আনান্সি-কোথাও বলে কোয়াকু আনান্সি, বুদ্ধিমান এক মাকড়সা, পশ্চিম আফ্রিকার বিরাট অংশে একে নিয়ে অনেক গল্প, পরে হাইতি টাইতিতে ছড়িয়ে গেছে সেসব গল্প। এর গল্প খুব ইন্টারেস্টিং, একদিন আনান্সি আকাশের দেবতা নাইয়ানকনপন এর কাছে গিয়ে হাজির একদিন, চায় সব গল্প কিনতে। আকাশের দেবতার যত গল্প আছে, সব কিনে নিতে চায় আনান্সি।
নিয়ানকনপন তো হেসেই অস্থির," গল্প কিনবে তুমি? কত কত বড়ো বড়ো ধনী ধনী গাঁ এর আগে চেষ্টা করে করে ফেল মেরে গেলো, তুমি কিনবে গল্প? বলি, দাম দিতে পারবে?"
আনান্সি কিন্তু দমে না, কয়, "কি দাম দিতে হবে?"
নিয়ানকনপন কন, " ওনিনি পাইথন, ওসেবো প্যান্থার, মোবোরো বোলতাঝাঁক আর ম্মোয়াটিয়া বনপরী। পারবে দিতে এনে?"
আনান্সি কয়, " হ্যাঁ পারবো। সঙ্গে আমার বুড়ী মা ন্সিয়া কেও দেবো এনে।"
আনান্সি বাড়ী এলো, বাড়ীতে বুড়ী মা ন্সিয়া আর বৌ আসো ছিলো। আসোকে আনান্সি জিগায়, "কিকরে কও তো বৌ ওনিনি পাইথনকে ধরি?"
আসো বুদ্ধি শিখিয়ে দিলো। তখন মস্ত বড়ো এক পামগাছের লম্বা পাতা কেটে, সঙ্গে শক্ত লতা কেটে গোলা পাকিয়ে বনে চললো দুজন। গিয়েই দুজনে ঝগড়া, আসো বলে, " এই পাতা ওর থেকে অনেক বড়ো, অনেক লম্বা।"
আনান্সি বলে," আরে ছো: এই পাতা বড়ো? তোমার মাথার ঠিক নেই। সে এই পাতার চেয়ে ঢের ঢের বেশী লম্বা।"
বচসা তুমুল হয়ে উঠলো, ঝোপ থেকে ওনিনি পাইথন বেরিয়ে কইলো, "আরে কি নিয়ে তোমরা ঝগড়া কচ্ছো এত?"
আনান্সি বলে, " আরে আর বলো কেন। এই জেদী মহিলাকে তুমি বোঝাও ওনিনি। আমি হার মেনে গেছি। কিছুতেই ও মানবে না, এই পামপাতার চেয়ে তুমি অনেক লম্বা।"
ওনিনি প্যাঁচ বোঝে নি, সে বলে ও এই কথা? "এ আর এমনকি, মেপেই দ্যাখো", বলে পামপাতার মাঝদাঁড়া বরাবর শরীর টান করে শুয়ে পড়লো। সঙ্গে সঙ্গে তুরন্ত আনান্সি ওকে শক্ত লতা দিয়ে টাইট করে পামপাতার সঙ্গে বেঁধে ফেললো।
এইবারে ওসেবো প্যান্থার, এই ক্ষেত্রেও আসো বুদ্ধি দিলো, আনান্সি গর্ত খুঁড়ে উপরে লতাপাতা বিছিয়ে ঢেকে রাখলো ওসেবো প্যান্থারের যাতায়াতের পথে। পরদিন সকালে এসে দেখলো ভেতরে প্যান্থার। বেঁধে ছেঁদে পুটলি করে বাড়ী।
কিন্তু ম্মোবোরো বোলতাঝাঁক ধরে কিকরে? কামড়ায় যদি? একটা লাউয়ের খোলার কলসী ভরে জল নিয়ে কলাপাতা নিয়ে ম্মোবোরোদের বাসার কাছে গিয়ে আনান্সি সেই জল নিজের গায়ে ঢেলে আশেপাশের গাছপাতায় ঢেলে কলাপাতা মাথায় দিয়ে বসে বসে আপনমনে কইতে লাগলো, " উফ্ফ, কি বৃষ্টি রে বাবা! বিচ্ছিরি একেবারে। সময় নেই অসময় নেই ঝুপঝুপিয়ে নামলো, আমার তো তবু কলাপাতা আছে, ছাতার মতন ধরে রাখতে পারি, বেচারা বোলতাগুলো ভিজে যাবে আহারে আহারে ... আমার এই লাউয়ের কলসীতে ঢুকে পড়ে অবশ্য বাঁচতে পারে।"
বোলতারা শুনে ঢুকে পড়লো লাউয়ের খোলায় আর আনান্সি ঝপাৎ করে কলাপাতা দিয়ে লাউকলসীর মুখ বন্ধ করে বাড়ীতে দৌড়।
তিনটে হয়ে গেছে, এবারে ম্মোয়াটিআ বনপরী। এরে ধরে কেমন করে? বুঝি আর হলো না গো সাধের গল্প কেনা! আনান্সি বসে আছে তোম্বামুখে, আসো এসে একটা কাঠের পুতুল ওকে দিলো আর বুদ্ধি শিখিয়ে দিলো। বনপরীরা খেলতে আসে এমন এক সুন্দর মাঠের ধারে গিয়ে আনান্সি রাখলো পুতুলটা। পাশে রাখলো সুন্দর মিঠাই ভরা একটা পাত্র।
বনপরীরা এসেছে, ম্মোয়াটিয়া পুতুলটার কাছে সে জিগায়," মিঠাই নেবো একটা?"
পুতুলটা তো আর কিছু বলতে পারে না, ম্মোয়াটিয়া মহা রেগে গেল, দিলো সেটার গালে থাপ্পড়, অমনি হাত আটকে গেলো আঠায়, আরো রেগে দিলো অন্য হাত দিয়ে আরেকগালে আরেক থাপ্পড়, সেই হাতও আটকে গেলো। ব্যস, ম্মোয়াটিয়াও বন্দী।
ওনিনি পাইথন, ওসেবো প্যান্থার, মোবোরো বোলতাঝাঁক আর ম্মোয়াটিয়া বনপরী নিয়ে আর মা ন্সিয়াকেও নিয়ে নিয়ানকনপনের কাছে হাজির এবারে আনান্সি, কইলো," এনেছি হুজুর, সব এনেছি।"
আকাশদেবতা বেজায় অবাক আর খুশী। কইলেন, "কান্ড দ্যাখো। এত এত বড়ো বড়ো লোকে পারলো না, আনান্সি এনে দিলো সব! সাবাশ বেটা, সাবাশ।"
সব গল্প তিনি দিয়ে দিলেন আনান্সিকে, সেই থেকে সমস্ত গল্প আনান্সির নামে। যেখানে যে গল্পই বলা হোক বা লেখা হোক, সবই আসলে আনান্সির গল্প।
মন্তব্য
দারুণ!!
------------------------------
'..দ্রিমু য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
মজার!
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
চরম!!!
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
তাই নাকি?
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বাহ্ !!
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
৭ থেকে ৭০ হলে বুঝবো আনান্সির সাথে আপনার খাতির আছে
...........................
Every Picture Tells a Story
খাতির থাকলে তো হইসিলো ই !
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এই সিরিজ যেদিন ১০০ পার হবে সেদিন আপনাকে নিয়ে একটা রূপকথা লিখব আমি
সব্বনাশ! কন কি?
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন