দু'হাতে জড়িয়ে রাখি রেশমী সুতো,
লুকিয়ে রাখি টুকরো টুকরো গোলকাঁচ
ঝুড়িতে রাখি মন্ত্রপাথর ও সুষমাচার-
উড়ে পালাতে থাকা রশ্মিকণারা
পালাতে পালাতে অবিরল হাসে।
দিনের পরে দিন যায়, তারপরে আসে আরেকটা দিন। বন্ধ্যা উষর দিবারাত্রি। মাঝে মাঝে পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করে সব ছেড়ে। কোনো কিছু ফলে না কোথাও, বাইরে শীতে নিষ্পত্র সব গাছপালা, ঠান্ডা শক্ত মাটি। সবুজ কমে গেছে, যাও বা আছে কয়েকটা পাইনের গাছে, তাও বিষন্ন সবুজ। এখন তুষারশুভ্রতার রাজত্ব। জাপানে নাকি সাদা মৃত্যুর রঙ।
দুটো লেজমোটা কাঠবেড়ালি বাগানে তুরতুর করে দৌড়ে বেড়ায় আর খেলা করে সারাদিন। আজ তারাও লুকিয়েছে। তুষার ঝরা থেমে গেছে, কিন্তু আবহাওয়া আপিস পূর্বাভাসে বলছে আবারো নাকি হবে। আহা আমার ছোটোবেলার আবহাওয়া আপিস কত ভালো ছিলো, যা বলতো তার উল্টোটা হতো। এখন তো আর সেই সুদিন নাই।
কেন কিছু লিখতে ইচ্ছে করে না কেজানে! কেমন একটা অকারণ বিরক্তি, মুখের ভিতরে একটা তিক্ত স্বাদ। বিশ্রী ঝগড়ার পরে যেমন লাগে, খেলায় হেরে গেলে যেমন লাগে! কিন্তু কোথাও কোনো ঝগড়া নেই, কোনো খেলাও নেই। এরকম ঘটনাহীন আবেগহীন নিষ্ক্রিয়তাকেই কি কৈবল্যদশা বলে?
শূন্যতা এসে শূন্যতায় মিশে যায়
গাঢ় থেকে গাঢ়তর শূন্যতা-
ঢেউ তোলা নীল অপরাজিতা শূন্যতা।
তাহলে কোথাও তো পূর্ণতা
ঠিকই পূর্ণ হয়ে উঠছে!
হয়তো কোথাও একটা সূত্র ছিঁড়ে গেছে, কাটাঘুড়ির মতন লাগে নিজেকে। মনে হয় এই যে শীতস্তব্ধ অরণ্য, গহীন ধ্যানে যে লীন হয়ে আছে আর তারই মধ্যে ঠিক অপেক্ষা করে আছে প্রাণময় বসন্তের, সেই রাজা আসা মাত্রই শত শত হাজার হাজার কিশলয় জেগে উঠবে সব গাছে। কী যেন এক গভীর যোগ এদের সাথে অজানা কিছুর, বৃক্ষজীবনের সেই গোপণ সত্য আমার এই সীমাবদ্ধ মানবজীবন ছুঁতে পারে না। পারে না বলেই রক্তাক্ত হয় আর রক্তাক্ত করে নিজেকে আর পরকে। কোনোদিন কি সেই অপার ভুবনের বন্ধ দরজা খুলবে?
তাহলে কোথাও তো পূর্ণতা
ঠিকই পূর্ণ হয়ে উঠছে!
কালপুরুষের কাঁধ ছুয়ে লাল তারা আর্দ্রা জ্বলজ্বল করে, তার বাম পায়ের উপরে নুয়ে পড়েছে নীল বাণরাজা। মেঘেরা সরে গেছে, তারায় তারায় জেগে উঠেছে আকাশের চোখেরা। কোনোদিন সেই বন্ধ দরোজাটা খুলবেই। দেখো, খুলবেই সেই অপার ভুবনের দরজা।
মন্তব্য
চমৎকার লাগলো। আপনার লেখার মুগ্ধ পাঠক আমি।
...........................
Every Picture Tells a Story
অনেক ধন্যবাদ মুস্তাফিজ। আপনার ছবি আর ছবির মত লেখাগুলো যে কী ভালো লাগে আমার সে আর কী বলবো। ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপু, শীত কিন্তু আমার একেবারে খারাপ লাগেনা। বরং এক নিস্পৃহ শুভ্রতার ঝকঝকে উপস্থিতি, শীতের পাখির কলতানে মুখর বিল-ঝিল এর শিশিরভরা সবুজ ঘাসের প্রান্তর, রান্নাঘরে মায়ের বানানো পিঠাপুলির মৌ মৌ সুবাস, ঠান্ডা পানির একটু ছোঁয়াতে দাঁতকাঁপানো শিহরণ, প্রভৃত মিলে এক হাড়কাঁপানো-হাড়জুড়ানো অনুভূতি। তাছাড়া শীতের ভোরে অন্তত মুড়ির একগ্লাস গরম-গরম হিম-ঠান্ডা খেজুরের রস এর ঠ্যাং কাঁপানো স্বাদ না পেয়ে থাকলে মনে হয় আমার এ জীবনের অনেকটাই বৃথা থেকে যেত।
শীতের এই প্রাণবন্ত শীতল ছোঁয়া আপনাকেও করুক শিহরিত।
-অতীত
সে আমারও। আমার আপন দেশের মিঠা শীত আমারও খুব প্রিয়। সেসব বলতে গেলে নলেন গুড়, জয়নগরের মোয়া, পাটিসাপ্টা আর পিঠাপুলির জন্য জান উচাটন হবে বলে আর বললাম না।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কবিতাটা আপনার?
লেখাটা যে কী ভাল লাগলো...
শুরুর কবিতাটুকু আর প্রথম তিনটে প্যারা এত ভাল, যে ওখানে থামলেও কিছু খারাপ লাগতো না।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
কবিতার টুকরোটা? হ্যাঁ, আমারই।
ধন্যবাদ সুরঞ্জনা।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
যেন কয়েকটি নীল ঘুড়ি উড়ে বেড়াচ্ছে আরো নীল আকাশের তলে!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
বা:, কেমন আশ্চর্য মায়াবী দেখার চোখ আপনার রোমেল। ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
তুলিআপু, এতো সাবলীলভাবে লেখেন কি করে! ঠিক যেনো আমরা যেভাবে বলি। কিন্তু লিখতে গেলে কেনো যেনো তথাকথিত গাম্ভীর্য এসে আঙুলে ভর করে। ভাল্লাগেনা ছাই।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ধন্যবাদ রাতস্মরণীয়। চেষ্টা করি আরো সাবলীল করতে, সবসময়ে হয় না।
ভালো থাকবেন। আপনার জীবন্ত ভ্রমণকাহিনিগুলো খুব ভালো লাগে আমার কাছে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
খুব ভাল লাগল।
অনেক ধন্যবাদ নৈষাদ।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপনার আবার মুখের ভিতর তিক্ত স্বাদ কেন? ওদেশে তো নিম-চিরতা-করলা কিছুই পাওয়া যায় না। বলেন তো ফেরার সময় কিছু পিঠে-মোয়া নিয়ে যেতে পারি, তারপর পার্সেল করে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে।
আর কয়েছিলুম না, না আঁচালে বিশ্বাস নেই? তা-ই হল, ওনারা আমার চরিত্র ও কাগজপত্রকে বিশ্বাস করলেন না... অতএব এই ছুটিতে আর হচ্ছে না, সামনের বার নতুন করে চেষ্টাচরিত্র করতে হবে।
আর বলেন কেন! নিম চিরতা করোলা এমনাকি কেসুতো-কালমেঘ-কুইনিনকে বলে ওদিক থাক এমন হলো মনতিতা।
আমার এক সাংবাদিক বন্ধুও ভিসা পাইলো না। সেও ওখানেই যাবার প্ল্যান করছিলো।
তবে আপিসের লোকেরা তার সাথে অনেক গপ্পো করেছে আর চা ডালমুট খাইয়েছে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কবিতাটা খুব ভাল লাগলো, " আমরা এমনি এসে ভেসে যাই" গানটা মনে হল পড়ে, কেন যেন।
অনেক ভাল থাকুন
অনেক ধন্যবাদ আনন্দী।
আপনিও ভালো থাকুন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন