তিতিয়া শুনেছে সে জন্মেছিলো সন্ধ্যেবেলা, সেদিন ছিলো পূর্ণিমা। পুবদিগন্তে মস্ত একটা রুপোর থালার মতন উঠে আসছে চাঁদ, তখন নাকি সে জন্মেছিলো আরেকখান চাঁদের ফালির মত, তাদের মাটির ঘর আলো করে। ঠাকুমা এসব বলতো।
ঠাকুমা ছিলো কবি-কবি স্বভাবের মানুষ, তার উপরে তাকে ভালোবাসতো চোখের মণির মত, ঠাকুমা তো বলবেই। আধুনিক যুগের হয়েও সে বাড়ীতেই হয়েছিলো, দাই এর হাতে। তাদের গ্রামের দিকে এখনও ওরকম চলে। মানুষের জন্মগ্রহণপ্রক্রিয়া খুব যে কাব্যিক নয় আজকে ভালোই জানে তিতিয়া। সংসারের ঝড়েজলেআগুনে ভালোমতন সীজনড হয়ে গেছে সে। আজকে আর তো সে তিতিয়া নয়, এবাড়ীতে ঐ নাম কেই বা জানে? এখন সে মিসেস সিনহা, মিসেস দীপান্বিতা সিনহা। সুজয়-তার স্বামী, তাকে ডাকে দীপা বলে। সুজয়ের বোন সুজাতা ডাকে বৌদি। সুধাময়ী-তার শাশুড়ীমা, উনি বৌমা বলে ডাকেন। তিতিয়া নামটা কেউ এরা জানে না।
মাঝে মাঝে যখন অলৌকিক জ্যোৎস্না নেমে আসে এই ছাদে, তার তখন সেই ছোট্টো তিতিয়ার মতন ভাবতে ভালো লাগে, পুবের দিকে রুপোর থালার মতন একটা মস্ত চাঁদ, সেই চাঁদের আলো পুবের খোলা জানালা দিয়ে এসে ঘর ধুয়ে দিচ্ছে, আর সেই আলোয় সদ্যজন্মানো তিতিয়ার শরীর ধুয়ে যাচ্ছে, যেন সে এই পৃথিবীর কেউ নয়, চাঁদের আলোর দেশ থেকে ভুল করে খসে পড়া একটা পথহারা মেঘ।
বিয়ের তিন বছর পরেও সন্তান-সম্ভাবনা হয় নি বলে বাড়ীতে একটা চাপা উদ্বেগ, শাশুড়ীমা মাঝে মাঝেই ওকে বোঝান, তাড়াতাড়ি ছেলেপুলে হলে মানুষ করতে অনেক সুবিধে। সে সব কথা মন দিয়ে শোনার ভান করে। রাতে আবার তাকে বোঝায় সুজয়। সেসবও সে মন দিয়ে শোনার ভান করে। নিজের কথা সে কখনো বলতে পারে না, সে ভাষা যে বুঝবে না কেউ। এ ভাষা একমাত্র যে বুঝতো সেই পাগলটা যে কোথায় পালিয়ে গেল!
এইসব জ্যোৎস্নারাতে, আকাশপৃথিবী ধুয়ে যখন বয়ে যেতে থাকে অলৌকিক জ্যোৎস্না, এ বাড়ীর সবাই ঘুমায় অঘোরে, তখন কে যেন ঘুমের ভিতর থেকে টেনে বাইরে নিয়ে আসে তিতিয়াকে। ঠিক যেন সেই পাগল ছেলেটা, হাওয়ার মতন তাকে ডাকে- তিতিয়া-আ-আ-আ। ঘুম ভেঙে উঠে বসে স্বপ্নে হাঁটার মতন চুপি চুপি ছাদে উঠে আসে তিতিয়া।
এই অদ্ভুত আলোছায়ার ভিতরে অন্য একটা পৃথিবী আছে, মনে হয় দরজাটা যদি সে খুঁজে পেতো! তাহলে, তাহলে সে ঠিক এখান থেকে পালিয়ে যেতো! সেই পরীর পরিচয় গল্পের ঝর্ণাপরীর মতন সে অদৃশ্য হয়ে যেতো। ঘুম থেকে উঠে সুজয়রা আর কেউ তাকে খুঁজে পেতো না! পালিয়ে সে চলে যেতো সেই দেশে যেখানে কেউ ঝগড়াঝাঁটি করে না, কেউ যেখানে সংসারের পান থেকে চুন খসলে তুলকালাম বাঁধায় না, যেখানে নিজের ইচ্ছে প্রকাশ করা মাত্রই গন্ডগোলের সম্ভাবনা থাকেনা।
যেখানে এখনো ঠাকুমা আঁচল পেতে শুয়ে রূপকথা বলে, কাঞ্চনমালার গল্প! যেখানে লাল নীল হলুদ সবুজ রেশমী সুতোগুলো সব স্বপ্নের আকাশে উড়ে বেড়ায়। যেখানে হীরামণ পাখি এসে গান শোনায়। যেখানে সেই পাগল ছেলেটা আচমকা দেখা দিয়ে বলবে, "কী, কেমন চমকে দিলাম?"
মন্তব্য
বেশ ভালো লাগলো পাগল ছেলেটা কে?
কৃষ্ণ!
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
- আমি ভাবছিলাম "ধুগো"
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
"আর কিছু না চাই,
যেন আকাশ খানা পাই...
আর পালিয়ে যাওয়ার মাঠ!!"
তুলিদি,
তিতিয়া হতে মন্চায়...
--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আমারও।
তিতিয়া হতে মন চায়।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সুন্দর লাগলো গল্পটা!
অনেক ধন্যবাদ মূলত পাঠক। আপনাকে আজকাল একেবারেই দেখতে পাই না।
সেই মাউই উপকথার ছবি আঁকার সময়ের কথা মনে পড়ে, তখন খুব সুন্দর সময় কেটেছিলো। মনে পড়ে সেই ন হন্যতে কেশ তেলের বিজ্ঞাপণ? মনে পড়ে ঈগলের পিঠে তেলেপিণু আরামসে বসে বসে কানে সুড়সুড়ি দিচ্ছে?
আবার কি ওরকম আসতে পারবেন কখনো?
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
তিতিয়া অর্থ কি?
লেখাটার কিছু জায়গায় সুজয় সুজন হয়ে গেছে...
ভাল লাগল
-----------------------------------
আকাশে তোর তেমনি আছে ছুটি
অলস যেন না রয় ডানা দুটি
ধন্যবাদ আনন্দী।
এডিট করে ঠিক করে দিলাম, সুজয় করে দিলাম।
তিতিয়া আদরের ডাকনাম, মানে নেই কিছু।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
অনেক কথা লিখতে চেয়েছিলাম কিন্তু লিখতে পারলাম না। কেন যে পারলাম না! তাই শুধু বলি গল্প ভালো লেগেছে, অসম্ভব ভালো লেগেছে। এই কথাটুকু না বললে লেখকের প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ হত।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ষষ্ঠপান্ডব!
পড়েছেন বলে আমারও কৃতজ্ঞতা!
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
লিখেন কিভাবে এত সুন্দর করে? আমাকে একটু শিখিয়ে দেন না
আহা আপনি যেন কম সুন্দর লিখেন!
শিখিয়ে দিতে হলে আপনি শিখিয়ে দিন।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আবারো মুগ্ধতা !
কোথায় যেন আপনার একটা কমেন্ট মেরে দিয়েছি।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
শুনেছি লোকে টাকাপয়সা মেরে দেয়, আপনি কমেন্টশুদ্ধ মেরে দিলেন?
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
- তিতিয়ার কোনো বোন টোন নাই? যে তিতিয়ার মতোই জ্যোৎস্নাকে ভালো পায়! মাঝ রাতে ছাদে উঠে যায়...
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আহা বোন থাকবে না কেন? তিতিয়ার তিন বোন, মিতিয়া বিতিয়া দিতিয়া ! তবে একেকজন একেক রণচন্ডী!
----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
- তিতিয়ারে নিয়া একটা গান বানছি, শুনবেন?
মিতি আমার বিতি ওগো দিতিয়ায় ভূবন ভরা
তিতিয়ার বুকে আমার জন্য ভালোবাসায় খরা!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
চমৎকার গান!
কিছু কিছু এডিট কইরা লোকগানের সুর দিয়া গাইয়া ক্যামেরা সাউন্ড সহযোগে ইউটিউবে আপাইয়া দেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
চমৎকার লাগলো তুলিরেখা! তিতিয়া বোধ হয় আমাদের সকলের মনেই ঘুরে বেড়ায়, তাকে এমন অদ্ভূত সুন্দরভাবে ছাপার অক্ষরে ধরতে পারলেন কেমন করে? অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------------
আর কিছু না চাই
যেন আকাশখানা পাই
আর পালিয়ে যাবার মাঠ।
-----------------------------------------------------
আর কিছু না চাই
যেন আকাশখানা পাই
আর পালিয়ে যাবার মাঠ।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আহির ভৈরব।
সত্যিই তিতিয়া আমাদের সবার মনেই, কেউ বোঝে, কেউ বোঝে না। ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কতদিন তোমাকে দেখিনা রে দিদি!
উড়ো মেঘের মত উড়ে আসা এই সুন্দর গল্পটা পড়া হয়নি আগে, পড়ে ফেললাম।
নতুন গল্প নিয়ে আসো না বাপু জলদি জলদি।
আরে আয়নামতি, কতদিন পরে !
গল্পেরা পলাইয়া গেছে গো আয়নাদিদি, তুলারাজার দেশে উইড়া গেছে গা।
কেমনে ফিরাইয়া আনি কও দেখি?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কী যে বলো না তুলিদি! গল্প কোথাও পালাইনি।
তুমি শুধু লেখার মন নিয়ে বসে যাও।
দেখবে কেমন হুড়মুড় করে শব্দেরা ছুটে আসছে তোমার গল্পে জুড়বে বলে!
লিখে ফেলো বুঝলে? ভালো থেকো।
তুমিও ভালো থেকো। কিন্তু তোমার সেই আশ্চর্য সুন্দর গলপগুলি কই?
আমার হাতে লেখারা ধরা দিতে চায় না ইদানীং, তাই আজকাল দাড়িবুড়ার গান শুনি "দেবে না ধরা অধরা ছায়া / রচি গেল প্রাণে মোহিনী মায়া "
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কী বলো রে দিদি!! এহহে! তুমি মনে হয় অন্য কারো সাথে আমাকে ঘুলিয়ে ফেলেছো।
আমি লিখিই সব ইতং বিতং, তাতে গল্পই বা পেলে কই তাও আবার 'আশ্চর্য সুন্দর'!
ব্যাপার না, কারণ ভুল করে হলেও প্রশংসা শুনতে কার না ভালু লাগে কও।
গান্টা তো দারুণ! শুনিনি আগে। নাহ্ খোঁজ করে পেলাম না। এটা পেলাম থাক তবে, কয়েকটা দিন যাক দিদি।
সময় হলে ঠিক আসবে লেখা দেখো! চাপ নিও না। ভালো থেকো তুমি অনেকক ভালো।
আয়নাদিদি, এই যে তোমার গল্প, পড়ে একেবারে অবাক-মুগ্ধ হয়েছিলাম।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
...ট্যাগে ভয়েতে 'গল্প' শব্দটা লিখতে পারিনি জানো!
কত্ত পুরোনো একটা লেখা যত্ন নিয়ে পড়েছো জেনে আমার কী যে ভালো লাগছে কী বলবো তোমাকে!!
কষ্ট করে পড়েছো সে জন্য এই নেওগান্টা তোমার জন্য।
কী সুন্দর! আমার মনের মধ্যে সারাক্ষণ যে ছোট্ট ‘বনবন’টা ঘুরে বেড়ায় খাল-বিল-জঙ্গল আর গাছের ডালে ডালে-যে কারণে আমার বড্ড ‘নস্টালজিক’ সুনাম বা বদনাম; সে তো রীতিমতো কেঁদেকেটে একাকার হয়ে গেল। তিতিয়ারা বেঁচে থাক চিরকাল ‘মিসেস দীপাণ্বীতা সিনহা’দের মধ্যেও, তিতিয়ারা বেঁচে থাক তিতিয়াদেরই ভালোবাসায়
দেবদ্যুতি
ঠিক বলেছেন দেবদ্যুতি, তিতিয়ারা বেঁচে থাকে তিতিয়াদেরই ভালোবাসায়।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন