আমার একটা স্বপ্নের জার্নাল ছিলো, তার পাতাগুলো সাদাই ছিলো, কোনোদিন কিছু লেখা হয় নি। আস্তে আস্তে বিবর্ণ হলদেটে হয়ে পাতাগুলো কেমন জীর্ণ হয়ে গেল, তখন একদিন সে কাগজগুলো আরো অনেক পুরানো খবরের কাগজের সঙ্গে জ্বেলে আগুন করলাম এক শীতের বিকালে। আগুনের সোনালী-কমলা শিখাগুলো ঘিরে বসে হাতের পাতা সেঁকতে সেঁকতে চা আর মুড়ি খাচ্ছিলাম আমরা।
সত্যিই তো, স্বপ্নের জার্নাল রেখে কি হবে? কত স্বপ্নই তো আসলে কাউকে বলা যায় না, জলকে বলে দিতে হয়। অমন কতবার হয়েছে, ভোরেরবেলা দু'হাতের অঞ্জলিতে জল নিয়ে জলকে স্বপ্ন বলে দিয়েছি, তারপরে জলের ঝাপ্টা দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলেছি, সে জল কোথায় ভেসে গেছে! শীতের সকালের পুকুরের জলের উপর থেকে ধোঁয়াধোঁয়া ওঠে, সকালের ট্রেন ধরার জন্য যেতে যেতে কতবার কত স্বপ্ন বলেছি শীতপুকুরের জলকে, সব ধোঁয়া হয়ে কোথায় উড়ে গেছে! মেঘ হয়ে উড়ে গেছে হয়তো অচিন দেশে, হয়তো বৃষ্টি হয়ে ঝরেছে কোনো না-দেখা পাহাড়ে। জলের পথ কে বা দেখতে পায়? স্বপ্নের পথ কে বা দেখতে পায়?
শীতের বিকেলের হাওয়া শিরশিরে কাঁপুনি ধরিয়ে উড়ে যায়, শিখাগুলো কাঁপে, পট পট আওয়াজ করে ফুলকিগুলো ছড়িয়ে যায়, কালচে ধোঁয়া উড়ে যায় কাগজপোড়া গন্ধ নিয়ে। পশম চাদর আরেকটু ঘন করে জড়িয়ে নিয়ে হাত বাড়িয়ে দিই শিখাগুলোর উপরে, আহ, উত্তাপ! আগুনের সঙ্গে রহস্যময় কি যেন যোগ আছে আমাদের সত্ত্বার, কি যেন না বলা একটা গোপণ কথা, কি যেন জলকে বলে দেওয়া একটা স্বপ্নের মতন যোগ।
নতুন তেমন কিছু আর লিখতে পারিনা কতকাল, তেমন কিছু যা শুধু জলকে বলে ভুলে যেতে হয় না-- যা বলা যায় আকাশবাতাসকে, বলা যায় আলোকে, বলা যায় কাছের দূরের মানুষকে। শরতের সোনাঝরা ভোরের মতন সুন্দর কিছু, যে শুনবে সেই খুশী হবে। নাহ, আর আসে না, তারা আসে না। জলের ধারা হয়ে বয়ে চলে যায় শিরশিরে ভয় আর দু:খ মুছে নিয়ে। "পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া রে...."
পুরানো বাক্স খুলে খুঁজে পাই নীল পালক, তাতে উজল কমলা রেখা! আহা কবে এসেছিলো এই পাখি? কোন্ খোলা জানালা দিয়ে ঢুকেছিলো? এক আকাশ গল্প নিয়ে? কোথায় হারিয়ে গেল সেইসব গল্পেরা? তুলো-তুলো মেঘেদের সঙ্গে উড়তে উড়তে চলে গেল ঐ নীল নীল নীল সীমানার ওপারে?
দক্ষিণের জানালা
আমি দক্ষিণের জানালায় রাখি চোখ
বহু বহু চিলেকোঠা পার করে,
অনেক লম্বা লম্বা গাছের সবুজ মাথা পার করে
দূরে, বহু দূরে ছড়িয়ে দিই আমার
গৃহবদ্ধ পোষা দৃষ্টি।
সে পার হয়ে যায়
মাঠ জঙ্গল পাহাড়,
পুকুর, দিঘি, খাল, ছোটো নদী-
সে পার হয়ে যায়
শক্ত শক্ত পাঁচিল-
সে পার হয়ে যায় বহু স্বর, বহু কথা-
চিবোনো চিবোনো সব কথা,
রাগী, নরম, গরম, ঠান্ডা সবরকমের কথা।
যেতে যেতে সে খেলা করে যায়
কখনো তুলো-তুলো মেঘের সঙ্গে
কখনো বা ডানামেলা পাখিদের সঙ্গে।
আমার মেঝেতে চলকে পড়ে শুধু
এক জানালা আলো,
এক জানালা আকাশ,
এক জানালা বাতাস।
আর
এক আকাশ গল্প।
ছবি: আন্তর্জাল
মন্তব্য
গদ্যটা আগের মতোই স্বপ্ন স্বপ্ন হলেও কবিতাটা খুব আলাদা আপনার চেনা স্টাইলের থেকে, বেশ রাগী রাগী।
ভালো লাগলো, কিন্তু এক কথা আর কত বার বলা যায়।
পাঠকের ভালোলাগাই রচয়িতার পরম প্রাপ্তি। (এই কথা কতজনে কতবার বলে গেলেন, কিন্তু নতুন কথা আর তৈরী তো হলো না! আফশোস। )
রাগী রাগী স্টাইল? এটা প্রায় বছর চারপাঁচ আগের কবিতা, তখন খুব রাগী ছিলাম।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ফারহানা সিমলা
উইড়া যায় রে পক্ষী
পইড়া থাকে ছায়া।।।।।।
ফারহানা সিমলা
ধন্যবাদ ফারহানা।
ছায়া ও মিলিয়ে যায়, পড়ে থাকে মায়া।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
মূলত পাঠক অমূলত বলেছেন-
ভালো লাগলো, কিন্তু এক কথা আর কত বার বলা যায়।
এইবার বুঝতে পারছেন উনিও!
বুইড়া আঙ্গুলটা পুরা ব্যথা করে আমার আইজকাইল!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
এত বুইড়া আঙুল দেখাইয়েন না, শ্যাষে সইষ্যার ত্যাল ডলতে অইব।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপ্নেও তাইলে নিজের দাঁতের ব্যাপারে খিয়াল কইরেন কিন্তুক!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
অসাধারণ! অনেকদিন পর একটি এই রকম লেখা পড়লাম!
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
অনেক ধন্যবাদ বিপ্লব।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কত স্বপ্নই তো আসলে কাউকে বলা যায় না, জলকে বলে দিতে হয়। অমন কতবার হয়েছে, ভোরেরবেলা দু'হাতের অঞ্জলিতে জল নিয়ে জলকে স্বপ্ন বলে দিয়েছি, তারপরে জলের ঝাপ্টা দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলেছি, সে জল কোথায় ভেসে গেছে! ...
সুন্দর...
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ধন্যবাদ সু পা শিমূল।
আপনার লেখার আশায় বসে থাকি।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ভালবাসা ভেঙে গেলে পড়ে থাকে মায়া, মায়ার নেই হৃদয়! ..
লেখাটা ভাল-লাগলো... ভাল-থাকবেন!
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !
ধন্যবাদ কবি শাহীন হাসান।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ছায়াময় আর মায়াময় লেখা। ভালো লাগলো।
_________________________________________________________
খাতার দিকে তাকিয়ে দেখি,এক পৃথিবী লিখবো বলে-একটা পাতাও শেষ করিনি।
_________________________________________________________
খাতার দিকে তাকিয়ে দেখি,এক পৃথিবী লিখবো বলে-একটা পাতাও শেষ করিনি। ( জয় গোস্মামী)
ধন্যবাদ শামীম রুনা।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সুন্দর!
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
ধন্যবাদ তানিম।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন