সন্ধ্যা হতে না হতেই বাতি গেল। এ প্রায় নিত্যকার কান্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। লন্ঠন জ্বেলে বসতেই জীজার আবদার-উপকথা বলো, উপকথা বলো।
আরে, এত এত উপকথা আমি পাই কই? সারা দুনিয়া জুড়ে কত উপকথা, তার খোঁজ পাওয়া কি সোজা? তবু সায়েব লোকেরা নানা জায়গায় গিয়ে গিয়ে উপকথা সংগ্রহ করে করে ইংরেজিতে লিখে তুলেছেন, তাই তবু সেগুলো বুঝে সুঝে পড়া যায়। কত চমকপ্রদ উপকথা হয়তো নানা আঞ্চলিক ভাষায় রয়ে গেছে, ভাষা না জানা থাকায় কোনোদিন জানা হবে না আমাদের। কত ভাষাই হয়তো হারিয়ে গেছে তাদের সমস্ত কথা উপকথা লোককথা গল্পগাথা সমেত, সেগুলো আর কোনোদিনই উদ্ধার হবে না। এসব আফশোস রয়েই যাবে।
তবু যা হারিয়ে যায় তা আগলেই বা বসে রইবো কত আর। যা হারিয়ে যায় তারাই আবার ফিরে আসে অন্য রূপে। নানা দেশে একই গল্প ফিরে ফিরে আসে ভিন্ন ভিন্ন রূপ নিয়ে, ভিতরে সেই একই হাসিকান্নার পান্নাহীরা।
আশান্তি গল্পকথকেরা বলে, "তোমার গল্প যদি ডানা গজিয়ে উড়ে যেতে চায়, তাকে যেতে দিও,বেঁধে রেখো না। কোনোদিন হয়তো সে তোমার কাছেই ফিরে আসবে, গলায় নতুন সুর নিয়ে, ডানায় অচেনা মাটির গন্ধ মেখে।" তাই হয়তো সত্যি। কিছুই হারায় না, সবই রয়ে যায়, নতুন নামে, নতুন রূপে-"নতুন নামে ডাকবে মোরে, বাঁধবে নতুন বাহুর ডোরে/ আসবো যাবো চিরকালের সেই আমি।"
আজকে আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলের উপকথা একখান। ডায়ানা পিচার জুলুল্যান্ডে শৈশব কাটিয়েছেন, এই গল্প তিনি শুনেছেন মিরিয়াম মাজোলার কাছে। পরে ডায়ানা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন পশ্চিম উপকূল জুড়ে এই গল্পের নানা রূপ প্রচলিত আছে।
গল্পে ঢুকে যাই এবারে। নান্দি ছিলো খুব গরীব, দিন আনা দিন খাওয়া অবস্থা। তাও প্রতিদিন জুটতো না, কোনোদিন অনাহার অর্ধাহারেও কাটতো। নান্দির স্বামী মারা গেছিলো, ছেলেও ছিলো না কোনো। কয়েকটা ছেলে থাকলে তাও চাষবাস করে আর গরুছাগল চরিয়ে তারা কিছু আয়-রোজগার করতে পারতো। কিন্তু তাহলে তো কোনো কথাই ছিলো না। নান্দির কপালে এত দু:খ লেখা ছিলো বলেই না আজ তার স্বামীও নেই, পুত্রও নেই!
ছেলে ছিলো না কিন্তু ফুটফুটে এক মেয়ে ছিলো নান্দির। মা আর মেয়ে পাতার কুঁড়েতে থাকতো আর দু'জনে একসঙ্গে কাজ করে কোনোরকমে গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা করতো।
গ্রীষ্মে সুদিন, তখন উমদোনি গাছ ভরা মাখনরঙের ফুল, তখন নান্দি মেয়েকে নিয়ে মাঠে-জঙ্গলে কাজ করতো। মাটি খুঁড়ে মেটে আলু আমাদুম্বে তুলতো তারা, ভুট্টার ছাতুর সাথে আমাদুম্বে সেদ্ধ খেতে পারতো একটু লবণ, কয়েকটা মরিচ আর তেল দিয়ে মেখে। আহা, সেতো রীতিমতন ভুরিভোজ!
শরতে ফুল ঝরে গিয়ে ফল হতো উমদোনি গাছে, ফল পাকলে নান্দি সে ফল পেড়ে কোঁচড় ভরে নিয়ে পাড়াপ্রতিবেশীদের দোরে দোরে ঘুরে দিতো, বদলে সবাই তাকে দই, দুধ, কেউ কেউ বা শুকনো মাংস দিতো। ঘরে এনে রেঁধে বেড়ে তারা মা-মেয়ে খেতো।
নান্দির মেয়েটা খুব লক্ষ্মী, মা যা জোটাতে পারে তাই খেয়েই খুশী থাকে, কিছুর জন্য বায়না করে না। সাজগোজের দিকেও তার নজর নেই, নইলে তার বয়সী মেয়েরা চুলের আঠা, পুঁতি, হাড়ের মালা, হাঁসুলি টাসুলির জন্য কত বায়না করে। মেয়েটা কিছু চায় না, জানে মা দিতে পারবে না। নান্দির মাঝে মাঝে দু:খ হয়, ভাবে আহা সে যদি দিতে পারতো! এমন সুন্দর মেয়েকে সাজেগোজে আরো কত সুন্দর লাগতো!
একদিন নান্দি নদীর তীরে গেছে উমদোনি গাছের পাকা ফল তুলতে। গিয়ে দেখে নিচের দিকে ডালগুলোতে একটাও ফল নেই , একটাও না। সে চিন্তায় পড়ে, কি হলো ফলগুলো? কালও সে দেখে গেল-
ভাবতে ভাবতে হঠাৎ নান্দি শোনে হিস হিস হিস! সাপ! চোখ যায় গাছের গায়ে, গাছের খয়েরী লাল কান্ড জড়িয়ে জড়িয়ে সবুজে আর সাদায় ডোরা ডোরা মস্ত বড় সাপ, সে সাপ আবার কথা বলে! সাপ বলে, "আমি নিচের ডালের সব ফল খেয়ে নিয়েছি, হি হি হি।"
নান্দি কেঁদে ফেলে, বলে, " হায় হায় সাপ, তুমি সব খেয়ে ফেলেছ? আমাদের কি হবে? আমরা মা-মেয়ে না খেয়ে মরবো এবারে। ফল না দিলে কেউ কি আমাদের দই আর মাংস দেবে?"
সাপ বলে, "দাঁড়াও, আমি নামি।" সাপ সড়সড় করে নামতে থাকে, নান্দির ভয়ে প্রাণ উড়ে যায়, কিন্তু তবু সে পালাতে পারে না। সে ভাবে সাপ চলে গেলে সে উঠে উপরের ডালে কিছু ফল পাড়তে পারবে, নাহলে নিশ্চিত উপবাস তাদের।
সাপ কাছে এসে বলে, "নান্দি, আমি যদি চলে যাই, উপরের ফলগুলো তোমাকে নিতে দিই, তার বদলে তুমি আমাকে কি দেবে? আমি ফল পেড়ে তোমার ঝুড়িতে দেবো, তার বদলে আমায় তোমার মেয়ের সাথে বিয়ে দেবে? "
নান্দি তাড়াতাড়ি বলে, " হ্যাঁ দেবো। তুমি যদি ফল পেড়ে দাও, আজ রাতেই আমার খুকির সঙ্গে তোমার বিয়ে দেবো।"
সাপ ফল পেড়ে ঝুড়ি ভরে দিলো, নান্দি বাড়ীর দিকে চললো। চলতে চলতে সে ভাবনায় অস্থির হয়ে উঠলো, সে কি করেছে? মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সাপকে! এখন কি হবে? মেয়েকে সাপের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া তো কোনো মতেই সম্ভব না! এমন সুন্দর আর এত লক্ষ্মী মেয়ে তার! কোথাকার এক কুচ্ছিত বিশ্রী আর ভয়ানক সাপের সঙ্গে তার বিয়ে! হলোই বা কথা বলতে পারে, তাতে কি? সাপ সাপই!
নান্দি ঘুরপথে চললো পা চালিয়ে যাতে কিনা সাপ তার বাড়ীর পথ চিনতে না পারে। নদী পার হয়ে ঝোপের পাশ দিয়ে সে চললো তাড়াতাড়ি, সে বোঝে নি কাঁটায় বিঁধে তার ঘাঘড়ার কাপড় একটুখানি ছিঁড়েছে, সেই ছেঁড়া অংশটা লেগে আছে কাঁটাঝোপে।
শনের জঙ্গলের মধ্য দিয়ে প্রায় ছুটে চলেছে এখন নান্দি, আশেপাশে কুমীর থাকতে পারে, সতর্ক চোখে দেখে নিচ্ছে সে। কুমীরের জন্য সতর্ক থাকায় তার নজরে পড়লো না, একটা টুকটুকে পাকা ফল তার ঝুড়ি থেকে গড়িয়ে পড়ে গেল মাটিতে, পথের পাশের কাদায় আটকে রইলো। এবারে একটা মস্ত ঢিবি, ঢিবির পাশে ইঁদুরের গর্তের মুখে পা পড়ে গেল নান্দির, একটানে পা সরিয়ে নিয়ে সে চলে গেল বটে কিন্তু তার পায়ে পরা খাড়ুর তিনটি পুঁতি লেগে রইলো ঝোপে।
কুটিরে পৌঁছে মেয়ের হাতে ফলের ঝুড়ি দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে মা, " খুকি খুকি, আমি নিরুপায় হয়ে এক বিষম ভুল করেছি। আমি এক সাপকে কথা দিয়েছি তোর সাথে তার বিয়ে দেবো, সাপ নইলে ফল পেড়ে দিতো না।"
মেয়ে কিন্তু বিচলিত হয় না, হাত দিয়ে মায়ের চোখ মুছিয়ে দিয়ে বলে, "মা তোমার কোনো চিন্তা নেই। কেন এত দুঃখ পাচ্ছ? দেখো তুমি, আমাদের ভালোই হবে। তুমি কেঁদো না তো!"
এদিকে সাপ তো গাছ থেকে হিলহিলিয়ে নেমে নান্দির পথ ধরে আসতে শুরু করেছে। কাঁটাঝোপে লেগে থাকা কাপড়ের টুকরো, পথের ধারে কাদায় পড়ে থাকা ফল আর ঢিবির গোড়ায় ইঁদুরের গর্তের পাশের ঝোপে তিনটি পুঁতি, এইসব চিহ্ন গুলো অনুসরণ করে করে সাপ সহজেই এসে পড়ে নান্দির পাতার কুঁড়ের কাছে।
দরজার বাইরে হিস হিস শুনে নান্দি আবার ভেঙে পড়ে। তার ঘুরপথে আসার সাবধানতা ব্যর্থ হয়েছে, সাপ পথ চিনে চিনে ঠিক এসে পড়েছে। এখন উপায়?
কুটিরের দরজা পলকা, অনেক ফাঁকফোঁকড়। দরজার তলা দিয়ে হিলহিলিয়ে সাপ ঢুকে পড়ে ঘরে। ফণা তুলে দাঁড়ায়। নান্দি চিৎকার করে কেঁদে ওঠে, " না না সাপ, আমি তখন না ভেবেচিন্তেই কথা দিয়েছিলাম। আমার মেয়েকে তোমার সঙ্গে বিয়ে দিতে পারবো না, এ অসম্ভব!"
সাপ এদিক ওদিক ফণা দুলিয়ে রাগী গলায় বলে, "তখন আমায় কথা দিলে তুমি। আমি ফল পেড়ে তোমার ঝুড়ি ভরে দিলাম। আবার এখন অন্য কথা বলছো! তোমরা মানুষেরা এরকম? "
মেয়ে তার কালো চোখ মেলে সাপের দিকে চেয়ে থাকে, খুব মায়াভরা মেয়েটার চোখ। কোনো ভয় নেই চোখে, সে শান্ত গলায় মাকে বলে, "মা, কথা যখন দিয়ে ফেলেছ, তখন কথা রাখতেও হবে।" সাপের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় সে আস্তে আস্তে, ফণা নামিয়ে সাপ শুয়ে পড়ে। মেয়েটা একটা বাঁশের চোঙে দই নিয়ে এসে সাপকে খেতে দেয়। সাপ ধন্যবাদ দিয়ে খেতে শুরু করে, বলে, " আহা, কতদিন দই খাই নি!"
নিজের কম্বল ভাজ করে লম্বামতন করে সাপের জন্য বিছানা করে দেয় মেয়েটা, খাওয়া শেষ করে সাপ গিয়ে শুয়ে পড়ে আর বলে, " আহ, বিছানাটা চমৎকার! খুব ক্লান্ত আমি, ঘুমাবো। তুমি খুব ভালো গো। শীত লাগে, একটা চাদর দিয়ে ঢাকা দিয়ে দাও না!" মেয়েটা তাড়াতাড়ি আরেকটা কম্বল এনে ঢাকা দিয়ে দেয়।
গভীর রাত! সবাই ঘুমিয়ে। নান্দি জেগে গেছে কিসের জানি শব্দে। চিতাবাঘ দৌড়ায় ? হায়েনা ডাকে বাইরে? নাঃ, এসব কিছু না, কিন্তু কিছু একটা সে শুনেছে। কী সেটা? কার জানি গলার আওয়াজ! দু'খানা আলাদা আলাদা কন্ঠস্বর! একটা চেনা, তার মেয়ের গলা। কিন্তু আরেকটা? কেমন গভীর, শক্তিশালী পুরুষ গলা!
সে তার কম্বলের বিছানা থেকে খুব সাবধানে উঠে আসে। সে দ্যাখে তার মেয়ে ঘরের এককোণে প্রদীপ জ্বেলে বসে পুঁতির মালা বানাচ্ছে, বিয়ের রঙীণ পুঁতিমালা। মেয়ের পাশে বসে আছে ভারী সুন্দর এক তরুণ, লম্বা মজবুত বাদামী চেহারা। কোনো রাজার ছেলে বা হয়তো সে নিজেই রাজা। তার মেয়ে আর ঐ ছেলেটা আস্তে আস্তে কথা কইছে আর মাঝে মাঝে হাসছে।
নান্দি তাকালো যেদিকে সাপকে বিছানা করে শুইয়েছিলো তার মেয়ে। বিছানার উপরে বিরাট সেই ডোরাডোরা সাপের ছাল। নান্দি পা টিপে টিপে গিয়ে ছালটা তুলে নিয়ে ঘরের মাঝের আগুনের কুন্ডে, এখনো যেখানে ছাইচাপা আগুন ছিলো ধিকিধিকি, সেই আগুনে দিলো ছুঁড়ে। পোড়া গন্ধে চমকে উঠে ছেলেটা আর মেয়ে ছুটে এলো।
ছেলেটা হেসে বললো," আমার শাপমুক্তি হলো। আমায় যে সাপ হয়ে যাবার শাপ দিয়েছিলো সেই যাদুকর বলেছিলো যেদিন একটা ভালো মেয়ে আমাকে করুণা করবে আর এক বুড়ী আমার সাপের ছাল পুড়িয়ে দেবে সেদিন আমার শাপমুক্তি।"
এখন নান্দির চাঁদের হাট। তার এখন তিন নাতিনাতনি। এক নাতি গরুছাগল চরায়, দুই নাতনি তাকে সাহায্য করে ভুট্টা ক্ষেতে আগাছা নিড়াতে আর মাটি খুঁড়ে আমাদুম্বে তুলতে। তার আর কোনো অভাব নেই। সবই সম্ভব হলো সেইদিনটার জন্য, যেদিন সে উমদোনি ফল তুলতে গিয়ে এক সাপকে এক মারাত্মক প্রতিশ্রুতি দিয়ে বসেছিলো!
___
মন্তব্য
আজকে থেকে আপনি আমার ঠানদি। অবাক ব্যপার কি জানেন? এ গল্প আমার আগে পড়া কিন্তু কোথায় পড়েছি, কিছুতেই মনে করতে পারছিনা। তবে নিশ্চিতভাবেই আফ্রিকার উপকথা হিসেবেনা। বান্দারবানে একবার ফুটপাথ থেকে একটা চটি বই কিনেছিলাম, খুব সম্ভবত সেখানেই পড়েছিলাম
সাফি,
ঠানদি শুনেই মন খুশি লাগছে। অনেকদিন আগে, অন্য একটা জায়গায় আমাকে একজন ঠাকুমা বলে ডাকতো। সেখানেও উপকথা শোনাতাম কিনা! -----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
খুশি করতে পারলাম জেনে ভালো লাগলো, আপনার বর্ণনার মুন্সীয়ানায় যেকোন ঠানদি গর্বিত হত।
ধন্যবাদ
- চমৎকার।
কারেন্ট চলে গেলে চাঁদের আলোয় বাড়ির উঠানে মাদুর পেতে বসে এমন কাহিনী শুনতে মন চায়।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধুগোদা, আপ্নেরতো দেখি আলিফ লায়লার বাদশাহ শাহরিয়ারের মতন শখ। সেবার যেই এডাল্ট আলিফ লায়লা পড়সিলাম তাতে আবার শ্যালিকাও ছিলো
তাই নাকি? পাশে কে থাকবে, শ্যালিকা ?
------------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
- ক্যান, শ্যালিকার বোন বালিকা থাকতে পারে না?
ধরেন, প্রতি চান্নিপসর রাইতে একজন করে বালিকা! মাসে ছয়-সাত দিন ছুটি। অই কয়দিন তো চান্দের আলো থাকবে না!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
শাহারজাদী আর দিনারজাদীরে ধরেন। হাজার রাত ধরে গল্প!
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এরেই মনে হয় কয় "আহ্লাদ"
একই ধরণের গল্প প্রচলিত আছে আমাদের দেশে - ব্যাঙরাজকুমার, বেল রাজকুমার; তিব্বতে - সম্ভবতঃ ঘোড়া রাজকুমার; রাশিয়াতে - ভালুকমুখো রাজকুমার; গ্রেট ব্রিটেনে - ব্যাঙরাজকুমার, ইতালীতে - ফুল রাজকুমারী। লিস্টটা আরো লম্বা করা যাবে - একটু খাটাখাটনি করলেই। আসলে প্রায় সব দেশেই এই ধাঁচের গল্প প্রচলিত, কারণ ট্রান্সফিগারেশন একটা জনপ্রিয় ধারণা। বিশেষতঃ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে সহজলভ্য অথচ অজনপ্রিয় বা অকাজের প্রাণীকে নিয়েই এ'ধরণের ট্রান্সফিগারেশনের কথা ভাবা হয়েছে। কুমিল্লা-ত্রিপুরা অঞ্চলের বিখ্যাত লোককথা "নদের চাঁদ"-এ ঠাকুর নদের চাঁদের কুমীরে রূপান্তরের গল্প আছে। যদিও আজকের কুমিল্লায় কুমীর চিড়িয়াখানার বস্তু হয়ে গেছে। নদের চাঁদের গল্পটা সম্ভবতঃ হাজার তিনেক বৎসরের পুরোনো। দুনিয়া জোড়া এই ধরণের গল্পের অসম্ভব মিল দেখে বহু আগেই ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ মত প্রকাশ করেছিলেন যে, হয়তো এদের পূর্ব পুরুষরা একই গুহা বা তাঁবুর নিচ থেকে বের হয়েছেন।
বিভিন্ন দেশের উপকথা, রূপকথা, লোককথার মধ্যকার এই মিলগুলো বের করা আমার একটা প্রিয় কাজ। যেদিন তুলিরেখার একশ'টা উপকথা নিয়ে বই বের হবে সেদিন আমি সেই উপকথাগুলোর মধ্যে মিল খোঁজার কাজে নামবো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আরে নদের চাঁদ(নইদার চান) এর গল্প তো আমিও শুনেছি ঠাকুমার মুখে! নইদার চান কুমীর হইয়া যায়- সেই গল্প!
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
চমৎকার লাগল তুলিরেখা।
গল্পের শেষাংশটা অন্য কোন গল্পের সাথে মিলে গেছে। হয়ত পৃথিবীর সব জায়গায় ই উপকথাগুলোতে এমন মিল রয়ে গেছে যা আপনি বলেছেন।
নির্মম বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হতে যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ি তখন এমন উপকথা খুব টনিকের কাজ করে।
আহা জীবন যদি এমন হতো!সব দুঃখ টুঃখ শেষে শুধুই সুখ.......
আপনার ভালো লেগেছে শুনে আমারও ভালো লাগলো।
নানা দেশের উপকথায় মিল অনেক পাই, মাঝে মাঝে চমকে ওঠার মতন মিল!
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বাহ্ ! বেশ ভাল্লাগলো।
গল্প বলার ভঙ্গিতে লেখা এ গল্প পড়তে গিয়ে মনে হল, যেন কেউ সামনে বসে গল্পটি শোনালো আমায়।
----------------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো, গৃহী হয়ে কে কবে কি পেয়েছে বলো....
-----------------------------------------------------------------------------------------------------
" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি
আপনার ভালো লাগায় আমারও খুব ভালো লাগলো।
আসলে উপকথার মূল ম্যাজিকটা বোধহয় সেই বলার ব্যাপারটাই। তারাফুটফুট রাতে আগুনের পাশে বসে সেই যে অতি পুরাতন ঠাকুমা চোখ বড় বড় করে চেয়ে থাকা নাতিনাতনিদের প্রথম যখন বলেছিলো, "এক যে-এ-এ ছিলো রাজা"-সেই ম্যাজিক! সেই ম্যাজিক লেখায় কখনো পুরোপুরি আসে না।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
দারুণ লাগলো, তুলিদি। গল্পগুলো আপনার মুখে শুনতে পেলে আরো মজা হতো।
অদ্ভুত ব্যাপার কি জানেন, ঠিক এইরকম গল্প আমি মায়ের মুখে শুনেছি! আমার খুবই প্রিয় গল্প ছিল এই সাপের গল্পটা।
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
নানাদেশের লোকগল্পে মিল দেখে সত্যি চমকে উঠতে হয় মাঝে মাঝে।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
হ
আপনারে নিয়া উপকথা লেখার সময় কাছাইল তাইলে
তাই নাকি? কি লিখবেন সেই উপকথায়?
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
একটু দেরিতে পড়লাম, চমৎকার লাগলো!
অনেক ধন্যবাদ মূলত পাঠক।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন