ভর্তি হওয়াগুলো কেমন মিলেমিশে গিট্টু পাকিয়ে যায়। সেই কবে প্রথম বাড়ীর বাইরে পাড়ার বাইরে বেরোনো ইস্কুলে ভর্তির জন্য, সঙ্গে করে নিয়ে গেল অভিভাবকরা, বেরিয়ে কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি, তারপরে সেই স্কুল থেকে বার হয়ে হাইস্কুলের ক্লাস ফাইভে ভর্তি, তারপরে কলেজ, তারপরে অনেক দূরে অচেনা বিদেশে গ্র্যাড স্কুল--সব অ্যাডমিশনগুলো মিলেজুলে একাকার হয়ে যাচ্ছে, যেন সব কিছু একটা বিরাট মালার মতন, আলাদা করে চেনা যাচ্ছে না বীডগুলো। আরে এ কী কান্ড! তাহলে মালার প্রথম কোনটা শেষ কোনটা চিনবো কী করে? প্রথম ঘুরে আসে শেষের সাথে মিলে যেতে, আলো দৌড়ে এসে ছায়ার সাথে মিলে যায়।
মনে পড়ে মস্ত একটা গেট, গেট পার হয়েই মস্ত মস্ত দু'খানা আমগাছের ছায়ায় সিমেন্টের দু'খানা গোল গোল বেদী। পরে জেনেছিলাম ওখানে ছেলেমেয়েদের নিতে আসা লোকেরা বসে বিকেলবেলা। মনে পড়ে সকাল, শীতকালের ঝকঝকে রোদের সকাল। হাওয়ায় আমগাছের পাতা নড়ছে, গাছ নড়ছে, নিচে বেদীর উপরে ছায়াজাল ফেলা রোদ নাচছে। সেই প্রথম সেখানে ঢোকা, আমার ইন্টারভ্যু, কেজি ওয়ানে ভর্তির। সেদিনই আবার আরেক জায়গাতেও যেতে হবে এখানে হয়ে গেলেই, সেই ইস্কুলের ইন্টারভ্যুর দিনও একই দিনে পড়েছে। গেটের বাইরের চেনা রিকশাওয়ালা অপেক্ষায় রইলো, হয়ে গেলেই বাবা আমায় নিয়ে যাবে সেই আরেকটা ইস্কুলে।
পরে কতকাল সেই আমগাছের আলোছায়ার তলা দিয়ে এসেছি গেছি, দুপুরের টিফিনের পরে বন্ধুদের খেলেওছি কত, চু কিতকিত, কুমীরডাঙা, আর কত কী! কিন্তু প্রথম দিনের মতন লাগে নি আর কখনো। পরে অনেক বড় হয়ে মাধ্যমিকের রেজাল্ট বেরোনোর পরে যখন গেছি আবার, দেখেছি আসলে অত মস্ত বড় তো না গাছগুলো বা বেদীগুলো! কিন্তু সেই প্রথম আলোছায়ার ঘোর ভাঙে নি, সে যে স্মৃতির দেশ, স্বপ্নের দেশ, সেখানের জিনিসপত্র এখানের চেনাজানা জিনিসের মতন হতে যাবে কেন?
বারান্দা ভর্তি খুদে খুদে ছেলেমেয়ে, সেখানে গিয়ে অপেক্ষা করতে হবে। নাম ডাকছে, এগিয়ে ঘরে ঢুকে যাই। একটা ঘর, সে ঘরে দু'জন মহিলা, ওনাদের দিদিমণি বলতে হয়, আমি জানতাম। আগেই যারা ইস্কুলে যেতে শুরু করেছে তারাই তো বলে দিয়েছে। কত কিছু জিজ্ঞেস করে দিদিমণি দু'জন, নাম ঠিকানা এইসব, তারপরে একের পর এক কাঠের আ ঈ ক খ এইসব দেখায়, এগুলো চেনাই তো, একটা ছড়া বলতে বলে, মায়ের শেখানো একটা ছড়া বলি, একটা ক্যালেন্ডারে হরিণের ছবি, দেখিয়ে জানতে চায় কীসের ছবি--এইসব। হয়ে গেলে একটা লজেন্স আর দুটো বিস্কুট দিয়ে হাসিমুখে বিদায় দেয়। বা:, বেশ তো! এরই নাম ইন্টারভ্যু? এরই জন্য এত ভয়টয় দেখাচ্ছিলো?
তারপরে আরেক ইস্কুলে ইন্টারভ্যু, সেখানে আবার ঘরবারান্দা সব আলাদারকম, সেখানে গেটের পাশে আমগাছ নেই, কিন্তু ঝকমকে রোদ্দুর, সেখানে আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুনী নন্দিতা পড়ে। ও আগের বছর থেকে পড়ে। আহা এখানে হয়ে গেলে ভালো হয়। এখানেও নাম ডাকলো, ঘরে রাগী-রাগী চেহারার এক দিদিমণি, কিন্তু এই তো হাসছে, আর তো রাগী না! এখানেও নানা কিছু জিজ্ঞেস করে, কিন্তু এখানে ছবি নেই, ছড়া শুনতে চায় না, এখানে শুধু কাঠের অ আ ক খ দেখিয়ে দেখিয়ে জানতে চেয়েই হয়ে যায় ইন্টারভ্যু, এখানে শুধু হাসিমুখে বিদায় দেয়, লজেন্স বিস্কুট তো দেয় না!
তারপরে তো সেই গেটের পাশের জোড়া আমগাছের ইস্কুলেই ভর্তি হওয়া, পাশের বাড়ীর ছেলেমেয়েরা সব ওখানে যায়, তাই আমার বাড়ীর লোক মনে করলো সেটাই ভালো হবে। ওদের সাথে এক রিকশায় করে তাহলে প্রতিদিন যাওয়ার সুবিধা হবে। সেই ইস্কুলের মুড়ির টিনের মতন গাড়ী ছিলো বাচ্চাদের আনতে নিতে, কিন্তু আমাদের পাড়াটা কিনা বেশ দূরে, তাই ঐ গাড়ী আসতো না ওখানে। ওখানের বাচ্চাদের অভিভাবকেরা নিজেরা একজন রিকশাওয়ালাকে ঠিক করে তার রিকশায় বাচ্চাদের পাঠাতো।
সেই ব্যবস্থাই হলো। শুধু নন্দিতার মা একটু দুঃখিত হয়ে বলেছিলো, "কেন রে তুলি তোকে ওখানে ভর্তি করলো? আমার মেয়ের ইস্কুলেও তো তোর নাম উঠেছিলো, সেখানে দিলো না কেন?" তা এর আর আমি কী বলবো? বড়দের কান্ডকারখানার ঠিকঠিকানা থাকে কোনোদিন?
নন্দিতা ওর দাদার সঙ্গে যেত, ওদের বাড়ীর পাশের আরো ক'জনও যেত। ওদের ইস্কুলটা অন্যদিকে ছিলো, শর্টকাটে যাওয়া যেতো পাড়ার ভিতর দিয়ে দিয়ে। ও অবশ্য কোনোদিনই আমার সাথে এক সাথে পড়তে পারতো না, ও তো এক ক্লাস উপরে পড়তো। পরে প্রাইমারী ছেড়ে যে হাইস্কুলে আমরা ভর্তি হলাম, সেটা একই স্কুল ছিলো, কিন্তু ক্লাস তো চিরকালই আলাদা ছিলো।
আমার অবশ্য এখন মনে হয় এ ভালোই হয়েছিলো, বাড়ীর বন্ধুদের সাথে একই স্কুলে একই ক্লাসে না পড়াই একদিকে ভালো। নিঃশর্ত বন্ধুত্বের সাথে প্রতিযোগীভাব একসাথে থাকতে পারে না, এই দুই জিনিস মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ।
ওর সাথে তাই মনে রয়ে গেল ছুটির দুপুরের লাউমাচায় পায়রার বাসা দেখা, মনে রয়ে গেল কসমস টিভি সিরিজের কাহিনি শোনা, আমাদের টিভি ছিলো না বলে ও আমায় বলতো টিভিতে দেখে এসে, মনে রয়ে গেল বিকেলবেলার সবুজ মাঠে হরেক রকমের খেলা, মনে রয়ে গেল আমাদের অজস্র রবীন্দ্রজয়ন্তীর গান, কবিতা, নাটক। ক্লাস, পরীক্ষা, প্রতিযোগিতা আর রেজাল্টের চারদেয়ালের মধ্যে হারিয়ে গেল না কিছু।
বিশাল খোলা মাঠের শেষে কখনো আকাশ রাঙিয়ে দিয়ে, কখনো মেঘের আড়ালে মুখ লুকিয়ে, কখনো পালক মেঘে মেঘে আলোর ছবি রেখে সূর্য ডুবে যাওয়া গ্রীষ্ম-বর্ষা-শরত-হেমন্ত-শীত-বসন্ত বিকেলগুলো হয়ে রইলো আমাদের মুক্ত বিদ্যালয়, বাজি রেখে বলতে পারি নিজেরা নিজেরা কথা কইতে কইতে শুনতে শুনতে খেলতে খেলতে হাসতে হাসতে রাগ করতে করতে খুশি হতে হতে যা শিখেছি, তার এক শতাংশও কোনো প্রথাগত শিক্ষার জায়গা আমাদের দিতে পারে নি।
পরের পর্বে আবার হয়তো ফিরে আসবো সেই প্রথম ইস্কুলে, কেজি ওয়ানের নিয়তি দিদিমণির গল্পে। ভাবা যায়, প্রথম শিক্ষিকার নাম ছিলো নিয়তি! একেবারে নিয়তির লিখন যাকে বলে!
(চলবে মনে হয় )
মন্তব্য
এটায় কমেন্ট করা নিয়েও রেস আছে নাকি?
সুবোধ বালক ছন্দ আজ যা ক্ষেপবে না?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
তাই তাই? আমি তো ভাবছিলাম শুধু উপকথা-তেই তার দখলিস্বত্ত্ব...
আরে সে তো ঘোষণা দিয়েছিলো ইস্কুলবেলা আর উপকথা দুইয়েই .....হি হি হি।
আরে রামপাখি খেতে খেতে তো তোমার জিভ ত্যাবোধা হয়ে গেল, এইবার ফর আ চেইঞ্জ মাটন বিরিয়ানি নাও তিনহাতা, আচ্ছা, সাড়ে তিনহাতাই নাও, পুরস্কার।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আরে এভাবে? ছি ছি এটিকেট শিখতে তো তোর কামস্কাটকা যাওয়া ছাড়া উপায় নাই।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ধুর, কামশ্চাটকা গিয়ে কী হবে? তার চেয়ে শাস্কচুয়ান যাওয়া ভালো! ওখানে আছে সাইবেরিয় বাঘ, এর এদিকে সুবোধ বালক!
হুঁ... এইবার বাঘটিকে দিয়ে বালকটিকে খাইয়ে দিলেই মুরগীভোজন প্রতিযোগিতায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায় -
কী কী খাবি? কোর্মা না তন্দুরী না বিরিয়ানিতে ? নাকি এমনি মুরগীর কারি?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ধুরো, কেবল লাফাং!ওরে ছড়াটা শুনলে আরো হাসতি !
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
শুনব, শুনব!
মাথা খারাপ নাকি? ওটা বলি আর লোকে আমারে রাচী পাঠাইয়া দিক।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আম পাতা জোড়া জোড়া
মারবো চাবুক চড়বো ঘোড়া
......
......
অলরাইট ভেরি গুড
মেম খায় চা বিস্কুট
এইরকম কিছু?
আজ্ঞে না। সে ছড়া একেবারে অপ্রচলিত। জানি না মা কোথা থেকে শুনেছিলো আর মনে রেখেছিলো। পরে আর কোথাও শুনি নি।
" ও পাড়ার ময়রা খুড়ো-
রথ করেছে বারো চূড়ো।
তোরা রথ দেখতে যা
তোদের আলতা মাখা পা।
মোরা পয়সা কোথায় পাবো?
মোরা উলটো রথেই যাবো।"
:-)
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বলেই যখন ফেলেছেন এবার কি আপনার সাথে দেখা করতে রাঁচি কি পাবনা যেতে হবে?
অপ্রচলিত কেন? আমি তো এটা জানি! এবার আমারে আম্রিকা যাওয়ার ভিজা আর টিকেট দেন।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
আরে মহাস্থবির, আপনে জানেন? এটা কার ছড়া? মানে কে লিখেছিলো? লোকপ্রচলিত বলে আমি শুনেছিলাম। আপনি কি ছড়াকারের নাম জানেন?
আর, আমি একটা শব্দ বদলাইছি। কন তো কোন শব্দটা বদলাইছি?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আচ্ছা, প্রথম পাতার প্রিভিউতে লেখাটার কিছুই আসছে না কেন?
কেজানে! আজকে তো প্রথমবার গেলই না পোস্টটা! তারপরে আবার দিলাম।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এখন এডিট করে আবার দেখি খানিকটা প্রিভিউ এসেছে!
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
"পরে অনেক বড় হয়ে মাধ্যমিকের রেজাল্ট বেরোনোর পরে যখন গেছি আবার, দেখেছি আসলে অত মস্ত বড় তো না গাছগুলো বা বেদীগুলো!"
এক্কেবারে!
হি হি... আপনাকে একখানা লজেন্স আর দুইখানা বিস্কুট হাতে ছড়া আবৃত্তি করতে কল্পনা করছি আর
গররররররররর স্রেফ দুইজন মিলে পনেরোটা মন্তব্য! এ তো নতুন রেকর্ড দেখি! এ সবই কি আমাকে ফেল্টু খাওয়ানোর জন্য?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
(আগেরটা প্রি-পড়া মন্তব্য ছিলো, এইটা পোস্ট-পড়া মন্তব্য)
বরাবরের মতই... আর...
=)) =)) =))
এইটা মোটেই ঠিকঠাক কল্পনা না। লজেন্স আর বিস্কুট আগে দেয় নি, সব ছড়া টড়া শুনে টুনে নিশ্চিত হয়ে নিয়ে তারপরে দিয়েছে। আগে কজ আর তারপরে এফেক্ট। ছড়া বলার সময় হাতে লজেন্স-বিস্কুট আসবে কী করে?
গণিত সংখ্যাতত্ত্ব প্রিসিশন-মেজারমেন্ট কজালিটি এইসব ভালো ভালো বিদ্যায় ক্ষুরধার হয়ে এইসব ভুল কেম্বায় করতেছ ???
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কল্পনা কি ইকুয়েশন মেনে করতে হবে নাকি?
আর তাছাড়া ওই বয়সে হাতে দু'খানা বিস্কুট আর একখানা লজেন্স পেলে তো দরকার থাক বা না থাক ছড়া বেরিয়ে আসবে - তাইলে কল্পনাই বা করতে হবে কেন?
দূর, ওই ব্রিটানিয়া থিন পেলে ছড়া না কচু বলবে! এসবের চেয়ে ঢের পছন্দের ছিলো অমৃতি আর চানাচুর।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
চলুক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
থ্যাংকু।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
খুব মায়াময়,
বরাবরের মত-ই অসাধারন।
শতায়ু হোক ইস্কুলবেলা!
ধন্যবাদ বিষন্ন বাউন্ডুলে। ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
গল্পের মত ইশকুল বাড়ি, জমে ওঠা কত, খেলবো না, আড়ি ! - আহা!!
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
কাল রাত্তিরেই দেখেছি তুলিরেখার লেখা... ভাবলাম ছোট ছোট ছেলেপিলে, প্রথম কমেন্ট করতে না পেরে কান্নাকাটি করে এর ওর ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে, তার থেকে সুযোগ দিই, তো দেখি তাও ফেল্ !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আর কইয়ো না। পোলাপান এরা।
নাও শালপাতাটা ধরো, বেশ ঝালঝাল ঘুগনি পেয়ে গেলাম মেলায়।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ঠাম্মি কী ভালো!
ঠাম্মি এইটা দারুণ একখানা সম্বোধন হয়েছে
একটু সবুর করো খালি, বাচ্চাগুলোকে পেছনে লাগিয়ে দেব, তখন 'আক্কেল চক্কেত খাব' বলে আঙুল ধরে ঝুলে পড়লেই বুঝবে হাউ মেনি পেডিতে হাউ মেনি রাইস। হুঁহ্!
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
কোন বাচ্চাগুলো? আরে আপনি ঠাম্মি হলে তো আমরাই হলাম গিয়ে আপনার নাতি নাতনী... কে কার আঙ্কেল?
আরে এই সুবোধ বালক ছন্দ তো কিছুই দেখি জানে না! grandparents আর grandkids রা হোলো পেরিওডিক টেবিলের কলামের এলিমেন্টের মতন, বেশ কিছু ক্ষেত্রে তারা ইকুইভ্যালেন্ট, শেয়ার করে অনেক ফীচার। এনারা একই সম্পর্ক ধরতে পারেন।
বিশ্বাস না হইলে মণিরত্নমরেই জিগাও, সে মেন্ডেলের পরীক্ষানীরিক্ষা থিকা ডেটা আইনা দেখাইয়া দিবো নে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বাচ্চা তো আমরাই... এর চেয়ে বাচ্চাতর আনতে গেলে তো কথা-না-ফোটা আন্ডাবাচ্চা ধরে আনতে হবে, তারা আর 'আক্কেল চক্কেত খাব' বলে ধুয়ো তুলবে কী করে?
আমার ঠাম্মি হতে মোটে আপত্তি নেই। এতে কচিকাঁচা এবং এঁচোড়ে পক্ক দুই পদেরই যেগুলো বেশি লাফায়, সেগুলোর কান মলে দেবার সুযোগ এবং অধিকার অন্তত পাওয়া যাবে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ছয়ক্লাস পর্যন্ত পড়েছি একেবারে পাড়াগাঁর স্কুলে। ধানক্ষেত, জঙ্গল, দীঘি, মাটির উঁচুনিচু রাস্তা... এইসবের মাঝে স্কুল। জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় ছিল ওটাই।
আমার ঐ ছোটোবেলার ইস্কুলটায় ক্লাস ফোর অবধি পড়েছিলাম। কেমন খোলামেলা সুন্দর ছিলো তখন স্কুলটা। উপরের একটা খোলা বারান্দা খুব প্রিয় ছিলো। জানালা দিয়ে দেখা একটা মস্ত কী যেন গাছ, হেমন্তে তার ঝরা পাতা উড়ে আসতো আমাদের ক্লাস থ্রীর ঘরে, এখনো স্বপ্নে দেখি। চারিদিকে ঘরদালান, মাঝে খোলা উঠান, সেখানে টিফিনের সময় সব ক্লাসের ছেলেমেয়েরা খেলতো। আসলে খোলা খেলার জায়গা, সবুজ গাছপালা এসবের মধ্যে যেসব ছোটোরা মানুষ হয়েছে, তাদের বিরাট সৌভাগ্য। পরে গিয়ে দেখেছি সব অনেক বদলে গেছে, দালান উঠে উঠে যেন চেপে ধরেছে চারপাশ, স্কুল বিল্ডিং টাও বদলে গেছে নতুন নতুন ঘরবারান্দা হয়ে হয়ে। আর যেতে ইচ্ছে করে নি, থাক স্বপ্নের মধ্যে সে থেকে যাক।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পড়তে পড়তে নিজের প্রথম স্কুলদিনের কথা মনে পড়ে গেল; কত্ত স্মৃতি,সে ২০-২২ বছর আগের কথা;অথচ পরিষ্কার মনে আছে। মনে হয় আপনার মতন লিখে রাখা দরকার, নয়তো কবের দেখা যাবে ভুলে গেছি।
লিখে ফেলুন, দ্রুত লিখে ফেলুন। আমি লিখতে গিয়ে দেখছি কত ডিটেল হারিয়ে গেছে আবার কত ডিটেল মনেও আছে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
স্মৃতিগুলো দেখছি এখনও অনেক জ্বলজ্বলে। তবে কে বলে স্মৃতির পাতায় ময়লা জমে!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন