দিন চলে গেলো গুণ গুণ করে, চ্যাপ্টারের পর চ্যাপ্টার চলে যেতে যেতে একসময় দেবুস্যর কেন জানি নিরুৎসাহ করতে শুরু করলেন৷ এদেশে নাকি গবেষণা খুব বড়োলোক আর খুব ইনফ্লুয়েনশিয়াল পরিবারের না হলে করা যায় না, তাই একটু ভালো ছাত্রেরা হায়ার সেকেন্ডারিতে প্রাণপণে তৈরী হয় জয়েন্ট পরীক্ষা দেবার জন্য, যাতে ইঞ্জিনিয়ারিং বা মেডিকেলে একটা চান্স কোনোরকমে পেয়ে যায়৷ না পেলে তখন জেনারেল লাইনে গিয়ে ভর্তির চেষ্টা করে আর কলেজে একটা সীট দখল করে সেফসাইডে থেকে পরেরবার জয়েন্ট দেবার জন্য তৈরী হয়৷
তাক লেগে গেলো, তাহলে স্যর এই যে এত ত্রিভুবনে ত্রিকালে না হওয়া ওয়েভ মেকানিক্সের কথা কইলেন? হাইজেনবার্গ শ্রোডিংগার .... উনি হাসেন, বলেন, "তারা অন্য দেশের লোক, তাদের স্মার্টনেসের সঙ্গে আমাদের তুলনা?”
আমাদের মধ্য থেকে কেউ দুর্বল স্যাঁতানো গলায় বলে, "আমাদের মেঘনাদ সাহা সত্যেন বোসও তো ....”
উনি রেগে যান, বলেন, "এই সত্যেন বোস মেঘনাদ সাহা ধরনের তুখোর ব্যক্তিরা হাতের মোয়া না, এনারা হাজার বছরে একবার জন্মান৷ এদের দেখে এইম ঠিক করলে ভুল করবি৷”
দিন যায় মাস যায় বছর ঘুরে যায়, সময়ের স্রোতে ভেসে যেতে থাকি সবাই৷ একদিন কাছে এসে যায় মাধ্যমিক পরীক্ষা৷
তখন দ্রুততর দিনের গতি, সামনে প্রি-টেস্ট, প্রি-টেস্টের রেজাল্ট পাওয়ার সময় কান ঘেঁষে গুলি চলে গেল অন্বেষার। আমার কাছে অনেক পরে, ভিন্ন দেশেকালে বসে সে গল্প করেছিলো আমাদের ফার্স্ট গার্ল অন্বেষা। প্রিটেস্টের খাতাগুলো ফেরৎ দেওয়া হতো, টেস্টের সময় আর তা হবে না। তা একটা পর্যায়ে এমন অবস্থা হোলো যে ওর পাওয়া নম্বরগুলো যোগ করে যা হচ্ছে তা সেকেন্ড গার্ল মিঠুর চেয়ে এক না দুই কম। তখন আর মাত্র একটা খাতা বেরোনো বাকী আছে। অন্বেষা দেখছে সে নিশ্চিত খাদে পড়ে যাচ্ছে, ক্লাস ফাইভ থেকে টেন পর্যন্ত হাফ-ইয়ার্লি অ্যানুয়াল কোনো পরীক্ষায় সে সেকেন্ড হয় নি, প্রায় সব সাবজেক্টে সে পেতো হায়েস্ট মার্ক, ওকে বাদ দিয়ে সেকেন্ড থেকে হিসেব করতো দিদিমণিরাও। কিন্তু এখন?
অন্বেষাও পড়তো দেবুস্যরের কাছে। নিরাপদ সময়ের দূরত্বে বসে অন্বেষা আমায় বলছিলো সেদিনের কথা, " আমার গুরু ক্লিওপ্যাট্রার পথ প্রায় ধরি ধরি মনে করি ধরিতে পারি না অবস্থায় আছি, এমন সময় সেই দেবুস্যর! পাঁচ সেলের এক টর্চ নিয়ে বাঁশবাগান পার হয়ে আমাদের বাড়ীতে। ভাই বাইরে বারান্দায় ছিলো, তাকে জিগায়, "ওরে তোর দিদি টেঁপি কোথায়? আছে তো? " তা ছিলাম বটে, রয়েই গেলাম। আরো অনেক দেখতে হবে কিনা! আর তো গুলি কান ঘেঁষে যাবে না, সোজাসুজি কলিজা ফুটো করে দেবে আর তা এই স্যাডিস্টগুলো দেখবে বলেই কিনা ক্লিওপ্যাট্রা আড়ালে দাঁড়িয়ে আমায় যা মুখে আসে গালাগাল দিয়ে যাবার কালে বলে গেল, "ছি ছি অকৃতজ্ঞ, দুনিয়ার ঋণশোধ না করে দুনিয়া থেকে পালাতে চাস, লজ্জা নেই!"
আমি তো অবাক, "সে কী রে, তোর গুরু ক্লিওপ্যাট্রা নাকি রে অন্বেষা ????
অন্বেষা হাসে, বলে, " সে না হলে আর কে গুরু হবে? গোটা ইতিহাসে তো এই একজন নেত্রী মহিলাই সময়মতো ছিটকে পালাতে পারলেন।"
আগের কথার সুতো টেনে বলি, " তারপরে কী হলো সেদিন? "
সে বলে," পরদিন শেষ খাতাটা বেরোবে, তো পরদিনের জন্য অপেক্ষা করাই স্থির করলাম। তিন না পাঁচ নম্বরের জন্য কান ঘেঁষে গুলি বেরিয়ে গেল। সেভড। সেবারের জন্য অন্তত। ছি ছি, কীরকম ভাবে আমাদের মন তৈরী হয়েছিলো! অর্থহীন যুক্তিহীন স্বার্থপর প্রতিযোগিতা, মিথ্যা অহংকার। "
আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলি, "সেদিন কিন্তু ব্যাপারগুলো খুব খুব স্ট্রং ছিলো রে অন্বেষা, ভেবে দ্যাখ তখন আমাদের পনেরো-ষোলো বছর বয়স, জীবনের কতটুকুই বা জানি। যতটুকু জানি সেখানে এই প্রবল প্রত্যাশার ভার। থ্যাঙ্ক গড, যে তুই সেদিন অপেক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলি। "
প্রীটেস্টের পরে মাত্র পুজোর ছুটিটুকু ফুরিয়েই টেস্ট, তার তিনমাস পরে মাধ্যমিক৷ বনশ্রীদি আমাদের যত্নে ম্যাপ পয়েন্টিং শেখান, সমুদ্রস্রোত যেন দ্রুত এবংমোটামুটি ভালোভাবে আঁকতে পারে ছাত্রীরা সেটা নিয়ে যত্ন করে টিপস দেন৷ ইনিও বলতেন "ভুগোলে তোমাদের অনেকের বাইরে প্রাইভেটে পড়ার সুযোগ নেই, এখানেই যতটা যা পারো শিখে নাও৷"
অন্বেষা বলে, "বুঝলি তুলি, সেই পূজাতে মাইকে এত এত গান বাজে আর আমার কানে আসে খালি, "সব লাল পাথরই তো চুনি হতে পারে না " এই লাইনখান। আসলে একবার পালাবার পালার জন্য তৈরী হয়ে গেলে ফট করে তার প্রভাব থেকে বেরোনো শক্ত। "
"আহা রয়ে গেলি বলেই তো পরে আমাদের ইস্কুলে অত বড় একটা গৌরবমুহূর্ত এলো। স্মরণকালের মধ্যে ওরকম তো আর হয় নি। "
অন্বেষা চুপ করে জানালা দিয়ে দূরে চেয়ে থাকে, ফেলে আসা কিশোরীবেলার লবণচিনি স্মৃতি তাকে আচ্ছন্ন করে রাখে বুঝি।
" সেভেনের পিকনিকের কথা মনে আছে তোর? সেই যে নন্দিনীদি নিয়ে গেল আমাদের দূরের মাঠে পিকনিকে।"
আস্তে আস্তে বলে অন্বেষা, "মনে থাকবে না? বাপরে সেকি ঝাল হয়েছিলো মাংস। চাটনি দিয়ে মেখে ঝাল কমিয়ে খেতে হলো। "
দু'জনে হেসে উঠি।
ক্লাস সেভেনে তখন আমরা, ঠিক হলো ক্লাসের সবাই মিলে পিকনিক করবো। ক্লাস টিচার নন্দিনীদি, উনি গণিতের শিক্ষিকা। চাঁদা টাদা ঠিকমতন তোলাও হয়ে গেল। পিকনিক-সাইটও দেখে এলেন দিদিমণি। উনি তো তিনজন পাচকের ব্যবস্থা করে নিজে টিফিনকৌটায় কৌটায় সবার জন্য পায়েস বানিয়ে নিয়ে গেলেন, রান্না হতে দেরি হবে, সেই সময়ে মেয়েগুলোর খিদে পেতে পারে, তখন উনি নলেন গুড়ের পায়েস সবাইকে দেবেন এই প্ল্যান।
গিয়ে তো দেখা গেল খুব রোদ, সামিয়ানা টানানোর ব্যবস্থা করতে হবে।বড় বড় মোটা কাপড় ছিলো সাথে। বাঁধার জন্য একদিকে কিছু সাপোর্ট পাওয়া গেল, কিন্তু অন্যদিকে কিছু নেই। অপটিমাম একটি গর্ত করে বাঁশ পুঁততে হবেই সামিয়ানার জন্য। এদিকে শাবল থাকলেও মেয়েরা কেউ তেমন গর্ত খুঁড়তে পারে না! শেষে নন্দিনীদি নিজেই গর্ত খুঁড়তে খুঁড়তে বললেন, "এমন জানলে আমি আগমনীকে সঙ্গে করে আনতাম। " আগমনীদি আমাদের ফিজিক্যাল ট্রেনিং এর দিদিমণি ছিলেন, খুবই স্ট্রং।
হয়ে গেলে সবাই সুস্থির হয়ে শতরঞ্জিতে সামিয়ানার ছায়ায় বসে শান্তিতে গানের লড়াই খেলা শুরু করলো, রান্নার বহু দেরি। প্রথমদিকে দিদিমণিও যোগ দিয়ে বেশ গান টান গাইলেন, তারপরে উনি অন্যদিকে ব্যস্ত হয়ে পড়লে জোশের গান গুলো শুরু হলো খুব আস্তে গলায়, যেন ওনার কানে না যায় কোনোমতে।এখন ভেবে দেখলে হাসি পায়, তেমন কিছু না, কিছু হিন্দি-সিনেমার প্রেমের গান মাত্র, সে সময় সে অঞ্চলে এগুলো নিয়েও খুব ছুৎমার্গ ছিলো।
এইভাবে বেশ কয়েক ঘন্টা কাটার পরে সবার তো খিদেয় কাহিল অবস্থা। তখন দিদিমণি বার করলেন পায়েসের কৌটোগুলো। এদিকে শালপাতার প্লেটের নাম্বার লিমিটেড, সেগুলো পিকনিকের মূল খাবারের জন্য রাখা আছে। এখন উপায়?
ব্যবহারিক গণিতজ্ঞদের নিয়ে একটা সুবিধা, এরা চট করে সমাধান করতে পারে নানা সমস্যার। সবাই ভালো করে হাত ধুয়ে এলো, দু'হাত জড়ো করে অঞ্জলি করলো, তাতে উনি পায়েস দিয়ে গেলেন, সবাই মহানন্দে খেয়ে ফেললো। যাদের কুলাবে না তাদের জন্য বিস্কুটের ব্যবস্থাও উনি রেখেছিলেন তবে সে আর লাগে নি দরকারে।
(চলবে কিনা কেজানে )
মন্তব্য
মনে বিচ্ছেদের সুর... ইশকুলবেলায় বিচ্ছেদ খুব কষ্টদায়ক! বিচ্ছেদের সামনে দাঁড়ালেই বড়বেলাটা চোখের সামনে গ্রীক ট্র্যাজেডর নাটকের মতো সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ে!
--- থাবা বাবা!
!
না না বিচ্ছেদ কেন? " তোমা সনে মোর মিলন সদাই, সেথা বিচ্ছেদ নাই "
স্মৃতির সরণী চিরদিন ভরে থাকে, যারা নাই তারাও সেখানে আছে, সেখানে হারানোর বেদনা নাই।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পড়ছি ও ভালো লাগছে, চলুক ইস্কুলবেলা...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ তাসনীম।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ইস্কুলবেলার গল্প চলুক...
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ তিথীডোর।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নাহ, আগেরবার খুশী হয়েছিলাম 'চলবে'র আগে 'হয়তো'টা বাদ পড়তে দেখে - এখন দেখি আবার 'কিনা কে জানে' এসে জুটেছে। আপনি কি ওই ব্র্যাকেটবদ্ধ কথাটা কত ভাবে বলা যায় তার এক্সপেরিমেন্ট করছেন নাকি?
লেখাটা যথারীতি দারুণ।
আহা একটু আধটু এক্সপেরিমেন্ট না করলে চলে?
মানবজাতির যাবতীয় উন্নতিই তো এই পথে হয়েছে।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আচ্ছা আপনি এখন কোথায় বলুন তো, ইস্কুলের এসব গোপন গল্প ফাঁস করে দিচ্ছেন, পুরোনো স্যার-দিদিমণি-ইস্টুডেন্টদের নাগালের থেকে অনেকটা দূরে তো?
অ-নে-এ-এ ক দূরে। নামটামও সব বদলানো আছে।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আমি কৌস্তভদার কোশ্চেনটাই করতে গেছিলাম, জবাব শুনে জানে পানি আসলো আরকি।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
তবে? আহা, এসব আটঘাট না বেঁধে কি নেমেছি?
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ইস্কুলবেলা দিন ফুরিয়ে আসছে দেখে মন খারাপ লাগতেছে..
থেমে গেলে চলবে কিভাবে!এর পরে কলেজ বেলা আর ভার্সিটি বেলার গল্প ও শোনাতে হবে..অপেক্ষায় থাকব,তুলিদি..।
ভাল থাকুন, অনেক ভাল..সবসময়।।
কলেজবেলার কোনো গল্পই নাই, হুশ কইরা কোথা দিয়া চইলা গেল ঠাহর পাইলাম না। অ্যাক্সিলারেশন ছিলো নির্ঘাত। ঘুম ভাইঙ্গা দেখি চইলা গেছে, "আমি ঘুমাইয়া ছিলাম, ছিলাম ভালো জেগে দেখি বেলা নাই বেলা নাই" কেস।
ভার্সিটিবেলা এত দূরে, এত অন্যরকম, এক্কেরে ভিনগ্রহ কেস প্রায়। সে গল্পে লাভ নাই।
তবে ইস্কুলবেলার অনেককিছু ফ্ল্যাশব্যাকে আসতে পারে।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
চলছে...চলুক...
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন