অদ্ভুত কান্ড! এরকম আগে কখনো হয়েছিলো কি? স্বপ্নটা এরকম: মনে হলো একটা নামী সাহিত্য পত্রিকায় একটা বড়গল্প পড়ছি, কাহিনীও পরিষ্কার পরপর একেবারে পাতা উলটাচ্ছি আর পড়ে যাচ্ছি, একটুও বেমানান লাগছে না কোথাও। এমনকি নামটাও দেখলাম পাতা উল্টে -"মৌমাছি ও সমুদ্র"। পাশে একটা ছবি, একটা জাহাজের কেবিন, জানালা দিয়ে সমুদ্র দেখা যাচ্ছে।
কী আশ্চর্য! এ কার গল্প? কোথা থেকে কেমন করে এলো স্বপ্নের মধ্যে? এ জিনিস কি লিখে ফেলা উচিত নয়? স্বপ্নের জার্নালে না, একেবারে গল্প হিসাবেই?
তো তাই করা শুরু করলাম, স্বপ্নের স্মৃতিকুয়াশাধোঁয়াশা সরিয়ে তুলে আনতে গেলাম গল্পটা। কিন্তু দেখলাম সহজ না, অনেক ফাঁক থেকে যাচ্ছে। যখন স্বপ্নটা চলছিলো তখন একেবারে চরিত্রগুলোকে দেখতে পাচ্ছিলাম-জাহাজে কাজ করা যে ছেলেকে ঘিরে গল্প শুরু হয়েছে তাকে, তার রহস্যময় নানা অভিজ্ঞতা, বছরের বেশীসময় তার বাবামা ও বন্ধুবান্ধব থেকে দূরে থাকতে হয় বলে তার অপরাধবোধ ও অভিমানের মিশেল আবার তারই সঙ্গে অন্যরকম একটা আনন্দ---তার বান্ধবীর অভিমান ও ক্ষোভ, নিজের মাবাবাকে নিয়ে সে ছেলের অদ্ভুত কল্পনা---লেখার সময় বুঝতে পারলাম স্বপ্নই ছিলো, স্বপ্নের মধ্যে যদিও মনে হয়েছে পড়ছি গল্পটা, কিন্তু আসলে সিনেমার মতন দেখছিলাম। নইলে বিষন্নতার রেখাগুলো দেখলাম কী করে শ্রবণের বান্ধবী মেয়েটার মুখে? চোখ বুজে ফেলি, শিথিল করে দিই শরীর মন যুক্তি সবকিছু, আবার স্বপ্নটা দেখতে শুরু করি।
শ্রবণ জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিলো, দুলন্ত জানালা। জাহাজ দুলছে, জলের ঝাপটা এসে ডেক ভাসিয়ে দিচ্ছে। উপরের এই জানালা দিয়ে এই অদ্ভুত রাত্রে সব কত অন্যরকম লাগছে! কেমন একটা আবছা-আবছা ঘোলাটে জ্যোৎস্না, সমুদ্রকে মনে হচ্ছে একটা দুলন্ত বালিয়াড়ি, উপরে ঝুলে থাকা চাঁদটা যেন রহস্যময় একটা অন্য জগতের আভাস! আমাদের চেনা জানা দৈর্ঘ্য প্রস্থ উচ্চতার বাইরের অন্য কোনো গহীন গোপণ জগৎ! তেমন জগৎ কি নেই?
বিকেলে ওদের ছাদের উপরে মৌপিয়া গান গাইতো, পাশের ছাদটা ছিলো শ্রবণদের বাড়ীর ছাদ। শ্রবণ বিকেলে একটা বই নিয়ে ফুলের টবগুলোর কাছে যেখানে সিমেন্টের বেঞ্চগুলো, সেগুলোর কোনো একটার উপরে বসে বই পড়তো। আসলে বইপড়ার আছিলায় মৌপিয়ার গান শোনা হতো আর মাঝে মাঝে ওকে দেখাও হতো। পাশাপাশি বাড়ীর দুটো ছেলেমেয়ে তারা, কিন্তু ভালোছেলে হিসাবে শ্রবণ পরিচিত, মৌপিয়াও খুব সিরিয়াস ধরনের মেয়ে, ওরা যে পরস্পরের প্রেমে পড়তে পারে এ নিয়ে কেউ কোনো সন্দেহমাত্র করেনি।
বিকেল আস্তে আস্তে সন্ধ্যায় গড়িয়ে যেতো, গান শেষ করে কখন যেন নিচে নেমে যেতো মৌপিয়া, শ্রবণ বসেই থাকতো। জটিল বিজ্ঞান যে মহাবিশ্বের খবর দিতো তার হাতের বইয়ের মাধ্যমে, আর মাথার উপরে আঁধার আকাশে ঝিকিমিকি যে তারাগুলো ফুটে উঠে আরো রহস্যময় জটিলতর জগতের কথা বলতো, এই দুইয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য করতে গিয়ে তার মন ক্লান্ত হয়ে পড়তো। সেই ক্লান্তির মধ্যে স্নিগ্ধ শান্তির মতন ফুটে উঠতো মৌপিয়ার মুখ।
জ্জ্জজজ। চমকে ওঠে শ্রবণ। সেই মৌমাছিটা!!! শ্রবণের মুখের সামনে দিয়ে ঘুরে গেল বিদ্যুতের মতন। কোথা থেকে আসে ও? কোথায় মিলিয়ে যায়? ঝিম ঝিম করে আসে শ্রবণের সব অনুভূতি! ও এলেই এরকম হয়। এখন খানিকটা সময়খন্ড হারিয়ে যাবে তার চেতনা থেকে, সে জানে। আহ, ঘুম, ঘুম, ঘুম। তবু যেন ঘুম নয়, তবু যেন জেগে থাকে তার মনের ভিতরে কোনো অন্য মন, গহীন গোপণে রত্নের মতন যে রেখে দেবে অলৌকিক স্মৃতি।
মৌমাছিটা দূর থেকে পাক খেয়ে ঘুরে আসছে শ্রবণের কপালের দিকে, ঝিকমিক করছে তার মাথা, বুক, পেট, ডানা-সবকিছু।যেন বিন্দু বিন্দু আলো লাগানো। শ্রবণ প্রাণপণে জেগে থাকতে চাইছে, পারছে না।
(চলতে পারে )
মন্তব্য
অবশ্যই পারে। বুঝতে পারিনি কোন দিকে যাচ্ছে...।
ধন্যবাদ নৈষাদ।
দেখা যাক কাহিনি কোন দিকে যায়। অনেকসময় কাহিনি তার নিজের জোরেই ঘটনা তৈরী করতে করতে এগিয়ে যায়, চরিত্রগুলি এমন শক্তি পেয়ে যায় যে তারাই লেখাকে নিয়ন্ত্রিত করতে থাকে। দেখা যাক তেমন হয় কিনা এখানে !
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অনেক ধন্যবাদ তিথীডোর।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
অবশ্যই চলতে পারে। কিছুক্ষণ চিন্তা করলাম, কিন্তু আন্দাজ করতে পারলাম না ঘটনা কোনদিকে গড়াচ্ছে।
ধন্যবাদ বইখাতা।
কাহিনি কোন্ দিকে যাচ্ছে আমিও তার বিন্দুবিসর্গ জানিনা এই মুহূর্তে।
দেখা যাক কী হয়।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
লেখা ভাল হইছে, চলুক...
আপনার 'অণোরণীয়ান থেকে মহতোমহীয়ান ' সিরিজটা কি শেষ?
সাহিত্যের পাশাপাশি বিজ্ঞান নিয়ে (অণোরণীয়ান থেকে মহতোমহীয়ান এর মত) লেখার অনুরোধ রইল।
লেখা ভাল হইছে, চলুক...
আপনার 'অণোরণীয়ান থেকে মহতোমহীয়ান ' সিরিজটা কি শেষ?
সাহিত্যের পাশাপাশি বিজ্ঞান নিয়ে (অণোরণীয়ান থেকে মহতোমহীয়ান এর মত) লেখার অনুরোধ রইল।
ধনবাদ আসাদ।
সেই "অণোরণীয়ান থেকে মহতোমহীয়ান" সিরিজ তো আপাতত শেষ। কিন্তু এ জিনিস তো নিত্যনতুন সব আবিষ্কারের জায়গা, রোজই নতুন নতুন খবর আসে। দেখি ভবিষ্যতে নতুন কথাগুলো নিয়ে আবার সিরিজ লেখা যায় কিনা।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
চলতে পারে কি, অচিরেই আগামী পর্ব চাই।
*************************************************************************
ভবিষ্যতে কি হবে তা ভেবে বর্তমানকে উপেক্ষা করবো কেনো?
____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"
ধন্যবাদ বালক।
মৌমাছির ইচ্ছা হলে সে আসবে অচিরেই, না ইচ্ছা হলে হুল ফুটিয়ে পালাবে।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
চলতে পারে মানে? অবশ্যই চলবে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ নজরুল। যদিও জানিনা কাহিনির সুতা খুলবে কবে।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সহৃদয় পাঠকগণ,
এ কাহিনির ব্যাপারে উৎসাহ দেবার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
মৌমাছি যেন ফিরে আসে...
গল্পটি ডাল-পালা ছড়িয়ে দিক আরো খানিকটা...
পড়তে বেশ ভাল্লাগলো দিদি
-------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো, গৃহী হয়ে কে কবে কি পেয়েছে বলো....
-----------------------------------------------------------------------------------------------------
" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি
সেই মৌমাছি উড়ে গেছে তার ফুলের বনে, ফিরে আসার আশায় বসে আছি।
ভালো থাকবেন মউ।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন