ছাদটা বেশ বড়। এখানে শুয়ে উপরে তাকালে অনেকখানি আকাশ ঝম করে ওঠে। ঋতি প্রায়ই রাতের খাবার পরে একবার ছাদে আসে। আর মাদুরটা পেতে শুয়ে পড়ে। চোখ মেলে দেখে আকাশভর্তি তারা কেমন ঝমঝম করে বাজছে! না, আসলে তারারা ঝিকঝিক করে জ্বলছে শুধু, কোনো শব্দ নেই। তবু ঋতির কানে আসে কেমন এক অপূর্ব সঙ্গীত যা আর কেউ শুনতে পায় না।
পুবের দিকে নারকেল বাগান। ওদিকে তাকালে গাছের মাথাগুলো দেখা যায়, সারি বেঁধে দিগন্তের আড়াল রচনা করেছে। সেই গাছের সারি ছাড়িয়ে ঝিকঝিক করে জ্বলে ওঠে নীল সেই তারা। অনেকদিন আগে ঋতির বাবা ওকে চিনিয়ে দিয়েছিলো ঐ তারার নাম অভিজিৎ। আস্তে আস্তে উঠে আসছে অভিজিৎ, এই তো কিছুক্ষণ আগেও ভালো করে দেখাই যাচ্ছিলো না গাছের জন্য, এখন গাছগুলোর মাথা ছাড়িয়ে জ্বলজ্বল করছে খানিক উপরে। আরো উপরে উঠবে। একেবারে মাথার উপরে ঐখানে কখন আসবে? অনেক রাত হয়ে যাবে। একেকদিন ঋতির ইচ্ছে করে সারারাত ছাদে থাকতে, একেবারে তারাটার উদয় থেকে অস্ত অবধি। কিন্তু তা হবার নয়। এই তো মা ডাকতে শুরু করলো বলে!
কেন জীবন এভাবে পাকে পাকে জড়িয়ে ধরে অজস্র দাবীতে? কেন কয়েকটা নির্জন মুহূর্তকে ধরা যায় না দু'হাতের অঞ্জলিতে? যা হারিয়ে যায় তা কি শুধুই হারিয়ে যায়, কখনো আর তাকে পাওয়া যায় না? সেই যে জনাই গাঁয়ের পাগলী মা অম্বা অপেক্ষায় থাকতো তার সুমনকে যে নিয়েছে সে ফিরিয়ে দেবে চুপি চুপি, গভীর রাত্রে? কখনো কি হারানো প্রিয়মুখ ফিরে আসে না জলের আয়নায়? কোনো অলৌকিক নীলপাখি ওড়া সকালে, কোনো অপার্থিব দ্যুতিময় সন্ধ্যায়?
বিলুপ্ত সেইসব শরৎসকাল মনে রাখিনি
ভুলে গেছি সেইসব আশাভঙ্গের দুঃখসন্ধ্যাও
সেইসব কথা না রাখার বিষাদ, সেইসব অকারণ কাটাকুটি-
টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া প্রতিশ্রুতিরা-
কিছু মনে রাখিনি, মুছে নিয়েছি লবণজলের ওড়নায়।
সেইসব ছুটি-ঝিকমিক সকাল ছিলো আমাদের,
যাদুকরী রোদ্দুরে নামতা ভুলিয়ে দেওয়া সেইসব সকাল-
আকাশপৃথিবী জোড়া আশ্চর্যময়ী ভালোবাসা-উৎসব
সব হারিয়ে গেছে নি:শেষে, সে বিদায় মনে রাখিনি।
আমাদের গহীনের অরণ্য সব
থেকে যাক সবুজ থেকে সবুজতর হয়ে,
সেইসব মায়াময় নদীরা, মধুমন্তী নদীরা আমাদের-
আরো ছলছল হয়ে বয়ে যাক অলীক নীল সমুদ্রে।
সুপ্রাচীন শীতরাত্রির শনন শনন হাওয়া-
হাওয়া কাটিয়ে দক্ষিণের দিকে উড়ে চলা
কৃষ্ণপক্ষের নক্ষত্রবিলাসী পাখিরা-
ওরা ঠিকই রয়ে গেছে গোপণ আলো-অন্ধকারে।
জালের ফাঁসে বেঁধে রাখা ডানা খুলে একদিন
ওদের সাথী হয়ে আকাশে মিশে যাবার
একবুক আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি
নীল নক্ষত্রের পায়ের কাছে।
মন্তব্য
ধুর মিয়া!
আপনি সবসময় কেমন কেমন যেন সব কথা বলেন, ভেতরবাড়ি নড়ে ওঠে ভীষণ...
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আরে মিয়া-
"ভিতরঘরের আগল নড়ে, শিকড় কেঁপে ওঠে
জন্মআগুন জ্বলছে দ্বিগুণ, রক্তে তুফান ছোটে। "
ফাল্গুন কি এরকমই সময় নয়?
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বেশ লাগলো পড়ে। ঋতি আমার খুব প্রিয় নাম, মানে হাঁটার ভঙ্গি বা gait তাই না?
ধন্যবাদ হরফ।
ঋতি মানে সত্যি, Truth.
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
???????
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
হুঁম কিন্তু ঋতম বা ঋত যে সংস্কৃত শব্দ মশাই। এমন ধাঁ করে ই-কার জুড়ে কি তার স্ত্রীকরণ সম্ভব? আর "সবিনয় নিবেদনে" গুহ সাহেব বলছেন ঋতি মানে gait বা গতি. আমার হাতের সামনে অভিধান নেই unfortunately তাহলে হলফ করে বলতে পারতাম.
হয়। প্রীতি গীতি সন্নীতি র মতন ঋতি ও হয়। ঋতিংকর নামটা খেয়াল করুন।
গুহ সাহেবের কথা শুনে আমরা হাসাহাসি করি, ভদ্রলোক বলেন জৈষ্ঠ্য মাসে নাকি আমের মুকুল আসে, তিস্তা নাকি নদ। !!!
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কবিতা কম বুঝি, গদ্যটুকুই ভরসা।
---------------
আলোর ছটা
---------------
আমারও। গদ্যই ভরসা মানে যাকে বলে কিনা ভিত্তিভূমি। এর উপরে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে তবে না মাথা তুলে আকাশ দেখা!
ভালো থাকবেন। পড়লেন বলে ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
FYI
http://dsal.uchicago.edu/dictionaries/biswas-bengali/
http://dsal.uchicago.edu/cgi-bin/romadict.pl?query=truth&table=biswas-bengali
অন্লাইন অভিধান পেয়ে লোভ সামলাতে পারলাম না ঃ-)
এ জিনিস আগেই দেখেছি।
তবে এ অভিধান অসম্পূর্ণ, প্রাচীন তৎসম শব্দের ক্ষেত্রে একই শব্দের বহু অর্থ থাকতো।
গতি অবশ্যই একটা অর্থ, আরেকটা অর্থ সত্য।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
- কোবতে না বুঝলেও সাথের লেখাটুকু পড়ে বুঝলাম কোবতেও ভালো হয়েছে নিশ্চই।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধন্যবাদ ধূসর গোধূলি।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নীল নক্ষত্রের পায়ের কাছে। ......... কবে যাবো...?
কবে যাবো সেকথা জানতে পারলে তো আর কথাই ছিলো না!
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
রোদের চাবুকে সব নামতা মনে পড়ে যাচ্ছে আজকাল ...
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
না না, নামতাকে হতচ্ছেদ্দা করবেন না। নামতা খুব ভালো জিনিস। এক বুড়ো গণিতবিদ বলেছিলো নামতা জানি বলেই আমরা মুরগী হই না।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপনার সব কবিতা একখানে করে একটা লিংক দেয়া যায় না? একটা মানুষ কেন সব সময় এত ভালো লিখবে আমি এর কোন কারণ খুঁজে পাই না!
হরিপদবাবু,
এসব কী বলছেন শুনে কান বেগুনভাজা হয়ে যাচ্ছে!
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বেশ ভালো লাগল, তুলিদি'।
তবে "আমাদের গহীনের অরণ্য সব........." এই প্যারাটা একটু জীবনবাবু ঘেঁষা মনে হলো। অবশ্য সেটা দোষের নয়।
==============================
ঢাকার মৌন ঘ্রাণে বকুলফুলের নাভি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
ধন্যবাদ আশরাফ।
জীবনানন্দ এসে পড়েন, জানা অজানার মধ্য দিয়ে, কী আর করা! জীবন যে!
ভালো থাকবেন!
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পড়তে পড়তে নিজেকে হারিয়ে ফেলছিলাম। চমৎকার।
সালেক খোকন
নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন? বলেন কী!!!
দ্রুত নিজেকে খুঁজে পান।
লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
তুলি দি, আমাকে স্তব্ধ করে দাও তুমি!
তোমাকে তুমি বলে ডেকে ফেললাম। এই লাইনটার সাথে আপনি শব্দটা যায় না।.
--------------------------------------------------------
যখন প্রাণের সব ঢেউ
জেগে ওঠে, কথা বলে, রক্তের আশ্চর্য কলরবে
বৃষ্টির দুপুরে মনে পড়ে
বর্ষার মতন গাঢ় চোখ মেলে তুমি আছ দু'দিনের ঘরে।।
[শামসুর রাহমান]
-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়
নতুন মন্তব্য করুন