সীমান্ত জোর করে ঘোর থেকে বেরিয়ে আসার জন্য উঠে দাঁড়ায়। বলে, "বেশ তো, চলো না কোথাও ঘুরেই আসি। সমুদ্র তো মাত্র দুইঘন্টার দূরত্বে। যাবে?"
নিরালীর আইসক্রীমমাখা মুখ খুশীতে আলো-আলো হয়ে ওঠে, বিশ্বাস করতে পারছে না যেন এমন গলায় বলে, "সত্যি যাবে ?"
" হ্যাঁ, সত্যিই তো। চলো বেরিয়ে পড়ি এখনই। কোনো গোছগাছের কিছু নেই, সন্ধ্যেবেলায় ফিরে আসবো। দুপুরে ওখানেই কোথাও খেয়ে নেওয়া যাবে। এসো, যাই।"
" আরে! পোশাকটা অন্তত পাল্টে আসতে দাও। আর সানস্ক্রীন লোশন, ক্যামেরা...." কথা বলতে বলতে নিরালী পাশের ঘরের দিকে চলে যায়, সীমান্ত জুতোমোজা পরতে শুরু করে। তার সানস্ক্রীন লাগবে না। সূর্যক্ষুধায় তার ভিতরটা আনচান করছে, পুড়ে কালচে হয়ে যেতে ইচ্ছে করছে।
আকাশে তীব্র সূর্য জ্বলছে, দক্ষিণ থেকে মেঘের পরে মেঘ ভসে আসছে, বাবা মেঘ মা মেঘ, মায়ের কোলে কচি ছানা মেঘ, দৌড়ে দৌড়ে এগিয়ে যাওয়া অ্যাডভেঞ্চার অভিলাষী তরুণ মেঘের দল, তিন বোন মেঘ, সূর্য যাদের লতানো চুলের গুছি সোনালী করে দিয়েছে। সীমান্তের এইসব কথা শুনে নিরালী খুব হাসে, সীমান্তও হেসে ফেলে। ধূসর একটা মেঘে সূর্য ঢাকা পড়েছে, চলন্ত গাড়ীর উপরে হালকা ছায়া পড়েছে। নিরালী ছোট্টো ব্যাগ থেকে এত্তটুকু গোল আয়না বার করে চুল ঠিক করছে।
সীমান্তের মনে পড়ে অনেক আগের এক আলোছায়া এক শরতের দিন, মনে পড়ে বিনিকে। ওর ভালো নাম ছিলো বিদ্যুৎপ্রভা। তাই কি এমন বিদ্যুত ছিলো প্রথম চুম্বনে ? তখন বিনির বারো আর সীমান্তের পনেরো। কবেকার কথা সব! জীর্ণ পুরাতন হয়ে গেছে কত অনুভব, কিন্তু নিবিড়তার সেই প্রথম স্মৃতি আজো কেন একই রকম জীবন্ত? হঠাৎ ঝাপসা হয়ে গেল সীমান্তের দু'চোখ, কোথা থেকে এত মেঘ এলো?
আঁকেবাঁকে পাথরের চুলগুছি আল্পনা-
ঘুরে ঘুরে এলোমেলো ঢেউকথা ছুঁয়ে ছুঁয়ে
নিজের মতন পথ চলে নদী।
মাঝে মাঝে ঘুরে দাঁড়ানোর ইচ্ছেফুল
ফেনায় ফেনায় ফুটে উঠে
পাড়পাহাড়ে মিলিয়ে যায়।
গাঢ় যুবতী রোদ ঢেকে দিয়ে
বিকেল আসে জলকল্যাণী।
কলাবতীরঙের শাড়ী পরে
মায়াবী সন্ধ্যা গেছে এই পথেই-
বৃষ্টিভেজা হিমচম্পার গন্ধ ছিলো বাতাসে।
চিরঞ্জীব সৌরভের ছোঁয়ায় থমকে দাঁড়াতে ইচ্ছে করে,
ফিরে যেতে ইচ্ছে করে ধূলিপথে আরক্ত ছাপ রেখে-
জন্মবেলার আলোআঁধারি ডাকে- আয় আয়।
আরো কে যেন ডেকেছিলো? মনে পড়ে না তার নাম -
শুভ্র শঙ্খমালা ছিলো তার গরিম গ্রীবায়
ভোর হয়-হয় রাতের মতন চোখ ছিলো তার,
সবুজ আঁচলে ছিলো ধান্যদুর্বামঞ্জরী।
ধূপছায়াবেলায় সে বলতো সাতভাই তারার গল্প।
কোন্ একশিলা নগরীতে হারিয়ে গেল সে,
আকাশ তখন মুহুর্মুহু বিদ্যুৎস্নানে আবিষ্ট। .....
ছবিসূত্র: আন্তর্জাল
মন্তব্য
খুব ভালো লাগলো, সেই মায়াময় লেখা।
"গরীম গ্রীবা" মানে কী?
ধন্যবাদ মূলত পাঠক।
বানান ভুল ছিলো মানে টাইপো হয়ে গেছিলো, গরিম হবে। ঠিক করে দিলাম।
মানে গরিমাময় গ্রীবা।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
খুব আবেগ নিয়ে লেখা। কবিতাটা পড়তে গেলে দাঁত নড়ে গেল।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
দাঁত নড়ে গেল?
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপনি বড় যত্ন নিয়ে লেখেন।
এবং আমি আপনার লেখার একজন ভক্ত পাঠক। যদিও আপনার খুব কম লেখাতেই আমার কমেন্ট পাবেন!
আসলে আপনার লেখাতে বেশ যত্ন করে কমেন্ট করব বলে অনেকগুলোতেই করা হয় নি! বাকির খাতায় রয়ে গেছে সবগুলো।
পরের লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ।
কিন্তু কমেন্ট পরে করবেন বলে রেখে দেন?
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপনার এই লেখাটা অসম্ভব ভাল্লাগছে
আমারও ভালো লাগলো শুনে।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
যাদেরকে আমিও ডেকেছি বহুবার ভেতরের গলায় রক্ত তুলে
তারাও কি মনে রেখেছে সেই ডাক
নাকি ভাবতেও পেরেছে এইখানে এমন একজন ডাকলেও ডাকতে পারে নিজের স্বর নিজে চেপে ধরে...
কোথায় যে কে ডাকে! সে ডাক কোথায় পৌঁছানোর ছিলো কেজানে! সে ডাক যে কে শোনে, কার যে শোনার ছিলো ....
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এই ফরম্যাট, এই প্যাটার্ন বোধ করি আপনারই উদ্ভাবন, না?
এই যে, কাব্যিক গদ্য মানে আধাপদ্য দিয়ে ভূমিকা ক'রে তারপরে ঢুকে যাওয়া এমন ঘোর পদ্যে, আদ্যোপান্ত সর্বৈব মায়াময় কদমময় মাদকময় ...?
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
উদ্ভাবন? কেজানে! কোন্টা কবিতা কোন্টা গদ্য সেটা কি নিশ্চয় করে কেউ বলতে পারে ভাই? থেকে যায় অনিশ্চয়তা ফেনা, সম্ভাবনার ঢেউ, সবের এলেমেলো মিশ্রণ, জোয়ারভাঁটার সমুদ্রের মতন, কখনো ওঠা কখনো নামা।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সেই। এই তো আবার! আপ্নে পারেনোরেভাই!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
শুভ্র শঙ্খমালা ছিলো তার গরিম গ্রীবায়
ভোর হয়-হয় রাতের মতন চোখ ছিলো তার,
সবুজ আঁচলে ছিলো ধান্যদুর্বামঞ্জরী।
এই মেয়েটাকে কবে দেখা যাবে প্রত্যূষা?
দেখা যায় তো! শরতের ভোরের বেলা শিশিরভেজা সবুজ ধানের ক্ষেতে যখন আলতো নেমে আসে সূর্যের আলোর আঙুল, যখন পাহাড়ের চুড়ায় এসে লাগে দিনের প্রথম দীপ্তি, যখন হেমন্তের মাঝদুপুরের নীল আকাশে পাক দেয় একলা চিল, যখন শীতরাত্রির আকাশে মণিকণার মতন ঝলমল করে নক্ষত্রেরা---সে দেখা দেয়, সে দেখা দেয়, মন ভরে দেখতে চাইলেই সে দেখা দেয়।
---------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন