১
রাতের বেলা মা ঘুমাতে এলে মায়ের কাছ ঘেঁষে এসে শুয়ে ফিসফিস করে টিপু জিজ্ঞেস করে, "মা, মা, বাবা কেন চলে গেল? "
আয়না ছেলের চুল ঘেঁটে দিতে দিতে নরম গলায় বলে, " টিপু, তোর বাবার নিজের দেশ অনেক দূরে, অন্যরকম একটা দেশ, অন্যরকম মানুষেরা সেখানে থাকে। তোর বাবার নিজের বাবামা আর ভাইবোনেরা সেখানে থাকে। তার আপন মানুষেরা তাকে বলেছে তাদের কাছে গিয়ে থাকতে, সেখানে কাজ করতে, তাই সে ফিরে গেছে।"
"তুমি তবে কেন সঙ্গে গেলে না আমায় নিয়ে?" টিপুর গলায় কৌতূহল আর বেদনা মেশামিশি হয়ে আছে। আয়নার বুকের মধ্যেটা কেমন করে। এই সেদিন না ছেলেটা এইটুকু ছিলো, দুধ-দুধ গন্ধ লেগে থাকতো ওর কচিমুখে! কবে কথা কইতে শিখলো, কবে এমন অচেনা মোচড় লাগলো ওর প্রশ্নে!
আয়না আস্তে আস্তে বলে," আমি যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তোর বাবা বললো সেখানে সবকিছু অচেনারকম, বাড়ীঘর রাস্তাঘাট সব আলাদা, মানুষেরা অন্য ভাষায় কথা বলে, আমি সেখানে কারুর কথা বুঝবো না। সেখানে তুই ই বা কোন স্কুলে যাবি, সেখানে আমাদের ভাষার কোনো স্কুল নেই। তোর দাদুদিদাও আমাকে বললো আমি সেখানে গিয়ে থাকতে পারবো না।"
টিপু চুপ করে থাকে, আয়না ওর মাথার চুল ঘেঁটে দিতে দিতে বলে, "টিপু, তোর বাবা তোকে ঠিক দেখতে আসবে একদিন। দেখিস। "
টিপু আগ্রহী গলায় বলে, "কবে? এই সামনের ছুটির সময়?"
আয়না নরম গলায় বলে, " আর বছর দুই পরে আসবে। "
টিপুর গলায় এবারে নিরাশা, "দুউউই বছর? এতদিন পরে? "
আয়না বলে," তোর বাবার দেশ অনেক দূরের দেশ কিনা, তাই সহজে আসা যায় না। তুই মন দিয়ে পড়াশোনা কর, তোর বাবা এসে দেখে যাতে খুশী হয়। তার ছেলে ক্লাসে ফার্স্ট হয় শুনলে সে খুব খুশী হবে।"
টিপু আস্তে আস্তে আসতে বলে, "আমি মন দিয়েই তো পড়ি। আরো মন দিয়ে পড়বো। আগেরবার সায়ন্তন ফার্স্ট হলো, ইমন সেকেন্ড, আমি থার্ড। এবারে আমি ফার্স্ট হবো, দেখো মা, ঠিক হবো।"
ছেলের কপালে হালকা চুমু খেয়ে আয়না বলে, "লক্ষ্মী ছেলে। আমি জানি তুই পারবি। এবারে ঘুমো।"
টিপু ঘুমিয়ে পড়ার আগে আগে আবার মায়ের দিকে ফিরে বলে, "মা!"
"কিরে, আবার কী হলো? ঘুমাবি না? কালকে সকালে ইস্কুল আছে তো।"
"মা, আমি বড় হয়ে বাবার দেশে যাবো।"
"নিশ্চয় যাবি খোকা, নিশ্চয় যাবি। আমি বুড়ী হয়ে যাবো তখন, তুই আমাকে ধরে ধরে নিয়ে যাবি। নে, এখন ঘুমা।"
"সেই নদীটা? সেই বিরাট নদীটা? যেটার গল্প তোমাকে বাবা বলেছিলো? সেই নদীটাকে তখন দেখবো আমরা, তাই না মা?"
"হ্যাঁ, খোকা, নিশ্চয় দেখবো। আর কথা বলে না, এখন ঘুমা।" আয়না আস্তে আস্তে হাতচাপড়ি দিয়ে ঘুম পাড়াতে থাকে টিপুকে।
চমক ভেঙে যায় শতদ্রুর, সে আর টিপু নেই। টিপু বলে ডাকার আর কেউ নেই। চব্বিশ বছর কেটে গেছে। চব্বিশটা বছর! এতদিনে সে এসেছে, বাবার দেশে। সেই গল্পে শোনা বাবা, যাকে কোনোদিন আর চাক্ষুষ দেখা হলো না তার।
সে নদীটাকে দেখতে যাবে, একা। মায়ের আর আসা হলো না। মা চলে গেছে আকাশনদী পার হয়ে।
(চলবে)
মন্তব্য
চলতেই হবে....
--------------------------------------------------
"আমি তো থাকবোই, শুধু মাঝে মাঝে পাতা থাকবে সাদা/
এই ইচ্ছেমৃত্যু আমি জেনেছি তিথির মতো..."
*সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
চলতেই হবে?
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
.......
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
কেন?
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপনার লেখাটি তো আমার ভালই লেগেছে। কিন্তু কমেন্ট এত কম কেন বুঝলাম। আজকাল বোধহয় মানুষ গল্প/উপন্যাস পড়া কমিয়ে দিল নাকি! চালিয়ে যান আপনি।
রিপন দে।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ রিপন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপনার লেখাত অনেক মন ছোঁয়া। বেশ ভাল লাগল। পরের পর্বের জন্য রহিলাম বসিয়া।
===অনন্ত===
অনেক ধন্যবাদ অনন্ত। পরের পর্ব আসবে।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপনি তো অনেক ভালো ভালো জিনিষ রান্না করতে পারেন। তো সেসব ভালো ভালো জিনিষ না খেয়ে চা খেতে গেলেন কেন?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আহা চায়ের কোনো তুলনা আছে! স্বয়ং অ্যাস্টেরিক্স একবার ম্যাজিক পোশন রোমানরা ডুবিয়ে দেওয়ায় চা খাইয়ে জিতিয়ে দিলো তাদের ভাইবেরাদরদের দলটাকে।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
শেষ প্যারাতে এসে মন খারাপ হয়ে গেল .........
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আসলে কিছু কিছু মনখারাপ এড়ানো যায় না, মানুষের জীবনটাই এরকম।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
গল্প বেশ লেগেছে তবে কিছু শব্দ পূর্ণ না হওয়ায় পড়তে অসুবিধা হচ্ছে।
শেখ নজরুল
শেখ নজরুল
ধন্যবাদ শেখ নজরুল।
শব্দ পূর্ণ না হওয়ার ব্যাপারটা বুঝলাম না।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
একটা কি রকম যেন মন খারাপের হাওয়া লেগে গেল শুরুতেই। অন্যরকম লেখা আসবে তার আভাস মিলছে।
মধুবন্তী মেঘ।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ মধুবন্তী।
হয়তো অন্যরকমই হবে খানিকটা। আবার হয়তো নাও হতে পারে। সেভাবে দেখতে গেলে প্রত্যেকটা লেখাই তো একটা আরেকটার থেকে আলাদা।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নদীটার ব্যাপারে খুব কৌতুহল হচ্ছে। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
-আতিউর
atiurrs from the gmail.com
ধন্যবাদ আতিউর।
আসবে, পরের পর্ব আসবে। রহু ধৈর্যং।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ফারহানা সিমলা
লেখাটা পড়ে বাবার কথা মনে পড়ে গেলো ।
ফারহানা সিমলা
পড়ার জন্য ধন্যবাদ সিমলা।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
চলুক, ভালো লাগছে। তবে যেন ১০ পর্ব না হয়!
==============================
ঢাকার মৌন ঘ্রাণে বকুলফুলের নাভি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
আসলে এইটা আগে থেকে লেখা হয়ে থাকা গল্প না, হঠাৎ হঠাৎ তাগিদ এলে লেখা হয়। দেখা যাক পরের কথা কখন আসে।
পড়লেন আর কমেন্ট করলেন বলে অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
- এই পর্বে কিছু তথ্যের ব্যবহারে ঘাটতি অনুভ করছি। গল্পটা বেশ ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। তবে আশাকরছি পরের পর্বগুলোতে সেই ফাঁকাস্থানগুলো পূর্ণ হয়ে যাবে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আসলে এইটা আগে থেকে লেখা হয়ে থাকা গল্প না, হঠাৎ হঠাৎ তাগিদ এলে লেখা হয়। দেখা যাক পরের কথা কখন আসে।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন