, অঙ্ক শেখাচ্ছে রে!"
আমি এদিকে কচদেবযাণী র কবিতা সিলেটী ভাষায় শোনার লাইগা বইয়া আছি, আফনে তো কই শুনান না!
----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
রুবেন কি সাত্যকির ছেলে?
সত্যকেরে জিগান। রুবেনেরে জিগান। এরা দুজনের কেউ জানে না।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ভাল লাগল । অভিনিবেশ মানে কি ?
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
মনোযোগ/Attention
মনোযোগ
গভীর মনোযোগ।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এই পর্বে নান্টু আর হ্যান্ডু কই? আমার তো ওদের নামদুটা সবচাইতে বেশী পছন্দ হইসে!! আর, আমারও দ্রোহীর মতো প্রশ্ন - রুবেন কি সাত্যকি?
নান্টু আর হ্যান্ডুরে কইয়া দিলাম, তারা হাসতে হাসতে নাচতাছে।
----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন