পুরোটা একসাথে দিলাম। নিন, পড়ুন।
সে এক ধনধান্যে ভরা দেশ, দুধমধুর দেশ। দেশের নদীতে নদীতে হ্রদে সরোবরে মিঠাজল, মাঠে মাঠে সোনার ফসল। বিশাল জমকালো রাজপ্রাসাদে লোকলশকর নিয়ে থাকেন রাজারাণী। তাদের একটিমাত্র সন্তান, একটি ছেলে।
সেই রাজপুত্র একদিন এক আশ্চর্য স্বপ্ন দেখে বসলো, ভয়ঙ্কর স্বপ্ন। সে দেখলো সে মাটিতে পড়ে আছে, তার বুক চিরে হাঁ হয়ে আছে, সেখান থেকে তার জ্যান্ত হৃৎপিন্ডটা ছিঁড়ে তুলে নিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক পরমাসুন্দরী তরুণী, হৃৎপিন্ডটা তখনো দপদপ করছে আর তা থেকে টপটপ করে রক্ত ঝরে পড়ছে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে থাকা তার গায়ের উপরে।
বাকী রাত আর ঘুম হলো না রাজপুত্রের। জানালার কাছে এসে বাইরে জ্যোৎস্নাশিহরিত উদ্যানের দিকে চেয়ে সে চুপ করে রইলো। মণিমাণিক্য ছড়ানো এই সুখপ্রাসাদের বুকের ভিতর থেকে অশ্রুত যে আর্তনাদ উপরে তারাদের দেশের দিকে চলে যাচ্ছে সে যেন চুপ করে শুনতে লাগলো সেই কান্না।
খুব ছোটোবেলার কথা রাজপুত্রের মনে নেই ভালো, আবছা মনে পড়ে অনেক দূরের এক অন্যরকম দেখতে দেশে ছিলো তারা। তারপরে বাবা এ দেশ জয় করে এই প্রাসাদে এসে উঠলেন। মাঝে মাঝে তার মনে হয় আগে এ প্রাসাদে যারা থাকতো তারা কোথায় গেল? কেমন ছিলো তারা? তারা কি কেউ আজও বেঁচে আছে? সে বুঝতো এসব জিগ্গেস করা মানা, কেউ কিছু বলবে না।
প্রথাগত নীতিতে শস্ত্র আর শাস্ত্রশিক্ষা করতো রাজপুত্র। কৈশোর পেরিয়ে মাত্র প্রথম যৌবনে পড়েছে সে এখন। আর কিছুদিন পরে তার যৌবরাজ্যে অভিষেক হবে। তারপরে বিবাহ। বাবামা সব ব্যবস্থা করছেন নিয়মনীতি মেনে।
রাজপুত্রকে শাস্ত্রশিক্ষা দিতেন যে বৃদ্ধ পুরোহিত, তাকে পরদিন সকালে সব খুলে বললো রাজপুত্র। পুরোহিত শুনে অবাক হয়ে চেয়ে থাকেন তরুণ রাজপুত্রের মুখের দিকে, এরকমও হয়?
তারপরে তিনি বললেন রহস্যময় সেই কাহিনি, যে কাহিনি কানাকানি করে বেড়ায় দেশের আনাচেকানাচে। আগেকার রাজারাণীর সাতটি ফুলের মতন সাতটি শিশুকন্যা ছিলো। শত্রুর আক্রমণে যখন দেশ লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে তখন এক ডাকিনী যাদুবলে মেয়ে সাতটিকে সাতটি ময়ূরী করে দেয়। তারা গহন বনে উড়ে চলে যায়। তাদের বাবা যুদ্ধে মারা যায়, মা স্বামীর সঙ্গে মরণ বরণ করে স্বেচ্ছায়। সাতটি রাজকন্যা আজো ময়ূরী হয়ে আছে বনে, তাদের শাপমুক্তি বড় কঠিন। যদি সাতময়ূরীর মধ্যে একজন এক ঠোক্করে বুক চিরে ছিঁড়ে তুলে আনতে পারে নতুন রাজপুত্তুরের হৃৎপিন্ড তবে তারা শাপমুক্ত হয়ে আবার মানুষ হতে পারবে। তবে এসব বিশ্বাস না করাই ভালো, গল্পকথার কি আর কোনো মাথামুন্ডু থাকে?
সব শুনে তরুণ রাজপুত্রের হৃদয় কেমন যে করতে থাকে তা বলে বোঝানো যাবে না। সে কিছুই কিন্তু তখন বলে না বুড়ো পুরোহিতকে। শুধু চুপ করে মাটির দিকে চেয়ে বসে থাকে।
তারপরে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, "ঠিকই তো, গল্পকথার কি কোনো মাথামুন্ডু থাকে? আর স্বপ্ন ও তো আসলে ছায়ার মতন, মায়া-মরীচিকার মতন, সত্যি করে তো কিছুই থাকে না তাতে। আসুন, শুরু করি আজকের পাঠ। "
সারাদিনমান নানা কাজে ব্যস্ত রাজপুত্র, সকালে শাস্ত্রশিক্ষার পরে মল্লযুদ্ধের আখড়ায় দুপুর পর্যন্ত। তারপরে মধ্যাহ্নভোজের বিরতি। তারপরে বিকালে আবার তীরন্দাজি।
সামনেই যৌবরাজ্যে অভিষেক, সেই আয়োজন চলছে পুরাদমে। রাজা নিজে তদারকি করছেন সেসবের। তীরন্দাজির খেলা থেকে ফিরে রাজপুত্র দেখলো তার জন্য পোশাকের মাপ নিতে এসেছে পোশাকনির্মাতারা, একধারে আবার মণিমুক্তা নিয়ে বসে আছে মণিকারেরা, অলঙ্কার তৈরীর আগে রত্ন পছন্দ করে দিতে হবে। রাণীমা নিজে তলব করে এনেছেন তাদের।
এতসব করে টরে বড়ই ক্লান্ত হয়ে সন্ধ্যাস্নান করে রাতের আহার করেই শয্যায় এসে ঘুমে এলিয়ে পড়লো সে। মনে মনে সে বুঝি বলছিলো --- আহা এসো, আমার মায়াময়ী এসো, "দোলাও দোলাও দোলাও আমার হৃদয়, তোমার আপন হাতের দোলে।"
শেষরাতে আবার সেই স্বপ্ন, সেই ভয়ঙ্কর রক্তাক্ত স্বপ্নের মধ্যেও রাজপুত্র দেখতে চেষ্টা করে মেয়েটার মুখ, সে মুখে কি উল্লাস না বিষাদ? কেমন ও চোখ, চোখের তারা? সে চোখে কি জল না হাসি? কে তুমি রাজকন্যা বনের ভিতর ময়ূরী হয়ে আছো তোমার বোনেদের সঙ্গে? এ জীবন্ত হৃৎপিন্ড উৎপাটিত করে না দিলে হবে না তোমাদের শাপমুক্তি? এ তুচ্ছ জীবনের বিনিময়ে যদি তোমরা সাতজনে বাঁচো, তাহলে---- কিন্তু কোথায় তোমরা, কেমন করে খোঁজ পাবো তোমাদের?
কিছু দেখা যায় না, সবকিছু নীল কুয়াশায় ঢাকা, ছায়া এসে ঢেকে দেয় রাজপুত্রের দৃষ্টি। স্বপ্ন ভেঙে যায়, বিছানা ছেড়ে উঠে রাজপুত্র বাগানে নেমে পড়ে। আকাশে অপার্থিব হাসি নিয়ে ভেসে আছে কৃষ্ণা প্রতিপদের চাঁদ।
পরদিন সকালে রাজপুত্র বললো সে অভিষেকের আগে সঙ্গীসাথী নিয়ে মৃগয়ায় যেতে যায়। অভিষেক হয়ে গেলে রাজ্যশাসনের নানা কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলে তখন আর এভাবে তো বন্ধুবান্ধব নিয়ে আনন্দ করার সুযোগ পাওয়া যাবে না।
রাজা অনুমতি দিলেন, বন্ধুবান্ধবেরা উত্তেজিত, চারিদিকে মৃগয়ার সাজোসাজো আয়োজন শুরু হয়ে গেল। আজ রাতেই জঙ্গলমহল কেল্লায় যাওয়া হবে, সেখানে রাত্রিবাস। পরদিন সকালে সেখান থেকে মৃগয়া শুরু হবে।
শিকারের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নিজের নিজের প্রিয় ঘোড়ায় উঠে রাজপুত্তুর আর তার সঙ্গীসাথীরা রওনা দিলো, অন্যান্য মালপত্র নিয়ে লোকলশকর ততক্ষণে রওনা হয়ে গেছে কেল্লার দিকে।
সেই রাতে সঙ্গীসাথীরা সবাই মিলে একসাথে রাত কাটাচ্ছে কেল্লায়। কথা কি আর শেষ হয়? খানাপিনা কথাবার্তা হচ্ছে আর রাজপুত্তুর উসখুশ করছে আর ভাবছে আর বুঝি ঘুমানোই হলো না। না ঘুমালে মায়াময়ী তোমায় কোথায় পাবো? "ওরা কেবল কথার পাকে নিত্য আমায় বেঁধে রাখে / বাঁশির ডাকে সকল বাধা খোলাও খোলাও খোলাও ---"
পরদিন সকালেই মৃগয়া শুরু। শিকারীবেশে রাজপুত্র তার প্রিয় ঘোড়ার পিঠে, শিকারের পিছনে তাড়া করতে করতে ঘোড়া তাকে নিয়ে গভীর অরণ্যের দিকে চললো। কিছুক্ষণের মধ্যেই দলছাড়া হয়ে গেল তারা।
এখন শুধু অশ্বারোহী রাজপুত্র আর তাকে ঘিরে আদিম অরণ্যানী ফিসফিস করে কীযেন কইছে। আহা সুখপ্রাসাদের রাজপুত্র, কেন তুই ও ভাষা বুঝিস না? ঘোড়া লাফিয়ে লাফিয়ে ছুটছে, তার পায়ের নিচে হারিয়ে যাচ্ছে দূরত্বের বাধা। রাজপুত্র মনে মনে বলে, স্বপ্নের মৃত্যুদেবতা আমার, কোথায় নিয়ে যাচ্ছ আমাকে?
সূর্য যখন প্রায় মধ্যাকাশে তখন ক্লান্ত ঘোড়া রাজপুত্রকে নিয়ে এলো এক পাহাড়ের পায়ের কাছে মস্ত এক সরোবরের তীরে। ঘোড়া থেকে নেমে পড়লো রাজপুত্র, অঞ্জলি পুরে সরোবরের জল পান করে তৃষ্ণা দূর করলো।তার ঘোড়া ততক্ষণে কোমল ঘাসে মুখ নামিয়েছে।
সরোবরতীরে শাখাপ্রশাখা বিস্তার করে ঝুরির পর ঝুরি নামিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক সুপ্রাচীন বটবৃক্ষ। তারই উচ্চ সাতটি শাখায় বাস করে সাতটি ময়ূরী। প্রতিদিন ঠিক যখন সূর্য মাথার উপরে আসে তখন ময়ূরীরা কিছুক্ষণের জন্য মানুষমন ফিরে পায়। তারা সকলে যে যেখানে ছিলো সেখান থেকে উড়ে এসে বটের নিচের ডালে বসে, তাদের আর্ত মন সন্ধান করে সেই মানুষটির যার মৃত্যু তাদের শাপমুক্তি ঘটাবে। প্রতিদিন তারা ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায় কিন্তু তারা জানে একদিন সে আসবেই।
আজ সেই দিন এসেছে। জলপানে স্নিগ্ধ হয়ে বটের ছায়ায় এলিয়ে শুয়েছে রাজপুত্র, কোমরবন্ধ তরবারি ছুরি তীরধনুক সব খুলে রেখেছে বেশ দূরে। ঘুমের ভান করে রাজপুত্র দেখছে সাতময়ূরী নিচের ডালে এসে বসেছে। ঘুমের ঘোরের ভান করে সে বুকের উত্তরীয় সরিয়ে দেয়, তাহলে ঠোক্কর দিতে সুবিধা হবে ওদের। মনে মনে সে অস্থির হয়ে বলে, আরে তাড়াতাড়ি নামো না, দেখছো কী?
প্রথমে বড় বোন নামলো, কিন্তু ঠোক্কর দিতে পারলো না, চোখের জলে ভেসে গেল। ঘুমন্ত নিষ্পাপ তরুণের জীবনদীপ নিভিয়ে দিতে সে পারবে না। ফিরে গিয়ে সে পালকে ঠোঁট গুঁজে বসে রইলো।
একে একে দ্বিতীয়া ও তৃতীয়া নামলো, দুজনেরই এক অবস্থা। পারবে না ওর বুকে তীক্ষ্ণ চঞ্চু বসিয়ে হৃৎপিন্ড ছিঁড়ে আনতে, ও যে নিরপরাধ! এভাবে ওকে মারতে তারা পারবে না। তবে শাপমুক্তি? সে কি হবে না?
এবারে চতুর্থীর পালা। তার দিকে আশা নিয়ে চেয়ে আছে বাকীরা। সে আগে থেকেই কান্নায় একেবারে ঢেকে আছে, ডাল ছেড়ে এক পা নামবে না। কিছুক্ষণ তাকে সাধ্যসাধনা করে একে একে গেল পঞ্চম ষষ্ঠ সপ্তম ময়ূরী। কেউই পারলো না কাজ সমাধা করতে।
এবারে বারে বারে চোখ মুছে মন শক্ত করে চতুর্থী নামছে, এই শেষ আশা। ও না পারলে চিরকালের মতন শাপমুক্তির আশা শেষ। সকলের জন্য তাকেই নিষ্পাপের রক্তে কলুষিত করতে হবে নিজেকে।
নামতে নামতে সে নিজেকে বলে, তাই হোক। তাই হোক। হতভাগিনী, পারতেই হবে তোকে। অন্য উপায় নেই। দিদিরা বোনেরা অভিশাপ দিয়ে বলবে ওহ পাষাণী ওহ ডাইনী, কী করে পারলি তুই? তার আগে তুই মরলিনে কেন? চিন্তা নেই, মরা তো হাতেই রইলো। নিষ্পাপের জীবন শেষ করে এই কলুষিত জীবনের কী আর প্রয়োজন থাকবে? থাক, সকলে ভালো থাক।
ঠোক্কর দেবার আগে সে ভালো করে দেখে নেয়, স্বপ্নে কতবার এই তরুণ রাজকুমারকে সে দেখেছে, কোনোবার ভালো করে দেখতে পায় নি। এখনো দেখতে পায় না ভালো, চোখের জলে চোখ ঢাকা।
একটু দূরে রাজপুত্রের খুলে রাখা অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে ধারালো ছুরিখানা রোদ পড়ে চকচক করছে। সেদিকে চেয়ে মনে মনে একটু হাসে মানুষমন পাওয়া ময়ূরী, মৃত্যুলোকের ওপারে দেখবো তোমায় রাজপুত্র, প্রাণ ভরে দেখবো, সেখানে অভিশাপ নেই প্রতিশোধ নেই বিরহ নেই প্রিয়বিচ্ছেদ নেই।
এক ঠোক্করে রাজপুত্রের বুক চিরে ফেললো সে, তীক্ষ্ণ চঞ্চু বসিয়ে হৃৎপিন্ড ছিঁড়ে আনলো। সঙ্গে সঙ্গে ঘটলো শাপমুক্তি সকলের, ময়ূরী চেহারা ছেড়ে তারা সাত রাজকন্যা হয়ে গেলো।
রক্তে ভেসে যাচ্ছে মাটি, মৃত্যুছায়ায় চোখ ঢেকে যাবার আগে রাজপুত্র দেখলো অরণ্যজ্যোৎস্নার মতন অলৌকিক সুন্দরী রাজকন্যা, চোখের তারা মধ্যরাত্রির আকাশের মত নীল, চুল যেন তার রাতের মহাসমুদ্র, সেই পরমার হাতে দুলছে তার জীবন্ত হৃদয়। প্রায়শ্চিত্ত তবে হলো কি? আহা তুমি কেন কাঁদো রাজকুমারী, পিতার করা ঋণ তো পুত্রকেই পরিশোধ করতে হয়।
সাত রাজকুমারী অঝোরে কাঁদছে, রক্তে মুখ হাত ঢাকা মেয়েটি ছুটে গিয়ে রাজপুত্রের ছুরি তুলে নিয়ে নিজের বুকে আমূল বসিয়ে দিয়ে ঘ্যাঁচ করে টেনে দিলো খানিকটা। ওর হৃৎপিন্ডও ছিঁড়ে পড়লো বাইরে। নাও, এবারে শোধবোধ। খুনি হয়ে আমারও আর বেঁচে থাকতে হলো না আর বাকীদেরও শাপমুক্তি ঘটলো। এখন রাজকুমার আর রাজকুমারীর দেহ পাশাপাশি পড়ে আছে, আর ঘাসের উপরে পাশাপাশি পড়ে আছে দু'খানা দেহবিছিন্ন হৃৎপিন্ড, তখনও দপদপ করছে।
জীবনদেবতা সব দেখছিলেন, তিনি এই আশ্চর্য ছেলেময়ে দুটিকে দেখে একেবারে অবাক! তার সব হিসাবনিকাশ ওলোটপালোট করে দিলো এরা! মানবজাতির তবে তো এখনো আশা আছে!
তিনি এসে এদের পুনর্জীবন দিলেন, তবে বাঁচাবার সময় একটা ওলোটপালোট হয়ে গেল। রাজকুমারীর হৃৎপিন্ড রাজপুত্রের বুকে আর রাজপুত্রেরটা রাজকুমারীর বুকে বসিয়ে দিলেন জীবনদেবতা।
তারপরে আর কী? শুভদিনে শুভক্ষণে এই আক্ষরিক অর্থেই হৃদয়বদল হওয়া রাজপুত্তুর রাজকন্যায় বিয়ে হয়ে গেল, বাকী ছয় রাজকুমারীরও পাশের পাশের রাজ্যের ভালো ভালো রাজকুমারের সঙ্গে বিয়ে হয়ে গেল।
সকলে সুখেশান্তিতে বসবাস করতে লাগলো।
(শেষ)
মন্তব্য
পুরোটা একবারে পড়তে বেশি ভাল লাগল।
শুনে ভালো লাগলো আমারও।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এতো সুন্দর গল্প অথচ কোন তারা বা ভোট নেই। আমি যদি সচল হইতাম, তাহলে চটজলদি পাঁচ তারা দিয়ে দিতাম।
ধন্যবাদ।
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
ধন্যবাদ স্বাধীন। তারার ব্যাপারে আমি একেবারেই চিন্তিত নই।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এইবার হলো
রূপকথা অর্ধেক করে দেয়া একেবারে বেআইনি একটা কাজ
০২
হৃদয় বদলের আক্ষরিক কনসেপ্টটা দারুণ
আসলে একসাথে বেশ খানিকটা সময় বার করাই মুশকিল হয়ে যাচ্ছিলো।
ভালো থাকবেন।
আপনার লেখাপত্র কম পাই কেন আজকাল?
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বেশ লাগল।
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পড়তে পড়তে মন খারাপ হয়ে যাচ্ছিলো।
শেষে এসে মন ভালো করে দিলেন।
'সেই ভয়ঙ্কর রক্তাক্ত স্বপ্নের মধ্যেও রাজপুত্র দেখতে চেষ্টা করে মেয়েটার মুখ, সে মুখে কি উল্লাস না বিষাদ? কেমন ও চোখ, চোখের তারা? সে চোখে কি জল না হাসি?'
'খানাপিনা কথাবার্তা হচ্ছে আর রাজপুত্তুর উসখুশ করছে আর ভাবছে আর বুঝি ঘুমানোই হলো না। না ঘুমালে মায়াময়ী তোমায় কোথায় পাবো?'
'সেদিকে চেয়ে মনে মনে একটু হাসে মানুষমন পাওয়া ময়ূরী, মৃত্যুলোকের ওপারে দেখবো তোমায় রাজপুত্র, প্রাণ ভরে দেখবো, সেখানে অভিশাপ নেই প্রতিশোধ নেই বিরহ নেই প্রিয়বিচ্ছেদ নেই।'
- এই জায়গাগুলো দাগ কাটলো ভীষণ!
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
এমন মন লাগিয়ে পড়েছেন বলে খুবই ধন্যবাদ।
মালয়েশিয়ার রাজপুত্তুর কেন রবীন্দ্রসঙ্গীত গায় সেই খটকা লাগলো না?
আসলে এটা খুব ছোটোবেলায় শোনা একটা উপকথার ছায়ায় লেখা, বেশীটাই ফেনানো বাড়ানো রঙ ঢেলে দেওয়া, তবে গল্পের ভিতরের ঐ ঠোক্কর মারা কাহিনির সুতোখানা সত্যি, ওটা তুলনাহীন, ওটা আমি হেন বাচালও চট করে বানিয়ে ফেলতে পারতাম না।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
মোটেই না।
রাজপুত্তুর যখন আপনার হাতে পড়েছে, তখন সে আরো অনেক কিছুই পারে, এটুকু জানি।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
রাজপুত্তুর যার হাতে পড়েছে তা সে নিজে জানে। হাড়ে হাড়ে বুঝছে।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
তুলিদি,
ডারউইন ডাকছে আমাকে। তোমার লেখার কঠিন ভক্ত আমি। আর তুমি এইবার এনেছ আমার প্রিয় জিনিশ। দিদি, আবদার করে বসলাম, যতটা তোমার জানা আছে, সব উপকথা আর রূপকথা গুলোকে একসাথে করে ফেলো না। খুব ভালো লাগবে তাহলে।
ডারউইন ডাকছে বলে একবার পড়লাম। ডারউইনের সাথে কথা বলা শেষ হলে তোমার আলোচনা, সমালোচনায় বসব। আসছি আমি দিদি। .
--------------------------------------------------------
যখন প্রাণের সব ঢেউ
জেগে ওঠে, কথা বলে, রক্তের আশ্চর্য কলরবে
বৃষ্টির দুপুরে মনে পড়ে
বর্ষার মতন গাঢ় চোখ মেলে তুমি আছ দু'দিনের ঘরে।।
[শামসুর রাহমান]
-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়
কোন ডারউইন? চার্লস না তো? তাইলে খুব সাবধান, পাখি থেকে ফট করে মানুষ হয়ে যাবার গল্প বলে বসবেন না তাকে। সে যে বিবর্তনবাদী!!!!
বিবর্তন খুব আস্তে আস্তে কোটি কোটি প্রজন্ম ধরে চলে তো! সর্বজীব সেখানে সংখ্যামাত্র, আসে যায়, থেকে যায় শুধু ইনফো।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
যাক, বাঁচালেন!
রাজকুমার আর রাজকুমারীর দ্বিতীয় জীবন নিশ্চিত করে।
আর শেষ পর্যন্ত গল্প শেষ করে!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
বাঁচিয়ে গেছে পুরাতন যুগের গল্পবুড়ী। সে মেরে দিয়ে গল্প শেষ করে ঝুলিয়ে রাখে নি। ট্র্যাজেডি কখনো সম্পূর্ণতা দিতে পারে না।
গ্রেকো-রোমান ফিলোসোফি এই জায়গায় খুব সীমাবদ্ধ, পুরানো পুবের ফিলোসোফি খুঁড়ে তুলে আনতে হবে সময়ের মাটি ফুঁড়ে, সেখানে গল্পগুলো ঝোলানো নেই, কুরুক্ষেত্রে শেষ হয় না মহাভারত, মহাপ্রস্থানে শেষ হয়।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
গ্রেকো-রোমান ফিলোসোফি এই জায়গায় খুব সীমাবদ্ধ, পুরানো পুবের ফিলোসোফি খুঁড়ে তুলে আনতে হবে সময়ের মাটি ফুঁড়ে, সেখানে গল্পগুলো ঝোলানো নেই, কুরুক্ষেত্রে শেষ হয় না মহাভারত, মহাপ্রস্থানে শেষ হয়।
দরকার পড়লে আলাদা পোস্ট দিয়ে হলেও আপনার এই অনুভবটা ব্যাখ্যা করুন। দাবিটা আপনার কাছে করছি এই জন্য যে, লেখালেখি ব্যাপারটাতে আপনার পদচারণা অনায়াস - আমার মত দুই লাইন লিখতে একটা কী-বোর্ড ভাঙে দশা নয়।
আপনার মন্তব্যটার সাথে আমার দ্বিমত আছে, তবে সেটা বড় কথা নয়। বড় ব্যাপার হচ্ছে পূর্ব-পশ্চিমের আদি দর্শনের ক্ষেত্রে অথবা লোকসাহিত্যে জীবনবোধের ক্ষেত্রে মিল ও অমিলগুলো নিয়ে আলোচনা করা। তাতে আখেরে আমাদের উপকারই হবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ওরে বাবা! এদিক সেদিক হাতমকশো করে বেড়াই, মহাভারত ছান্দোগ্য বৃহদারণ্যক কঠোপনিষদ ব্যাখা করবো আবার তার সঙ্গে গ্রীকরোমক দর্শনের তুলনা করে দেখাবো তাদের জমির সীমানা ছাড়িয়ে গোটা পৃথিবী ছাড়িয়ে মহাকাশে ও মহাকালে চলে গেছে প্রাচ্য দর্শনের সূক্ষ্মতা, সে সামর্থ্য নাই। আসলে সে কাজে মারাত্মক প্রতিভার প্রয়োজন, একজনও না, বেশ অনেকজন। আর ইতিহাসদেবতার আশীর্বাদ ও প্রয়োজন (এখন বললেও কান দেবে না কেউ ) ।
দিন যাক, কালের চাকা ঘুরুক, স্রোত দিক পরিবর্তন করুক। আমাদের টেকনোলজি ইকোনোমি কালচার এসব পাল্টাক, তারপরে তো! তখন দ্বিতীয় রেনেসাঁ হয়তো আবার হবে। কে বলতে পারে?
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
অসংখ্য ধন্যবাদ
_____________________
বর্ণ অনুচ্ছেদ
আজ্ঞে, ধন্যবাদ কেন?
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ভালু গল্প। ভালু লেখার হাত। আর কি চাই?
চুপি চুপি জিজ্ঞেস করি, আপনার সঙ্গে চা-না-খাওয়া একটা লোকের একটুখানি বদল হলে কেমন হয়?
ধন্যবাদ ভাই। আপনের কথা ভালু পাইলাম।
চা না খাইলে খামু কী?
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ভাবছিলাম গল্পটা নিয়ে একটা গুরুগম্ভীর মন্তব্য লিখবো- কিন্তু
খুবই চিন্তাউদ্রেককারি কথা।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
চিন্তা উদ্রেককারী তো বটেই।
ভেবে দেখুন মেঘদূতের উত্তরমেঘ, বিরহের মরুভূমি পার হয়ে শরৎপূর্ণিমায় অনন্ত মিলনের গল্পে এসে শেষ হয়, সম্পূর্ণতা পায়।
ভেবে দেখুন "অভিজ্ঞানশকুন্তলম" কিন্তু শকুন্তলাকে প্রত্যাখ্যানে শেষ হয় না, তার বহুদিন বাদে নি:সঙ্গ রাজার শকুন্তলাকে ফিরে পাওয়া দিয়ে শেষ হয়।
ভেবে দেখুন রক্তকরবী বা মুক্তধারা- দু'জায়গাতেই মৃত্যু আছে কিন্তু মরণই সেখানে শেষ কথা নয়, মৃত্যু পার হয়ে তারা সকলের মধ্যে সঞ্জীবিত হয়ে মুক্তির পথ দেখায়।
মৃত্যুর ভিতর দিয়ে অমৃতের দিকে যাত্রার গল্প না শোনাতে পারলে সে গল্প শোনানোই বা কেন--এরকমই একটা দর্শন নিশ্চয় ছিলো পুবের দিকে।
শুধু পুবেই বা কেন, মিশরের ওসাইরিসের গল্পেও তো মৃত্যু তে শেষ না, আলোর যুগে তার ফিরে আসার প্রতিশ্রুতিতে শেষ।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন