আইজাক আসিমভের "শেষ প্রশ্ন" গল্পটি পড়ে অবাক হয়ে গেলাম! অবাক মানে, একেবারে তাব্ধা!। আশ্চর্য সুন্দর কল্পবিজ্ঞান। ভাবলাম অনেকেই হয়তো পড়েছেন কিন্তু কেউ কেউ যদি না পড়ে থাকেন? তাছাড়া নিজের ভাষায় পড়তে তো ইচ্ছা করে। তাই অনুবাদ করতে বসে গেলাম। সুধীগণ নিজগুণে ক্ষমা করবেন যদি এই দুর্বল কলমে ভালো না আসে, তবে যথাসাধ্য যত্নে কাজটুকু করার চেষ্টা ছিলো। আজকে শেষাংশ। আগের অংশটুকু পাবেন এইখানে
3
লামেথ এর ভি জে ২৩এক্স তার হাতে ধরা ত্রিমাত্রিক ম্যাপটার দিকে তাকিয়েছিল, এটা মিল্কি-ওয়ে গ্যালাক্সির ম্যাপ। সে বললো, "আমার কেমন যেন লাগছে রিপোর্ট টা লিখতে। এইটা কি এত গুরুত্বপূর্ণ?"
নাইক্রনের এমকিউ ১৭ জে বলে, "গুরুত্বপূর্ণ, অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি তো জানেন এই হারে কলোনাইজেশন চললে গ্যালাক্সি ভরে যাবে আর মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই।"
এই দু'জন, ভি জে ২৩এক্স আর এম কিউ ১৭জে দেখতে তরুণ, মজবুত আর ধারালো দীঘল চেহারা।
ভি জে ইতস্তত করে বলে, " আমি জানি। তবু। এমকিউ, এরকম একটা নিরাশার রিপোর্ট লিখতে হাত সরছে না আমার।"
" কিন্তু লিখতে তো হবেই। একটু আধটু মুচড়ে পালটিয়ে দিলেও শেষপর্যন্ত বলতেই হবে।"
ভি জে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, "স্পেস অসীম, অনন্ত। একশো বিলিয়ন গ্যালাক্সি রয়েছে, তার বেশীও হতে পারে।"
"একশো বিলিয়ন বা তার বেশী মোটেই অসীম না, আর কলোনাইজেশন হতে থাকলে ক্রমেই কমতে থাকবে খালি গ্যালাক্সি। ভেবে দেখুন, কুড়ি হাজার বছর আগে মানুষজাতি প্রথম নক্ষত্রের শক্তিকে সরাসরি ব্যবহার করতে শিখলো তাদের প্রাচীন প্রিমিটিভ মালটিভ্যাক এর সহায়তায়। কয়েক শতক পরে আন্ত:-নাক্ষত্রিক অভিযান সম্ভব হলো। মানবজাতির এক মিলিয়ান বছর লেগেছিল একটা ছোট্টো গ্রহকে প্রথম ভর্তি করে ফেলতে। তারপরে মাত্র পনেরো হাজার বছরে গ্যালাক্সির বাকীটা তার দখলে এসে গেছে। এখন জনসংখ্যা প্রতি দশ বছরে দ্বিগুণ হয় --"
ভি জে কথার মাঝখানেই বলে, "অমরত্বের সৌজন্যে। "
এম কিউ বলে, " মানছি অমরত্বের ব্যাপারটা একটা জটিল সমস্যা। কিন্তু এইটা তো মানবেন যে এটাকে পাশ কাটানো যাবে না। গ্যালাক্টিভ্যাক আমাদের কত সমস্যা সমাধান করে উপকার করেছে, কিন্তু মৃত্যু-সমস্যা মিটিয়ে ফেলে আগের বাকি সব সমাধান নয়ছয় করে ফেলেছে। "
অদ্ভুত হেসে ভি জে বলে, " অমরত্ব! কী সাংঘাতিক সমস্যা! কিন্তু ভেবে বলুন তো, আপনি কি নিজের জীবন সাধ করে ছেড়ে দিতে চান?"
এম কিউ চট করে উত্তেজিত হয়ে বলে, "না না, কিছুতেই না।" তারপরে কিছুটা শান্ত হয়ে বলে," আরে আমার কথা আসছে কেন? আমার এখনো বেশী বয়স না। যদি কিছু মনে না করেন ভি জে, আপনার বয়স কত? "
"আমার এখন দু'শ তেইশ বছর চলছে। আপনার? "
"আমার এখনো দু'শই হয় নি। ঠিক আছে, কাজের কথায় আসা যাক। প্রতি দশবছরে জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়। এই গ্যালাক্সি ভরে গেলে তার পাশেরটা ভরে যাবে দশ বছরে। আর দশ বছর, আরো দুটো গ্যালাক্সি। আর এক দশক, আরো চারটে। এইভাবে একশো বছরে এক হাজার গ্যালাক্সি। হাজার বছরে এক মিলিয়ন। দশ হাজার বছরে সমস্ত গ্যালাক্সি শেষ। তারপরে?"
ভি জে বলে, "তার পরে আছে যাতায়াতের খরচ। কত সানপাওয়ার ইউনিট যে লাগবে একেক জনকে একেক গ্যালাক্সি থেকে আরেক গ্যালাক্সিতে যেতে, কেজানে।"
" ঠিক বলেছেন, খুব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট এটাও। ইতিমধ্যেই বছরে দুইখানা সানপাওয়ার ইউনিট করে লাগছে মানবজাতির। "
"আরে তার বেশীটাই তো অপচয়। বছরে এমনি এমনি জ্বলে শেষ হয়ে যাচ্ছে হাজার সানপাওয়ার ইউনিট, শুধু আমাদের গ্যালাক্সিতেই। কি করবেন? প্রাকৃতিক ব্যাপার!"
"মানছি তাও। কিন্তু যদি একশো পারসেন্ট এফিসিয়েন্সিও থাকতো, তাও তো একসময় সরবরাহ ফুরাতো। এমনিতেই শক্তিচাহিদা জনসংখ্যার চেয়েও দ্রুত বাড়ে। আমরা গ্রহণযোগ্য গ্যালাক্সি ফুরানোর অনেক আগেই ফুরিয়ে ফেলবো আমাদের শক্তি-উৎস। খুব ভালো একটা দিক তুলে ধরেছেন আপনি, ধন্যবাদ ভি জে।"
ভি জে বলে, " আন্ত:নাক্ষত্রিক গ্যাস থেকে নতুন তারা বানাতে হবে আমাদের।"
এম কিউ হাসে, বলে, "যে শক্তি ছড়িয়ে যায় তার পুরোটা উদ্ধার করা যায় না।"
ভি জে খড়কুটা আঁকড়াবার মতন বলে, " হয়তো কোনো উপায় আছে এনট্রপি উল্টোদিকে ঘুরিয়ে দেবার, গ্যালাক্টিভ্যাক বলতে পারবে।"
ভি জে ঠিক সিরিয়াসলি বলে নি, কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে এম কিউ পকেট থেকে বার করে আনলো কনট্যাক্ট ক্রিস্টাল, রাখলো সেটা সামনে টেবিলে, বললো, "তবে এখুনি জিগ্গেস করা যাক গ্যালাক্টিভ্যাককে।"
এম কিউ বলে, "আমারও অনেকদিন থেকেই এই কৌতূহল। একদিন না একদিন মানুষজাতিকে তো এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই হবে।"
টেবিলের উপরে রাখা কন্ট্যাক্ট ক্রিস্টালটার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে সে, দুই ইঞ্চি লম্বা, দুই ইঞ্চি চওড়া আর দুই ইঞ্চি উচ্চতার নিখুঁত ঘনক একটি, হাইপারস্পেসের মধ্য দিয়ে জুড়ে আছে গ্যালাক্টিভ্যাকের সঙ্গে। কী অদ্ভুত আশ্চর্য ব্যাপার! এইটুকু জিনিসটা মুহূর্তের মধ্যে ঐ সুবিশাল গ্যালাক্টিভ্যাকের সঙ্গে জুড়ে যেতে পারছে!
এম কিউ মাঝে মাঝে কল্পনা করতে ভালোবাসে তার বিরাট অমর জীবনে সে কখনো সুযোগ পাবে নাকি গ্যালাক্টিভ্যাকের দেখা পাবার। সে নাকি একটা ভিন্ন জগৎ, সেখানে নাকি অচিন্তনীয় উপায়ে চলছে তথ্যের আদানপ্রদান। পুরানো আণবিক ভালভের জায়গা নিয়েছে সাব-মেসনিক স্রোতোধারা, মাকড়সার জালের মতন ছড়িয়ে আছে বলরেখারা, বেশীরভাগ অংশই আছে হাইপারস্পেসে, যেটুকু অনুভবগ্রাহ্য ত্রিমাত্রিক জগতে আছে সেটুকুও নাকি হাজার মাইল!
এম কিউ ১৭-জে হঠাৎ করে ঝুঁকে পড়ে কন্ট্যাক্ট ক্রিস্টালের দিকে, জিজ্ঞাসা করে, "গ্যালাক্টিভ্যাক, এনট্রপির বেড়ে চলা কী উল্টোদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া যাবে কোনোদিন?"
ভি জে ২৩-এক্স শুনে চমকে ওঠে, প্রায় আঁতকে ওঠা গলায় সে বলে," আহ, এ কি জিগ্গেস করলেন? আমি ঠিক একথা বলতে চাই নি তখন।"
এম কিউ বলে, "কেন নয়? প্রশ্নটা তো ভালো প্রশ্ন।"
"আরে সবাই জানে এনট্রপি উল্টোদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া যায় না। ধোঁয়া আর ছাই থেকে গাছ বানানো যায় না।"
"এখনো গাছ আছে আপনাদের ওখানে?" এম কিউ কৌতূহলী হয়ে বলে।
ভি জে কিছু বলে না, চুপ করে চেয়ে থাকে ক্রিস্টালটার দিকে। হঠাৎ নীরবতার বুক ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে কোমল সুন্দর একটা স্বর, গ্যালাক্টিভ্যাকের গলা, ক্রিসটাল কন্ট্যাক্ট থেকে, সে বলছে, "তথ্য অপ্রতুল, এই প্রশ্নের সঠিক জবাব দেবার মতন তথ্য এখনো অপ্রতুল।"
মানুষ দু'জন শুনে শান্ত হয়, ফিরে যায় তাদের রিপোর্ট লেখায়। গ্যালাক্টিক কাউন্সিলে রিপোর্ট দাখিল করতে হবে তাদের, সময় বেশী নেই।
4
জীপ্রাইমের মন নতুন গ্যালাক্সিটার অসংখ্য তারার দিকে চেয়ে থাকে, এখান থেকে তারাগুলি মিহিন বালিচুর্ণের মতন লাগে। এই গ্যালাক্সিটা আগে দেখে নি জীপ্রাইম, সবগুলো কী সে কোনোদিন দেখতে পাবে? কত কত গ্যালাক্সি, মহাশূন্যে ছড়িয়ে আছে তাদের নিজের নিজের মানুষদের নিয়ে। মানুষদের দেহগুলো কেবল নানা নক্ষত্রের গ্রহে গ্রহে রয়ে গেছে, মনগুলো মুক্ত হয়ে মহাশূন্যে বিচরণ করছে। এই যেমন জীপ্রাইমের মন ঘুরে বেড়াচ্ছে এখানে, এই নতুন গ্যালাক্সিটার কাছে।
ঘুরে বেড়াচ্ছে তার মন, অমর শরীর রয়েছে তার আপন গ্রহে। এখন সকলেরই এরকম। শরীরগুলো যুগযুগ ধরে হিমকক্ষে ঘুমিয়ে আছে, জীবনরক্ষার প্রক্রিয়া যন্ত্রের নিয়ন্ত্রণে, ত্রুটিহীন নিখুঁত যত্নে আছে দেহগুলি। মাঝে মাঝে, খুব বিরল যদিও, কেউ কেউ জেগে ওঠে, স্বাভাবিক জীবনযাপন করে কিছুদিন, আবার ঘুমিয়ে পড়ে হিমকক্ষে গিয়ে। নতুন মানুষের জন্ম খুব বিরল হয়ে গেছে, আর তার দরকারই বা কি? এমনিতেই অমর মানবদল মহাবিশ্ব ভরে আছে, নতুনরা যদি ক্রমাগত আসতে থাকে, তাদের জন্য যথেষ্ট জায়গা কোথায়? তারচেয়ে এই ভালো।
জীপ্রাইম নিজের চিন্তার জলে ডুবে গেছিলো, হঠাৎ ভেসে উঠলো, কাছে এসেছে আরেকটি মন। তার মন সক্রিয় হয়ে উঠলো পরিচয়ের জন্য। "আমি জীপ্রাইম, আপনি?"
উত্তর এলো, "আমি ডীসাবইয়ুন। আপনি কোন্ গ্যালাক্সি থেকে?"
জীপ্রাইম বলে, "আমরা আমাদের গ্যালাক্সিটাকে শুধু গ্যালাক্সি ই বলি। আপনারা আপনাদেরটাকে কি বলেন?"
"আমরাও। মনে হয় সব মানুষই তাদের গ্যালাক্সিকে শুধু গ্যালাক্সিই বলে। আর বলবে নাই বা কেন? "
"ঠিকই। কেনই বা বলবে না। সবই তো সমান।"
"না, সব গ্যালাক্সি এক না কিন্তু। কোনো একটা গ্যালাক্সিতে মানুষের উদ্ভব হয়েছিল একদিন।"
জীপ্রাইম মহাশূন্যে দৃষ্টি ছড়িয়ে দিয়ে বলে, "কোন্ গ্যালাক্সি সেটা?"
ডীসাবইয়ুন বলে, "আমি তো জানি না। কিন্তু ইউনিভ্যাক বলতে পারবে।"
জীপ্রাইমের মন কৌতূহলে জ্বলজ্বল করে ওঠে, " জিজ্ঞাসা করি ওকে?"
ইচ্ছাপ্রকাশমাত্র জীপ্রাইমের অনুভব ছড়িয়ে যেতে থাকে, ছড়িয়ে যেতে থাকে কোটি কোটি গ্যালাক্সিভরা মহাবিশ্বে। আহা, বিন্দু বিন্দু রত্নের মতন মহাবিশ্বের গভীর বুকে ছড়িয়ে আছে কোটি কোটি নক্ষত্রজগৎ, একেকটি কয়েকশো বিলিয়ন নক্ষত্র ধারণ করে। কত শতসহস্র কোটি মানুষ ঘুমিয়ে আছে বিলিয়ন বিলিয়ন গ্রহে, কত শত সহস্র কোটি মন ঘুরে বেড়াচ্ছে মহাশূন্যে। তবু এই সমুদ্রতীরে বালুকণার মতন ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য গ্যালাক্সিদের মধ্যে একটা অনন্য, সেখানে মানবজাতির সূচনা হয়েছিলো কোন্ বহু পুরাতন যুগে। একটা সময় ছিলো যখন শুধু সেখানেই মানুষ ছিলো, অন্য সব গ্যালাক্সিতে তখন মানুষের চিহ্নও ছিল না।
জীপ্রাইমের কৌতূহল তার ধৈর্যকে ছাড়িয়ে যায়, সে বলে," ইউনিভ্যাক, বলতে পারো কোন্ গ্যালাক্সিতে মানুষের উদ্ভব?"
ইউনিভ্যাক শুনলো, কারণ জগতের প্রতিটি স্থানেই তার গ্রাহকযন্ত্র রয়েছে, হাইপারস্পেসের মধ্য দিয়ে সেগুলো পৌঁছেছে মূল ইউনিভ্যাকে। মূল ইউনিভ্যাক ঠিক কোথায় আছে, তা বোঝা আজ আর কারুর পক্ষেই সম্ভব না। জীপ্রাইম শুধু একজনকে জানতো যার মন ইউনিভ্যাকের খুব কাছে গেছিলো, অনুভবযোগ্য দূরত্বে, সে তাকে বলেছিলো সে কেবল একটা উজ্জ্বল গোলক দেখেছে, মাত্র ফুট দুয়েক ব্যাসের একটা জ্বলজ্বলে গোলক। জীপ্রাইম অবাক হয়ে ওকে জিগ্গেস করেছিল, "মাত্র এইটুকু? এইটুকু জিনিস কিকরে ইউনিভ্যাক হতে পারে?" সে ওকে বুঝিয়ে বলেছিল, "ইউনিভ্যাকের প্রায় সবটাই আছে হাইপারস্পেসে, সেটা কিরকম তা আমরা বুঝতে পারবো না, আমরা যে ত্রিমাত্রিক, দৈর্ঘ প্রস্থ উচ্চতার জগতে সীমাবদ্ধ। হাইপারস্পেস আমাদের কল্পনারও বাইরে।"
সত্যি, আর বুঝতে পারা সম্ভব না। সেদিন চলে গেছে যখন মানুষ কিছুটা বুঝতে পারতো, ছুঁতে পারতো, দেখতে পেতো তাদের সরলসোজা মালটিভ্যাক বা মাইক্রোভ্যাককে। এমনকি গ্যালাক্টিভ্যাকের সময়ও কনট্যাক্ট-ক্রিস্টাল দেখা যেতো, ছোঁয়া যেত। কিন্তু এখন সবই হাইপারস্পেসে। যন্ত্র নিজে নিজে ক্রমাগত উন্নতি ঘটিয়ে গেছে নিজের, জটিল থেকে জটিলতর হয়েছে, পূর্বতন যন্ত্র তার সমস্ত তথ্যের উত্তরাধিকার দিয়ে গেছে নতুনতরকে। মিলিয়ন বছরের বিবর্তনে আজকে এসে এমন জায়গায় পৌঁছেছে তার আদিনির্মাতারা কল্পনাতেও আনতে পারেনি।
ইউনিভ্যাক জীপ্রাইমের প্রশ্ন শুনতে পেয়ে সেইমত তার চিন্তাকে সংহত করে দিল। কোটি কোটি গ্যালাক্সির মধ্যে একটির উপরে এসে তার মন স্থির হলো। বিন্দুর মতন দেখতে পাওয়া গ্যালাক্সি বড় হয়ে উঠতে লাগলো, তারাগুলো স্পষ্ট হলো। এবারে ইউনিভ্যাকের চিন্তা ভেসে এলো, অসীম দূর থেকে ভেসে এলো অসাধারণ স্পষ্ট হয়ে, ইউনিভক বললো, "এই হলো সেই গ্যালাক্সি যেখানে মানুষের উদভব।"
জীপ্রাইম দেখলো সেটা একইরকম দেখতে, তেমন কোনো বিশেষত্ব নেই। একটু হতাশ হলো সে, ভেবেছিলো কোনো দারুণরকম কিছু দেখবে বুঝি। নিজের হতাশাকে সে লুকাতে চেষ্টা করে।
ডীসাবইয়ুন কাছেই ছিলো, সেও দেখছিলো। একটা তারার দিকে নির্দেশ করে সে ইউনিভ্যাককে জিগ্গেস করে, "আর ঐ তারাটা? ওটাই বুঝি মানুষের সূচনাগ্রহের জীবনতারা?"
ইউনিভ্যাক বলে, "না, মানুষের সূচনা যে গ্রহে হয়েছিল, সেই গ্রহজগতের কেন্দ্রতারাটি অনেক আগেই নোভা হয়ে বিস্ফোরিত হয়ে গেছে। এখন সেটা একটা শ্বেতবামন তারা।"
"আর মানুষগুলো? তাদের কি হলো? " জীপ্রাইম এত হতচকিত হয়ে গেছে যে সে আর কিছু ভাবতে পারছে না ভালো করে, প্রশ্নটা একেবারে স্বতস্ফূর্তভাবে বেরিয়ে এসেছে।
ইউনিভ্যাক বললো,"মানুষগুলোর জন্য নতুন জগত তৈরী করে দেওয়া হয়েছে, তাদের অমর দেহগুলো সেখানে নিরাপদে আছে।"
"হ্যাঁ, তা তো ঠিকই, তাতো ঠিকই। ভুলে গেছিলাম।" জীপ্রাইম তাড়াতাড়ি বলে, কিন্তু গভীর একটা বেদনা তার মনের খুব ভিতরে চারিয়ে যেতে থাকে, হারিয়ে ফেলার বেদনা। সে মন সরিয়ে নেয় মানুষের সূচনা গ্যালাক্সি থেকে, সেটা আবার বিন্দুবৎ হয়ে দূরে মহাশূন্যে হারিয়ে যায়। সে আর তা দেখতে চায় না, কোনোদিন না।
ডীসাবইয়ুন অনুমান করেছিলো কিছু একটা, সে জিগ্গেস করে, " জীপ্রাইম, কি হলো আপনার?"
অবসন্ন-মন জীপ্রাইম বলে," নক্ষত্রেরা মরে যাচ্ছে। মানুষের সূচনা-নক্ষত্র মরে গেছে। "
"নক্ষত্রের তো মৃত্যু আছেই। সবাই জানে। তাতে কেন আপনি ভেঙে পড়লেন এত?"
"যখন জগতের সব তারা নিভে যাবে, সব কর্মযোগ্য শক্তি শেষ হয়ে যাবে, তখন আমাদের সকলের অমর দেহগুলোও শেষ হয়ে যাবে। কেউ রক্ষা পাবে না ডীসাবইয়ুন, আমি না, আপনি না, কেউ না।"
"তার এখনও অনেক বিলিয়ন বছর দেরি আছে জীপ্রাইম।"
"আমি তা চাই না। বিলিয়ন বছর পরেও না। ইউনিভ্যাক, নক্ষত্রদের কি মৃত্যু থেকে রক্ষা করা যায় না?"
ডীসাবইয়ুন মজা পেয়ে বলে, "মানে আপনি এনট্রপি উলটোদিকে ঘুরিয়ে দেবার কথা বলছেন ? "
ইউনিভ্যাক উত্তর দেয়," তথ্য অপ্রতুল, এই প্রশ্নের সঠিক জবাব দেবার মতন তথ্য এখনো অপ্রতুল।"
জীপ্রাইমের চিন্তা তার নিজের গ্যালাক্সির দিকে ফেরে, সে ডীসাবইয়ুনের কথা ভুলে যায়, ভুলে যায় তার বহু বিলিয়ন বছরের আশ্বাস, ভুলে যায় তার এনট্রপির নিয়ম মনে করিয়ে দেওয়ানো। দ্রুত নিজের গ্যালাক্সির দিকে ভেসে যেতে থাকে জীপ্রাইম, বিদায় নিয়েও আসে না ডীসাবইয়ুনের কাছে। কোথাকার কে ডীসাবইয়ুন, ট্রিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের কোনো গ্যালাক্সিতে হয়তো ঘুমিয়ে আছে তার দেহ, অথবা হয়তো তত দূরে না, পাশের তারাজগতেই সে ঘুমিয়ে আছে। কিছুতেই কিছু যায় আসে না জীপ্রাইমের। সে চায় না ডীসাবইয়ুনের নিরাশার কথা শুনতে, আহা ন্যাকা, বিলিয়ন বছর বাকী! তারপরে? নেকু, এনট্রপির বেড়ে চলে, তার বেড়ে চলা ঘুরিয়ে কমে চলা করে দেওয়া যায় না। শুনে যেন মনটা তর হয়ে যাবে! বিরক্ত লাগে!
আর্ত ও অবসন্ন মনে জীপ্রাইম আন্তর্নাক্ষত্রিক হাইড্রোজেন সংগ্রহ করতে থাকে, একটা ছোটো নক্ষত্র তাকে বানাতে হবে, যদিও নক্ষত্রেরা মরে যায় তবু হয়তো নতুন কিছু নক্ষত্র বানানো সম্ভব।
5
সব মানুষের মন মিলে এখন এক অতিমানব। বহু কোটি মানুষের মনের সমন্বয়ে এই অতিমানব, সবাই মিলে একজন। বহু কোটি জীবন্ত কোষ মিলে যেমন একটিমাত্র জীবদেহ, তেমনি ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন মানুষের মন মিলে এই একজন অতিমানব। এইসব মানুষের অমর দেহগুলি সযত্নে ঘুমন্ত আছে গ্রহে গ্রহে, নিখুঁত যান্ত্রিক দেখাশোনায়, এইসব যন্ত্রপাতি স্বয়ংক্রিয়, এরা আছে কস্মিভ্যাকের নিয়ন্ত্রণে। কস্মিভ্যাকের কখনো ভুল হয় না, তাই এইসব যন্ত্রপাতি একেবারে নিখুঁত। বহু বিলিয়ন গ্যালাক্সি ভরা এইসব অজর অমর বহুকোটি মানুষের মন একসাথে মিশে গিয়েই অতিমানব, মুক্ত সেই অতিমানব মহাশূন্যে বিচরণরত।
অতিমানব বলে, " মহাবিশ্ব শেষ হয়ে আসছে।"
সে তাকায় ক্ষীণ হয়ে আসা গ্যালাক্সিদের দিকে, দৈত্যাকার তারারা সুদূর অতীতেই বিস্ফোরিত হয়ে শেষ হয়ে গেছে, মাঝারি তারারাও আর নেই, এখন প্রায় সব তারাই শ্বেতবামন তারা, নিজস্ব জ্বালানি শেষ, ভিতরে থেকে যাওয়া তাপ আস্তে আস্তে বিকিরণ করতে করতে নিভে যাবার দিকে চলেছে এরা সবাই। মহাবিশ্ব শেষ হয়ে আসছে।
আন্তর্নাক্ষত্রিক ধূলা গ্যাস ইতদি জড়ো করে নতুন নক্ষত্র তৈরী হয়েছে অনেক, কিছু কিছু প্রাকৃতিক উপায়েই হয়েছে, কিছু কিছু কৃত্রিমভাবে। সেইসব তারাও জ্বলে জ্বলে শেষ হবার পথে। বহু শ্বেতবামন তারা একসঙ্গে পিষ্ঠ করে নতুন নক্ষত্র তৈরী হয়েছে, কিন্তু ওভাবে বেশী হয় না। প্রতি হাজারে একটা বড়োজোড়। সেগুলোও শেষ হবার পথে।
অতিমানব বলে, "মহাবিশ্বে এখনো যা শক্তি আছে, খুব ভালোভাবে সতর্কতার সঙ্গে, কস্মিভ্যাকের নির্দেশ অনুসারে ব্যবহার করলে কয়েক বিলিয়ন বছর চলবে। তাও একদিন না একদিন সব শেষ হবেই। এনট্রপিকে সর্বোচ্চে পৌঁছাতে হবে, মহাবিশ্বের অনতিক্রম্য এই নিয়ম। এই নিয়মের কি ব্যতিক্রম সম্ভব? জিজ্ঞাসা করি কস্মিভ্যাককে। "
কস্মিভ্যাক তাদের ঘিরে আছে সবদিক থেকে, কিন্তু এখন এর পুরোটাই হাইপারস্পেসে। এর সামান্য ভগ্নাংশ ও এখন ত্রিমাত্রিক বিশ্বে নেই, সবটাই হাইপারস্পেসে। কস্মিভ্যাক কোনো বস্তু বা শক্তি দিয়ে নির্মিত নয়, বস্তু বা শক্তির ধারণাই আর সেখানে চলে না। এই অতিমানবও কিছুই জানে না কস্মিভ্যাকের, কিভাবে তা কাজ করে কিরকম তার আকারপ্রকার, এসব ব্যপারগুলো অতিমানবেরও কল্পনার অতীত।
অতিমানব বলে, " কস্মিভ্যাক, এনট্রপিকে কি রিভার্স করা যায়?"
কস্মিভ্যাক বলে, " তথ্য অপ্রতুল, এই প্রশ্নের সঠিক জবাব দেবার মতন তথ্য এখনো অপ্রতুল।"
অতিমানব বলে, " প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করো।"
কস্মিভ্যাক বলে, " করবো। আমি এই কাজ করে চলেছি একশো বিলিয়ন বছর ধরে। আমি আর আমার পূর্বতন যন্ত্রেরা সকলেই এর উপরে কাজ করে গেছে। তাদের সংগৃহীত সব তথ্য উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছি আমি। এই প্রশ্ন বহুবার আমাদের করেছে মানুষ, কিন্তু সবসময়েই তথ্য অপ্রতুল ছিল। এই প্রশ্নের সঠিক জবাব দেবার মতন তথ্য এখনো অপ্রতুল।"
অতিমানব বলে, "এমন কি কোনো সময় আসবে যখন এই প্রশ্নের জবাবের মতন যথেষ্ট তথ্য থাকবে? নাকি এই প্রশ্নের সমাধান চিরকালের জন্যই অসম্ভব? "
কস্মিভ্যাক বলে, "কোনো প্রশ্নের সমাধানই চিরকালের জন্য অসম্ভব নয়।"
অতিমানব বলে, "কখন পাবে সমাধানের জন্য যথেষ্ট তথ্য?"
কস্মিভ্যাক বলে, " তা বলতে পারি না। আমি কাজ করে চলবো।"
অতিমানব বলে, "বেশ। আমরা অপেক্ষায় থাকলাম।"
6
সমস্ত নক্ষত্র আর সব গ্যালাক্সিরা শেষ, মহাবিশ্ব এখন প্রায় পুরোটাই অন্ধকার। দশ ট্রিলিয়ন বছরের জীবন শেষে এখন মহাবিশ্ব চিরনির্বানের দিকে চলেছে।
অতিমানবসত্ত্বা থেকে এক এক করে মানুষমনগুলি মিশে যাচ্ছে কস্মিভ্যাকের সঙ্গে, তাদের আর কোনো ভিন্নতাই রইলো না, তারা এক হয়ে মিশে গেল কস্মিভ্যাকে- যার আকারপ্রকার বিষয়ে কোনো ধারণাই তারা করতে পারতো না, সে শক্তি না বস্তু এই কথাটারই মানে হতো না, আজ তারা তাতেই মিশে যাচ্ছে এক হয়ে। অমর মানবদেহগুলি শেষ হয়ে গেলো বটে কিন্তু তাতে কোনো ক্ষতি আর নেই।
শেষ মানবমনটি কস্মিভ্যাকের সঙ্গে মিলে যাবার আগে একটু থমকে দাঁড়ালো, তাকিয়ে দেখলো তারানেভা, গ্যালাক্সিনেভা অন্ধকার মহাবিশ্বের দিকে, ধীর অথচ নিশ্চিত গতিতে যে পরম শূন্য তাপমাত্রার দিকে চলেছে। এনট্রপি চলেছে সর্বোচ্চের দিকে, অনতিক্রম্য সেই নিয়ম যে নিয়মের কথা কোন আদিযুগ থেকে মানুষকে প্রশ্নার্ত করে রেখেছে।
শেষ মানবমন বললো," কস্মিভ্যাক, এই কি জগতের শেষ? এই বিশৃঙ্খলা থেকে কি নতুন করে মহাবিশ্ব সৃষ্টি করা যাবে নাকি এইখানেই সব শেষ?"
কস্মিভ্যাক বললো, " তথ্য অপ্রতুল, এই প্রশ্নের সঠিক জবাব দেবার মতন তথ্য এখনো অপ্রতুল।"
শেষ মানবমন মিলে গেল কস্মিভ্যাকের সঙ্গে, এখন শুধু রইলো কস্মিভ্যাক, সেও হাইপারস্পেসে।
বস্তু আর শক্তি শেষ হয়ে গেল, এমনকি স্পেসটাইমও শেষ। কেবল কস্মিভ্যাক রইলো হাইপারস্পেসে, শেষ প্রশ্নের জবাব না দেওয়া পর্যন্ত তার মুক্তি নেই অস্তিত্ব থেকে। সেই বহুযুগের প্রশ্নটি, দশ ট্রিলিয়ন বছর আগের প্রিমিটিভ মাল্টিভ্যাক যে প্রশ্ন প্রথম শুনেছিল দু'জন মানুষের কাছে, সেই দুজন মানুষের সঙ্গে এই কস্মিভ্যাকে মিলে যাওয়া অতিমানবের যত তফাত, তার চেয়ে বহুগুণ বেশী তফাত সেই মাল্টিভ্যাকের সঙ্গে আজকের কস্মিভ্যাকের। কিন্তু সেই প্রশ্নটি বেঁচে আছে, আজো অমীমাংসিত। বাকী সব প্রশ্নের জবার এসে গেছে, কিন্তু শেষ প্রশ্নটির সমাধান হওয়ার আগে কস্মিভ্যাক মুক্তি পাবে না।
একনিষ্ঠার সঙ্গে কস্মিভ্যাক সংগ্রহ করে চলে তথ্য, একসময় সব তথ্য সংগ্রহ শেষ হয়। এখন এগুলোকে সব ঝাড়াই বাছাই করে সমাধান বার করতে হবে। কেজানে কত যুগের পর যুগ কেটে যায়, জানা যাবে না, কারণ প্রচলিত স্পেসটাইম ই তো নেই আর! একসময় কস্মিভ্যাক পেয়ে যায় উত্তর, সে এনট্রপিকে রিভার্স করার উপায় পেয়ে যায়। কোনো মানুষ নেই, কাকে দেবে সে উত্তর? কিন্তু তাতে কিছু আসে যায় না, মানুষ থাক আর না থাক, এই মহাউত্তর নিজেকে প্রকাশ করবে নিজেই।
হাইপারস্পেসে আরো বহু বহু মহাযুগ অতিক্রান্ত হয়, ভাবতে ভাবতে খুঁজতে খুঁজতে একসময় কস্মিভ্যাক খুঁজে পায় সমাধান প্রকাশের সর্বোত্তম পন্থা, সে ধাপে ধাপে সেইভাবে সবকিছু ঠিকঠাক করে।
উত্তর প্রকাশের মহামুহূর্ত সমাগত হলে কস্মিভ্যাক বলে, "এইবার!!!! "
শেষপ্রশ্নের উত্তর প্রকাশিত হয় মহাবিস্ফোরণে, তীব্র আলোর বন্যা নিয়ে বেরিয়ে আসে নতুন মহাজগৎ।
এতকাল পরে কস্মিভ্যাক চিরবিশ্রামে যায়।
(শেষ)
বি: দ্র: কিছু কিছু অংশে যেখানে খুব বেশীরকম একটা নির্দিষ্ট সংস্কৃতির উপরে নির্ভরতা রয়েছে সেখানে সেখানে ভাবানুবাদ করা হয়েছে।
মন্তব্য
অনেকককককককককক ধন্যবাদ!...অপেক্ষার পালা শেষ হল। চমৎকার হয়েছে অনুবাদ! আরো চাই।
হতাশাবাদীর হতাশাব্যঞ্জক হতশ্বাস!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
আপনাকেও ধন্যবাদ স্বপ্নহারা।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
মূল গল্পটি পড়েছিলাম অনেকবছর আগে। তখনও স্তব্ধ হয়ে বসে ছিলাম কিছুক্ষণ। কি দুর্দান্ত কাহিনী! এত বছর পর অনুবাদটি পড়ে আবারও চুপ করে বসে থাকলাম।
তবে রাগিবের সাথে আমি একমত। গল্পের শেষে "লেট দেয়ার বী লাইট" বললে যে ভাবে বাইবেলে বর্ণিত পৃথিবী সৃষ্টির সাথে মিশে যায়, এই কথাটির বাংলা অনুবাদটি ঠিক সেরকম কোন এফেক্ট আনেনা।
আপনার অনুবাদটি খুবই ঝরঝরে হয়েছে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
অনেক ধন্যবাদ জাহিদ হোসেন।
আপনি ঠিকই বলেছেন, কালকে রাগিবও বলেছেন দেখেছি, আমিও সেই শুনেই ঐ জায়গাটা পাল্টিয়ে ভাবানুবাদ করে দিয়েছি।
ধন্যবাদ আবারও।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সুন্দর হয়েছে অনুবাদটা, ভালো লাগলো।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
ধন্যবাদ ভুতুম।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আসিমভের গম্পটা আসলেই অসাধারণ। তবে আমি অনেক পড়ে গল্পটা পড়ি। গল্পটার হদিস পেয়েছিলাম পল স্টেইনহার্ট আর নেইল টুর্কের 'এন্ডলেস ইউনিভার্স' বইয়ে। তারপরই গল্পটা পড়ি। আসলেই তাব্দা হবার মতই গল্প এটি। আপনার অনুবাদও খুব ভাল হয়েছে।
পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)
পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)
আমি এই রত্নের সন্ধান পাই অল্প কিছুদিন আগে, মিচিও কাকুর হাইপারস্পেস বইটা পড়তে গিয়ে। উনি ও দেখলাম বেশ আপ্লুত এই গল্প নিয়ে। সত্যি একখান গল্প বটে!
অনুবাদ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
- হুমম
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
- টেনশন নিয়েন না, "আপনার পথ আলোময় হোক"।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আরে বাইবেল কি আর আমোগো ভাষায় আহে গো জনাব? তবু একটা চেষ্টা দেওয়া আরকি!
আরে তপণ রায়চৌধুরীর গপ্পে পড়লাম, তাদের দেশগাঁ বরিশালে নাকি রোমান ক্যাথলিকদের রোমাই কাত্তিক বলা হোতো।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
- এইবার ধুগো কাত্তিকের গল্প পড়েন। তিনি বলিয়াছেন, "বাংলাদেশ হইতে মায়ের আলাভুলা পুলা সেলিম সরকার জর্ম্মন দেশের পাপিষ্ঠ মাটিতে পাড়া দিয়াই হইয়া যায় 'জার-কার জালিম'।"
কী কইবেন কন!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আহা, বড়ো চমৎকার লাগলো!
অনেক ধন্যবাদ পাঠক।
ক্রেডিট পুরোটাই আসিমভের, এই তালে আমি খানিকটা মেরে দিলাম।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
চসাম!!!! (চরম+awesome)
কি বলব বুঝতে পারছি না। হতবাক হয়ে বসে আছি। অসাধারণ!
ঝড়।
নতুন মন্তব্য করুন