• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

দেশবিদেশের উপকথা(কারোক)

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: রবি, ০৮/১১/২০০৯ - ৬:৪৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই গল্পটির আখ্যানভাগ নেটিভ আমেরিকান কারোক উপজাতির উপকথা থেকে সংগৃহীত।

সে অনেক অনেকদিন আগের কথা। তখন আগুন শুধু আগুন-মানুষদের কাছে ছিলো। তারা কাউকে তা দিতো না, খুব সাবধানে পাহারা দিয়ে রাখতো। মাঠে জঙ্গলে কত পশুপাখি, গ্রামে কত মানুষ-তারা কেউ আগুন পায় না। বসন্তে গ্রীষ্মে সুখের দিন, কোনো কষ্ট হয় না। কিন্তু শীতের দিনে ভারী কষ্ট। বুড়ো আর কচিরা অনেকে শীতে কষ্ট পেয়ে মারা যায়।

এমন তো চলতে পারে না-ঋক্ষবান ভাবে। বনকুসুমীর কোলে কচি ছেলে, সামনের শীতে সে যদি না বাঁচে? বনকুসুমী সেই দুশ্চিন্তায় কুঁকড়ে যায়।

বনমালী বলে, "কিছু একটা করতে হবে।"

মন্ডুক মাথা দুলিয়ে বলে, "করতে হবেই কিছু। কিন্তু কী করা যায়?"

বলাকা বলে," কায়োটেকে ডাকি। সে সবচেয়ে চালাক। একটা না একটা বুদ্ধি বার করবেই।"

কায়োটে এসে বলে, "নো প্রবলেম। জাস্ট রিল্যাক্স। আমরা আগুন নিয়ে আসবো। ঐ স্বার্থপর আগুনমানুষেরা চিরকাল আগুন নিজেদের কাছে রেখে দেবে নাকি? তা হবে না, কায়োটে থাকতে তা হতে পারে না। "

সবাই ভুরু তুলে বলে, "আগুন নিয়ে আসবে? কেমন করে?"

মিচকি মিচকি হেসে কায়োটে বলে, "আমার একটা প্ল্যান আছে। এসো আমি তোমাদের বলি কী করতে হবে।"

কায়োটের প্ল্যান মত সবাই তৈরী হলো। তারপরে একদিন পাহাড়ের পাশ দিয়ে ঘোরানো প্যাঁচানো রাস্তা দিয়ে তারা পাঁচজনে মিলে চললো আগুনমানুষদের পাথুরে বাড়ীর দিকে। সকলের গায়ে রঙীন উল্কি, নানা রঙে ছোপানো পোশাক। কায়োটের মাথায় মস্ত এক পালকের মুকুট।

নদী পার হয়ে শুকনো শনঝোপ, তারপরে ছোট্টো একটা জঙ্গল, তারপরে এক বিরাট মাঠ। সেই মাঠের পরপারে আগুন মানুষদের বিরাট পাথুরে বাড়ী, বেড়া দিয়ে ঘেরা উঠোন। কড়া পাহারা।

কায়োটে, ঋক্ষবান, মন্ডুক, বলাকা আর বনমালী গিয়ে পৌঁছালো সেখানে। আগুনমানুষদের বাড়ীর দুয়ারে গিয়ে বললো যে তারা যাযাবর, অনেক দূর থেকে হেঁটে হেঁটে আসতে আসতে তারা খুব ক্লান্ত আর ক্ষুধাতৃষ্ণায় কাতর। যদি আশ্রয় পায় কিছুক্ষণের জন্য আর সামান্য খাদ্যপানীয়, তাহলে খুবই কৃতজ্ঞ থাকবে তারা।

আগুন মানুষেরা প্রথমে বিশ্বাস করতে চায় না, বলে, "তোমরা যে আমাদের জিনিস চুরি করে নিয়ে পালাবে না তার গ্যারান্টী কী?"

কায়োটে একেবারে বিনয়ে বিগলিত হয়ে বলে, "কী যে বলেন! আমরা সামান্য ধুলামাখা যাযাবর, আমরা আপনাদের জিনিস নিয়ে কি করবো ? আমরা তো আর আপনাদের ঘরে যাবো না, উঠানে বসতে দিলেই আমাদের পক্ষে ঢের। আহ, খুব ক্লান্ত আমরা। আপনাদের মতন দয়ালু মানুষেরা থাকতে আমরা পাঁচটা অসহায় মানুষ খিদেতেষ্টায় মারা যাবো, এই কি একটা ন্যায়কথা হলো, বলুন?" কায়োটে এমন হাঁফানোর ভঙ্গী করে যেন এখুনি লুটিয়ে পড়ে মরে যাবে।

আগুন মানুষেরা ভালো করে তাদের ঝুলিঝোলা ঝেড়েঝুড়ে দেখে তাদের ভিতরে নিয়ে গেল। উঠানে তাদের বসতে দিলো মাদুর বিছিয়ে, খেতে দিলো আর জল দিলো। পথশ্রমে ক্লান্ত তারা পাঁচজন খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়লো।

ভালো করে একঘুম দিয়ে তারা যখন উঠলো তখন বেলা আর নেই, সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। চোখমুখ ডলতে ডলতে মস্ত হাই তুলে কায়োটে বলে, "আরে এত দেরি হয়ে গেল? এই অন্ধকারে যাবো কিকরে আমরা?"

আগুন মানুষেরা উঠানের মাঝখানে আগুনের কুন্ডে তখন আগুন জ্বালিয়েছে, একদিকে রান্নাবান্না হচ্ছে, সুরাপানও তারা শুরু করে দিয়েছে। রঙীন চোখে তাদের নেতা এসে হাসতে হাসতে বলে, "আরে যাযাবররা যে! ঘুম কেমন হলো? তোমরা রাতে আর যাবে কোথা? আমাদের নাচাগানা হবে একটু পরেই। খাওয়াদাওয়াও। যোগ দাও তোমরাও।" সে সবাইকে সুরাপাত্র এগিয়ে এগিয়ে দেয়।

যাযাবরেরা হাস্যবিগলিত মুখে ধন্যবাদ দিয়ে পাত্র গ্রহণ করে, আর মুখের কাছে তুলে চুমুক দেবার অভিনয় করে। কায়োটে আগেই প্ল্যানের সময়েই সবাইকে ভালো করে সতর্ক করে দিয়েছিলো যেন ভুলেও তারা আগুনমানুষদের মাদক না পান করে।

খাওয়া দাওয়া হয়ে গেলে নাচ শুরু হলো আগুন ঘিরে। কায়োটে তো একেবারে পরম উৎসাহে নাচতে নাচতে তারস্বরে গানও গাইছে। আগুন মানুষেরা তারিফ করে খুব। একসময় সে খুলে রাখা পালকের মুকুটটা পরে নেয়, তাতে নাচ আরো জমে।

এদিকে নাচতে নাচতে আগুন মানুষদের খেয়াল হয় নি রাত অনেক হয়েছে, আগুনও কেমন নিবু নিবু হয়ে এসেছে। কায়োটে বলে "আরে উসকে দাও আলো, অন্ধকারে কি নাচ জমে?"

আগুনমানুষদের নেতা যেই নতুন কাঠকুটো আগুন ছুঁড়ে দিয়ে আগুন খুঁচিয়ে দিয়েছে লম্বা দন্ড দিয়ে, মস্ত মস্ত শিখা লাফিয়ে উঠেছে। খুব কাছে ছিলো কায়োটে, মাথা নুইয়ে সে পালকমুকুটে ধরিয়ে নিলো আগুন।

তারপরে ছুট ছুট ছুট, তারা পাঁচজনে দৌড়। আগুন মানুষেরা তো "আরে রে রেরে নিয়ে গেলো রে আমাদের আগুন চুরি করে নিয়ে গেল যাযাবরেরা, ধর ব্যাটাদের ধর" বলে তাড়া করেছে। কায়োটের হাতে আগুন জ্বলা মুকুট, আগুনমানুষেরা তাকে প্রায় ধরে ধরে। সে ছুঁড়ে দিলো মুকুট বনমালীর দিকে, বনমালী লুফে নিয়ে দৌড়। আগুনমানুষেরা এবারে বনমালীর দিকে দৌড়, ধরে ধরে অবস্থায় সে আগুন ছুঁড়ে দেয় বলাকার দিকে। তাড়া করে আসা লোকেরা এবারে বলাকার দিকে দৌড়ায়। এইভাবে আগুন হাত থেকে হাতে ফিরতে থাকে, আগুন মানুষেরা তাদের ধরতে পারে না। এদিকে দৌড়াতে দৌড়াতে তারা এসে গেছে মাঠ পার হয়ে সেই শুকনো গাছের কাছে। কায়োটে আগুন আছড়ে ফেলে গাছে, দাউ দাউ ধরে যায়।

আর চিন্তা নেই, এবারে আর কেড়ে নিতে পারবে না আগুন। ব্যর্থ আগুনমানুষেরা গালাগাল দিতে দিতে ফিরে যায়। কায়োটে, বনমালী, ঋক্ষবান, বলাকা আর মন্ডুক পাঁচটি শুকনো ডালের ডগায় আগুন ধরিয়ে নিয়ে ফিরে যায় তাদের গ্রামে। তারপর থেকে আর তাদের শীতের কষ্ট হয় নি। আর কায়োটে হয়ে যায় তাদের চিরকালের বীর নায়ক।

ডিসক্লেমার: নামগুলোর ব্যাপারে কিছুটা স্বাধীনতা নেওয়া হয়েছে বাংলায় মানানসই লাগানোর জন্য।


মন্তব্য

সাফি এর ছবি

ভাল লাগলো ঠানদি। আর বর্ণনাতো প্রায় আমেরিকান ফুটবলের মতন (হাততালি)

তুলিরেখা এর ছবি

নাতি, কী আর বলি। তোমাদের ভালো লাগলেই লেখাগুলো সার্থক।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ভালো লাগসে . . . .


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

তুলিরেখা এর ছবি

ধইনবাদ।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মুস্তাফিজ এর ছবি

বই করবেন নাকি?

.........................................
I think what I think because that's how I am. You think what you think because that's how you are.

...........................
Every Picture Tells a Story

তুলিরেখা এর ছবি

বই?
বলেন কি!!!
ভালো আঁকিয়ে আর ভালো সম্পাদক পাওয়া গেলে বই অবশ্য করা যায়। :-)
তবে লীলেন শর্ত দিয়েছেন ১০০ টা গল্প না হলে বই হবে না। ১০০ টা গল্প কি চাট্টিখানি কথা নাকি? :-(

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মাহবুব লীলেন এর ছবি

শ হতে ক বাকি?

তুলিরেখা এর ছবি

অনেক বাকি।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মুস্তাফিজ এর ছবি

তুলিরেখা লিখেছেন:
বই?
বলেন কি!!!
ভালো আঁকিয়ে আর ভালো সম্পাদক পাওয়া গেলে বই অবশ্য করা যায়। :-)

আঁকিয়ে পাওয়া যাবে, ব্যাপারনা।

.........................................
I think what I think because that's how I am. You think what you think because that's how you are.

...........................
Every Picture Tells a Story

তুলিরেখা এর ছবি

পাওয়া গেলে তো সোনায় সোহাগা! :-)
বিদেশে বাচ্চাদের বই কত যত্ন করে এরা বার করে, দেখে কেমন লাগে! আমাদের নিজেদের জায়গায় কত হেলাফেলা বাজে ছবি লেপটানো রঙ বাচ্চাদের বই। মাঝে মাঝে মনে হয় টাকাকড়ি আর জনবল থাকলে শুধু বাচ্চাদের আর কিশোরকিশোরীদের জন্য বই ছাপানোর একটা প্রকাশনালয় করতাম।
কিছুই হয় নি। আর কিছুদিন বাদে হয়তো এইসব স্বপ্ন গুলোও থাকবে না, কোনো ঘানিতে জুড়ে গিয়ে ঘানিরই অংশ হয়ে যাবো। :-(
মাঝে মাঝে হতাশার মাঝখানে মনে হয় সচল একটা জানালা খুলে দিয়েছে, একটুখানি আলো, একটুকরো খোলা আকাশ, আশার রঙ । সেই বা কম কী, বলুন?

------------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

জুয়েইরিযাহ মউ এর ছবি

এভাবেই বুঝি আমরা আগুন পেলেম.... :-? :)
ঋক্ষবান, বনকুসুমী নামদুটোতো বেশ।

----------------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো, গৃহী হয়ে কে কবে কি পেয়েছে বলো....


-----------------------------------------------------------------------------------------------------

" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি

তুলিরেখা এর ছবি

প্রেইরি ফ্লাওয়ার, কীন আইড মোল, ফ্যাট বেয়ার, লাইন অব হেরনস টুওয়ার্ডস দ্য হরাইজন-এইসব নামগুলো ইংরেজীতে অনুবাদ হলেই কেমন যেন হয়ে যায়, ঠিক নির্যাসটা মনে হয় মার গেল! অথচ বলাকা নামটা দেখুন, ঋক্ষ দেখুন, বনকুসুমী দেখুন, একই বা কাছাকাছি অর্থই, অথচ সরাসরি ভাবার্থ বুঝে বাংলা করলে কত ভালো বোঝা যায়! তাই সেই পথ নিয়েছি। :-)
আমাদের উপমহাদেশের গল্পে আগুন আনার ব্যাপারটা খানিকটা অন্যরকম! মুনিঋষিদের ব্যাপার কিনা, সবকিছুই আলাদা। তেনারা রীতিমতন হুকুম টুকুম দিয়ে বেড়ান দেবতাদের। :-)
----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।