টুকরো টুকরো শব্দগুলো তুলে তুলে রেখে দিই ঝাঁপিতে। ঘুলঘুলি বাসায় চড়াইশাবকদের ডাক, সে ডাক শুনে পালা করে মা আর বাপের আসা যাওয়া, তাদের ডানার ফররফরর ফুড়ৎ ফুড়ুৎ ঘুরতে থাকে দুপুরবেলার পাখার হাওয়ার শব্দে। টুকরো টুকরো শব্দেরা জড়ো হতে থাকে আমার টুকরিতে।
দূরে চলে যাবার শব্দের রঙ কেমন লালকমলা, আকাশ জুড়ে সূর্যাস্তের আয়োজনও ছিলো সেই মেঘ ছড়ানো বিকালে। রেলস্টেশনের মেহগিনি গাছে কিচিরমিচির করছিলো ঘরে ফেরা পাখিরা। গাড়ীটা ঝক্করঝক্কর করতে করতে চলে গেল সেতুর দিকে। পশ্চিমে নদী, তার রাঙা জলে তখন সূর্যটা ডুবে গেছে।
কাছে আসার শব্দের রঙ সোনালী ওড়না পরা আকাশের মতন ঝকমকে নীল।
তখন ভোরের শিশিরে ঝলমল করছিলো নতুন রোদ। একটা ভোরের পাখি ডাকছিলো টিকি টুই টিকি টুই টিকি টীঈঈঈঈঈ। সেই আশ্চর্য আশমানি রঙের শব্দ ছিলো আমাদের প্রথম দেখা হবার প্রহরে। তার মুখে এসে পড়েছিলো সেই নতুন ওঠা সূর্যের আলো।
কতকাল হয়ে গেল, আমি শব্দ কুড়িয়ে যাই, কুড়িয়ে কুড়িয়ে জড়ো করি। যত্ন করে ঝাঁপিতে তুলে রাখি। শব্দেরাই যে বাঁচায়, শব্দেরাই যে মারে! তেমন তেমন করে বুলিয়ে দিতে পারলে তারাই যে সারায় সব ব্যাধি! তাদের কি আর যত্ন করে না রেখে পারা যায়! শব্দেরাই যে হারানো পথ খুঁজে পাওয়ায়!
পুরানো পথের রেখাগুলো হারিয়ে গেছে, প্রিয়মুখগুলো ঝাপসা হয়ে গেছে, কাছে আসার থেকে দূরে চলে যাওয়ার রঙই বারে বারে আঁচলে লেগেছে! কতকিছুই হারিয়ে গেল, কিন্তু শব্দেরা হারায় নি। ওরা যেন শবদেহ না হয়, ওরা যেন জেগে উঠতে পারে সোনারকাঠি রূপার কাঠি লাগলেই!
পুরানো সেই পথেরা নেই, পথ ঢেকেছে বনে-
সোনারহরিণ বোনা আসন আর সে তো নেই মনে!
নেই-কথারা মেঘ এঁকেছে তালশিমূলীর ঘাটে
ঝম্ঝমিয়ে নামুক এবার বৃষ্টি তোমার মনে।
আনকথাদের বান ডেকেছে এপার ওপার ভাসে
ঢেউ টলমল নৌকা বেয়ে ও কোন্ মাঝি আসে?
নৌকাটা কি চেনাই ছিলো গতজন্মের ঘাটে?
আষাঢ়-শ্রাবণ পতিতপাবণ আজো কি জল কাটে?
গতজন্মের সে ঘরদুয়ার মেঘকুয়াশায় ঢাকা
কমলজবায় লুকিয়ে বসে কুটুমপাখির ডাকা-
আবছায়াতে শব্দ খুঁজি, পদ্মদিঘির পাড়ে
চিনিয়ে দিতে আসবে কি সে গহীন পথের ধারে?
মন্তব্য
আপনার মতো করে লিখতে পারিনা, আমি । শব্দগুলো কেমন উদাসীমুখ করে, ভেতরে ঘুরপাক খায়..ঠিকঠাক মতো লিখিতকারে বেরুতে পারেনা । সবাই কী আর সব পারে! খুব ভালো লাগলো আপনার লেখা!!! শুভকামনা থাকলো ।
অনেক ধন্যবাদ আয়নামতি।
আপনার নিকটা চমৎকার, ময়নামতীর গল্প মনে করিয়ে দেয়।
ছোট্টো ছোট্টো এক দুই প্যারাগ্রাফ করে লিখতে শুরু করুন যা মনে চায়, লিখে লিখে রেখে দিন, তারপরে বেশ কয়েক সপ্তাহ গেলে আবার বের করে দেখুন। আবার লিখুন। যা ইচ্ছা লিখুন, কোনো কাহিনিই যে হতে হবে তা না, হয়তো কোনো একটা মুহূর্তে আপনার কিছু মনে হয়েছিলো, হয়তো কোনো একটা গান শুনে কোনো একটা ঘটনার কথা মাথায় এসেছিলো, হয়তো বহুদিন আগের কোনো একটা স্মৃতি হঠাৎ ভেসে উঠলো, এইসব যা খুশি লেখা। এইভাবে দেখবেন যা মন চায় লিখতে পারছেন। শুভেচ্ছা রইলো।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কেমনে যে এমনে লেখেন আল্লা মিয়াই জানে----!
দিনের পর দিন যা খুঁজি, পাই না, আল্লা মিয়া যদি কইয়া দিতো কোথায় আছে আর কিভাবে পাই তা, সাহস কইরা আগাইয়া যাই কেম্বে, তাইলে ভালা হইতো গো অনিকেত মিয়া। তা তো হয় না!
আপনে ভালা থাইকেন। বেড়াইতে গেছিলেন?
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
গদ্য ও পদ্যের মিশেলে এক অদ্ভুত নতুন ধারার জন্ম দিয়েছেন আপনি, তা কি জানেন?
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আপনাকে ধন্যবাদ।
এর আগে সাইফুল আকবর খানও একবার এরকমই একটা কথা বলেছিলেন। কিন্তু এরকম কি এর আগে আর কেউ করেন নি? মনে হয় করেছেন। বাংলা ভাষা আর কাব্যকবিতা আর গদ্যকাহিনি নিয়ে অনেক পরীক্ষানিরীক্ষা হয়েছে আর এখনও হচ্ছে তো!
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপনার প্রত্যেকটা লেখায় কেমন যেন মায়া মায়া ভাব থাকে। শব্দগুলো যেন মনে হয় নিজের ভেতরের শব্দ।
আপনার লেখার স্টাইল, বাক্য গঠন সব কিছুই আমার খুব ভালো লাগে। তার থেকেও বেশী মায়া লাগে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ শান্ত।
যিনি পড়ছেন তাকে ভিতরে বাইরে ছুঁয়ে যেতে পারা যিনি লিখছেন তাঁর কাছে খুব বড় পাওয়া।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
তুলিরেখা,
একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন। আপনি বাংলাদেশের কোন অঞ্চলের?
আমার জন্ম নবগ্রাম, হুগলী জেলার নবগ্রাম। পশ্চিমবঙ্গের। সেখানেই স্কুল, কলেজ কলকাতায়, তারপরে অনেককাল দেশের বাইরে।
বাবা-ঠাকুরদারা ঢাকা শিমুলীয়ার মানুষ(বাবা সেখানে স্কুল শেষ করে পরে দূরের কলেজে যায়, তারপরে প ব য়ে আসে ), মায়ের দেশ ছিলো নারায়ণগঞ্জ, মা প ব য়ে চলে আসে দশ বছর বয়সে। ঠাকুমার দেশ ছিলো ঘোড়াশালের পাইকশা।
এতকাল পরে বাবামাভাই বেড়াতে গেল বাংলাদেশ, ওরা ফিরবে ২০ তারিখ। তখন ফোনে সব শুনবো বলে বসে আছি।
আমাকে বোধহয় বলা যায় বাধ্য-হয়ে-যাযাবর।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
জানলুম। ঠিকাছে।
ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ভালো লাগার মতো আলাদা কিছু মনে হলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
শেখ নজরুল
শেখ নজরুল
আমার ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
আপনিও ভালো থাকবেন, সবসময়।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন